মায়াবী তারা

দিগন্ত (মার্চ ২০১৫)

আনওয়ারুল হক
  • ১৬
  • ২৮
চাঁদনি রাতে খোলা জায়গাটায় এখনো আড্ডা জমে। হৈ হুল্লড়ে, আনন্দ উচ্ছ্বলে কাটে দিন সবার। আমিই শুধু আড্ডার আসরে খানিক দূরে সরে বসে থাকি চুপচাপ। আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে মায়াবী-তারা গুনি। গুনে গুনে ভুল করে আবার গুনি। সময় বয়ে যায়, আড্ডা শেষ হয় -শেষ হয় না তবু আমার তারা গুনা।

আমার তো তারা গুনার কথা ছিল না! কথা ছিল হাসি গুনব, পাওয়া না-পাওয়ার গল্প শুনব, স্বজনের ভালবাসা কুড়াব।
ভালবাসা কুড়াতে পারি নি। অযথা-ই বঞ্চনা কুড়িয়ে জীবনের বোঝা ভারি করেছি। পাওয়া না-পাওয়ার গল্প শুনতে পাই নি। গল্পের সূত্র না পেয়ে বারবার দিক্-ভ্রান্ত হয়েছি। হাসি গুনা হয় নি -বসে বসে শুধু তারা গুনি! এই তারাগুলোই আমার জীবনের উত্থান-পতনের নীরব সাক্ষী। ওরা সব জানে। জানে আমার মনের কথা, আমার প্রিয়জনের কথা, আমার স্বপ্নের কথা, আমার ভালবাসার কথা।

আমি তো শুধু একটি দেহ চেয়েছিলাম, বেশি কিছু চাই নি! দেহের প্রয়োজনে দেহ চাই নি, মনের প্রয়োজনে চেয়েছি। দেহের চাহিদা মেটাতে দেহের অভাব এদেশে নেই, মনের চাহিদা মেটাতে মনের অভাব আছে। দেহহীন মন নেই। তাই মনের প্রয়োজনে দেহ চেয়েছি।

সে মন দেয় নি, দেহ তো নয়ই। এমন কেন হল? অথচ কত বিনিদ্র রজনীর অবসান করেছি তাকে ভেবে ভেবে! কত হোঁচট খেয়েছি চলতে পথে আনমনে! কতবার অভুক্ত থেকেছি তার চলার পথ চেয়ে চেয়ে! কতবার দাঁড়িয়েছি তার মুখোমুখি! চোখে চোখ রেখে শুধু একটি কথা বলতে চেয়েছি -যে কথা শুধু একজনকেই বলা যায় -একবারই বলা যায়, বারবার বললে মিথ্যে শুনায়। সুযোগ ছিল বলার, তবু বলা হয় নি -অদৃশ্য কোন অপূর্ণতায়। অপূর্ণতাটা কী? -জানি না। অপূর্ণতা থাকার তো কথা না! ভালবাসার জন্য যতটুকু পরিচিতি -ঘনিষ্টতা দরকার তা আমাদের মাঝে ছিল। যতটুকু বিশ্বাস থাকলে একে অপরে নির্ভর করা যায়, তা আমাদের মাঝে ছিল। তাই আমরা কথা বলতাম, নিজেদের মনের কথা, অতীতের পাওয়া না-পাওয়ার কথা, ভবিষ্যতের পরিকল্পনার কথা। আমাদের এক অভিন্ন স্বপ্ন ছিল। স্বপ্ন ছিল নিজস্ব অস্তিত্ব থাকবে, নিজেদের ওজন -আয়তন থাকবে, নিজস্ব বাগান থাকবে। বাগানের মালী হব, বীজ বুনব -চারা লাগাব। স্বপ্নের কথা বলতে বলতে আমরা কখনো গিয়েছি পার্কে, কখনো লেকে, কখনো শহর ছেড়ে পাড়া গাঁয়ে মেঠো পথ ধরে। স্মৃতির পাতাগুলো এখনো ইতিহাস হয় নি। উল্টালেই তার অস্তিত্বের জীবন্ত গন্ধ পাওয়া যাবে। তবু সে এখন অনেক দূরে। যে দূরত্বের ব্যবধান শুধু একটি অদৃশ্য প্রতিজ্ঞার দেয়াল। এই একটি দেয়ালই গড়ে দিয়েছে যোজন যোজন দূরত্ব।

