রাতের নিস্তব্ধতার সূর মূর্ছনা

রাত (মে ২০১৪)

ওয়াহিদ মামুন লাভলু
  • ১৫
  • ১৯
এক

অবিলম্বে ফরিদকে বাড়ি যাওয়ার জন্য তার স্ত্রী টেলিগ্রাম করেছে।

শুধু টিনের ১৬ ইঞ্চি সুটকেসটা গুছিয়ে কেরানীগঞ্জের পান গাঁও-এর জায়গীরদারের বাড়ি থেকে পুরনো ঢাকায় ওর বাবার গ্রাম্য বন্ধু স্থানীয় অভিভাবক জালাল উদ্দিনের শূলসুধা বিল্ডিং-এ এলো ফরিদ। বড় ভগ্নীপতি নঈম উদ্দিনকে চোখের অপারেশনের পর শূলসুধায় রেখে দিয়েছিল একজন সাথী পাওয়ার আশায়। সে সাথীর আর দরকার হলো না, ফরিদই তাকে সাথে করে পাবনার পথে রওয়ানা হলো। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিকেল কলেজের একজন ছাত্র হয়ে ফরিদই চেষ্টা করে ভগ্নীপতিকে ভর্তি করে দিয়েছিল।

রাত সাড়ে ১০টায় জগন্নাথগঞ্জের ট্রেনে চড়লো। জগন্নাথগঞ্জ থেকে সিরাজগঞ্জ এসে ট্রেন ধরে ঈশ্বরদীতে এসে নামলো। ওখান থেকে বাসে বিকাল ৫টার পর পাবনাতে পৌঁছালো।

নিকটবর্তী ওয়াজেদের হোটেলে দু’জন ইলিশ মাছ দিয়ে ভাত খুব পেট ভরে খেলো। ভগ্নীপতিকে ফরিদ বললো, ‘‘আমরা এখনই বাড়ি রওয়ানা হবো।’’
ভগ্নীপতি বললো, ‘‘অসম্ভব।’’

আতাইকুলা পর্যন্ত ইট বিছানো থাকলেও তারপর চৌদ্দ মাইলের মত কাঁচা রাস্তা। মে মাস থেকে ডিসেম্বরের পূর্ব পর্যন্ত বৃষ্টির কারণে পাবনা-বেড়া গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে। কাজেই এই প্রথম আগস্টের দিকে গাড়ির চিন্তা তো করাই যায় না। পায়ে হেঁটে যাওয়ারও কল্পনা করা যায় না অন্ধকার রাতে। কারণ বর্ষার রাস্তায় কত কাঁদা, কত ভাঙ্গা, কত খাদ রয়েছে! তারপর আছে হঠাৎ ঝমাঝম বৃষ্টি। আর আছে চোর-ডাকাত। সাঁথিয়া পর্যন্ত শূয়োর-শিয়াল প্রভৃতি জন্তুর ভয়ও আছে!

কিন্তু ট্রেনের ভিতরে ফরিদ তন্দ্রার মধ্যে একটা দুঃস্বপ্ন দেখেছে। তার বাবা যেন মারা গেছেন। বাড়ির উঠানে তাকে গোছল করিয়ে কাফন পরানো হচ্ছে। বহু লোক জমায়েত হয়েছে জানাজার জন্য। পায়ের দিকে কাপড় একটু কম পড়েছে, অমনি ওর মেজ ভগ্নীপতি সাহাব উদ্দিন সরকার হাঁটু গেড়ে বসে কাফনের কাপড় ধরে টান দিয়ে কাফন ঠিকমত পরিয়ে দিলেন।

এর আগে বাবার নাম দিয়ে জালাল উদ্দিনের কাছে টেলিগ্রাম করা হয়েছিল ‘‘Send Wahab immediately’’। ফরিদের পূর্ণ নাম মোঃ আব্দুল ওয়াহাব। গোয়ালন্দ ঘাটে ষ্টীমারের মধ্যে ও স্বপ্ন দেখেছিল, ষ্টীমারের ডেকের উপর পাশের বাড়ির ওসমান চাচার সাথে দ্বৈত তলোয়ার যুদ্ধে ওসমান চাচার তলোয়ারের কোপে ওর ডান হাতটা একেবারে বগলের কাছ থেকে পড়ে গেল। তারপর বাড়ি এসে দেখলো, দক্ষিণ হস্তস্বরূপ অব্যবহিত ছোট ভাই আফছার মারা গেছে!

স্বপ্নটি যদি সত্যি হয় তবে বাবার আকস্মিক মৃত্যু যে দূর্গম ও অনিশ্চিত পথে ফরিদকে দাঁড় করিয়ে দিল তার কাছে এই অন্ধকার রাতের বর্ষার কাঁচা রাস্তা-তার শত বিপদাপদসহ হলেও অত্যন্ত সূগম ও নিশ্চিতই। তাই তারা ‘টম টম’-এ উঠে বসলো।

আতাইকুলা পৌঁছালো রাত প্রায় ৯টায়। একটা মুদি দোকানের কাছে টম টম থামলো। টম টমের হারিকেনের আলোতে ভাড়াটা চুকিয়ে দিল।

