মা, মাটি ও শৈশব

শৈশব (সেপ্টেম্বর ২০১৩)

মোঃ আরিফুর রহমান
  • ১০

‘স্যার, আপনার ছুটি হয়েছে!’
সিফাত এর রুমে ঢুকে এ কথাটা দুইবার বলার পরও সিনান কোন উত্তর পেলনা। সিফাত গভীর মনোযোগ দিয়ে ওর কাজ করে যাচ্ছে। একটি নামকরা কোম্পানির সিইও সিফাত, এ অবস্থানে সে একদিনে আসেনি, রাত দিন পরিশ্রম করে অনেক সফলতা দেখিয়ে এ অবস্থানে আসতে হয়েছে। যতই দিন যাচ্ছে, দায়িত্ব ততই বাড়ছে। নিঃশ্বাস নেয়ার সময় নেই, কাজ আর কাজ। গত এক মাস যাবত সে একদিনের ছুটির জন্য চেষ্টা করছে কিন্তু মালিকপক্ষের কথা হচ্ছে- ‘পরবর্তী প্রোজেক্টটা চালু হলে তারপর ছুটিতে যেও’। তার এখন একটাই টার্গেট,-‘কত দ্রুত কাজটা সম্পন্ন করা যায়’।
‘স্যার, একটু এদিকে তাকিয়ে দেখেন! আপনার ছুটি মঞ্জুর হয়েছে।’- সিনান এবার চিঠিটা দেখাল। সে অফিসে সিফাত এর সহকারী হলেও বাস্তবে দুজন বন্ধুর মতই। সিফাত এর প্রতিটা কাজের সফলতার পেছনে রয়েছে সিনান এর অবদান।
‘কোন কাজ নেই? ঠাট্টা করতে এসেছিস, তাই না? মা খুব অসুস্থ, ছুটি পাচ্ছিনা, গ্রামেও যেতে পারছি না । এর মধ্যে ছুটি নিয়ে মজা করাটা কি ঠিক? শোন, চিল আকাশে ভেসে বেড়ালেও মন পড়ে থাকে মাটিতে, তেমনি আমি অফিসে শত কাজের মাঝে থাকলেও মন পড়ে আছে গ্রামে, মায়ের কাছে, আমার শৈশবে। ঠাট্টা না করে কি কাজ তাই বল?’
‘আমি সিরিয়াস। আপনি এখন বাড়ি যাচ্ছেন। ভাবীকেও জানিয়ে দিয়েছি, উনি আসছেন। আর একটা গুড নিউজ আছে, তা হল- “অফিস আপনাকে একটা গাড়ি দিয়েছে, যেটা প্রোজেক্ট শেষ হওয়ার পর দেবার কথা ছিল, সেটা আগেই দিয়ে দিয়েছে। আপনি সেই গাড়ি করে এখন সরাসরি গ্রামের দিকে যাত্রা শুরু করবেন, আর যদি চান আমি সে যাত্রায় আপনাদের সঙ্গী হতে পারি কারন আমি নিজেও ছুটি নিয়েছি। অফিসের কোন সমস্যা নাই। অফিস বলেছে, যতদিন খুশি ততদিন থাকতে।’
‘আমি হাসব, নাকি কাঁদব বুঝতে পারছি না। তবে এখন মনে হচ্ছে সত্যি সত্যি তুই ঠাট্টা করছিস, নয়ত তুই পাগল হয়ে গেছিস। তোর হাতের চিঠিটা আমার কাছে দে, আমি আগে দেখি।’
‘এবার বিশ্বাস হল?’- সিনান চিঠিটা সিফাত এর হাতে দেবার পর বলল।
‘হুম, বিশ্বাস করলাম। তবে এখনও একটা প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, তা হল- এত দ্রুত সব করছিস কি করে?’
‘তা আমি বলতে পারব না। সব আমাদের শ্রদ্ধেয় চেয়ারম্যান স্যার করেছেন, আমি শুধু স্যার এর আদেশ পালন করছি। এখনও কি আপনি বসে থাকবেন নাকি বের হবেন?’