কেন প্রতিজ্ঞা করেছিলাম? ভালবাসলে কি প্রতিজ্ঞা করতে হয়? সে তো আমার কাছ থেকে জোর করে প্রতিজ্ঞা আদায় করে নি। তবুও কেন প্রতিজ্ঞা করলাম? সে শুধু বলেছিল, একটি কথা রাখবি? আগপাছ ভাবার প্রয়োজন মনে করি নি, বলেছি -রাখব। একটি কথা কেন , হাজার কথা রাখলেও অসুবিধা কোথায়? সে উত্তর দেয় নি। খানিক পর নিমীলিত নেত্রে কী যেন ভেবে নড়ে বসল, গলা খাকরি দিয়ে বুঝালো অসুবিধা না থাকুক -কিছু একটা আছে। কী আছে? সে আমার চোখে চোখ রেখে কম্পিত কন্ঠে প্রশ্ন করল -আমাকে ভালবাসিস? এ আবার কেমন প্রশ্ন? প্রশ্ন করে কি ভালবাসার উত্তর পাওয়া যায়? ভালবাসা তো মুখে বলার বিষয় না, অনুভব করার বিষয়! হঠাৎ এ-প্রশ্ন? এবার তার চোখের আয়তন সংকোচিত হল। যে ক’ফোটা চোখের জল আটকে রাখা যায় নি, মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে মুছে নিয়ে বলল -আমি আমার উৎস থেকে উৎপাটিত হতে চাই না।

আমি তাকে আশ্বস্ত করলাম -আমি যতদিন আছি, অন্তত ততদিন তোকে এ নিয়ে শঙ্কিত হতে হবে না -এ আমার প্রতিজ্ঞা। তুই বেঁচে থাক তোর মনের মত। কিছুক্ষণ নীরব থেকে সে প্রশ্ন করল, আমাকে কতটুকু ভালবাসিস?

উত্তর আমি দিতে পারি নি। ভালবাসা পরিমাপের কোন সূত্র আমার জানা ছিল না। শুধু তাকিয়ে থেকেছি তার মলিন মুখাবয়বের দিকে। সেদিন কত অপরিচিত মনে হয়েছে তাকে - ভাবতে অবাক লাগে। পরম পরিচিত মুখ কেন এভাবে হঠাৎ অপরিচিত হয়ে যায়? দেয়ালে টাঙানো মানচিত্রের দিকে তাকিয়ে ধীরে ধীরে সে বলল, বাবা-মা আমার বিয়ে ঠিক করেছেন, আজ পাকাপোক্ত হল। এরপর সে কোনদিকে না তাকিয়ে চট করে উঠে সোজা দরজা দিয়ে বের হয়ে গেল। আমার প্রতিক্রিয়া জানার প্রয়োজনও সে বোধ করে নি।

