ভৈরবে একদিন

ভ্রমণ কাহীনি (নভেম্বর ২০১৬)

Nasima Khan
  • ১৪৬
মা গঙ্গার মত নামী দামী নয়, সাধারণ এক নদী ভৈরব । যার পাদদেশে গড়ে উঠেছে শিল্প নগরী খুলনা । সেবার শীতে আমরা দুজন সিদ্ধান্ত নিলাম, নদী ভ্রমণে বের হবো । মানে আমি আর কুহেলী । ভৈরব একটি শান্ত নদী, কেবল বর্ষায় এ কিছুটা উনমত্ত হয়ে পড়ে । আমরা ভৈরব নদীর ত্রী মোহনা খালিশপুরের বীপরিতে শ্মাশান ঘেষে কুলা পাটগাতী হয়ে গাজীপুর অবধী যাবো, তাও কীনা রাতে । গা ছম ছম করা রাত । শ্মশানে রাতের বেলা আইলে জ্বলে, যাদের মুখ দিয়ে আগুন ঝরে, শ্মশানে মড়ার খুলি বাতাসে ওড়ে । নদীর দুপাশে বিরান । জনমানবহীন জায়গা। আর ডাকাতের সুখ্যাতিও আছে ।
কুহেলীকে নিয়ে আল্লাহর নামে নৌকাতে উঠলাম, সঙ্গে রহিম মাঝি । রহিম মাঝির চোখ দুটি মদ খাওয়া মানুষের মত লাল থাকে । তাকালেই কেমন ঘেন্নায় গা ঘিন ঘিন করে ওঠে । অন্য কোনো মাঝি রাজি না হওয়ায় রহিম মিয়ার স্মরনাপন্ন হলাম । রহিম মিয়া বললো,- আজ ভরা পূর্ণীমা, নদীর চরে পরীরা আসবে স্নান করতে ।
কুহেলী বললো,- এই শীতে কী পরিরা গোসল করে ?
করে আপা, করে, মানুষ দেখলেই ঝাপ দিয়ে নৌকার গলুই ধরে নৌকায় উঠে পড়ে ।
কুহেলী দমবার পাত্রী নয়, বললো,- দেখো রহিম মিয়া ভয় দেখাবার অনেক সময় পাবে, দিনের বেলায় শোলপুরের ঘাটে বসে ভুতের গল্প করো, এখন একদম চুপ থাকবা । না হলে আমিই তোকে খাইয়া ফেলবো ।
গা আমারই ছম ছম করে উঠলো,- একী কুহেলী, না অন্য কেউ । সন্দেহ দোলা দিলো মনে ।
রহিম মিয়া কুল দিয়ে নৌকা বাইছে, শ্মশানের পাশে আসতেই বললো,- এখনই ওই বট গাছটায় ঝড় উঠবো ।
কুহেলী বললো,- আমার হাতের ইশারায় ঝড় থাইমা যাইবো হারামী, তুই নৌকা চালা ।
রহিম মিয়া একটু খানি হতবাক হয়ে তাকালো, তারপর নৌকা থামিয়ে লাফ দিয়ে শোলপুর শ্মশান ঘাটে নেমে পড়লো ।
কুহেলী আমার কানের কাছে ফিসফিস অরে বললো,- রহিম মাঝি আসেনি, এসেছে একটা ভুত । চলো আমরা নৌকা নিয়ে ফিরে যায় ।
কী বলো ফিরে যাবো ! এডভাঞ্চার রোমান্স, কিছুইতো হলো না ।
রহিম মিয়া তার চকচকে দাঁত বের করে হাসতে হাসতে বললো, এক লাগছিলো খুব, আপাই যাবেন, ঐ খানে যান। আন্ধারে কেউ নাই, কেবল বট গাছটার ধারে যাইয়েন না ।
রহিম মিয়ার আচমকা আগমনে আমি হতচকিত হলাম । মুহুরতে এক সেরে চলে এলো ?
কুহেলী বললো,- না, আমারে তুই মাঝ দরিয়াই নিয়া চল তোদের দুই জনকেই খাবো । আমি জ্ঞান হারালাম, রহিম মিয়া লাফ দিয়ে নদীতে পড়ে বাবারে মারে চেচাতে লাগলো । জ্ঞান ফিরলে দেখলাম, কুহেলী আমার চোখে মুখে পানি দিচ্ছে আর বলছে, ফানও বোঝো না, বীর বাহাদুরম ভয় প্যে জ্ঞান গেলো, আর তোমার ঐ পালোয়ান মাঝি নদীতেই গেছে বুঝি, চলো আর নৌকা ভ্রমনে কাওজ নেই, বাড়ী ফিরে চলি ।
আমি সভয়ে তাকিয়ে বললাম, চলো ফিরেই যাই ।
কুহেলী ফকির হাটের মেয়ে নৌকা থেকে গাছে ওঠা সব পারে । দিব্যি নৌকার হাল ধরলো । ঝিরি ঝিরি বাতাস বইছে নদীতে । ঝপাত ঝপাত করে বৈঠা ফেলছে কুহেলী । ঐ যে ঘাট দেখা যায় । রহিম মাঝি সাঁতরাচ্ছে আর চিল্লাচ্ছে ভাইজান , আমারে নিয়া যান ।
কুহেলীর কোনো দিকে কান নেই সে দ্রুত নৌকা নিয়ে ঘাটে এলো । পাঁচ মিনিটের নৌকা ভ্রমন । কিন্তু আমার আজও মনে পড়লে গায়ে কাটা দেয় ।।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আসাদ জামান নাসিমা খান ম্যাডামকে শুভেচ্ছা এ রকম সুন্দর একটি ভ্রমন কাহিনী উপহার দেওয়ার জন্য ।
নুরুন নাহার লিলিয়ান ছবি থাকলে আরো ভালো লাগতো।

০৬ জুন - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ১৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