তপ্ত দুপুর... প্রচণ্ড শীতের পর বসন্ত যেন গ্রীষ্মের ছদ্মবেশে এসেছে। রাজপথও এখন আর আগের মত নেই। যখন তখন জ্যাম লাগাটাই যেন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। এখনকার অবস্থাটা তারই একটি খন্ডচিত্র। রাস্তার উপর গাড়িগুলো নির্জীব হয়ে আছে। যখন রাস্তা ছেড়ে দেয়া হয়... তখন যেন সবাই হঠাৎ প্রাণ ফিরে পায়। সেই সময়ের অবাধ্য রিকশা চালক আর উদ্ধত ড্রাইভারদের সামলাতে ট্রাফিক পুলিশকে মোটামুটি হিমশিমই খেতে হয়।
রাস্তার পাশের চা দোকানগুলোতে এখন বেশ ভিড়। কারো কারো জন্য এটাই দুপুরের খাওয়া সারার আদর্শ জায়গা। ক্রেতারা নিজ নিজ ইচ্ছে মত ঝুলিয়ে রাখা প্যাকেটগুলো থেকে খাবার নিয়ে নিচ্ছে, আর দোকানদার তাদেরকে নানাভাবে উৎসাহিত করার চেষ্টা করছে।
অদূরেই এক কনস্টেবল এক মোটর সাইকেল আরোহীকে জেরা করছে।অফিসের বারান্দা থেকে তাদের কথোপকথন শোনার চেষ্টা করছেন শরাফত আলী... মনোযোগ তীব্র।
এ ধরনের ঘটনাগুলো কম বেশি সবাইকেই টানে। কারো কারো কাছে বেশ আনন্দদায়কও মনে হয়। যত যাই হোক না কেনো, লাইসেন্স থাকুক আর নাই বা থাকুক... অধিকাংশ পুলিশ ভাইয়েরা এই বিষয়ে সমস্যা বের করতে বদ্ধ পরিকর। শরাফত আলী জানেন এর শেষ কোথায়। সব সমস্যার সমাধান লুকিয়ে আছে আরোহীর পেছনের পকেটে। কিন্তু, তারপরও তার এরকম ঘটনার দর্শক হতে খুব ভালো লাগে। বিশেষ করে ভালো লাগে পুলিশের কথা আর আরোহীর কাঁচুমাচু অবস্থা দেখতে।
কাছেই একটি কাঁক তারস্বরে ডেকে উঠল কয়েকবার। তীব্র গরমে তার অস্বস্তির কথা যেন জানিয়ে দিতে চাচ্ছে সবাইকে।
শরাফত আলীর মনোযোগে ভাটা পড়ল। অসম্ভব রকমের বিরক্তি নিয়ে তাকালেন কুচকুচে কালো জীবটির দিকে। হাত উঁচিয়ে বলে উঠলেন “হুউউউইইইস্”। পাখিটি উড়ে চলে গেল।
আবার মনোযোগী হলেন শরাফত আলী। বয়স্ক একজন মানুষ, পঞ্চান্ন কি ছাপ্পান্ন হবে, মাথা ভর্তি চুল, নাকের নিচে পুরু গোঁফ... সবই কাঁচা পাকা। কিন্তু, এখন তা বোঝা যাচ্ছে না... কলপের জন্য। অল্প কিছু টাকায় যদি বয়সটাকে পাঁচ দশ বছর কমিয়ে আনা যায় তো ক্ষতি কি? আজকাল তো সবখানেই কালোকে সাদা আর সাদাকে কালো করা যাচ্ছে। সবাই কি তার সুবিধা নিচ্ছে না? কিন্তু, শিউলিকে এ কথা কে বোঝাবে! সে তো কেবল একটা কথাই শিখেছে... আর তা হলো “ছদ্মবেশী বুড়ো ভাম”। “ভাম” শব্দটার যে কি মানে, আজও শরাফত আলীর কাছে তা পরিষ্কার না।
