একটি কড়ই গাছ এবং তারপর....

স্বাধীনতা (মার্চ ২০১১)

আহমাদ মুকুল
  • 0
  • ৭৯
"বাজারটা ৫০ বছরের পুরানা, বুজস মিয়া ?'' অনেক পুরনো ঘটনার সাৰি খলিল মিয়ার জড়ানো কণ্ঠ।
- কড়ই গাছটা তো মনে লয় ১০০ বছরের পুরানা, জমশের মিয়ার জবাব, এইডা তো আরো বেশী দেখছে, তয় কাটেন কেন?
- না কাইটা করম্নম কী, মানুষ মরতে দিমু? দেহ নাই, করম আলীর দোকানটা মিস্সা গেছে ডাল পইড়া?
গ্রামের বাজারে জড়ো হয়েছে খান দশেক মানুষ। গতকাল রাতে শতবর্ষী কড়ইয়ের একটি ডাল ভেঙে রামখা বাজারের বেশ কয়েকটা দোকান-ঘর ধ্বসে গেছে। এ রকম ছোট-খাট দূর্ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। এবার বাজার কমিটি পণ করেছে- গাছটা আর রাখা যাবে না। মৃতপ্রায় গাছটার ৰমতা নেই আর এর ছড়ানো ডালপালাকে আগলে রাখার। ছাল-বাকল ভালো দেখালেও ভেতরে পোকায় কেটে মিসমার।
- দেহো মিয়ারা, গোড়া খুচিয়ে গাছের দূরাবস্থা সবাইকে দেখালো খলিল মিয়া। নিরম্নপায় একটা ভঙ্গি করলো- বাজার কমিটির সভাপতি হিসেবে অপ্রিয় কাজটি তাকেই করতে হচ্ছে। আশে পাশে তাকিয়ে কয়েক জনের সমর্থনের ভঙ্গি পেলেও যতোটা আশা করেছিল ততোটা নয়। মনে মনে ভাবলো, নরম হওয়ার সুযোগ নাই, গাছটার নিকাশ কালকের মধ্যেই করতে হইবো। গাল পাড়লো নিরবে.... হারামজাদা করাতি! নবাবজাদা, আজকে পারবো না, কাইল আইবো। ভাবতে ভাবতে গতকাল রাতে ফিরে গেল সে।
স্বপ্নটার কথা মনে উঠতেই চমকে উঠে সে.... একই স্বপ্ন কয়েকবার, তার উপর এমন ভয়াবহ, কেই বা মাথা ঠিক রাখতে পারে? গত রাতেরটা স্পষ্ট মনে আছে। কড়ই গাছটার গোড়ায় শান বাধানো জায়গাটায় গোল হয়ে বসেছিল লোক গুলো....! মাথামুন্ডু কিচ্ছু বোঝা গেল না....অস্পষ্ট কথা কিছু মনে পড়ে, কীসের বলে বিচার....জুরি বোর্ড। খামাখা স্বপ্ন! কিন্তু পরেরটুক ভাবলে রক্ত ঠান্ডা হয়ে যায়। কড়ইয়ের পশ্চিম দিকের মোটা ডালটায় তারে ফাসিতে ঝুলাইয়া দিল! কথা হইলো? এমন সৃষ্টি ছাড়া স্বপ্নের কথা জনমেও শুনে নাই খলিল মিয়া। আনমনে গলায় হাত চলে গেলো তার।
এই ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার সে। মসজিদ কমিটি, স্কুল কমিটি, বাজার কমিটি.... এত দায়িত্ব, এই বয়সে আর শরিরে কুলায় না। গত নির্বাচনে তাই দাড়ায় নাই। লোক হিসাবে এলাকায় খুব বদনাম নাই। একটা বড় বদনাম, সযত্নে ঢেকে রাখতে পেড়েছে বুদ্ধিমত্তার সাথে। মুক্তিযুদ্ধের সময় .... সরাসরি সামনে আসে নাই, তবে তলে তলে স্বাধীনতার বিরম্নদ্ধে যা যা করার দরকার সবই করেছে। এই এলাকার ভাল খোজ-খবর রাখে এই রকম দু'একজন জানে, তাদের সবার অবস্থানও ততোটা পরিস্কার না থাকায় খলিল মিয়ার তেমন সমস্যা হয় নাই। আসত্দে আসত্দে স্বাধীনতার পৰের ধারায় মিশে গেছে, চোখে পড়ার মতো কোন পদে যায় নাই, যাতে অতীতের টান পড়ে।
