এই পৃথিবীতে যারা নিজেকে বড় ভেবেছে তারা বেশি ধ্বংস হয়েছে আর যারা নিজেকে ছোট ভেবেছে তারা বেশি সফল হয়েছে। ‘আমি’ দ্বারা অহংকারও বুঝানো হয়। আমি এ কাজটি করেছি, আমার জন্যই এটা হয়েছে, আমি না থাকলে এ কাজ কে করত? ইত্যাদি অহংকারেরই প্রমাণ। এর বিপরীতটাকে বুঝানো হয় বিনয়ী। এটা আমার দ্বারা সম্ভব ছিলো না আল্লাহর দয়াই এমনটি করতে পেরেছি ইত্যাদি বিনয়ের প্রমাণ ‘আমি’র দাপটে ধ্বংস হয়েছে এর প্রমাণ অনেক।বিশেষভাবে রাজনীতির অঙ্গণ।!! আর প্রকৃত পক্ষে যারা আমি-আমিত্বকে দমন করে বিনয়ী হয়েছে তারা অবশ্যই সম্মানিত। তিনটি ঘটনা। ‘বিখ্যাত বিজ্ঞানী আইনস্টাইন।সে একবার বাসে উঠার পর হেলপার তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলঃ-আপনার পরিচয় কী? সে বলেছিলঃ-‘আমি মনোবিজ্ঞানের একজন সাধারণ ছাত্র।’যে এতটা বিখ্যাত হয়েও এমন বিনয়ী তাঁর ছাত্রাবস্থা কেমন ছিল তা সহজেই অনুমেয়। লক্ষ্য করা উচিত তারা কোথায়? আর আমরা কোথায়?’
ভারতে হুসাইন আহমাদ (রহ.) নামে এক বিখ্যাত আলেমে দ্বীন ছিলেন। যিনি আল্লামা মাহমুদ হাসান (রহ.) এর বিশেষ শিষ্য এবং তাঁর মৃত্যুর পর তাঁরই প্রতিষ্ঠিত ‘জামিয়াতে উলামায়ে হিন্দ’এর আমির হন।তিনি নিজেকে গড়ার জন্য এতটাই সঁপে দিয়েছিলেন যে,আল্লামা মাহমুদকে যখন ইংরেজরা কারাগারে বন্দী করার জন্য জাহাজে উঠায় তখন তাঁর শিষ্য হুসাইন পানিতে ঝাঁপ দেন।ইংরেজরা এমন শিষ্য দেখে বড়ই অবাক হয়। পরে বাধ্য হয়ে তাকেও নেয়া হয়। ;পরবর্তীতে; ইংরেজদের ভাগানোর একটা বিশেষ অবদান তাঁর। কংগ্রেস-জমিয়াত যদি জুটি না বাঁধত তাহলে হয়ত আরো অনেকদিন আমাদেরকে ব্রিটিশ অত্যাচারের বেড়াজালে আবধ্য থাকতে হত।
হযরত যাকারিয়্যা রহ. কে চিনে না এমন মুসলিম খুবই কম। কেননা দাওয়াত-তাবলীগের বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ফাজায়েলে আমালের’ তারই রচনা। তার পিতা ছিলেন খুব রাগি। ছেলের প্রতি অত্যন্ত কড়া নজর রাখতেন। সামান্য বিষয়েও ছাড় দিতেন না। ছেলেরও অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল যে,বাবা যেটা বলতেন সেটাই শুনতেন। পরবর্তীতে নিজেই বলেছেন– “তখন মানতে খুবই খারাপ লাগত তারপরও কষ্ট করে মানতাম। এখন এই দোয়া করি-‘হে আল্লাহ! বাবার কড়া শাসনের জন্যই আজ আমার এত গ্রহনযোগ্যতা,তাকে তুমি জান্নাবাসী করো’।” একবার তাদের বাসায় একজন মেহমান আসলো।মা ছেলেকে বললেন-‘এই বালিশটা মেহমানকে দিয়ে আসো’। ছেলে বালিশটিকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল-‘না! এটা আমার বালিশ’। বাবা ছেলের মুখে এমন কথা শুনে বললেন-‘এই বয়সেই ‘আমার’ ‘আমার’ শিখে গেছো বড় হলে কী করবে? পৃথিবীতে কোন জিনিসটা তোমার’।সেদিন হয়ত কথাগুলো ছেলে বুঝেনি।না বুঝেই মেনেছে আর বলেছে-‘পরে হয়ত বুঝে আসবে।’
“বিখ্যাতদের দুটি বাণী”
“তুমি নিজের অঙ্গগুলোর দিকে তাকাও। এই হাত! এই পা! এই মাথা! এসব কে দিয়েছেন? -মহান আল্লাহ। তাহলে আর ‘আমার হাত’ ‘আমার পা’ বলার সুযোগ থাকল কোথায়? এসব কিছুই আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার নিকট এক আমানত। আচ্ছা সব অঙ্গ বুঝলাম আল্লাহরই তাই এগুলো বাদ দিলাম। যেই প্রাণটা নিয়ে তুমি বেঁচে আছ সেটাই বা কার? সেটাই বা কে দিয়েছেন? উত্তরে নিশ্চয় আসবেঃ-আল্লাহ ছাড়া আর কে? তাহলে তুমি রইলে কোথায় বা করলে কী? কিছুই না। তাহলে কেন গর্ব করো? কী নিয়ে আমি-আমিত্ব দেখাও?”
‘যখন তুমি মনে করবে আমি কিছু না তখন তুমি কিছু একটা হতে পারবে। আর যখন মনে করবে আমি কিছু একটা হয়েছি তখন তুমি যা ছিলে তাও থাকবে না’। ‘পরিশেষ’ এটাই ইসলামের মূল নীতি যে,আমি করেছি;আমার দ্বারা হয়েছে;আমার ইচ্ছা হয়েছে করেছি ইত্যাদি কথা বাদ দিয়ে আল্লাহ যা বলেছেন তা করতে পারা। এ কথাটাকে একজন এভাবে বলেছেন- “মন চাহি যীন্দাগী খতম করে রব চাহি যিন্দগী গড়তে হবে। তবেই ইসলামের পূর্ণতায় পৌঁছা যাবে”
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।