‘ওকে, চল। আগে চেয়ারম্যান স্যার এর কাছ থেকে বিদায় নেই, তারপর নতুন গাড়িতে চড়ে শৈশবে যাই আর আমার মাকে সঙ্গে করে নিয়ে আসি।’
‘বিদায় নিতে হবেনা, চলেন।’
‘একটা ধন্যবাদ দিব না?’
‘দরকার নাই, পরে দেয়া যাবে।’

সিফাত এর নতুন গাড়িটা খুব পছন্দ হয়েছে। ও গাড়িতে ওঠেই খুশিতে গল্প জুড়ে দিল- ‘ জানিস সিনান, আমি যখন ছোটবেলা পড়তে বসতাম, পড়তে ইচ্ছা করত না। মা বলত-‘পড়ালেখা করে যে, গাড়িতে চড়ে সে’। আমি ভাবতাম, হয়ত পড়ালেখা শেষ হলেই বাড়ি-গাড়ি হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে একটা গাড়ি অর্জন করা কি যে কষ্ট তা যদি তখন জানতাম তাহলে এ জীবনে গাড়িতে চড়ার সপ্ন দেখতাম না। শৈশবে আমার খুব খেলতে ইচ্ছে করত কিন্তু মা বলত- ‘ এখন পড়, ভাল মানুষরা খেলাধুলা করেনা, যখন পড়ালেখা শেষ হবে তখন অনেক সময় থাকবে তখন ইচ্ছেমত খেলা করবা’ । আমি খেলার চিন্তা বাদ দিয়ে পড়তে বসতাম কিন্তু আমার খেলতে ইচ্ছে করত এবং মনে মনে প্রশ্ন করতাম- ‘আমি কি খারাপ মানুষ? আমার খেলতে ইচ্ছে করে কেন?’ এখন বুঝতে পারছি, হেলায় হেলায় সময় বয়ে গেলেও আমার খেলার সময় হবেনা, মা শুধু আমাকে বড় করতে মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছিলেন। যা হোক, আমার মা গাড়িটা দেখলে খুব খুশি হবেন। সন্তানদের কাছে মায়ের একটাই চাওয়া, তা হল সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে, ছেলে-মেয়ের সুখ দেখলেই মা বাবা খুশি।’
‘স্যার, অন্য কিছু বলেন, সুখের কিছু, কষ্টের কিছু শুনতে ইচ্ছে করছে না।’
‘এটাই আমাদের সমস্যা। আমরা কেউ কারও কষ্টের কথা শুনতে চাইনা। কষ্ট শেয়ার করতে চাইনা, শুধু সুখ দেখে ঝাপিয়ে পড়ি কিভাবে তা ছিনিয়ে নেয়া যায়। যা হোক, তোর ভাবীকে একটা ফোন দেই, কোথায় আছে একটু দেখি!’
‘দরকার নেই স্যার, আমার সাথে কথা হয়েছে, আর আমাকে এসএমএস পাঠিয়েছে। এইতো সামনেই ওয়েট করছে।’
‘তোর ভাবী খুব খুশি হয়েছে, তাই না? গাড়ির কথা বলেছিস?’
‘অবশ্যই, কেন বলব না? ভাবী খুব খুশি হয়েছে।’

সিফাত এর স্ত্রী স্বর্ণা গাড়িতে উঠার পর সিফাত রীতিমত একটা ধাক্কা খেল। গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি, তাও আবার নতুন গাড়িতে চড়ে! অথচ স্বর্ণার মুখে কোন আনন্দ নেই, কেমন যেন মনমরা হয়ে গাড়িতে উঠল।
‘কি হয়েছে স্বর্ণা?’
‘না কিছুনা। শরীরটা একটু খারাপ?’
‘আগে বলবা না? ড্রাইভার গাড়ি ঘুরাও। ডাক্তার এর কাছে যাব।’
‘না না, কোন দরকার নাই। আমি ঠিক আছি। আমাদের গ্রামে যাওয়াটা আগে দরকার। আমাকে নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করছ কেন?’
‘স্যার, ভাবীকে নিয়ে দুশ্চিন্তা নয়, আনন্দে ভাবীর চোখে পানি আসছে। ভাবীকে একা থাকতে দিন।’
সিফাত শান্ত হল, আবার গল্প জুড়ে দিল। গল্প মানেই মায়ের গল্প, শৈশবের গল্প।
‘জানিস, আমার খুব ইচ্ছে করে গ্রামে থাকতে, আমার শৈশবের কাছাকাছি, প্রকৃতির সবুজ প্রান্তরে থাকতে। যেখানে দিগন্ত জুড়ে কেবল সবুজ ফসলের মাঠ- মাঝ দিয়ে এঁকেবেঁকে চলে গেছে মাটির রাস্তা, রাস্তার ধারে ছায়া দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে নানা রকম গাছ, ক্ষেতের মাঝে মাঝে প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে আছে তাল গাছগুলো হবে আমার সঙ্গী। আর মনে হবে সবসময় মায়ের আঁচলের নিচে আছি।’
‘স্যার, কেমন ছিল আপনার শৈশব?’- যদিও সিনান এর তার স্যার এর শৈশব কেমন ছিল তা শুনার কোন ইচ্ছা বা আগ্রহ এখন নেই তবুও সিফাত বলতে পেরে খুশি হবে বলে সে শুনতে চাইল।
‘ছোটবেলায় আর সবার মতোই ছিলাম, বাচ্চাদের এখন যা যা করতে ইচ্ছে করে, ঠিক আমারও তাই করতে ইচ্ছে করত। এই যে বাইরে টই-টই করে ঘুরে বেড়ানো, খেলতে যাওয়া, গান করা, ছবি আঁকা, অভিনয়- এসবে আমারও ছিল ভীষণ নেশা। নেশা থাকলে কী হবে, আমি স্কুলের পড়া বাদ দিয়ে কখনও এসব করতাম না। আগে পড়ালেখা, তারপর অন্য সব। পারিবারিক শাসনের মধ্যে বড় হয়েছি।’
‘ধর্মীয় অনুশাসনও ছিল প্রচুর। ভোরে নিয়মিত মক্তবে যেতে হতো। আর মাওলানার নির্দেশ ছিল মাগরিবের নামাজে অবশ্যই মসজিদে যেতে হবে। তারপরও আমরা প্রায়ই ফাঁকি দিয়ে সন্ধ্যাটা নদীর পাড়ে কাটিয়ে আসতাম। শীতের ভোরে আগুন পোহানোর রেওয়াজ ছিল। সেই আগুন পোহানোর জন্য ঈদ উপলক্ষে আমরা পুকুরের পাশে সুন্দর করে ছোট খড়ের ঘর বানাতাম। শীতের দুপুরে বানরওয়ালা আসত। বাড়ির সব শিশুরা যৌথভাবে টাকা দিয়ে আমরা সেগুলোর নাচ দেখতাম।’
‘তারপরও এক চমকপ্রদ শৈশব ছিল আমার। খালে-বিলে মাছ ধরা, পাশের মাঠে খেলা এগুলো ছিল দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের অংশ। খালের পাড়ে সবজি চাষ করেছি আমি। শালিক আর দোয়েলের বাচ্চা খুঁজতাম গাছে। বাড়ির পাশের ধানক্ষেতগুলো বন্যার পানিতে ডুবে গেলে কলাগাছ কেটে ভেলা বানাতাম। শীতে ধান কাটা হয়ে গেলে ক্ষেতগুলো ফাঁকা হয়ে যেতো। আমরা সেখানে জাম্বুরা দিয়ে বল বানিয়ে খেলতাম, ঘুড়ি উড়াতাম। ইসলামী জলসা উপলক্ষে পাশের গ্রামে মেলা বসতো। আমরা ছুটতাম সেখানে।’
‘আমাদের ঘরের সামনেই একটা বকুল ফুলের গাছ ছিল। গাছের তলা থেকে ভোরে আমি ফুল কুড়াতাম আর মালা গেঁথে দেয়ালে সাজিয়ে রাখতাম। শৈশবে আমাদের বাড়ির পাশে প্রচুর হিন্দু পরিবার ছিল। ওদের রান্না ঘরেও ঢুকে যেতাম আমারা। আমরা দুষ্টমি করে ঢুকলেই গোবর দিয়ে ঘর লেপা শুরু করতেন। শৈশবে আমাদের মধ্যে ছেলেধরার ভয় ছিল ব্যাপক। নতুন ব্রিজ নির্মান করতে হলে নাকি বাচ্চা শিশুদের মাথা বলি দিতে হয়। আমাদের এলাকায় তখন অনেক ব্রিজ হচ্ছিল। তাই ছেলেধরা আতঙ্কও ছিল বেশি। কেউ বেশি দুষ্টমি করলে তাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য মনের ভেতর ছেলেধরা আতঙ্ক ঢুকিয়ে দেওয়া হতো সুকৌশলে। পরীক্ষা শেষ হলে বছরে একবার মামা বাড়িতে যেতাম আমরা।’
‘স্যার, একটা কথা বলব?’
‘বল।’
‘পুরনো একটি গানের কথায় আছে, 'ডোরাকাটা দাগ দেখে বাঘ চেনা যায়, আকাশের রঙ দেখে মেঘ চেনা যায়'। কিন্তু মানুষের মুখ দেখেই যে তার শৈশব জীবনের রূপ-রঙ চেনা যায়, এটা বিশ্বাস করেন?’
‘কি রকম?’
‘মুখ দেখেই বলা যাবে তার শৈশবের দিনগুলো কেমন ছিল, কেমন পরিবেশে বেড়ে উঠেছে তার জীবন।’
‘কিভাবে?’
‘এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য বের হয়েছিল। গবেষণায় ১৫ ধরনের মুখাকৃতির ২৯২ জন মানুষের ওপর এ জরিপ চালানো হয়। যাঁদের প্রত্যেকের বয়স ৮৩ বছর। এসব মানুষের মুখের গঠনপ্রকৃতি যেমন কান, নাক, চোখ ও মুখের আকৃতি ইত্যাদির পরিমাপ করা হয়। এর মধ্যে যাঁদের মুখাকৃতি অপ্রতিসম অর্থাৎ একটু বাঁকা তাদের অতীত ঘেঁটে দেখা যায়, তাঁরা শৈশবে একটু বেশিই কষ্টকর দিন যাপন করেছেন। আর সোজা মুখাকৃতি ব্যক্তিরা তুলনায় ভালো শৈশব কাটিয়ে এসেছেন। আগে কপালে ভাঁজ পড়া ব্যক্তিদের অতীত জীবন বেশ কষ্টের মধ্যে ছিল বলে মনে করা হতো।’
‘কারা গবেষণাটি করেছে?’
‘ইউনিভার্সিটি অব ইডেনবার্গের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইয়ান ডেরি ও তাঁর সহকর্মীরা এ গবেষণা প্রতিবেদন ইকোনমিক্স অ্যান্ড হিউম্যান বায়োলজি জার্নালে প্রকাশ করেছিল।’
‘তো, আমাকে দেখে কি মনে হচ্ছে? কোন মিল পেয়েছিস গবেষণার সাথে?’
‘না, তাইত ভাবছি, গবেষণার সব ফলাফল যে ঠিক তা সত্য নয়!’