লুঙ্গী পরে শুধু গেঞ্জীটা গায়ে রেখে বাকি জামাকাপড় ভগ্নীপতির কাঁধে ঝুলানো ব্যাগে ভরলো দু’জনেই, ফরিদের Cyma-Triplex ঘড়িটাও সুটকেসটার মধ্যে ভরলো। তারপর কাছা মেরে এক হাতে সুটকেস ও অপর হাতে জুতা নিয়ে রওয়ানা দিল। ঘুট-ঘুটে অন্ধকার। প্রথম প্রথম কতবার যে পানি-কাদাভর্তি গর্তের মধ্যে পড়ে গেল ফরিদ-আর কতবার যে পড়তে পড়তে বেঁচে গেল তার ঠিক নেই।

মাধপুর পার হলো। নিঃশব্দ ঘন ঘোর অন্ধকার রাত ক্রমশঃ গভীর হতে লাগলো। দু’একটা কুকুরের ঘেউ ঘেউ যে মাঝে মধ্যে শোনা যাচ্ছিলো তাও আর শোনা যায় না। কেবল নিজেদের হেঁটে চলার ছপ ছপ শব্দ আর মাঝে মধ্যে রাত জাগা পাখির করুণ কু কু শব্দ ছাড়া আর কোনো সাড়াশব্দ নেই! রাত গভীরতর হলে সে শব্দও বন্ধ হয়ে গেল-এমন কি ওদের পায়ে চলার শব্দও যেন থেমে গেল!

সমগ্র বিশ্ব প্রকৃতিই যেন স্তব্ধ হয়ে গেছে, সময়ের প্রবাহ, ওদের নিজেদের শ্বাস-প্রশ্বাস; হৃৎপিন্ডের গতি-সব যেন নিশ্চল, স্থির হয়ে গেছে।

দুই

অমর কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘আঁধারের রূপ’-এর কথা মনে পড়লো ফরিদের। ‘রাত্রির যে একটা রূপ আছে’ এবং তাকে যে সমগ্র বিশ্বপ্রকৃতি থেকে আলাদা করে দেখা ও উপলব্ধি করা যায়, শ্মশানের প্রান্তে বসে থাকা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মত ফরিদও তা উপলব্ধি করতে পারছে এবং ওর সমগ্র সত্ত্বার মধ্যে ঝলসে ওঠা সেই রূপ দেখে এক অপার আনন্দে অভিভূত হয়ে গেল। যেন নিজেকে সমগ্র সৃষ্টি ও তার স্রষ্টার সঙ্গে একাত্ম বলে দেখতে পেলো। কিন্তু সে ক্ষণিকের জন্য। পরক্ষণেই দেখতে পেলো এক কঠোর বাস্তব দৃশ্য; ঘন ঘোর অন্ধকার নিশীথে চলেছে বাড়ির দিকে! পিছে পিছে আসছে ভগ্নীপতি।

কাজী নজরুল ইসলামের ‘কান্ডারী হুঁসিয়ার’ কবিতাটির প্রথম দু’লাইন ফরিদের মনে পড়তে লাগলো বারে বারেইঃ

‘‘দূর্গম গিরি-কান্তার-মরু দূস্তর পারাবার
লংঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে যাত্রীরা হুঁসিয়ার।’’

এরূপ বর্ষাকালেই বড় ছেলে হওয়ায় শখ করে বৃদ্ধ বাবা এবং বড় বোন ফরিদের বিয়ে দিয়েছিল। সেদিন দুটো নৌকা ভাড়া করা হয়েছিল।

বাড়ি আসার পথে পূর্ণিমার চাঁদের আলো পানিতে প্রতিফলিত হয়ে অর্ধশায়িত নব বধূ বুলবুল আকলিমা খাতুনের অনিন্দ্যসুন্দর মুখের উপর পড়ে সে মুখকে চাঁদের চেয়েও সুন্দর করে তুলেছিল এবং সেখান থেকে বিচ্ছুরিত হয়ে ফরিদের চোখে এসেছিল! সে দেখেছিল, পূর্ণিমার চাঁদও তার কাছে তুচ্ছ! তাই বিভ্রান্ত বাদশাহ হারুনুর রশীদের মত ফরিদের মনে একটিবারও এ প্রশ্ন জাগে নি যে, ‘‘এই চাঁদ সুন্দর, কি ঐ চাঁদ সুন্দর?’’

