ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি পার্শি বিশি শেলি। ইংল্যান্ডের সাসেক্সে ১৭৯২ সালের ৪ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। কবি ছাড়াও তিনি ছিলেন নাট্যকার, প্রবন্ধকার ও ঔপন্যাসিক। তাকে ইংরেজি রোমান্টিক ধারার কবিদের অন্যতম ধরা হয়। ইংরেজি ভাষায় গীতিল কবিতার উৎকৃষ্ট উদাহরণ তার কবিতা। রাজনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকে তার দৃষ্টিভঙ্গি সে সময়ে বেশ বিতর্কের সূচনা করে। জীবদ্দশায় খ্যাতি না মিললেও মৃত্যুর পর তার কবিতার মূল্যায়ন শুরু হয়।
শেলির বাবা স্যার টিমোথি শেলি ছিলেন সংসদ সদস্য ও মা এলিজাবেথ পিলফোর্ড বিশাল ভূ-সম্পত্তির অধিকারী। বাড়িতে তার লেখাপড়ার হাতেখড়ি। শিক্ষক ছিলেন রেভারেন্ড ইভান এডওয়ার্ড। মাছ ধরা, শিকার ও খেলাধুলায় তার শৈশব বেশ আনন্দময় কেটেছে। ১৮০২ সালে মিডলসেক্সের সিওন হাউস একাডেমি অব ব্রেন্টফোর্ডে ভর্তি হন। ১৮০৪ সালে ভর্তি হন ইটন কলেজে। এখানে তার সময় ভালো কাটেনি। ১৮১০ সালের ১০ এপ্রিল অক্সফোর্ডের ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে মেট্রিক পাস করেন। বলা হয়ে থাকে তিনি মাত্র একটি লেকচারে হাজির ছিলেন, কিন্তু বাসায় প্রতিদিন ষোল ঘণ্টা পড়তেন। তার প্রথম প্রকাশনা ছিল ওই বছর। গথিক ধাঁচের উপন্যাসটির নাম জাসট্রোজ্জি। একই বছর বেনামে প্রকাশ করেন কবিতার বই অরজিনালি পয়ট্রি বাই ভিক্টর অ্যান্ড কাজির। পরের বছর গথিক ধাঁচের দ্বিতীয় উপন্যাস ও দ্য নেসেসিটি অব এথিজম নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন। ১৮১১ সালে নাস্তিকতাকে সমর্থন করে একটি পুস্তিকা লেখার জন্য সে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হয়।
লর্ড বায়রন, লেইগ হান্ট, টমাস লাভ পিকক ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী ফ্রাঙ্কেনস্টাইন খ্যাত ঔপন্যাসিক মেরি শেলি তখনকার অন্যতম কবি ও লেখক। তিনি এ ধারার ভাববিলাসী লেখক চক্রের অন্যতম ছিলেন। তার ঘনিষ্টজনরা ছিলেন সে সময়ে অগ্রসর মানুষ। এর মধ্যে ছিলেন তার শ্বশুর দার্শনিক উইলিয়াম গডউইন। শেলির বিরুদ্ধে সবসময় অভিযোগ ছিল ধর্ম অবমাননা বা রাষ্ট্রদ্রোহের। এ সব অভিযোগে যেন না পড়তে সে সময় প্রকাশক ও সাময়িকীগুলো তার লেখা ছাপতে ভয় পেতেন। পাছে জেল-জরিমানায় পড়তে হয় কিনা। বর্তমান সময়ে শুধু সাহিত্য নয় প্রধান সামাজিক ও রাজনৈতিক চিন্তায় তার প্রভাব থাকলেও তিনি তার কিছুই দেখে যেতে পারেননি।
পরবর্তী সময়ে তিনি তিন-চার প্রজন্মের কবিদের আদর্শে পরিণত হন। এর মধ্যে রয়েছেন- ভিক্টোরিয়ান ও প্রাক-রাফায়েল কবি রবার্ট ব্রাউনিং ও দান্তে গ্যাবিয়েল রোসেট্টি। অস্কার ওয়াইল্ড, থমাস হার্ডি, জর্জ বার্নাড শ, ব্রাটার্ন্ড রাসেল, ডব্লিউ বি ইয়েটস, কার্ল মাক্স, উপটান সিনক্লেয়ার ও ইসাডোরা ডানকানের মতো লেখকদের দ্বারা তিনি প্রশংসিত হয়েছেন।
তার সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পাওয়া ধ্রুপদি কবিতার মধ্যে রয়েছে- অজাইমানডিয়াস, অডি টু দ্য ওয়েস্ট উইন্ড, টু আ স্কাইলার্ক, মিউজিক, হোয়েন সফট ভয়েসেস ডাই, দ্য ক্লাউড অ্যান্ড দ্য মাস্ক অব এনার্কি, কুইন মাব, অ্যালাস্টার, দ্য রিভল্ট অব ইসলাম, দ্য সেনসি ও প্রমিথিউস আনবাউন্ড।
শেলি ১৮২২ সালের ৮ জুলাই ইতালিতে সমুদ্রে ডুবে মারা যান।
সূত্র : অনলাইন।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী নয়।।