কয়েক দিন পর তার হবু জামাই বাবু আমার সাথে দেখা করতে এসেছিলেন। বাবু আর আমি সেদিন লেকে গিয়েছিলাম। লেকের ধারে হেটে অনেক কথা বলেছি। ভাড়া করে ডিঙি ভাসিয়ে অনেক দূর গিয়েছি। ভাসতে ভাসতে আমার আর তার হবু বউ সেঁজুতির অনেক স্মৃতিচারণ করেছি। বাবু সরল লোক ছিলেন। তিনি সরল চিত্তে নিজের জীবনের কথাগুলো এমন ভাবে বলে চললেন, যেন যুগ যুগ ধরে তিনি কথাগুলো সঞ্চয় করে রেখেছিলেন অথবা ভবিষ্যতে তার কথা বলার ইচ্ছে নেই তাই সব কথা আজ বলে চলছেন। কীভাবে তার বিয়ে ঠিক হল, কীভাবে সেঁজুতিকে রাজী করানো গেল তা বলার সময় হয়ত একটু সংকোচ বোধ করছিলেন। তবুও ধীরে ধীরে নিচু স্বরে অথচ স্পষ্ট উচ্চারণে সেসব কথা বলে গেলেন। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে আমরা ঘরে ফেরার প্রস্তুতি নিই। ডিঙি ছেড়ে ডাঙায় উঠেই তিনি একটি প্রশ্ন করলেন -ধর্ম বিষয়ে তোমার অবস্থান কী? প্রশ্নটা তিনি না করলেও পারতেন। সারাদিনের ভ্রমণে যেহেতু কোন প্রশ্ন না করে শুধু বর্ণনা করে যেতে পেরেছেন, এখনো প্রশ্ন না করে পারতেন। আমি কোন প্রশ্ন শোনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। উত্তর দেয়ার মত কোন শব্দও খুঁজে পাচ্ছিলাম না। নির্বোধের মত তার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম যেন তিনি ভিন গ্রহের কোন প্রাণী এবং আমি তার ভাষা বুঝি না। তিনি হয়তো আমার অসহায়ত্ব বুঝতে পারলেন, তাই উপসংহার টেনে বললেন -কেউ মানুক না মানুক ধর্ম বলতে কিছু একটা সবার আছে। সে কথা ভেবেই আমাদের বিয়েটা পাকাপোক্ত হয়েছে। আমি জানি, এ-তোমার প্রতি অন্যায়। তবুও পিতামাতার অধিকারের অধীনে তাদের ইচ্ছা-স্বপ্নের অধিকার বলে যে কিছু একটা থাকে....!

যেখানে অধিকারের কথা আসে সেখানে বিতর্ক থাকে। আমি বিতর্ক এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। ক্যারাম খেলার সময় প্রায় প্রতিবারই প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে কথা কাটা কাটি হয়, আমি ভুল নিজের বলে স্বীকার করে খেলা চালিয়ে যাই। আড্ডার আসরে অনেক কথা-ই উত্থাপিত হয় -দেশের কথা, রাজনীতির কথা, অর্থনীতির কথা, সাহিত্যের কথা, দর্শনের কথা। বিতর্ক কখনো কখনো ঝগড়ায়, কখনো হাতাহাতিতে, কখনো লাঠালাঠিতে রূপান্তরিত হয়। আমি এ সবে চুপ থাকতে পছন্দ করি। হাতাহাতি-লাঠালাঠি শেষে কোন না কোন সময় বুঝা যায় , দু’পক্ষের কোন এক পক্ষ ভুল করেছে। তখন বোকামীর লজ্জা ছাড়া কিছুই বাকি থাকে না। তাই যদি হয়, ঝগড়ায় কী লাভ?

আজ আড্ডায় তুফান চলছে। ধর্ম নিরপেক্ষতা, ধর্মান্ধতা আর ধার্মিকতা নিয়ে তুমুল বিতর্ক চলছে। কিছুক্ষণ আগেও পরিবেশটা হালকা ছিল। আমার আর সেঁজুতির বিষয় তুলে একেকজন একেক ভঙ্গিতে কৌতুক করে করে পরিবেশটা জমিয়ে তুলেছিল। ইতোমধ্যে দু’দফা লাল চা সাবাড় হয়েছে। তৃতীয় দফায় পরিবেশিত কাপ থেকে এঁকে বেঁকে মায়াবি ধোঁয়া উড়ে যাচ্ছে। আমি ধোঁয়ার গতিবিধি অনুসরণ করতে গিয়ে দেখি উপর থেকে তারাগুলো আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ওরাও কি আড্ডার হাসি-উচ্ছ্বাস উপভোগ করছে? ওরাও কি আমাকে নিয়ে কৌতুক করছে?