পরস্পরের প্রতি গভীর প্রেমাশক্ত বাদশাহ হারুনুর রশীদ ও মহিয়সী বেগম জোবেদা প্রাসাদের দ্বিতল কামরায় জানালার ধারের দূগ্ধ ফেনানিভ শয্যায় পরস্পরের প্রেমালীঙ্গনে বাঁধা অবস্থায় প্রেমক্রীয়ায় মত্ত ছিলেন। খোলা জানালা পথে পূর্ণিমার চাঁদ সেই মধুর দৃশ্য অবলোকন করছিল। চাঁদের দৃষ্টি-তার স্নিগ্ধ কিরণধারা দু’জনকে প্লাবিত করে দিচ্ছিলো। হঠাৎ সে দিকে তাকাতেই পূর্ণচন্দ্র তার ‘তন্বী পঞ্চদশী’র সমস্ত রূপ নিয়ে বাদশাহ-র চোখে ধরা পড়লো। বাদশাহ মূগ্ধ ও বিস্মিত চোখে একবার আকাশের চাঁদের দিকে তাকান আবার নীচে প্রিয়তমা পত্নীর মুখের দিকে তাকান। বাদশাহ যেন কিছুটা উন্মনা হয়ে উঠলেন। বুদ্ধিমতী পত্নী তা লক্ষ্য করে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘তুমি কি দেখছো অমন করে; একবার আমার মুখের দিকে তাকাও আবার চাঁদের দিকে তাকাও?’’
বাদশাহ মূগ্ধ কন্ঠে বললেন, ‘‘দেখছি।’’
‘‘কি দেখছো?’’
‘‘দেখছি, এই চাঁদ সুন্দর, কি ঐ চাঁদই সুন্দর!’’
মুহূর্তে ছন্দ-পতন হলো যেন! ধাক্কা দিয়ে বাদশাহকে আলিঙ্গনচ্যুত করে ঠেলে ফেলে দিয়ে পত্নী উঠে পড়লেন এবং ক্ষুব্ধ কন্ঠে বললেন, ‘‘তুমি একটা দোজখী।’’
বাদশাহও সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন, ‘‘আমি যদি দোজখী হই তাহলে তুমিও তালাকী।’’

সর্বনাশ! কঠিন সমস্যা। তালাকীর মতই তাঁরা পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে লাগলেন। বেগম জোবেদার যুক্তি এই ছিল, ‘‘আল্লাহ্‌ যখন বলেন, ‘অবশ্যই মানুষকে আমি সর্বোৎকৃষ্ট আকৃতিতে সৃষ্টি করেছি’ তখন স্পষ্টতঃই বোঝা যায়, মানুষের সৌন্দর্যই আল্লাহ্‌র অন্য সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে শ্রেষ্ঠ। অথচ বাদশাহ যখন বলছিলেন যে এই চাঁদ অর্থাৎ আমার মুখ সুন্দর, না ঐ চাঁদই সুন্দর, অথচ আমি মানবী আর চাঁদ মনুষ্যেতর জড় বস্তু, তখন তিনি বুঝাতে চাচ্ছিলেন যে আল্লাহ্‌র কথাই বুঝি বা মিথ্যা, চাঁদই বুঝি বা অধিক সুন্দর। এরূপ মনোভাব পোষণকারী অবশ্যই বে-ঈমান সুতরাং দোজখী, তাই বলেছিলাম, ‘তুমি দোজখী’।’’ জবাবে বাদশাহ যা বলেছিলেন তাও ঠিক। কারণ বাদশাহ’র যুক্তি ছিল যে তিনি যদি দোজখীই হন তাহলে সে দোজখী সুতরাং বে-ঈমানের সঙ্গে ঈমানদার বেগমের বৈবাহিক বন্ধন অবৈধ। সুতরাং বাদশাহ দোজখী হলে তালাক হয়ে গেছে।

সমস্যাটি ইমামের কাছে আনা হলে তিনি বাদশাহকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘এমন কি কখনও হয়েছে যে আপনি প্রবৃত্তি দ্বারা চালিত হয়ে কোনো পাপ কাজ করতে উদ্যত হয়েছেন আর তখনই খোদার সামনে জবাবদিহির জন্য আপনাকে দাঁড়াতে হবে এই ভয়ে সে কাজ থেকে বিরত হয়েছেন?’’
বাদশাহ বললেন, ‘‘হ্যাঁ, হ্যাঁ। এমন অনেকবারই হয়েছে।’’
ইমাম বললেন, ‘‘তাহলে আপনাদের বৈবাহিক বন্ধন অটুট আছে। কারণ আল্লাহ্‌ বলেছেন, ‘এবং যে কেহ তাঁর প্রভূর সম্মুখে দণ্ডায়মান হওয়াকে ভয় করে এবং নফসকে প্রবৃত্তির তাড়না (অর্থাৎ পাপ কাজ) থেকে বিরত রাখে তাহলে অবশ্যই বেহেশতই হবে তার বাসস্থান’।’’

সুতরাং মহা জটিল একটি সমস্যার সমাধান হয়ে গেল; বাদশাহ হারুনুর রশীদ ও বেগম জোবেদার মধ্যে পূনর্মিলন হলো। যদিও শাব্দিক অর্থে তাই-ই বুঝায় তথাপি বাদশাহ’র ঐ উক্তিটি আসলে চাঁদের তুলনায় বেগম জোবেদার সৌন্দর্যকে খাটো করে দেখার পরিচায়ক ছিল না, তা ছিল চিরকালের প্রেমিকার সৌন্দর্যের প্রতি চিরকালের প্রেমিকের বিস্ময়-বিমূগ্ধ ও অকূণ্ঠ স্বীকৃতির বহিঃপ্রকাশমূলক যা চিরকালের প্রেমিক-প্রেমিকার প্রেম কূজনের প্রেরণা হয়ে আছে।

