দিগন্তে স্বর্গ নরক

দিগন্ত (মার্চ ২০১৫)

ছন্দদীপ বেরা
  • ২৫
শহরের মস্ত বরো ক্রিমিনাল । তুফানভাই । ভালো নাম তপন কুমার ভূস্বামী । যবে থেকে কূকীর্তিতে যুক্ত, তখন থেকে তুফানভাই । শহরে এমন কোনো অপরাধ নেই যেটা এখনও পর্যন্ত তুফানভাই-এর করা হয়নি । চুরি, ডাকাতি, খুন, স্মাগলিং, ড্রাগপাচার, কিছুই বাকি নেই।
তার নিজের একটা দোতলা বাড়ি আছে । বলা বাহুল্য সবই চুরির টাকায় করা । সেই বাড়ির পিছনে খোলা প্রান্তর । দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ । ভয়ে সেই স্থানে সেই বাসা বাঁধেনি । পাখিরাও নেই । বলা যায় না, তাদের পালক চুরি করে । কিংবা তাদেরকেই চুরি করে বিক্রি করে দেয়।
তুফানভাই-এর রোজ সেই মাঠে হাঁটা অভ্যাস ।

এরকমই একদিন হাঁটছে তুফানভাই । হঠাৎ সামনের মাথের শেষে দিগন্তে ধোঁয়াটে মনে হচ্ছে। যেন মনে হচ্ছে কেউ ওখানে জ্বলে পুড়ে মরছে । বা মারা হচ্ছে ।
নরক !! নরকের মতো দৃশ্য । ঐ তো যেন যমরাজ বসে আছেন । তার পাশে চিত্রগুপ্ত হিসেব কষছেন । কিছু লোককে মারা হচ্ছে নির্মমভাবে । কাদেরকে কাটাও হচ্ছে ।
তুফানভাই-এর নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না । কী হচ্ছে এটা !! বারবার চোখ কচলাতে লাগল । মনে হল, যেন আস্তে আস্তে সব দৃশ্য মিলিয়ে যাচ্ছে ।
জীবনে প্রথমবার ভয়ে তটস্থ হয়ে তুফানভাই ঘরে এল । ঘরে সে ছাড়া তার দাদা থাকে । তুফানভাই তার দাদাকে খুব মানে । এক ভাই ছিল । সেই ভাই ভয়ে সেই ঘর ছেড়ে চলে গেছে ।
ঘরে এসেব দাদার ঘরে গিয়ে তুফানভাই বলল-দাদ, ঐ মাঠের শেষে কীরকম নরকের মতো দৃশ্য দেখলাম । জীবনে প্রথমবার আমার বুক ধড়ফড়িয়ে উঠল । কী করি বলতো ?
-আরে ও কিছু না । তোর কূকীর্তি বেশি হয়ে গেছে । তাই তোর ভবিষ্যৎ দেখাচ্ছে ।
-হুঁ । মজা কোরো না ।
-মজা করছি না । সত্যিটাই বলছি ।
তুফানবাই কিছু মনে না করে নিজের কূকীর্তির জন্য সাজতে লাগল । হাফহা৫তা সবুজ রং-এর তিনরঙা কলারবিশিষ্ট একটা গেঞ্জি । পিঠে এক জায়গায় অনেকটা তাপ্পি মারা । মারামারিতে ছিঁড়ে গিয়েছিল । হাতে একটা লাল রঙের ব্যান্ড । মাথাড় মেরুন রঙের নিজের নাম লেখা টুপি । কালো প্যান্ট । তাতে চারটে পকেট । দুটিতে রিভলভার, একতিতে গুলি ও একটিতে ছুরি । মাথার চুলটা মাঝখানে কাটারির মত উঁচু । পাশটায় চুল নেই । না না, গজিয়েছিল । তুফানভাই কেটে দিয়েছে । কপালে হনুমানজী-র তিলক । পরেরদিন আবার সকালে সেই দৃশ্য । নরক !! সাক্ষাৎ নরক, যমরাজ, চিত্রগুপ্ত !
দাদাকে জিজ্ঞেস করতে আবার একই উত্তর ।
কিছুদিন পর পর এরকম ঘটল । ভয়ে তটস্থ হয়ে রউইল তুফানভাই । বাইরে কূকীর্তিতে যাওয়াও বন্দ করে দিন ।
ঘরে বসে বসে তুফানভাই ভাবতে লাগল-দাদা ওরকমভাব এবলল কেন ? আমার ভবভিষ্যৎ ! মানে মৃত্যুর পর আমি নরকে ওরকম ভাবে অত্যাচারিত হব । কী ভয়ংকরভাবে !! আমি কি এতই খারাপ কাজ করি যে নরকা আমাকে অত কষ্ট পেতে হবে ? কখবনও এরকম ভাবিনি তো । যেসব লককে আমি খুব করেছি , যাদের ঁটাকা ছিনতাই করেছি---তারা আমাকে যে কত অবিশাপ দিয়েওছে তার ঠিক যেই । কিন্তু কখনও তো এভাবে ভাবিনি । আমি কী তাহলে ভালো হতে পারব ? লোককে মারলে কী-ই বা হবে । তার থেকে কিছু ভালো কজ করলে তো হয় ।
সেইদিন থেকে সেই তুফানভাই আবার পূর্বের তপন কুমার ভূস্বামীতে ফিরে এল । ভালো হয়ে গেল । সেই আগী ভয়ানক বীভৎস পোশাকের বদলে সাধারণ হয়ে গেল ।
পরের দিন সেই মাঠের দিগন্তের সীমানাটা আবার ধোঁইয়াটে হল । এবার কিন্তু যমালয় দর্শন হল না । স্বররগের দর্শন হল। শ্বেতশুভ্র সেই অপূর্ব দৃশ্যদেখল তপন । অতি অপূর্ব !!!!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
শেখ শরফুদ্দীন মীম ভালো লিখেছেন। শুভকামনা রইল । সময় করে আমার কবিতাটি( আলোর সন্ধানে) পড়বেন।
প্রিন্স ঠাকুর লাগল ভাল। শুভকামনা নিরন্তর। আমার কবিতাটি (দিগন্তের মাঝে বিন্দু) পড়ার আমন্ত্রন রইল।
মোঃ আক্তারুজ্জামান খুবই ভালো লিখেছেন। শুভ কামনা।
রবিউল ই রুবেন ভালো লাগল। ভোট করলাম। আমার ‘তাঁরার মালা গাঁথি’ কবিতাটা পড়ার আমন্ত্রণ রইল।
নিশ্চয় । ধন্যবাদ
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,পাতায় আমন্ত্রন রইল।
গোপাল দারুন গল্প তো ।
মোহাম্মদ সানাউল্লাহ্ তোমার মত করে আমরা সবাই যদি ভাবতে পারতাম কিংবা চিন্তা করতাম তবে পৃথিবীর চিত্রটাই বদলে যেত ! খুব ভাল লাগল তোমার সুন্দর গল্পটা ।
রুহুল আমীন রাজু ভালো লাগলো .........(আমার পাতায় 'কালো চাদ' গল্পটি পরার আমন্ত্রণ রইলো )
বেশ । ভালো থাকবেন
দীপঙ্কর বেরা অন্য রকম ভাবনায় সমৃদ্ধ । বেশ । আরো ভাল লেখা পাবই ।

০২ সেপ্টেম্বর - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ৩৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