মেয়েটা হয়েছে ঠিক তার উল্টো। সারাক্ষণ বাবা বাবা বলে মুরগির ছানার মত পিছে পিছে ঘুরতে থাকে। ... ছানা থাকবে মুরগির পেছনে, কিন্তু মোরগের পেছনে কেন? এই বিষয়টাই শরাফত আলীর বুঝে আসে না। ঢেঙ্গা একটা মেয়ে এতটা ছেলে মানুষ হয় কি করে? সে নাকি আবার পলিটিকাল সাইন্সের মত বিষয়ে গ্রাজুয়েশন করছে। সুন্দরী এই লক্ষ্মী মেয়েটির ভবিষ্যৎ কি, তা শরাফত আলীকে ইদানীং বেশ ভাবায়। আজকাল আবার ভালো পাত্রের দাম খুব চড়া! সুদ কি... আসল দিতেই অনেকের সূর্যাস্ত আর সূর্যোদয় মিলেমিশে একাকার। শরাফত আলীর অবশ্য এই বিষয়ে কোন দুশ্চিন্তা নেই। বিলটা পেয়ে গেলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। একটাই তো মেয়ে! ... আর শুধু পাশের বাড়ির খসরুর পাওনাটা দিয়ে দিলেই কেল্লা ফতে! বাদ বাকি দেনাগুলো দিতেও কোন সমস্যা থাকবে না।
অতি ব্যবহারের পরিচয় বহন করা মোটা ফ্রেমের চশমাটি খুলে মুছতে লাগলেন শরাফত আলী। আরোহীর বেচাল অবস্থা দেখতে এখন আর ভাল লাগছে না। বারান্দার ওপাশ থেকে সরে আসলেন। “অন্য কিছু ভাবতে হবে”, বিড়বিড় করলেন কয়েকবার। কিন্তু কি যে ভাবা যায়... ?
আজকাল ভাবনার জায়গায় কেবল দুর্ভাবনার রাজত্ব!
শিউলির কথা ভাবা যেতে পারে। ... পঞ্চাশ? হুম্, পঞ্চাশ তো হবেই। এই বয়সেও ঝাঁঝ একটুও কমে নি! চুপচাপ থেকেও কথা বলার ভাষা এই বুড়ো মেয়েটা যে কোথা থেকে শিখল তা বড়ই চিন্তার বিষয়। প্রথম দিন থেকে এখন পর্যন্ত তার চোখের দিকে তাকিয়ে মিথ্যা কি, কোন কথা বলতেই শরাফত আলীর হাঁটু কাঁপে। এ রকম একটা মেয়ে কেন যে তাকে বিয়ে করতে রাজী হয়েছিল, তা শরাফত আলী ভেবে পান না। আচ্ছা! সে কি এখন আক্ষেপ করে? একা হলেই নিজেকে অভিশাপ দেয় শত সহস্রর বার? ...মেয়েরা নাকি খুব স্বপ্নবিলাসী হয়।“কই? আমাকে তো সে কখনো কোন স্বপ্নের কথা বলে নি!”