তিন

রাস্তার দু’পাশে ঝোঁপ-জঙ্গল আছে। দু’পাশের বড় বড় গাছের ডাল-পালা এসে রাস্তার উপর কালো চাঁদোয়ার মত আবরণ সৃষ্টি করে রাখে, ফলে সব সময় অন্ধকার বিরাজ করে। রাতে এই অন্ধকার আরও বেশী এবং প্রায় নিশ্ছিদ্র ও দূর্ভেদ্য হয় যদি রাতটা আরও হয় জ্যোৎস্নাহীন, আকাশ হয় মেঘাচ্ছন্ন এবং সময়টা হয় মধ্য বর্ষা। কখনও কখনও আচমকা একজনের এক পা ‘ঘপ’ করে পড়ে একেবারে প্রায় উরু পর্যন্ত দেবে যাচ্ছে খালের মধ্যে, অপর পায়ে ভর করে সে পা টেনে তুলতে অপর পা’টিও একইভাবে দেবে যাচ্ছে; তখন অন্ধকার হাতরে হাতরে আর একজনকে এগিয়ে আসতে হচ্ছে তার সাহায্যার্থে! ধীরে ধীরে এক পা এক পা করে পর্বতারোহীদের মত তারা চলছে! খুব দূরে দূরে মাটি থেকে বেশ উঁচুতে দু’একটা মৃদু আলো এবং ক্যানাস্তারা পেটানোর ও মানুষের হৈ হৈ আওয়াজ শুনে মনে হতে লাগলো, লোকেরা উঁচুতে ‘টং’ বেঁধে পাকতে শুরু করা আউশ ধান পাহারা দিচ্ছে। অন্ধকার ও মেঘ-বৃষ্টির রাতে এইসব ধানের ক্ষেতে শূয়োর লাগে। দূরে হলেও পৃথিবীর বুকে আরও যে মানুষজন আছে এটা ভেবে মনের মধ্যে যে একটু আশার আনন্দ ফুটে উঠছে ঠিক তেমনি এটা চিন্তা করেও আরও ভয় ও শংকা হচ্ছে, আশে-পাশেই ‘রাতের শূয়োর’-এর আনাগোনাও আছে; হয়তো ওঁৎ পেতেই আছে আক্রমণ করার জন্য কিংবা কেউ পিছে পিছেই আসছে সূযোগমত ঘাড়ে লাফিয়ে পড়ার জন্য! তবে শূয়োর মানুষের গোশত খায় না, সুতরাং অযথা আক্রমণ করে না। কিন্তু শিয়ালও তো আছে! জন্তু শূয়োর বা শিয়াল না হয়ে মানুষও তো হতে পারে, যারা মানুষ মেরে সর্বস্ব কেড়ে নেয়-সেই ডাকাতরা! আজ কি তবে শূয়োর-শিয়াল বা ডাকাতের হাতেই দু’জনের মৃত্যু? আর ভাবতে পারে না ফরিদ!

হঠাৎ সামনেই একজনের পিছনে আর একজন-থপ থপ ছপ ছপ করে দৌড়ে রাস্তার বাঁ-পাশের জঙ্গল থেকে ডান পাশের জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে গেল। ভয়ে লাফ দিয়ে পিছিয়ে যেতেই ভগ্নীপতির গায়ের উপর পড়লো ফরিদ! অস্ফুট আর্তনাদ করে, শূয়োর-শিয়াল দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে মনে করে, সে গড়িয়ে মাটিতে পড়ে গেল-তার উপর ফরিদ। সমগ্র গায়ে কাঁদা-পানি মাখামাখী করে দু’জন উঠে দাঁড়ালো। কারা গেল ওভাবে? ডাকাত কি? নাকি শূয়োর-শিয়াল? এখনই ওদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে? ভয়ে আর এক পা-ও এগুলো না। একটু পরেই শূয়োরের ভীষণ চিঁ চিঁ চিৎকার ও মারামারি, ধস্তা-ধস্তীর আওয়াজ শুনতে পেলো। বুঝলো, একটু আগেই যারা গেল তারা দু’টো শূয়োর, পরস্পরকে আক্রমণ করেছে।

ক্রুদ্ধ ও যুদ্ধরত দুই শূয়োরের চিৎকার ও দাপাদাপীতে ভেঙ্গে খান খান হওয়া নৈশ নিস্তব্ধতা আবার জোড়া লেগে যেন আগের চেয়েও জমাট ও ভারী হয়ে উঠলো। তবে গভীর মনোযোগ সহকারে কান পেতে এই নিথর নিস্তব্ধতার মধ্যেও একটা অপরূপ সুন্দর সূর লহরী শুনতে পেলো। গভীর নিশীথের এই নিস্তব্ধতারও যে এক অনির্বচনীয় সূর মূর্ছনা আছে তা ফরিদ প্রথম উপলব্ধি করতে পারলো। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় দেখতে পেয়েছিলেন আঁধারের রূপ, আর আজ রাতে পাবনা-বেড়া কাঁচা রাস্তার মাধপূর-সাঁথিয়া অংশে ফরিদ শুনতে পেলো গভীর নৈশ নিস্তব্ধতার অপরূপ সূর মূর্ছনা; বড়ই মধুর, বড়ই মনোমুগ্ধকর সে সূরলহরী!