তারাগুলোর কৌতুক নিয়ে ভাবতে ভাবতে একটি প্রশ্ন মনে জাগল, সেঁজুতির পরিবার কি আমাকে নিয়ে কৌতুক করে? সেঁজুতির স্বামীও কি কৌতুক করে? ওকে আমি বাবু বলেই ডাকি। ততদিনে ওর সাথে আমার বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। কয়েকবার তাদের ঘরে নিমন্ত্রণও রক্ষা করেছি। সে চমৎকারভাবে আপ্যায়ন করতে জানে। রসিকতাও জানে বেশ। সেদিন তাদের একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানে আমারও নিমন্ত্রণ ছিল। যথাসময়ে উপস্থিত হয়েছিলাম। অতিথিদের গ্রহণ করার জন্য জামাই বাবু সদর দরজায় দাড়িয়ে ছিলেন। আমাকে বুকে ঝড়িয়ে বললেন, সত্যি করে বল তো -কার কাছে এসেছ? ধক্ করে বুকে শব্দ অনুভব করেছিলাম। তবুও কপট হেসে বললাম -কে এমন আছে, যার কাছে আসতে পারি? জামাই বাবু হাহ্ হাহ্ হা করে বুক ফাটা হাসি দিলেন। তিনি কি বুঝে হাসলেন নাকি না বুঝে হাসলেন আমি জানি না, তার সাথে আমিও হাসতে হাসতে ঘরে প্রবেশ করেছিলাম।

দু’তলার দক্ষিণের বড় ব্যালকনিটাতে চেয়ার পাতা ছিল। আমি আর জামাই বাবু মুখোমুখি বসেছিলাম। সেঁজুতি চা দিয়ে গেল। চুমুক দিতে দিতে একটি কথা ভাবছিলাম -বাবু কি রসিকতা করেছিল নাকি প্রশ্ন করেছিল? ভাবতে ভাবতে বাইরের জাম গাছটার দিকে নজর এল। সেখানে একটি অচেনা পাখি বিব্রতকর স্বরে আওয়াজ করছিল। পাখিটি কী বলতে চেয়েছিল? সেও কি রসিকতা করছিল? নাকি গোপন কথা ফাঁস করছিল? সে কি জেনে গেছে যে, বিয়ের পর থেকে বহু বার আমি এই জাম তলায় আড়ালে দাঁড়িয়ে সেঁজুতিকে একনজর দেখার জন্য দিন-রাত এক করেছি? পাখিটির আওয়াজ যতই শুনি ততই মনে অজানা ভয় বাড়তে থাকে। কখন বাবু নিজের চেয়ার ছেড়ে আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বুঝতেই পারি নি। আমার পিঠে হাত রেখে বললেন, কী ব্যাপার? তোমাকে বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছে! কোন সমস্যা?

আমি তার মুখের দিকে তাকিয়ে তখন বলেছিলাম, কোন সমস্যা নেই। আমি শুধু ওটুই বলেছিলাম। এর বেশি কিছু বলি নি। আমি তাকে কী করে বলি, জাম গাছের অচেনা পাখিটি আমার মনে ভীতির সঞ্চার করেছে। জামগাছটা আমার ক্ষমতা-অক্ষমতার চূড়ান্ত সীমা -এ কথা আমি তাকে কী করে বুঝাই? বাবুও আমাকে অতিরিক্ত প্রশ্ন করে নি। সে হয়তো জানে মানুষের ব্যক্তিগত কিছু সমস্যা থাকতেই পারে, এসব ঘাটাঘাটিতে কাজ নেই। তাই সে আমাকে ভাবতে দিয়ে চায়ে চুমুক দিল। আমিও চায়ে চুমুক দিতে দিতে জাম গাছের দিকে তাকিয়েছিলাম। অচেনা পাখিটিকে আর দেখা যায় নি। পাখির খোঁজে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি -সেখানে গুচ্ছ মেঘ আমারই অন্তরের প্রতিচ্ছবি অংকিত করে যেন।

