মলের মধ্যে সানজিকে নিয়ে ঢুকেই সায়ন্ত বুঝতে পারল । তাকে সবাই অন্য রকম ভাবছে । প্রায়ই এমন ঘটে বলে মাকে বলেছিল – তোমরা চলো । সানজি আমার সঙ্গে গেলে প্রায়ই নানান অপ্রিয় কথা কানে আসে । -তুই কি রে ? তোর নিজের বোন , তার সঙ্গে যেতে তোর এত দ্বিধা । -তা নয় মা , সবাই ভাবে ও আমার গার্লফেন্ড । তাই ভেবে সে রকম বিহেভ করে । -কেন ? বন্ধুদের বুঝিয়ে বলতে পারিস না ? -বন্ধু ছাড়াও আমাদের সমাজে আরো লোকজন আছে মা । -আমি কোন কথাই শুনতে চাই না । আজকে ওকে নিয়ে যেতে হবে আর ওকে সম্মানের সঙ্গে মল থেকে ঘুরিয়ে আনতে হবে । অগত্যা তাই হল । ঢুকেই সানজি বলল – দাদা , তোর চিন্তা নেই আমি তোর পাশেই আছি । লোকে কি বলল কি এসে যায় । চল ট্রেন্ডসে চল । ওখানে ভ্যারাইটি আছে । পাশেই আস্তে মুখের সিটি শুনেই ঘুরে দেখে একদল ছেলে সানজির প্রায় গা ঘেঁষে চলে গেল । তাতে সায়ন্তকে দাঁড়াতে দেখে সানজি আর পারল না । একটু কোনায় নিয়ে বলল – দেখ দাদা, নিজের মনোভাব বদল কর । মেয়েরা যেমন আজকাল কাজে বেরিয়েছে । ছেলেরা সেই বেরিয়ে পড়া মেয়েদের মত করে এগিয়ে চলছে । এই একটু ধাক্কা লাগল , কে সিটি দিল , কে বাঁকা চোখে দেখল এ সবকে আর কেউ পাত্তা দেয় না । তুই আমার দাদা সেটাই আমার গর্ব । আমাকে কেউ অসম্মান করছে এটা যেমন ভাবছিস , অসম্মানের অবস্থান অনেক বদলে গেছে । তাই না ? -তুই তো অনেক বড় হয়ে গেছিস । আমিও তাই ভাবি । কিন্তু চারিদিকে কেমন যেন খোলামেলা ভাব আর নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া আর জোর করে লুটে নেওয়ার পরিবেশ গড়ে উঠছে । -তুই আমার ভাল বন্ধু বলে এ সব বলতে পারছি । আর দেখ মাও কি সুন্দর বুঝে গেছে । আর বাবার কথা বলিস না । গুড পারসোনালিটি । -তুই দেখ আমরা এখানে কথা বলছি দেখে ওরা কিন্তু ভেবেই চলেছে অন্য । -কেউ ভাবছে না । আমরা সেই ভাবনায় থাকলে জীবন চলবে । এবার ওরা লেডিজ জামা কাপড় দেখে দুটো নিল , সায়ন্তের জন্য জামা নিল , ট্রায়াল দিয়ে প্যান্ট নিল । আর তাই অল্টারে দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগল । এত ভিড়ের মাঝে দু জন বেশ । কত রঙিন জীবন । হাসির ফুলঝুরিতে মাতোয়ারা জীবন । কত কি সুখের আয়োজন । মন ভাবনার হাজারো প্রযুক্তি । -কি রে গুম মেরে গেলি । রাগ করলি । সানজির কথা শুনে সায়ন্ত হেসে ফেলল । ডিজিটাল রুমে ঢুকেই বলল – দেখ , আমার কত বন্ধু । আজকে কেউ আসে নি মনে হয় । কয়েকটা তো ঝাঁপিয়ে পড়ে তাও ঘরের আর ঐতিহ্য আমার মধ্যে আছে বলে আজও প্রেমিকা হিসেবে কাওকে মনে হয় নি । আবার অনেকেই ভাল হয়তো আমি পাল্টাতে পারি নি । সানজি গালে টোকা দিয়ে বলল – আমার ভাল দাদা । সে জন্য কষ্ট নাকি ! বলেই খিল খিল হেসে ফেলল । তাই দেখে সেলস-ম্যান চমকে উঠল । আর ‘উরে বাস !’ বলে চলে গেল । -দেখ সিজি , আস্তে । চুপ । -কেন । তুই আছিস আমার কি ভয় । থোড়াই কেয়ার । চল উপরে কে এফ সি তে গিয়ে কিছু খাই চল । এক্সেলটারে উঠেই সায়ন্ত বলেই ফেলল – সিজি , তুই এ রকম কাও কে । এবার মনে হয় সানজি রেগে গেল – তোকে কি মা এই জন্য আজ আমাকে সঙ্গে পাঠাল । জিভ বের করে সায়ন্ত লাইনে দাঁড়াল । চিকেন নিয়ে খেয়ে এ সি র বাইরে এসে সব ধুলো ঝেড়ে ফেলে সমাজ স্রোতের ধুলোর মধ্যে অনাবিল সম্পর্কের হাসিতে ছড়িয়ে পড়ল আর ছড়াতে চাইল ভাই বোনের আদর ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ওয়াহিদ মামুন লাভলু
বাস্তব জীবনের চিত্র সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। খুব ভাল লাগল। শ্রদ্ধা জানবেন।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।