এ চলার কি শেষ আছে? এর কি কোনো আরম্ভ ছিল? এ চলার শুরু কি মাত্র আজ সন্ধ্যায় এবং এই আতাইকুলা থেকে? নাকি পাবনা-ঈশ্বরদী-সিরাজগঞ্জ-জগন্নাথগঞ্জ-ঢাকা থেকে? না, এ চলার শুরু অনন্ত অতীতের সেই ক্ষণটিতে যখন ফরিদের অস্তিত্বায়ন ঘটেছিল, প্রথম জীবনাণু থেকে শুরু হয়েছিল ওর যাত্রা। ফরিদ যেন হঠাৎ করে নিজেকে আবিষ্কার করে ফেললো। ও যেন শুধুমাত্র এই ফরিদটি নয়, ও এক মহাজীবন, ওর চলা শুরু হয়েছিল মহাকালের সুদূর অতীতের কোনো এক ক্ষণে। ও যেন চোখ বুঁজে দেখতে পাচ্ছে যাত্রারম্ভের সেই সঙ্গীত; ও যেন চলেছে আর চলছে, চলছে আর চলছে। অকস্মাৎ সামনে কি যেন ইষৎ চিক চিক করে উঠলো; মনে হলো যেন সম্মুখে এক বিশাল জলধি। একি সেই মহাজলধি যখন পৃথিবীতে ছিল অতি সামান্যই স্থলভাগ-আর সবই ছিল শুধুই পানি আর পানি, আর যখন ফরিদের সেই কোন শৈশবে ও সেই সীমাহীন জলধির বেলাভূমে একাকী পরম আনন্দে খেলা করতো, কূড়াতো শামূক-ঝিনুক, কূড়াতো মূক্তা? কালচক্র এই মুহূর্তে আজ আবার ওকে নিয়ে এসেছে ওর শৈশবের সেই ক্রীড়াক্ষেত্রে, সেই মহাসমুদ্রের বেলাভূমে?

বাস্তবে ফিরে এসে বললো ফরিদ, ‘‘সামনে যে পানি দেখা যায়।’’
‘‘পানি? কিন্তু এখানে লাইনের উপর পানি কোত্থেকে আসবে?’’ ভগ্নীপতি ওর কাছেই জানতে চায়।
‘‘কি জানি।’’ ফরিদ জবাব দেয়।
ভগ্নীপতি বললো কতকটা স্বগতোক্তির মতই, ‘‘অন্ধকার রাত, আকাশে একটা তারাও নাই; রাত কত কিছুই আন্দাজ করতে পারছি না। আশে পাশে কিছুই দেখাও যায় না। কোথায় এসেছি তাও বুঝতে পারছি না।’’
অমাবশ্যার রাত। পানির কিনারে দাঁড়িয়ে ফরিদ সামনের অবস্থার বর্ণনা দিতেই ভগ্নীপতি বললো, ‘‘এটা বোধহয় ছোনদহের ভাঙ্গা।’’
অতঃপর পানিতে নেমে আন্দাজে লাইনের রেখা ধরে সোজা সামনে চলতে লাগলো। প্রায় কোমর পর্যন্ত পানি হলো। এখন রাত কত? ডাঙ্গায় উঠে আবার চলতে শুরু করলো।

যতই হোক রাত, সে কথা জেনে কি কোনো লাভ আছে যখন গন্তব্যস্থল না পাওয়া পর্যন্ত চলতে হবেই? তবে হ্যাঁ, গন্তব্যস্থল কত দূর এবং তা কোথায় সে প্রশ্ন করা যেতে পারে। গন্তব্যস্থল-এই যাত্রাপথের শেষ কি বাড়ি পর্যন্ত? জানে না। তবে বুঝতে পারছে, এই চলার বোধ হয় শেষ নেই এবং মনে হচ্ছে, শেষ না হওয়াই ভালো। কারণ শুধু চলার মধ্যেই তো জীবন-চলাতেই তো আনন্দ। It is better to travel than to arrive, চলার সমাপ্তি মানেই তো মৃত্যু। ফরিদ চায় জীবন, চায় বাঁচতে-সুতরাং চলতে এবং তাই চলছে। তবে হ্যাঁ, লক্ষ্য যে একেবারে নেই তা নয়; যে উৎস থেকে এসেছে ফিরে যেতে চায় সেখানেই। কেন চলছে এভাবে? জানে না। কতদূর পর্যন্ত চলবে? তাও জানে না। শুধু জানে, চলতে হবেই এবং এ-ও জানে, এক মহা আহবানের টানে ও ছুটে চলেছে সামনের দিকে। কার সে আহবান তা জানে না-আবার জানেও। সেই চেনা অথচ না জানার আহবানেই ওর চলা।

‘‘কে সে? জানি না কে। চিনি নাই তারে-
শুধু এইটুকু জানি, তারই লাগি রাত্রি-অন্ধকারে
চলেছে মানব যাত্রী যুগ হতে যুগান্তর পানে
ঝড়-ঝঞ্জা-বজ্রপাতে জ্বালায়ে ধরিয়া সাবধানে
অন্তর প্রদীপখানি।’’

সামনে লাইনে বাঁক দেখা যায় না? তবে কি নন্দনপুর এসে পড়েছে? এই তো সাঁথিয়া প্রায় এসে পড়েছে। চারদিক থেকে মোরগ ডেকে উঠছে। তাহলে আর ভয় নাই। রাত শেষ হয়ে এসেছে; সব দুঃখের রাতই শেষ হয়।

শেষ রাতের পূর্বাকাশের যে একটা মধুর ও মহিমান্বিত রূপ তা দু’চোখ ভরে ফরিদ প্রথম উপভোগ করলো। পূর্বে আজান শুনে ‘সুবহে সাদেক’-এ ঘুম থেকে উঠে থাকলেও সে সব সময়ে হয় থেকেছে ঘরের মধ্যে নতুবা গাছ-গাছালী দিয়ে চারদিক ঢেকে রাখা বাড়ির মধ্যে। বোয়ালমারী হাটের কাছে এসে লাইনের ধারে ওরা একটু জিরিয়ে নিল। একটু পরে পূর্ব আকাশে একটু সাদা আভা দেখা দিল।

পূর্ব আকাশে দিক চক্রবালের ঠিক প্রায় মাঝখান থেকে সাদা আলোর ছটা যেন একেবারে মাটি থেকে প্রায় অর্ধেক আকাশ অর্থাৎ প্রায় ৪৫˚ পর্যন্ত উঠে এসেছে এবং তা ক্রমশঃ ক্ষীণতর ও প্রশস্ততর হয়ে উঠে আসছে। যেন ষ্টীমারের সার্চ লাইটের আলোর মত একটি আলো কেউ নীচ থেকে ‘ফোকাস’ করছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আলোটি যেন গোড়া থেকে আলগা হয়ে ক্রমশঃ উপরের দিকে উঠতে লাগলো অথচ ‘ফোকাস’টার মাথাটা একটা ফুটন্ত ছাতার মত ক্রমশঃ ডাইনে ও বাঁয়ে অর্থাৎ দক্ষিণে ও উত্তরে ছড়িয়ে পড়তে লাগলো। অবশেষে আলগা গোড়াটা ক্রমশঃ উপরে উঠতে উঠতে একসময়ে আলোকচ্ছটার প্রসারিত অংশের সঙ্গে বিলীন হয়ে গেল এবং সমস্ত পূর্ব আকাশটাই সুন্দর সাদা আলোয় ভরে গেল। অল্পক্ষণ পর দিক চক্রবালের সেই আগের স্থান থেকে আরেকটা আলোর ছটা-এবার লালাভ-ঠিক সেই আগের মতই ক্রমশঃ উপরের দিকে উঠতে লাগলো; তবে এবার ঠিক ফোকাসের আকারে নয় বরং একটা ব্যাঙের ছাতার আকারে এবং ক্রমশঃ তা সমগ্র পূর্ব আকাশ ছেয়ে ফেললো এবং যতই সময় যেতে লাগলো ততই তার রং আরও লাল হতে লাগলো। এই লাল রং সমস্ত পূর্ব আকাশ ছেয়ে থাকলো এবং পরে তা ক্রমে ফিকে হয়ে আসতে লাগলো।

এই সুন্দর ও মহিমাময় রং ও রূপের খেলা ফরিদ উপভোগ করলো। দুনিয়ায় কত কীই যে আছে দু’চোখ ভরে দেখবার! সূর্য ডোবা থেকে সূর্য উঠা পর্যন্ত একটা সম্পূর্ণ রাত জেগে থাকা শুধু নয়, জেগে সারারাত ধরে অন্ধকার-বৃষ্টি-কাদা-পানির মধ্যে হাঁটা জীবনে এই প্রথম।

বেড়া বাস স্ট্যান্ড পার হয়ে বাড়ির কাছাকাছি এলে তাদের জোড়দহ গ্রামেরই কিয়ামুদ্দিনের ছেলে বকরের সঙ্গে দেখা; পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে পড়ে। দু’জনকে দেখেই সে কেঁদে ফেললো, শত চেষ্টা করেও নিজেকে সংযত রাখতে পারলো না। ফরিদের বাবার মারা যাওয়ার কথা ভেঙ্গেই বললো।

বাড়ি পৌঁছে সকলের কান্নাকাটির মধ্যে সব কথা তারা শুনলো।

বাবার হার্নিয়ার (Inguinal Hernia) ব্যারাম উঠার পর বাড়ির নৌকা দিয়ে পাবনা রওনা হওয়া হয়। ফরিদের মা, স্বামীসহ এ বাড়িতেই বসবাসকারী নিঃসন্তান বড় বোন, ছোট ভাই সাত্তার ও পাশের বাড়ির জব্বার সাথে ছিল। আতাইকুলা পৌঁছে সাত্তার আর জব্বার বাবাকে পাবনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয় আর অন্যরা বাড়ি ফিরে আসে। হাসপাতালে তিনি মারা যান। ওখানকার অনেকেই পাবনাতেই দাফন করার কথা বলেছিল কিন্তু সাত্তার কিছুতেই রাজী হয় নি। পার্শ্ববর্তী কোনো গোরস্থানই শুকনা না থাকায় বাড়িতেই ‘বেগুনের পালানে’ দুইদিন পূর্বে দাফন করা হয়।

স্বপ্নে দেখা কাফন পরানোর বিষয়টা হুবহু সত্য। আশ্চর্য! এটা কেমন করে হয় যে ভবিষ্যতের ঘটনা এভাবে হুবহু স্বপ্নে দেখা যায় বা কোনো কোনো মহামানব জাগ্রত অবস্থাতেই দেখতে পারেন-ঠিক ছবিতে দেখার মতই! তবে কি বিশ্বের যাবতীয় ঘটনা সিনেমার ফিল্মের মত চিত্রায়িতই থাকে যে তা আগে ভাগেই দেখা যায় স্বপ্নে বা জাগ্রত অবস্থাতেও?