একটু পর সেঁজুতি এল। আমার দিকে কতক্ষণ তাকিয়েছিল জানি না, চেয়ার টেনে পাশে এসে বসে উৎকন্ঠিত হয়ে বলল -অসুস্থ? আমি কী বলব ভেবে পাচ্ছিলাম না। ততক্ষণে সে আমার কপালে হাত দিয়ে পরীক্ষা করে দেখেছে জ্বর আছে কি না। জ্বরের অস্তিত্ব না পেয়ে সে তার স্বামীর দিকে তাকিয়ে বলল -ঘটনা কী?

তাকে প্রশ্ন করে কী লাভ? সে কি জানে, কোনটা জ্বরের উত্তাপ কোনটা মনের উত্তাপ? তবুও সে উদ্দেশ্যহীন ভাবে উত্তর দিল -হয়তো কোন কারণে চিন্তিত! আমি ভাবি, চিন্তার কারণ আবিষ্কার করার ক্ষমতা কি তার আছে? সে ক্ষমতা না থাকলেও অন্য এক ক্ষমতা তার আছে; সহজেই তিনি মানুষকে আপন করে নিতে পারেন। তাই তার সাথে আমার শত্রুতার বদলে বন্ধু্ত্বই হয়েছে। দু’জনেই অনেকটা জোরাজুরি করে আমাকে বিশ্রাম নিতে বলে একটি কক্ষে শুয়ে দিল। জানালার পর্দা ফেলে রুমের আলো কমিয়ে দিয়ে দরজা আটকে দেওয়ার সময় সেঁজুতি বলল -কিছু লাগলে বলিস, হ্যাঁ?

এরপর দু’জনেই অতিথি অভ্যর্থনায়ে লেগে গেল। মাঝে মাঝে জামাই বাবু খোঁজ নিয়েছেন। সেঁজুতিও দু’একবার উঁকি মেরে একবার রুমে ঢুকেছিল। বিছানায় আমার পাশে কিছুক্ষণ বসে থেকেছিল। তার নীরবতা ভঙ্গ করতে প্রশ্ন করলাম -কিছু বলবে? সে বলল, না কিছু বলব না, এমনে কিছু দরকার কিনা জানতে এসেছিলাম।

সে কি সত্যিই জানতে এসেছিল? তার নীরবতা দ্বিমুখী অর্থ দেয় বলে আমাকে বিভ্রান্তিতে ফেলেছে। আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না, কী বা করার আছে? আমি কি তাকে বলতে পারি -আমার কী দরকার? একটা সময় ছিল, যখন ইচ্ছামত তাকে মনের কথা বলে যেত। এখন কী ওসব বলা যায়?

সে বলে -কিছু বলছ না যে? সে জানে না, আমি তার প্রশ্নের সঠিক উত্তর উচ্চারণ করতে পারব না। আমার নিজস্ব সীমা অতিক্রম করে কী করে বলি, আমার কখনো কোন কিছুর প্রয়োজন ছিল না, তোমাকেই শুধু প্রয়োজন ছিল।

সে খুব যত্ন করে একটি চাদর এনে গায়ের উপর বিছিয়ে দিল। মাথার পাশে বসে চুলে হাত বুলাতে লাগল। আমি স্মৃতিকাতর বলে বার বার অতীতে ফিরে যাই। এভাবেই সে মাথায় হাত বুলিয়ে এক সময় আমার ক্লান্তি দূর করত। তার হাতের কোমল স্পর্শে আমার কষ্টগুলো মুছে যেত নিমিষে। এখন তার হাতের স্পর্শ উষ্ণতা জাগায় কেবল, ক্লান্তি দূর করে না -কষ্টও মুছে না। কী হবে সে উষ্ণতায়, যে উষ্ণতা শুধু শরীরকে জাগায় -হৃদয়কে জাগায় না?

