শিমূল ফুলের দোলা

ভালোবাসা / ফাল্গুন (ফেব্রুয়ারী ২০১৫)

দীপঙ্কর বেরা
  • ১১
  • ২৩
প্রথম যেদিন দেখা হয় সেদিনটা ঠিক মনে নেই । দীপন বিয়ে বাড়ির কাজে ব্যস্ত । সবাই সেজে গুজে থাকে । বেশ সুন্দরও লাগে । স্পেশাল কাওকে দীপন তেমন গুরুত্ব দেয় না ।
কিন্তু দীপন যেখানেই যাচ্ছে । দেখে সেখানেই । দাদা বলল - ছাদনাতলায় এ গুলো রেখে আয় । কাপড় মিষ্টি আরো কি সব দীপন রাখতে গেছে দেখে সাজানো রজনীগন্ধার গোছা ধরে দাঁড়িয়ে কাকে বলছে আর হাসছে । একটু পরে সাইনাকে দেখতে গেল । কনে সেজে দিদি আরো দারুণ । সেখানেও সে । খাওয়ার কাছটায় এক পাক ঘুরে আসতে গিয়ে দেখে সেখানেও । বারক'য় একে ওকে নিয়ে ফটো সেশন । হাসি হাসি মুখে ছবি তুলছে । প্রায়ই সামনে সে । তত্ত্বের সাজানো নাড়াচাড়া করছিল পাশে দেখে হ্যাঁ কাদের সঙ্গে যেন দাঁড়িয়ে আছে । জায়গা ঘুরে ফিরে তো দেখা হতেই পারে । দীপন গুরুত্ব দিল না । আগে দেখেছে কি না জানে না বা আজকে দেখে হাসছে কি না বুঝতেই পারল । তাছাড়া অন্য বন্ধুদের তুলনায় দীপন এ ব্যাপারে বেশ কাঁচা ।
কাকতালীয় ভেবে দীপন আবার অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে । বাড়ির ছোট । কেউ তেমন কাজ দিচ্ছে না । আর সামনেই বারো ক্লাস পরীক্ষা । তবুও দীপন উৎসবে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে । এখন ঘর সরগরম । অনেককে চেনে অনেককে চেনে না । অনেক আত্মীয় তার উপর বরযাত্রী ।
বাবা বলব - দীপু , যা তো উপরে নিম্মিবাবুকে খবর দে বল মহিম এসে গেছে ।
দীপন বুঝতে পারল না । নিম্মিবাবুকে চেনে । তাই সিঁড়ি দিয়ে উঠে গেল । ছটপটে ভাবটা এখনও আছে । তাই সিঁড়ি শেষ করার মুখে প্রায় ধাক্কা । স্পর্শ হয়েছে কি হয় নি কেউ জানে না । চোখে চোখ রেখে দুজনেই দুদিকে । মুখে কোন কথা নেই । এ যে সেই । দুজনে সে কথা ভাবছে কি না বোঝা গেল না ।
তবে দীপন একেবারে দোতলার বাইরে বারান্দা কাম ছাদে চলে গেল । হাল্কা হাল্কা এখনও ঠাণ্ডা আছে । ভেতরে বোঝা যাচ্ছে না । আকাশ বেশ পরিষ্কার । ঝিরঝিরে বাতাসে সারা দেহে কে যেন পালকের পরশ দিয়ে যাচ্ছে । ভাসমান স্রোতে দীপন যেন কোন সে সফরে চলে যাচ্ছে ।
- কি রে এখানে দাঁড়িয়ে ? আমাকে ফাঁকি দিয়ে বেশ সুখটান দিচ্ছিস ? বাবলু এই কথায় দীপন আবার নিজের ঘরের উৎসবে ফিরে এল ।
বেশ জোরে লাউড স্পীকার । সানাইয়ের বাঁশি যেন আরো জোরাল । বাবলুর কাছ থেকে সিগারেট নিয়ে বার কয় সুখটান দিয়ে মলয় বাতাসে গোল করে ধোঁয়া ছাড়তে লাগল । তাতে সুপ্রিয় মোহন অনিত যোগ দিল । ততক্ষণে দীপনের মনে পড়ল নিম্মিবাবু । সবাইকে বলল - তোরা বস । আমি এক্ষণই আসছি ।
সবাই জানে আসবে না । এ সব নেশার মধ্যে দীপ নেই । যেন মজা করতেই জানে না ।
ঝট করে সব কটা ঘর খুঁজে ফেলল । সবাই মশগুল । কেউ কেউ হাত তুলল - কি দীপ । ভাল তো ।
- না , ছেলেটা ভাল ।
-এই দীপকে দেখে শেখ কি ভাবে মন দিয়ে পড়তে হয় ।
না । কোথাও নেই । আর তাকেও চোখে পড়ছে না । এতক্ষণের কাকতালীয় হঠাৎ মিলিয়ে গেল ।
দীপন পাত্তা দিল না । নীচে নেমে পড়ল । বাবাকে খুঁজতে লাগল । একদম শেষের ঘরটায় নিম্মিবাবুর সাথে বাবা বসে । গভীর আলোচনায় ব্যস্ত । দীপনকে দেখে বলল - কি রে এতক্ষণ কোথায় ছিলি । শেষে আমাকে কষ্ট করে ডেকে আনতে হল । যা আলমারি থেকে তো মাকে বলে একটা প্যাকেট আছে নিয়ে আয় ।
দীপন ভাবল এই তো উপরে গেলাম । তাতে কতটা সময় ! নিজেকে হিসেব করল । ওরে বাস ! সে তো অনেকটা । হল ঘরে বিয়ে চলছে । তখন তো এখানটা ফাঁকাই ছিল । অনেকের খাওয়া হয়ে গেছে । এতক্ষণ ও বারান্দায় ছিল মনেই নেই । মিষ্টি বাতাস বইছিল । সামনের শিমূল গাছটা দোল খাচ্ছিল । আর কে যেন মনের কোনায় এসেই হারিয়ে যাচ্ছিল ।
দীপন পুরো ঘোরের মধ্যে চলে গেল । চোখ দুটো খুঁজতে লাগল । কোথায় ? কোথায় ? পাশ দিয়ে মা চলে গেল । দীপন যেন দেখতেই পেল না । চলে গেল বিয়ের কাছে । নানান ফুর্তি চলছে আর হাসির হুল্লোড় । বাবুল হাতে টান দিল - চল , ছাদে সব ব্যবস্থা হয়ে গেছে ।
-আসছি যা । বলেই দীপন ভিড়ে মিশে গেল । চোখ খুঁজতে খুঁজতে পেল । কিন্তু কিছুতেই তার কাছ পর্যন্ত পৌঁছতে পারল না । পেছন পেছন ঘুরতে লাগল । একটু পরে মা ধরল - কি রে এদিক ওদিক ঘুরছিস ? বাবা কি বলেছিল ভুলে গেছিস ?
দীপন জিভ বের করল । তারপর আবার ভিড় খুঁজতে লাগল । মা ডাকল শুনল না ।
এভাবেই দীপনের সেই ঘোরে দিন আজও বার বার আসা বসন্তের মত আরো নতুন করে সেজে ওঠে । আরো কাছে আরো কাছে একেবারে হৃদয়ের কাছে পেয়ে যায় সে দিনের সেই চোখে চোখে চোখ বিনিময় সিনিকে ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন ....হৃদয়ের কাছে পেয়ে যায় সে দিনের সেই...। চমতকার!! ভাল লেগেছে। শুভেচ্ছা রইল।
ভালো লাগেনি ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
অনেক ধন্যবাদ । ভাল থাকবেন
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
জোহরা উম্মে হাসান খুব সুন্দর লাগলো শিমুল ফুলের দোলা । শুভেচ্ছা অনেক !
ভালো লাগেনি ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
bimal Mon rangiye jay . Darun
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
অনেক ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
মোহাম্মদ সানাউল্লাহ্ আসলে আপনি সব কিছুই সুন্দর করে গুছিযে উপস্থাপন করতে পারেন । খুব ভাল লাগল ।
ভালো লাগেনি ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
ছন্দদীপ বেরা Sundar ek drishokolpo , bhalo laglo
ভালো লাগেনি ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
গোপাল Sundar onubhutir prokash , mugdho hotei hoy,
ভালো লাগেনি ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
অনেক ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
রাজু ভালো লাগলো । ভোট রইলো ।
ভালো লাগেনি ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
Onek onek dhanyavad, khub bhalo thakben
ভালো লাগেনি ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
রবিউল ই রুবেন কলমের তুলিতে ভালোই চিত্র একেছেন। ভালো লাগল।
ভালো লাগেনি ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
Onek dhanyavad janalam, bhalo thakben
ভালো লাগেনি ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
জুন খুব ভালো এঁকেছেন।অবাক হয়ে পড়েছি গল্পটা।একরাশ শুভ কামনা।ভালো লাগা সাথে ভোট রেখে গেলাম। আমার পাতায় নিমন্ত্রণ।
ভালো লাগেনি ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
Dhanyavad, khub bhalo thakben
ভালো লাগেনি ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
মোজাম্মেল কবির লেখাটা একটু ছোট হলেও বেশ ভারী... ভোট ও শুভ কামনা রইলো।
ভালো লাগেনি ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
Dhanyavad janalam,
ভালো লাগেনি ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

১৫ জুন - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ৬৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