ফরিদের শৈশব থেকেই বাবার এই অসুখ ছিল বলে দেখেছে সে।

‘বারো ভাজা’ খাওয়ার লোভে সব হাটের দিনই বাবার সাথে যেত সে। একদিন গিয়ে মতি ঘোষের বৈঠকখানায় বসে আছে এমন সময় বাবার ‘ব্যারাম উঠলো’। বসে বসেই দু’হাত দিয়ে ঠেলে বহুক্ষণ ব্যারাম নামাতে চেষ্টা করেও যখন নামাতে পারলেন না তখন উঠে দাঁড়ালেন। তিনি হাঁপাতে লাগলেন ও গা ঘেমে অস্থির হয়ে গেলেন। জামা গেঞ্জী খুলে ফরিদের কাছে দিলেন। ফরিদ ভীষণ ভয় পেয়ে ‘‘ফুলকো মুখো’’ হয়ে কাঁদো কাঁদোভাবে বাবার কাছে বসে রইলো। এরপর বাবা চিৎ হয়ে শুয়ে ব্যারাম নামাতে চেষ্টা করতে লাগলেন।

অন্ততঃ দু’ঘণ্টা পর ডানদিকের তলপেটে গড় গড় করে শব্দ হলে সেই প্রতীক্ষিত স্বস্তির মুহূর্তটা এলো। তিনি উঠে বসলেন কিন্তু তবুও হাঁপাতেই লাগলেন। এরপর অনেকক্ষণ জিরিয়ে নেওয়ার পর উঠলেন।

সেদিন বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে গিয়েছিল এবং ফরিদের বৈমাত্রেয় বড় বোন বাবাকে খুব রাগ করেছিলেন হাটে ঘাটে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তার কোনো উপার্জনক্ষম পুত্র সন্তান ছিল না যে তার হাত থেকে কাজ কেড়ে নিয়ে তাকে একটু ‘আসান (Relief)’ দিতে পারতো কিংবা ঐ বৃদ্ধ বয়সে কামাই করে খাওয়াতে পারতো। আর ছিল না বলেই হাত লুঙ্গীর নীচ দিয়ে কোমরের মধ্যে চালিয়ে দিয়ে চেপে ধরে অন্য হাতে এক আটি ঘাস মাথার উপর ধরে গ্রীষ্মের ফুটো দুপুরে গলদঘর্ম হয়ে তাকে বাড়ি ফিরতে হতো, লাঙ্গলও বাইতে হতো, দৈনন্দিন সব কাজ–কর্মই করতে হতো! আর এটাই ছিল তার জীবনের সবচাইতে বড় ট্র্যাজেডী।

ফরিদের প্রাণ কেঁদে উঠলো। বাবা ‘ট্রাস’ ব্যবহার করছিলেন বলে অপারেশন-এর কোনো আশু প্রয়োজন সে অনুভব করে নি। কিন্তু ‘ট্রাস’ যে অব্যবহার্য হয়ে গিয়েছিল তা ফরিদের জানা ছিল না। ভগ্নীপতির চোখ অপারেশন করিয়ে দিয়েছে সে একেবারে অন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলে। বাবার অপারেশন করা সম্বন্ধে যখন চিন্তা-ভাবনা করছিলো ঠিক তখনই হঠাৎ করে তিনি ওদেরকে ফেলে চলে গেলেন! ফরিদ কিছু করার সময়ই পেলো না!

বাবার জন্য ‘মানুষদেরকে খাওয়ানো’র পর বাড়ির কর্তৃত্ব প্রাপ্ত বড় বোনের কাছে সেকেন্ড ইয়ারের পরীক্ষার ফি বাবদ ফরিদ টাকা চাইলে সে সোজাসুজী বললো, ‘‘আমি কোথায় টাকা পাবো?’’
শুনে স্তম্ভিত হয়ে গেল ফরিদ! এ কি সেই বোনের কথা-যে ওকে এক দলা এক দলা করে ভাত খাওয়া শিখিয়েছিল!

এক বিঘা জমি ‘কটে’ রেখে ফরিদ টাকা যোগাড়ের চেষ্টা করলে বোন বাঁধা দিয়ে বললো, ‘‘জমি বন্টক না করে ‘কটে’ রাখা যাবে না; কোনটা কার ভাগে পড়ে তার তো ঠিক নেই।’’

প্রমাদ গুনলো ফরিদ। সংসার থেকে টাকা হবে না, বন্টক না করে জমিও ‘কটে’ রাখা যাবে না তাহলে উপায়? বাবার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ফরিদ যে কী হারালো এবং কতখানি অসহায় হলো তা উপলব্ধি করতে পারলো।

ফি দেওয়ার নির্ধারিত দিন প্রায় এসে গেল। আর মাত্র তিন দিন বাকী। মরিয়া হয়ে ঢাকা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো ফরিদ-যদি ঢাকা থেকে কোনো ব্যবস্থা করা যায়! বিদায়কালে স্ত্রী ও একমাত্র শিশু পুত্র খুব কান্নাকাটি করলো।