সেবার ফেরার সময় প্রতিবারের মত দু’জনেই আমাকে খানিক এগিয়ে দিয়ে এসেছিল। আমি সেখান থেকে সরাসরি আমাদের নিয়মিত আড্ডার আসরে উপস্থিত হয়েছিলাম। আজও ওদের নিমন্ত্রণে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে সরাসরি আড্ডার আসরে চলে এসেছি। আসরের লোকেরা জানে আমি কোন ঘাটের জল খেয়ে এসেছি। সে সূত্র ধরে তারা নানান কথা -উপকথার অবতারণা করে। ঠাট্টার ছলে অনেকে অনেক কথাই বলে। আমি খানিকটা দূরে সরে বসে আকাশ দেখছিলাম। এক পর্যায়ে রসিকতা কীভাবে বিতর্কে রূপ নিয়েছে আমি টেরও পাই নি। আমি শুধু আকাশের তারাগুলো দেখছিলাম। তারাগুলোকে আজ বেশ উজ্জ্বল দেখাচ্ছে। উজ্জ্বল মায়াবী তারা গুনতে আমার ভাল লাগে। এদের হট্টগোলে আমার গণনা বারবার ভুল হয়। তবুও আমি তারা গুনি। তারাগুলো গুনে রাখা দরকার। কত তারা আমার কষ্টের কথা জানে তা আমাকে জানতে হবে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আলী হোসাইন আমায় কাঁদালেন। আবেগের সবটুকুন নাড়ালেন। কিছুটা সময় অশ্রু সাগরেও ভাসালেন।
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন যে কাছে ছিল সে আজ এক দিগন্ত দূরে! কিন্তু তার ছায়া এখনো...। ভাল লিখেছেন। ভাল লেগেছে। শুভেচ্ছা রইল।
আন্তরিক শুভেচ্ছা রইল
শেখ শরফুদ্দীন মীম তারাগুলো গুনে রাখা দরকার। কত তারা আমার কষ্টের কথা জানে তা আমাকে জানতে হবে।...ভালো লিখেছেন। ভোট রেখে গেলাম। সময় করে আমার কবিতাটি( আলোর সন্ধানে) পড়বেন।
মনজুরুল ইসলাম "দেহের প্রয়োজনে দেহ চাই নি, মনের প্রয়োজনে চেয়েছি"-উক্তিত অনেক ভালো লাগলো.চাপে কিংবা সেচ্ছায় হিক সেযুতিদের ভুমিকা এরকমই.অনেক ভালো লিখেছেন.
সুন্দর পয়েন্ট আউট করেছেন। অশেষ ধন্যবাদ।
প্রিন্স ঠাকুর ভাল লাগল। শুভকামনা নিরন্তর। আমার কবিতাটি (দিগন্তের মাঝে বিন্দু) পড়ার আমন্ত্রন রইল।
সৃজন শারফিনুল ভাল লাগলো বেশ, ছড়িয়ে থাকুক আবেশ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ
আমির ইশতিয়াক ভাল লিখছেন।
শুভেচ্ছা জানবেন।
মোহাম্মদউল্লাহ ফারুক হাতাহাতি-লাঠালাঠি শেষে কোন না কোন সময় বুঝা যায় , দু’পক্ষের কোন এক পক্ষ ভুল করেছে। তখন বোকামীর লজ্জা ছাড়া কিছুই বাকি থাকে না। তাই যদি হয়, ঝগড়ায় কী লাভ? বাস্তবতার চমৎকার উপস্থাপনা
আমার কাছে তা-ই সত্যি মনে হয়। সে অনুসারেই লিখা। ধন্যবাদ আপনাকে।
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,পাতায় আমন্ত্রন রইল।

১৫ জানুয়ারী - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