“চাচা, স্যার আইসে। দেখা করবেন নাকি?” বলে উঠল পরিচিত এক কণ্ঠস্বর।
না তাকিয়েও বাতেনকে চিনতে কোন অসুবিধা হল না শরাফত আলীর। কম করে হলেও দুই বছর কি? হুম... দুই বছরই হবে। প্রায় দুই বছর ধরে এই অফিসে তার যাতায়াত। ছেলেটা বড্ড ভালো। এখানে এলে মাঝে মাঝে বসার জায়গা করে দেয়। এতটুকুন ছেলে, সেদিন তো তাকে চা খাওয়ার প্রস্তাবই দিয়ে বসল! মনে পড়লেই শরাফত আলীর হাসি পায়।
বাতেনের সাথে মিনিট খানেক কথা বলে শরাফত আলী করিডোর ধরে হাটতে লাগলেন, উদ্দেশ্য অফিস। পেছন থেকে বাতেন তাকিয়ে রইল।
অফিস রুমটিকে মোটামুটি বড় বলা যায়। চার কোনায় চারটা টেবিল, ক্লার্কদের জন্য। জরুরী কাগজপত্র রাখার কিছু আসবাব আছে, তবে আজ পর্যন্ত তার ভেতরে আসলেই কাগজপত্র আছে কিনা তা শরাফত আলীর দেখা হয় নি। প্রতিটি টেবিলের উপর ও পাশে অসংখ্য ফাইল গিঁট দেয়া অবস্থায়... ধুলোর আস্তর জমা ফাইলগুলোর বয়স আন্দাজ করা কঠিন। কিন্তু, এই কষ্টকর কাজটাই শরাফত আলী করার চেষ্টা করেন প্রতিবার। আরেকটি কাজ আছে... যা তিনি করেন না, করে তার অবচেতন মন...।
অফিসের এই জীর্ণ ধুলো জর্জরিত অসংখ্য ফাইলের মাঝে তিনি নিজের ফাইল খুঁজে ফেরেন, যা পাওয়া এখন পর্যন্ত তার সকল চেতনের ঊর্ধ্বে বলে প্রমাণিত।
অফিস কক্ষে ঢুকেই শরাফত আলী দ্বিধায় পড়ে গেলেন...
স্যার টেলিফোনে কথা বলছেন, কিন্তু কিছু শোনা যাচ্ছে না। সম্ভবতঃ খুব গুরুত্বপূর্ণ... না হলে, ঠিক টেবিলের সামনে দাড়িয়ে থাকা বুড়ো লোকটিকে না দেখার কোন কারণ নেই। কথা বলতে বলতেই স্যার তার চেয়ারটিকে মৃদু
দোলাচ্ছেন... হাসছেন... আবার কাশছেনও!
এর মাঝেই স্যার বাতেনের জন্য হাঁক ছাড়লেন। বাতেনকে পাওয়া গেল না। আরও কয়েকবার ডাকার পর আরেকজনকে পাওয়া গেল, তাকে চা’য়ের ফরমাশ দিয়েই স্যার আবার টেলিফোনে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।
প্রায় দু’বছর ধরে স্যারকে চেনেন শরাফত আলী। শারীরিকভাবে তিনি গতানুগতিক স্যারদের মত নন, অনেকটাই রোগা বলা যায়। কিন্তু, অফিসিয়াল কাজের ক্ষেত্রে তিনি কারো চেয়ে কম নন! পঁয়ত্রিশ ছত্রিশ বয়সী এই নিরীহ দর্শন স্যারকেই সবাই বেশ সমঝে চলে।অন্ততঃ শরাফত আলীর কাছে তাই মনে হয়।
ঠিক বিশ মিনিট পর চা এলো। চা নিয়ে এলো বাতেন।
পাঞ্জাবীর পকেট থেকে রুমাল বের করে কপাল মুছলেন শরাফত আলী। অফিসের ভেতর গরমটা মনে হয় একটু বেশিই। মাথার উপর শব্দ করে ঘোরা ন্যাশনাল ফ্যানটাও যেন শুধুমাত্র অফিসের কর্মীদের জন্যই তার সকল বাতাস উজাড় করে দেয়... অন্যদের জন্য নয়।
অবশেষে স্যার শরাফত আলীকে দেখতে পান এবং এর কিছু সময় পরই তার ফোনালাপ শেষ হয়।
“আসসালামু আলাইকুম স্যার... কেমন আছেন স্যার!”