একটা নীতি সে সযত্নে মেনে চলে। হাজার ভালো কাজ করলেও মুক্তিযুদ্ধ কিংবা স্বাধীনতা বিষয়ক কোন কার্যক্রমে তার পা চলে না। কাল রাতে শোয়ার সময় নিজে নিজে হিসাব করে দেখেছে- আজ পর্যনত্দ কোন মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, বা তাদের আত্মীয়-স্বজন তার দ্বারা উপকৃত হয় নাই। এতে তার কোন বিকার বা অনুশোচনা নাই। এমনকি রিলিফের চাল দেয়ার সময় পারলে মুক্তিযোদ্ধার ভাগ থেকে অলৰ্যে এক মুঠি চাল উঠিয়ে রেখে দিয়েছে। অথচ খলিল মিয়া রিলিফ চোর- এ কথা তার শত্রম্নও বলবে না।
বড় কোন স্বপ্ন নাই্ তার। ছেলেমেয়ে মানুষ হয়েছে। সমাজে প্রতিষ্ঠা আছে। একটাই খায়েশ বাকী....একবার চেয়ারম্যান ইলেকশন করার।
জমায়েত আসত্দে আসত্দে বাড়ছে। বেশী ভিড় জমতে দেয়া যাবে না। "আজাইরা মাত্বর বাইর হইবো"- মনে মনে বললো খলিল মিয়া। তখনই লৰ্য করেছে সে....কিছু লোক গজ গজ করছে, মৃদুভাবে।
-ঐ মিয়ারা চলো, ব্যাংকের লোকজন আসতাছে, সাইট আজকেই ফাইনাল হইবো। খলিল মিয়া সবাইকে তাড়া দেয়। অনেক দিন ধরেই এই বাজারে ব্যাংক তহশিল অফিস আনার জন্য সে চেষ্টা করে যাচ্ছে। এলাকায় তার গুরম্নত্ব এমনিতেই অনেক। এ কাজগুলো সারতে পারলে গলাটা আরো উঁচু করা যাবে। ব্যাংকের লোক আসতেছে শুনে লোকজন আরো কিছু বাড়লো। সময়টা অনুকূল। গলা খাকারি দিয়ে আবার বয়ান শুরম্ন করলো খলিল মিয়া।
-ব্যাংক আর তহশিল অফিসের লাইগা না হইলেও ১০ ডেসিমেল জমি লাগবো। তোমরা ভাবছো কিছু? বাজারে এত জায়গা কই ?
- ক্যান, কড়ইগাছটা কাটলে তো এরচে অনেক বেশী জায়গা বাইর হইবো। খলিল মিয়ার ডাইন হাত দরবেশের জবাব।
- কথাডা ঠিক। দীর্ঘশ্বাস ছাড়ার আওয়াজে বললো....গাছটা কাটা ছাড়া আরতো গতি নাই দেখতাছি। খলিল মিয়া অসহায় স্বরে সবার অনুমোদন চাওয়ার ভঙ্গি করলো।
- গাছডা কাটন যাইবো না। এইডা মুক্তিযুদ্ধের সাৰী। তীৰ্ন একটা স্বর ভেসে এলো পেছন থেকে। এই গ্রামের লোক না সে। কন্ঠটা মাইজপাড়ার জমিরের- দেখেন না, পাক বাহিনী পুরা বাজার আগুন দিয়া পুইড়া ফেলার পরও গাছটা বাইচা আছে?
গাছের গায়ের পোড়া চিহ্নগুলো আজ অস্পষ্ট- আমাদের মলিন স্মৃতির মতো। তাই জমির'রা সেভাবে সমর্থন পায় না আজকাল। জমিরের কথায় কেউ গা' করলো কি না বোঝা গেল না। বেশীর ভাগ মানুষই বৈষয়িক.....বাজারে বাড়তি জায়গার প্রয়োজনে নিজের দখলে যেন টান না পড়ে, সেটা নিশ্চিত করতেই চিনত্দিত সবাই।.... গাছ কাটা পড়লে পড়ুক, কার কী এসে যায় !