সিফাত এর গাড়িটা ইতিমধ্যে শহর পেরিয়ে নদীর পার ঘেঁষা পিচ-ঢালা রাস্তা দিয়ে গ্রামের দিকে ছুটছে। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ও বাড়িতে পৌঁছে যাবে। এই যাত্রাপথে স্বর্ণা কোন কথা বলেনি। নদীটা দেখা মাত্র সিফাত বলে উঠল। ‘সিসান, বাম পাশে যেটা দেখতে পাচ্ছিস এটাই আমাদের সেই নদী। এখন যদিও পানির প্রবাহ নেই কিন্তু আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন বর্ষাকালে প্রচণ্ড স্রোতে সব ভাসিয়ে নিত। নদীর পাড়ে শান বাঁধানো ঘাট ছিল। ঘাটের পাড়ে বিশাল গাছের মগ ডালে উঠে ঝপাৎ করে নদীতে লাফ দিতাম। তারপর চলত সাঁতার প্রতিযোগিতা। নদীটা মোটেও ছোট ছিল না। ঘন্টাখানেক লাগতো ওপারে যেতে, আবার ঘন্টা খানেক সাঁতার কেটে এপারে আসা। মাছেরা পানির ওপর ভেসে ভেসে সাতার কাটতো, গামছা নিয়ে তাদের তাড়িয়ে বেড়াতাম। এখন নদীর পাড়ে দাড়িয়ে থাকলে দম বন্ধ লাগে আমার। কোথায় সেই শান বাঁধানো ঘাট? নদী চলে গেছে বহু দূর। দীর্ঘ শ্বাস কতটা দীর্ঘ হলে ত্রিশ বছর ছোঁয়া যায়?’
‘হায়রে শৈশব? কোথায় হারিয়ে গেল দিনগুলি? আমার খুব কষ্ট হয় এ যুগের বাচ্চাদের দেখে, ওদের ‘শৈশব’ কাটে ডোরেমনের সাথে প্রতিদিন অথচ ওরা কেউ মীনাকে চেনে না । ওরা কম্পিউটার আর সামনে বসে ক্রিকেট খেলে, ফিফাতে গোল দেয় অথচ মাঠের বালুতে ওদের বড্ড এলার্জি । আর এলার্জি থাকবে না কেন? ওরা মাঠ কি জিনিস তাইত জানেনা। ফসল কাঁটার পর দিগন্তজোড়া মাঠে বিকালে কি কি খেলা হয় তাইত জানেনা। ওরা সাড়ে চার কেজি ওজনের ব্যাগ কাঁধে নিয়ে স্কুলে যায়, ইংরেজি শেখে খুব কিন্তু বড়দের শ্রদ্ধা করতে জানেনা। ডোরেমনের কাছে ওরা হিন্দী শেখে প্রতি বিকালে, হিন্দী গান শুনে খুব কিন্তু ওদের প্রিয় গানের তালিকায় ‘আমরা সবাই রাজা’ থাকেনা। ওরা ‘ইত্যাদি’ দেখে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেতে শিখেনি কোনদিন । ওদেরকে সাঁতার শেখানোর কেউ নেই । ওরা গাছে উঠতে জানেনা, গাছে উঠবে কি, শহরের মোট গাছই হাতে গুনে ফেলা যায় । ওরা মায়ের দেখাই পায় না, কার উপর রাগ করে গাল ফুলাবে? ওদের শৈশব তাই খুব নিঃসঙ্গ, খুব নিঃশব্দ, নীরব।’
সিফাত একাই বকে যাচ্ছে, এর মাঝে কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়ির সামনে এসে পড়ল। স্বর্ণার চোখ ছল ছল করছে। বাড়িতে অনেক জটলা, মানুষের ভীর, তা দেখে সিফাত অস্থির হয়ে পড়ল।
‘কি হয়েছে? এত ভীর কেন? স্বর্ণা, তোমার কি হল?’
ঠিক এই মুহূর্তেই সিসান বলে উঠল- ‘স্যার, আপনি শান্ত হন, দয়া করে উত্তেজিত হবেন না, আপনার আম্মু আর আমাদের মাঝে নেই।’
‘কি বললি?’
‘আমি আর ভাবী আগেই জানতাম। আপনাকে এতক্ষণ বলিনি।’
‘কথাটা শুনামাত্র সিফাত হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করল।’
সিসান কি বলবে বুঝতে পাড়ছে না। সে বাকরুদ্ধ, শুধু মনে মনে ভাবছে, হায়রে অফিস, হায়রে চাকরি, যে অফিস এতদিন একদিনের ছুটি দিতে পারেনি, সেই অফিস তাকে ছুটি দিল, গাড়ি দিল কিন্তু সময় অতিক্রান্ত হবার পর। নগর জীবন দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ। আমরা অনেক কিছু পাচ্ছি কিন্তু কি যে হারাচ্ছি তা ভাবছি না। আমাদের শৈশব, আমাদের মাটি, মায়ের মমতা ছেড়ে টাকার পিছনে ছুটে কি লাভ?
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক সুন্দর গল্প..সময়ের সাথে শৈশবের স্মৃতিগুলো গল্পটাকে আরও েোনবন্ত করেছে...ভালো লাগলো....
ভালো লাগেনি ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩
ধন্যবাদ পড়ে মন্তব্য করার জন্য.
ভালো লাগেনি ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩
সূর্য ছুটির আবেদন গৃহীত হয়নি প্রজেক্টটা শেষ করার অজুহাতে, তার পর হঠাৎ করেই ছুটি মঞ্জুর হওয়ায় গল্পের শেষটা আঁচ করা যাচ্ছিল। পথিমধ্যে শৈশবের বর্ণনা একটা আবেগ যোগ করেছে গল্পে। ভালো লাগলো।
ভালো লাগেনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৩
হঠাৎ করেই ছুটি মঞ্জুর হওয়া..... -সিফাত কি এরকম ছুটি চেয়েছিল? i want to show our corporate culture with childhood.... Thanks.....
ভালো লাগেনি ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৩
মৌ রানী অনেক ভালো লাগলো ।
ধন্যবাদ পড়ে মন্তব্য করার জন্য...।
Tohura Toma এক সময় সব ই রয়ে যাবে.........কিন্তু আমাদের আপন জন.........আমাদের মা বাবা...........আমাদের আপন ভাই বন.........যাদের ছাড়া একদিন ও কাটতনা সেই সব বন্ধু রা থাকবে না.........তাই সব কিছু র সাথে তাদের কেও জীবনে র কাজের মাঝে সময় দিতে হবে.................নিজের জন্য র তাদের জন্য যারা আমাদের ভালবাসে..............আপনার লেখা টা খুব ভালো লাগছে ....মনে করিয়ে দিচ্চে......যে একসময় হয়ত তারা আমাদের সাথে থাকবে না যাদের আমরা অন্নেক ভালবাসি.কিন্তু বলা হয়না.............
মোঃ সাইফুল্লাহ খুবই সুন্দর। আমার মা গলব্লাডারে ক্যান্সারে আক্রান্ত। আল্লাহর কাছে আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন ও আমার মায়ের শাররিক অসুস্থতার বিষটি মানবিক দিক দিয়ে বিচার করে যে যতটুকু পারেন আর্থিক সাহায্য করবেন । সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা : মোঃ সায়ফুল্লাহ ,সঞ্চয়ী হিসাব নং -১০১৭৪০৪, সোনালী ব্যাংক,মাগুরা শাখা মাগুরা।
ভালো লাগেনি ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩
Thanks for inspiration.... Corporate job kore amra ma, mati & soisob theke onek dore chole aseci....ame apnar ma ar jonno duwa kori...Allah jeno unake susto kore tolen.... r sobar kase request korci help korar jonno...
ভালো লাগেনি ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩
এশরার লতিফ ভালো লাগলো সিফাতের শৈশবের গল্প, এডিনবরা ইউনিভার্সিটির গবেষণার খবরটিও একটা মাত্র দিলো. অনেক শুভেচ্ছা.
ভালো লাগেনি ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৩
আপনাকে ধন্যবাদ...। দোয়া করবেন...।
ভালো লাগেনি ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

২৬ জুন - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ১০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