অপেক্ষা

কোমলতা (জুলাই ২০১৫)

আল- আমিন সরকার
জীবনের শেষ সময়ে এসে বড়ই অসহায় লাগে নাজিম প্রামানিকের । স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে থেকে একেবারে চুপ করে পরে থাকে । অন্ধকার একাকি কবরের মত ঘরে যেন শুধুর মৃত্যুর প্রহর গোনা । খুব ছোট বয়সে বিয়ে করেছিল, মরজিনা খাতুনকে । মরজিনা খাতুনের বয়স সাত কি আট আর নাজিম প্রামানিকের বয়স পনের অথবা ষোল । মরজিনা খাতুনের সেই বয়সে, বিবাহ নামক বিষয়টা সম্পর্কে খূব একটা ধারণা ছিল না । এই জন্য নাজিম প্রামানিক কতই না রাগারাগি করত, পরে মান-অভিমান পরে গেলে, বাজার থেকে আলতা, স্নো , লাল শাড়ি নিয়ে আসত বউয়ের জন্য । আর এতেই বড় খুশি হত মরজিনা খাতুন, কিন্তু স্বামীর সাথে দেখা করার সময় তার দাদীকে সাথে নিয়ে আসতো । সময়ের সাথে সাথে তাদের ঘর আলো করে সন্তানদের জন্ম হল । সবই মনে পরতে থাকে নাজিম প্রামানিকের - বড় সন্তান পেটে আসলে, ও তেমন কিছু খেতে পারত না । আমাশয় হয়ে মরার মত অবস্থা । কবিরাজ আমির কাজি তো বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়ে ছিল । অনেক কষ্টে সে যাত্রায় বেচে গিয়েছিল মরজিনা খাতুন।

সন্তানেরা বড় হলে তারা রাতে আলাদা থাকতে শুরু করে। সকল সন্তানের বিয়ে হয় । মেয়েরা স্বামীর ঘরে চলে যায় । ছেলেরা ও তাদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায় । নাতি – নাতনি নিয়ে মরজিনা খাতুন রাতে থাকে ঘরে । হারিকেন জালিয়ে জানালা অল্প খোলা রাখে, বাইরে বারান্দায় চৌকিতে ঘুমান স্বামীর দিকে নজর রাখে সে । ঈদ, পারিবারিক ও সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সকল মেয়ে, ছেলে, নাতি – নাতনি যখন সকলে এক সাথে আসত । তখন বাড়িটা যেন চাঁদের হাঁটে পরিণত হত । মরজিনা খাতুন সব কিছু সামলাতে ব্যস্ত থাকত আর নাজিম প্রামানিক নামাজ কালাম আর মসজিদে ধর্মীয় কাজে অধিকাংশ সময় দিত । এক সময় নাতি – নাতনীদের সংসার হয় । ছেলেরা ও পৃথক হয়ে যায় । সাথে সাথে তারা দুজনও দুই সংসারে ভাগ হয়ে যায় । এই প্রথম তারা বুঝতে পারে- পৃথিবী চলে অন্য নিয়মে মনের নিয়মে নয় । দুই সন্তানের সংসার হতে দুই জনের জন্য দু-রকম তরকারী আসে ।বড় হিসেবী হয়ে যায় সন্তানেরা । ভাল – মন্দ খাবার হলেও একজনের জন্যই শুধু খাবার আসে তাতে দুজনের হয় না। বাড়ির পাশের কানা ফকিরের চেয়ে নিজেরদের বেশি অসহায় ভাবে তারা। তবুও তো দুজন আছে ।

এক সময় হটাত করেই যেন মরজিনা খাতুন মারা যায়, একেবারে একা হয়ে পরে নাজিম প্রামানিক । সন্তানরা বড় হবার পর সেই যে আলাদা করে নিয়েছিল নিজেদের, তার পর ও মরজিনা খাতুন যে ছায়ার মত ছিল, এই প্রথম সে বুঝতে পারে । সকালে পড়ার জন্য কোরআন শরিফ জায়গা মত গুছিয়ে রাখা, শরবত, খাবার দেওয়া সব যেন আগের মত হয় না । যে ঘরে নাতি- নাতনীদের কোলাহলে ভরে থাকতো, সে ঘর আজ বড়ই বোঝা হয়ে চেপে বসেছে তার মনে । যে বাড়িকে সব চেয়ে আপন মনে করত, সে বাড়ীতে তার মন টেকে না । এখন শুধু স্ত্রীর কবরের পাশে বসে থাকে সে ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
কবিরুল ইসলাম কঙ্ক ভালো লাগালো । আমার কবিতা ও গল্পের পাতায় আমন্ত্রণ রইলো ।
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,ভোট রেখে গেলাম।পাতায় আমন্ত্রন রইল।
সোহানুজ্জামান মেহরান হ্যা ভাল হয়ে, পরবর্তিতে আরো ভাল করতে হবে। শুভ কামনা সাথে ভোট করে গেলাম।

০৯ নভেম্বর - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ৩৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