সবাই যে যার পথ ধরলো। কাল যা করার সকাল সকাল করে ফেলবো, ভাবতে ভাবতে খলিল মিয়াও বাড়ির পথ ধরলো।
ফাল্গুন মাস আসতে না আসতেই... এতো গরম, হাফ হাতা সোয়েটারটা খুলে বসলো খলিল মিয়া। মাথায় ঝামেলা থাকলে সে বিকাল বেলাটা বাড়ির পুকুরে ছিপ ফেলে কাটায়। জিয়ানো মাসে কিলবিল পুকুরটা। পুরোই এলোমেলো সে আজ- দুইবার ফাতনা নড়ার পরও ছিপ টানতে ভুলে গেছে। স্বপ্নের ব্যাপারটা মাথা খেকে সরছেই না !
মাইকিং হচ্ছে কোথাও। অস্পষ্ট শব্দ। কারো নামাজে জানাজা কিংবা ওয়াজ মাহফিল হবে হয়তো কোথাও।
কেরামতটা পাশে থাকলে মন্দ হতো না। কিছু পরামর্শ দরকার ছিল। এইবার কোন চান্স নেয় নি খলিল মিয়া, করাতি সাথে করে নিয়ে আসার জন্য কেরামতকে মধুপুর পাঠিয়েছে। কাল ভোরবেলা ফিরবে।
-জলদি টান দেন, ছিপটা তো টাইনা নিয়া গেলো। দরবেশের কথায় তড়িঘড়ি ছিপ টান দিল সে। ধুর...ঝিম আইসা গেছিলো, খালি বরশিতে আধার লাগাতে লাগাতে দরবেশকে জিজ্ঞেস করলো- কখন আইলা চোরের মতো?
-এইতো, হপায়ই(এখনি)। মাইকিং শুনছেন নি?
- কীসের মাইকিং ?
- শুনেন নাই, শুক্রবার বলে কিসের টীম আইবো, রামখা বাজারে মিটিং হইবো ?
মনযোগ দিয়ে কান পাতলো সে, ".....বিকাল তিনটায় রামখা বাজারে যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক আনত্দর্জাতিক ট্রাইবুনালের তদনত্দ অনুষ্ঠিত হবে...." মাইক আসত্দে আসত্দে দূরে চলে গেলো।
তার অজ্ঞাতে এতো বড় বিষয় ঘটে গেলো ! কেউ তারে জানাইলো না, আয়োজনের ব্যাপারে কিছ্ছু জিগাইলো না! আজ বুধবার। মধ্যে একটা দিন মাত্র। মনের খচ-খচানি তীব্রতর হলো তার।
একটার জায়গায় দুইটা রিলাঙ্নি খেয়ে রাতে ঘুমাতে গেল খলিল মিয়া। ছটফট করতে করতে এক সময়....ডুবে গেল গভীর ঘুমে।
....কারো মুখ চেনা যায় না এ রকম আলো আধারিতে নিজেকে আবিস্কার করলো সে।
অস্পষ্ট আওয়াজ, "....সাৰী লাগবে।"
- সাৰী লাগবো না, ফাসি দেন। সমস্বরের জবাব।
- আইন মেনে বিচার হবে। নির্দেশের সূর।
- আইন মানি না। এখনি ঝুলান। জনতার হুংকার।
- আপীলের সুযোগ দিতে হবে। গুরম্ন-গম্ভীর উত্তর।
- এৰনি ফাসি চাই....ফাসি চাই....ফাসি চাই !!! জনতায় ব্যাপক অনুরণন।
"আইনের আওতায় বিচার, সংবিধানের স্বীকৃতি, আনত্দর্জাতিক অনুমোদন এসব বলে অনেক সময় নষ্ট করছেন। এর আগে চলিস্নশ বছর তো গেছেই....এইভাবে করলে আরো চলিস্নশ বছরেও হইবো কিনা সন্দেহ!"-একজনের বলিষ্ঠ ভাষণ। কন্ঠটা চেনা চেনা, জমিরের মতো। ভাসা ভাসা চিত্রে জনতার আলোড়ন ফুটে উঠলো....এগিয়ে আসছে নিষেধ না মানা জনতা....আসামীর কাঠগড়ায় নিজেকে খুঁজে পেল খলিল মিয়া! ফাসির দড়ির মতো কিছু একটা স্পষ্ট হলো মুখের সামনে।
ঘামে পুরো বিছানা ভিজে গেছে। বুকে তীব্র চাপ নিয়ে বিছানায় উঠে বসলো সে। এক গস্নাস পানি দরকার। ওষুধ দরকার। কেউ নেই তার পাশে। স্ত্রী-সনত্দান শহরে। কেরামতও নেই। বুকের বাম দিকে চাপ বেড়েই চলেছে। শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। ডাক্তার ডাকা দরকার। আর কিছুৰণ টিকতে পারলে হতো!
শেষ মুহুর্তে জমিরের পরিচয়টা মনে পড়লো- পেছনের বাড়ীর বউ রম্নবিনার ভাই সে। আম গাছে ঝোলা রম্নবিনার লাশটা ঝাপসা ভাবে ফুটে উঠলো তার চোখে!...নতুন বউটারে পাক ক্যাম্পে পাঠাইছিলো খলিল মিয়া !
....থার্ড এটাক- ৰীণ স্বরে নিজেকেই শোনালো সে। সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে.....! সকল আলো নিভে নিঃসীম অন্ধকার গ্রাস করলো !
বাইরে একটু একটু আলো ফুটছে।
সূর্য উঠছে। কড়ই গাছটার সবুজ পাতাগুলো আজ যেন একটু বেশী ঝিকমিক করছে সুর্যের আলোয়।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সালেহ মাহমুদ UNION ALL SELECT NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL# মুকুল ভাই, আবারো পুরনো লেখা পড়তে এলাম। এই গল্পটা পড়ে আমি আবেগাপ্লুত না হয়ে পারলাম না। আপনার হাত থেকে এ রকম আরো সিরিয়াস গল্প আশা করি প্রতি সংখ্যায়। ধন্যবাদ।
আহমাদ মুকুল কৃতজ্ঞ করলে, রওশন। আমার অবহেলিত সন্তানটিকে ভালবাসা দিয়ে।
রওশন জাহান পছন্দের তালিকায় যোগ করলাম.
আহমাদ মুকুল অবহেলিত, বঞ্চিত অথচ আমার খুবই প্রিয় এ লেখাটি পড়লে ভাই! তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ, লক্ষীছাড়া। সাথে থেকো।
লক্ষীছাড়া ahmad mukul ভাই, আপনি তো মারাত্মক ভালো গল্পকার, খুবই ভালো লাগলো আপনার লেখাটি পরে, মারহাবা, মারহাবা, l আরবিতে প্রশংসা করলাম বলে আবার রাজাকার ভাইবেন না l
আহমাদ মুকুল আমি কিন্তু ইতিবাচকই দেখছি। মন্তব্য পেলাম কি ভোট পেলাম, তারচেয়ে অনেক বেশী পাওয়া আপনাদের মতো ভক্ত। পারলে আমার সবগুলো লেখাই পড়বেন। এবং সামনেও আমার সাথে থাকবেন। ধন্যবাদ তাবাসসুম আহমেদ-কে
স্য়েদা তাবাসসুম আহমেদ আপনার মা সংখ্যার গল্প পরে এত বেশি মুগ্ধ হয়েচি যে খুঁজে পেতে এই লেখাটিও পরলাম এবং গল্প কবিতাতে যে ভালো লেখার কত অবমুল্লায়ন হয়েচে তাই দেখে আশ্চর্য হলাম.....আমি আসলে আপনার fan হয়ে গেছি.....
রওশন জাহান অসাধারণ। প্রশংসা করার ভাষা খুজেঁ পাচ্ছিনা। আমি খুবই দুঃখিত আগে গল্পটি পড়তে পারিনি। এত সুন্দর গল্প এত কম পড়া হলো কেন বুঝতে পারছিনা। আপনি লেখা বন্ধ করবেন না। চালিয়ে যান।
মামুন ম. আজিজ এখনও পর্যন্ত স্বাধীনতা সংখ্যার যে ক'টা গল্প পড়েছি , এটা তার মধ্যে ভাল। ভাল এর লেখন শৈলী এবং বিষয় বস্তুর জন্যই বিশেষ করে। আমরা সবাই আসুন চিৎকার করে করে যুদ্ধপাপীদের বিচার চাই।

১৯ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী