স্তব্ধতার নির্জন গন্ধ

শুন্যতা (অক্টোবর ২০১৩)

নুরুন্নাহার শিরীন
  • 0
আজকের আকাশরেখাতল জুড়ে ক্যামন এক অচিন নৈঃশব্দজালে আটকা পড়া আমার অজানিত অস্তাচলগামী অনন্তযাত্রাধ্বনি নিজেই শুনছিলাম টুপটাপ ধমনীময় ভেসে বেড়ানো রক্তকণিকার হঠাত থেমে পড়ার ধকধকে বেদনাজাত অভিজ্ঞায়। বড়োই অভাবিত বেদনা। বিস্ময়াভিভুত। অবাঙ। আদতেই এমন আগে ঘটেনি আর। অথচ, খানিক আগেও দিব্যি সচল ছিলো সমস্ত জাগতিক জীবনবোধ। যদিও অর্ধজীবন ইতোমধ্যে অতিবাহিত। তার আধেক অবিবাহিত কালের তুমুল সবুজ উড্ডীনতাময় জীবন। অতঃপর বিবাহিত তিরিশ পর্বের উত্থানপতনের স্বপ্ন এবঙ স্বপ্নাদ্যের ধারাবাহিক বিচিত্র জীবন। বহুবিধ সুখ ও অসুখের সাতকাহন। তার ভিতর দিয়ে যেতেযেতেই হুঁশ করে যে কখন জীবন এসে দাঁড়িয়ে পড়লো ষাটের প্রায় দোরগোড়ায়! এই সত্যটি আজকের মতোন করে বোঝাও হয়নি, হঠাত যদি না আমার নিজেরই নির্জনে নিজের ধমনীজাত রক্তকণিকার অচলাবস্থা টের পেতাম আজ। যদিও অনেকটা কালের অতিবাহিত জীবনে কিছুমাত্র কমতি কিংবা ঘাটতি টের পাইনি ততো। যতটা আজ এইমাত্র পেলাম। এ যেন একটামাত্র জীবনের স্বল্পমেয়াদী খসে পড়ার ঘন্টাধ্বনি। ঘড়ির সচল পেন্ডুলামটা আচমকা বিকল হয়ে যাবার আগাম সংকেত। জরুরী ঘোষণাবার্তা ছাড়াই যবনিকা কম্পমানতা মেনে নেবার সান্ধ্য আইন জারি। সন্ধ্যে কি অনেক আসেনি আগে! হ্যাঁ সেতো এসেছিলো অনেকবার। কিন্তু তখন তার আগামী অনেক স্বপ্নিল সকালের সূর্যোদয়ের সম্ভাবনাময় সময় ছিলো। তখন তার অনেক সংকট সুদ্ধো আসছে দিনের প্রতিশ্রুতিও ছিলো। তখন তার চিলতে আকাশরেখাতলেও আলোকের বিভাসা ছিলো। তখন তার সন্ধের পদচিহ্নে দিকনির্দেশনার স্পষ্ট আভাস ছিলো। নিজের ছায়ার ভিতর গর্ভজাত উত্তরসুরীর আশ্চর্য মায়াময় ছায়ান্ধ বন্ধনের সুতীব্র শিকড়ের প্রগাঢ় উষ্ণতায় জড়ানো আবাহন ছিলো। অথচ আজ আশ্চর্য উদাসীন অন্যজীবন এসে জানান দিলো - জীবনে যত অস্থিমজ্জাহাড়ের স্পন্দিত স্পর্ধিত চলাচলে জীবন উপভোগ্য অনির্বচন ছিলো - সে আজ নিতান্ত অর্বাচীনের তুচ্ছতায় ভঙুর এক জীবন মাত্র। অস্থিমজ্জাহাড়ের প্রায় বুড়িয়ে যাওয়া স্থবির জবুস্থবু রক্তকণিকাদের আজ বিষম অসুখ করেছে। দূরারোগ্য জটিল ক্যান্সারের প্রথম ধাপে দাঁড়িয়ে আমার অবাঙ চেয়েচেয়ে দেখাই সার। অসার আর সকল অভিজ্ঞা আমার। স্তব্ধতার নির্জন গন্ধে আমার অজানিত সকল ভাব জগতে অস্তাচলগামী যবনিকাপাতের কম্পমান ধূসর পর্দা দুইচোখের গ্লুকোমাজলে ডুবন্ত যোগসূত্র খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরতে চাইছে ... ... ... ...! জানি কেঁদেও পাবে না সে সামান্য খড়কুটো পাতাল খুঁড়েও আর ... ... ... ...! জীবন এমনই আদতে। এমনই নির্জন একা। একাই যেতে হয় হঠাত। একদম দোসরহীন। হয়তো সেথায় অপেক্ষমান অন্য কোনও অচিন জীবন। হয়তো না। আমরা কেউ জানি না সে ক্যামন। সে এক অজানিত নৈঃশব্দের তুমুল নির্জন টুপটাপ খসে পড়ার জীবন্ত স্পন্দনে জড়ানো জীবনেরই রক্তাক্ত ক্রন্দন।

ভাদ্র ১৪২০ বঙ্গাব্দ।।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ওয়াহিদ মামুন লাভলু সে এক অজানিত নৈঃশব্দের তুমুল নির্জন টুপটাপ খসে পড়ার জীবন্ত স্পন্দনে জড়ানো জীবনেরই রক্তাক্ত ক্রন্দন। ভালো লাগলো।

২১ আগষ্ট - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "পদত্যাগ”
কবিতার বিষয় "পদত্যাগ”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ জুন,২০২৫