স্যার চোখ পিটপিট করে কিছুক্ষণ চেনার চেষ্টা করলেন বক্তাকে... বক্তার কাছে অন্তত তাই মনে হল। তাকে চিনতে পেরে বলে উঠলেন, “আপনার কি আজকে আসার কথা?” চোখে স্পষ্ট বিরক্তির ছাপ, কিছুটা বিস্ময়ও! শরাফত আলী কি বলবেন খুঁজতে লাগলেন এবং তড়িঘড়ি করে কিছু বলার আগেই স্যার তাকে থামিয়ে দিয়ে বসতে বললেন। তবে কোন শব্দ খরচ করলেন না, পুরোটাই হল ইশারায়। এরপর ফিসফিস করে বলে চললেন কিছু কথা, যা শরাফত আলী শুনে আসছেন গত দু’বছর ধরে... ভিন্ন ভিন্ন সুরে। তবে আজ, ভদ্রতার মুখোশে অতি নির্লজ্জতার প্রকাশ খুব সহজে এবং জোরালো ভাবেই ঘটল আর তার সাথে যুক্ত হল নতুন কিছু বিষয়।
“দেখেন........আপনার কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। বাকি কাজ যা আছে, তাও শেষ হয়ে যেত... কিন্তু ঝামেলাটা হয়েছে আপনার অনেক বিষয়ই সরকারি নথিতে নাই.............ফাইলটা তো আর কম লোকের হাত ঘুরে নাই। এখন এই শেষ সময়ে এসে যদি এত ঝামেলা সইতে হয়, তাহলে কি আর কাজ করা যায়!” ইতিমধ্যে ঠান্ডা হয়ে যাওয়া চা’য়ে চুমুক দিলেন স্যার এবং দিয়েই আবার বাতেন বলে ডেকে উঠলেন। সম্ভবতঃ চা’য়ে চিনিও কম হয়েছে।
ওদিকে শরাফত আলীর ভাবনাগুলো বেশ জট পাকিয়ে যাচ্ছে। বসে বসে তিনি কথাগুলোর মানে খুঁজতে লাগলেন।................তিনি তো আগেও কিছু বিল তুলে ছিলেন, যদিও সেগুলো আকারে বেশ ছোট ছিল এবং তোলার ঘটনাগুলোও ততটা সুখকর ছিল না। কিন্তু তার “অনেক তথ্যই সরকারি নথিতে নেই” এ কথা তিনি আগে কখনো শোনেন নি এবং বিশ্বাস করাটাও বেশ কষ্টকর। শরাফত আলীর এক অন্যরকম অস্বস্তি বোধ হচ্ছে। এটুকুই তো তার সম্বল, তার পরিবারের ভবিষ্যৎ।
বাতেন চলে যেতেই স্যার আবার শুরু করলেন। তবে এবার আরো আস্তে।
“হুম.........যা বলছিলাম, দিনে দিনে আপনার বিষয়টা তো জটিল হয়ে যাচ্ছে। এর থেকে আরও কম ঝামেলার কাজ করেই তো কুল পাওয়া যাচ্ছে না। আমি কি করতে পারি বলেন। এই যে ফাইলগুলো দেখছেন”, হাতের ইশারায় টেবিলের উপর রাখা ফাইলগুলো দেখিয়ে বলে উঠলেন,“প্রত্যেকটাতেই কিছু না কিছু সমস্যা আছে। তবে আপনারটার মত এত বড় কোন সমস্যা না। তারপরও বলে দিয়েছি”.................অনেকটাই এগিয়ে এসে শোনা যায় না এমনভাবে,“লাখ খানেক না হলে এখন আর কাজ আগানো সম্ভব না! এখন কি আর আগের যুগ আছে...........এইইইই........টুকিটাকি চা নাস্তা তো সবার জন্যই লাগে, তাই না! আপনি তো বোঝেনই..............” একটু থেমে দম নিলেন যেন, তারপর আবার শুরু করলেন, “তবে যাই হোক, আপনার কেস্টা আলাদা। অনেক দিন ধরেই তো আপনাকে চিনি। খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, যাবে! একটু হয়ত বেশি দৌড় ঝাপ করতে হবে। প্রয়োজনে তাও করব। চিন্তার কিছু নাই, কাজ হয়ে যাবে। যত বড় সমস্যাই হোক না কেন, এদেশে করা যায় না এমন কোন কাজ নেই। শুধু জায়গা মত কিছু দিলেই হয়ে যাবে। আর আমার জন্য অতটা না ভাবলেও চলবে। আমি তো আছিই!”
তবে পরের কথাগুলো শুনে শরাফত আলী বুঝতে পারলেন যে, স্যারের জন্যেও কম ভাবতে হবে না!
এরপর কথায় আর মনোনিবেশ করতে পারলেন না শরাফত আলী। কেমন যেন একটা তেতো ভাব হচ্ছে। পায়েস খেতে ইচ্ছে করছে..............শিউলির হাতের পায়েস। এমন এক সময় ছিল, যখন এই পায়েস দেখলেই শরাফত আলীর ঘেন্না লাগত। কিন্তু, এখন এটা তার প্রিয় খাবার গুলোর মধ্যে একটা।
প্রকৃতপক্ষে সবই শিউলির দোষ! সে তার জীবনে এসে তার জীবনটাই বদলে দিয়েছে। কিন্তু শরাফত আলী তাকে কি দিতে পেরেছে?............ভাবতে ভাবতে কখন যে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছেন, তা হয়ত শরাফত আলী নিজেও বলতে পারবেন না। স্যার তখনও বলে যাচ্ছেন, কিন্তু চিন্তার সাগরে হারিয়ে যাওয়া মানুষটির কাছে তা বহুদূর থেকে ভেসে আসা কোন শব্দের মতই মনে হচ্ছে।
অফিসের বাইরে ছোট খাটো একটা জটলা। সম্ভবতঃ কোন মাদকাসক্ত বা ছিনতাইকারী ধরা পড়েছে। থেকে থেকে শোনা যাচ্ছে তার আর্তনাদ আর চামড়ার সাথে লাঠির সংঘর্ষের শব্দ। দুটো কুকুরও জুড়েছে...........চিৎকার করে তারা তাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছে...........তবে কার হয়ে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। অদূরে সেই কনস্টেবল বসে চা খাচ্ছে। তার চোখে একই সাথে বিতৃষ্ণা আর ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ। জনতার ভিড় থেকে একজন বলে উঠল, “মার শুয়োরের বাচ্চারে”................সঙ্গে সঙ্গে জনতার উৎসাহ আরও বেড়ে গেল। অবশেষে শীর্ণ দেহী সেই শুয়োরের চিৎকার কমে এসেছে। কিছুক্ষণের মধ্যে জনতার আগ্রহেও ভাটা পড়তে শুরু করবে।..........চা খাওয়া শেষ করে কনস্টেবল এগিয়ে গেলেন জটলার দিকে।
সন্ধ্যা নামতে আর বেশি দেরী নেই। শহরের সকল ব্যস্ততা এখন রাজপথে। স্বপ্নবিলাসী হাজারো মানুষ তাদের নিজ নিজ স্বপ্ন নিয়ে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে।........স্বপ্নের মিছিল! যেন অপূর্ণতায় ঠাসা ওই রাজপথ মাড়িয়ে এগিয়ে যেতে চায়................এড়িয়ে যেতে চায় শত যুক্তিকে, ঠিক ক্লান্ত সেই হরিণের মত..........শিকারির তাড়া খেয়ে ছুটতে ছুটতে পরিশ্রান্ত হয়ে এক সময় মুখ লুকায় কোন গাছের আড়ালে, মুক্তির আশায়। কিন্তু, আসলেই কি সে মুক্তি পায়?..........কখনও পেয়েছিল?...........কিংবা পাবে?
অফিস থেকে বেড়িয়ে এলেন শরাফত আলী। নিঃশ্বাস নিতে তার বেশ কষ্ট হচ্ছে। শহরের বাতাস যেন আরও বেশি দূষিত হয়ে গেছে। আনমনেই আকাশের দিকে তাকালেন একবার। পশ্চিম আকাশ তখন রক্তে লাল!.......নাকি লজ্জায়? ভাবার অবকাশ পেলেন না শরাফত আলী। কেননা তাকে হাটতে হবে..........হয়ত অনেকটা পথই হেটে যেতে হবে............গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।