জায়গীরদারের বাড়িতে সুটকেসটা রেখেই সোজা চলে গেল শূলসুধায় কর্মরত পার্শ্ববর্তী গ্রামের তমিজ ভাই-এর কাছে। ধার হিসেবে টাকা চাইলে তিনি মূচকী হাসলেন। ভাবখানা এই, ‘এখন মজা বোঝো! তখন আমার (পালিত) মেয়েকে বিয়ে করলে না, এখন সেই আমার কাছেই তো সাহায্যের জন্য আসতে হলো!’ মুখে বললেন, ‘‘আমি কোনো টাকা দিতে পারবো না। তার চেয়ে তুমি পড়া বাদ দিয়ে চাকরিতে ঢুকে সাত্তারকে পড়াও।’’

মরহুম জালাল উদ্দিনের ছেলে মুনু ভাইয়ের কথা মনে পড়লো ফরিদের যিনি ওর প্রতি খুব সহানুভুতিশীল। কিন্তু তিনি তো ময়মনসিংহ পুলিশ হাসপাতালের ডাক্তার। এখন সে তাকে পায় কোথায়? আর আছে মাত্র আগামীকাল। কিন্তু ঢাকা শহরে শূলসুধার উনারা ছাড়া সে আর কার কাছে অর্থ সাহায্য চাইতে পারে?

ফরিদ রাতভর ভাবলো যে এখন সে কি করবে? কাকে জানাবে তার দুঃখ, বেদনা ও বঞ্চনার কথা?
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফেরদৌসী বেগম (শিল্পী ) খুব ভালো লাগলো আপনার লিখা চমৎকার বর্ণনা সহ গল্পের কাহিনী, ওয়াহিদ ভাই। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।
ভালো লাগা জানানোর জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। সালাম ও শ্রদ্ধা জানবেন।
মোঃ আব্দুর রউফ চাঁদের বর্ণনায় যে ঘটনা তুলে ধরেছেন তা ভীষণ সুন্দর অনুভূতি জাগিয়ে তুলল প্রাণে। অনেক শুভেচ্ছা জানালাম।
আপনার খুব সুন্দর মন্তব্যে ভীষণ উৎসাহ পেলাম। আপনাকে সীমাহীন ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন। সালাম, কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানবেন।
রতন কুমার প্রসাদ রাতের স্বরূপটা খুব সুন্দরভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। অসাধারণ ভাল লাগা।
আপনার চমৎকার মন্তব্যে খুব অনুপ্রাণিত হলাম। কষ্ট করে পড়ার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানবেন।
Gazi Nishad খুব খুব ভালোলাগা। অসাধারণ (৫) আমার কবিতায় আমন্ত্রণ রইলো।
আপনার সুন্দর, উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ভালো লাগা জানানোর জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। আপনার কবিতা আগেই পড়েছি এবং আপনার প্রাপ্য ভোটও দিয়েছি। শ্রদ্ধা জানবেন।
সকাল রয় অনেক সুন্দর একটা গল্প। আগেও পড়েছিলাম এখন আবার পড়লাম। ধন্যবাদ লেখককে
চমৎকার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানবেন।
biplobi biplob Darun laglo foridar chorithro, Upomar proug basi hoyasa thoba jothajotho. Valo laga roylo. (Golpo kobita) pat korban.
আপনার সুন্দর, মূল্যবান, বিশ্লেষণাত্মক মন্তব্যে ভীষণ উৎসাহ পেলাম। ভালো লাগা জানানোর জন্য সীমাহীন ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। আমার কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানবেন।
নাফিসা রহমান বর্ণনার সৌন্দর্য মুগ্ধ করলো ওয়াহিদ ভাই... বেশ ভালো লাগলো কাহিনীবিন্যাস... সময় উশুল গল্প... শুভকামনা রইল...
আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো লাগা জানানোর জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন। আপনার জন্যও শুভকামনা রইলো। ভালো থাকবেন। আমার সালাম ও শ্রদ্ধা জানবেন।
মিলন বনিক গল্পের পুংখানুপুংখ বিশ্লেষন...নিটোল ধারাবাহিকতা খুব ভালো লেগেছে...তবে পাঠককে ধৈর্যের সাথে এগিয়ে যেতে হবে...তবে পাঠক এক ভিন্ন স্বাদের গল্প উপভোগ করতে পারবে...খুব ভালো লাগলো...
সুন্দর, দীর্ঘ, অনুপ্রেরণাদায়ক মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। গল্পটি পড়ার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। ভালো থাকবেন। শ্রদ্ধা জানবেন।
রোদের ছায়া বেশ ভালো লাগলো আপনার গল্পের পটভূমি। অনেক কিছুই এক গল্পে বলার চেষ্টা বেশ। শুভেচ্ছা রইলো।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। কষ্ট করে পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা রইলো। সালাম ও শ্রদ্ধা জানবেন।
আখতারুজ্জামান সোহাগ ওয়াহিদ ভাই, আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে যে জিনিসটা, সেটা হলো শব্দচয়ন। ধারা বর্ণনাও চমৎকার। বেশ ভালো লেগেছে সব মিলিয়ে। শুভকামনা রইল।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ও ভাল লাগা জানানোর জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভাল থাকবেন। সালাম ও শ্রদ্ধা জানবেন।

১৮ আগষ্ট - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ২৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী