অন্ধকার বিহীন পৃথিবী ও তারা

অন্ধকার (জুন ২০১৩)

শুভ্র নীল
  • ১৩
৪৩৩৫ সাল । পৃথিবী জ্ঞান বিজ্ঞানে অনেক এগিয়ে এসেছে । মানুষরা ভাসমান গাড়িতে চড়ে , তার বৃষ্টিকে ও কন্ট্রোল করে । খাদ্যের কোন অভাব নেই । তবে এই যুগের মানুষ মানুষের সময়ের বড় অভাব । তারা এখন শুধু বিজ্ঞান চর্চা করে ।ঘরের সব কাজ করে রোবট । পুরো পৃথিবী এখন শুধু একটি রাষ্ট্র ।এরাভাবে আগের যুগের বিজ্ঞানীরা এত গাধা ছিলেন কেন ? তারা শুধু সময় নষ্ট করেছিল। তারা গবেষণা করত কিভাবে পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিল । তা জানার দরকার কি হে । ভবিষ্যত কি হবে সেটা জানলে এ কত সুবিধা।বিপদ কত সহজে কাটিয়ে উঠা যায় ।এখনতো আলোয় পৃথিবী ভরে থাকার কথা ।কিন্তু তখনই এখন ঘোর বিপদ নেমে এল পৃথিবী জুড়ে ।
লর্ড টাফো খুব চিন্তিত । তিনি বর্তমান কালের সেরা বিজ্ঞানী । পদার্থ, গণিত সব দিক দিয়ে তিনি এগিয়ে আছেন।আর কিছুক্ষণের মধ্যে পৃথিবীর পুরো দখল নেবে রবোটেরা।যে করেই হোক থাকে উদ্ধার করতে হবে পৃথিবী ও তার মানুষকে। তবে রবোটেরা সরাসরি ক্ষমতা নিতে পারবে না । কোন একটা কারণ দেখিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নেবে। তিনি তার অত্যাধুনিক হলোগ্রাফিক স্কিন চালু করলেন । সেখানে প্রচার হচ্ছে রোবটেরা জ্ঞান বিজ্ঞানে মানুষদের ছাড়িয়ে গেছে । তাই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে । এবার পুরো পৃথিবীর দায়িত্ব নেবে রোবট । মানুষের কল্যাণের কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে । পৃথিবীর বিজ্ঞান কাউন্সিলকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে । তবে পৃথিবীর মানুষ যাতে এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয় তাই মানুষ ও রোবট এর মধ্যে বুদ্ধি পরীক্ষা হবে । প্রাচীন কালে এই বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষার খেলা হত। এর নাম ছিল দাবা এবং এটি হবে আজ থেকে পনের দিন পর । ততদিন কাউন্সিলের কাছেই ক্ষমতা থাকবে । তবে খেলায় যে পক্ষ জয়ী হবে তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে । লর্ড টাফো খুব চিন্তিত । তিনি একটি অধিবেশনের আয়োজন করলেন । বিজ্ঞান কাউন্সিলের সেরা ৫৫ জন বিজ্ঞানী সেখানে অংশ নিলেন । মিটিংয়ে প্রথমে বক্তৃতা দিলেন লর্ড টাফো । এছাড়া ও আছে পদার্থবিদ নিফান , গণিতবিদ কিশো আরো অনেকে ।বক্তৃতা দেয়ার পূর্বে তিনি ঘরের সকল প্রকার নেটওর্য়াক কানেকশন বন্ধ করে দিলেন । এমনকি বিদ্যুত্‍ ও । ঘর অন্ধকার হয়ে গেল । লর্ড টাফো বললেন আমাদের কথা পৃথিবীর কেউই শুনবে না । এমন কি কোন রোবট ও না । তিনি বললেন পৃথিবীর এই বিপদের সময়ে আমার আবার এক হয়েছি । এই বিপদে থেকে উদ্ধার হতে হলে আমাদেরকে একত্তে কাজ করে যেতে হবে । রোবট যে দাবা খেলার আয়োজন করেছে সেখানে তারা জিতবেই । এই খেলা দুই হাজার বছর আগের মানুষ খেলত । তবে কেউই রোবটদের সাথে ফেরে উঠে নি । তবে পৃথিবীর মানুষের আজ থেকে আবার দাবা খেলায় মেতে উঠবে । এবং রোবটরা ইচ্ছে করে হারবে যাতে পৃথিবীর মানুষেরা ভাবে এই খেলা সহজ । পরে ১৫ দিন পর তারা আমাদের হারিয়ে দিয়ে প্রমাণ করে নিবে আমরা কিছুই পারি না । তখন মানুষ বিজ্ঞান কাউন্সিল এর বিরুদ্ধে চলে যাবে । এভাবে আমরা ক্ষমতা হারিয়ে ফেলব । বড় অন্ধকার আমাদের চারদিকে । বড় অন্ধকার । পদার্থবিদ নিফান বললেন মহান লর্ড টাফো আমি এ নিয়ে ভেবেছি । এখন একটাই উপায় রোবটদের ধ্বংস করে দিতে হবে ।কিন্তু গণিতবিদ নিশো বললেন কিন্তু আমরাতো তাদের হাতে বলতে গেলেই বন্দিই আছি । এখন এরকম সিদ্ধান্ত যাওয়া ঠিক হবে না । লর্ড টাফো সম্মতি দিলেন । ঘোর এক অন্ধকার তাদের ঢেঁকে রইল ।
১৫ দিন পর . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
পৃথিবীর মানুষ চোখ বড় করে হলোগ্রাফিক স্কিনে থাকিয়ে আছে । আজ সেই মহারণ । দেখা যাবে মানুষ না তার প্রযুক্তি জয়ী হয় । দাবা খেলতে বসেছেন লর্ড টাফো । তাঁকে বেশ চিন্তিত মনে হচ্ছে । অপরদিকে বসে আছে একটি রোবট । যদি ও সে একা নয় । তার সাথে আছে পৃথিবীর সব রোবট এবং সবার মধ্যে রয়েছে এক নেটওয়ার্ক । খেলা শুরু হয়ে গেল । লর্ড টাফো খেলতে শুরু করলেন । খেলায় দশ মিনিটের মাথায় তার একটি ঘোড়া ও হাতি হারিয়ে ফেললেন । বিনিময়ে একটি সৈন্য মারতে পারলেন ।পৃথিবীর মানুষ ভয়ে কেঁদে উঠল । কিন্তু তার পরে জানি কি হল লর্ড টাফো দশ মিনিটে রোবটকে হারিয়ে দিলেন । পৃথিবীর সব মানুষ একসাথে কেঁদে উঠল । লর্ড টাফো কাঁদতে শুরু করলেন । . . . . . , . . . . . .পৃথিবী আনন্দে ভাসছে ।ক্ষমতা পেয়েই তিনি রোবটদের নেটওর্য়াক বন্ধ করে দিলেন । ফলে তারা আর কোন কাজে এল না।
.
.
পরিশিষ্ট লর্ড টাফো ঘরে শুয়ে খেলাটি দেখলেন । কে বুঝবে খেলোয়াড় টাফো রোবট । আসল কাজ করেছে . পদার্থবিদ নিফান এবং গণিতবিদ কিশো । তার ঐ অন্ধকার ঘরে বসে আরেকটি রোবট বানিয়েছিল যা ছিল সবচেয়ে উন্নত এবং এতে সব কিছুর পাশাপাশি ছিল আবেগ । ফলে টাফো যখন খেলায় জিতে কাঁদলেন তখন আর রোবটরা বুঝতে পারেনি যে এটা ও একটি রোবট । এবং তাদেয় ভুল বোঝানোর জন্য তারা ইচ্ছে করে একটি ঘোড়া ও হাতির ভুল চাল দিয়েছিল । পৃথিবী এখন অন্ধকারহীন । আলো চারদিক আলো ।

[জীবনের প্রথম সায়েন্সফিকশন লেখা । ভুল হলে ক্ষমাশীল দৃষ্টিতে দেখবেন ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক সুন্দর সায়েন্সফিকশন...ভালো লাগলো...তবে আরো বেশি চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে....
এফ, আই , জুয়েল # অনেক সুন্দর ও সাবলীল একটি লেখা । সাইফাই---হাইফাই---যেদিক দিয়েই বিবেচনা করি না কেনো---, এর উপস্থাপনা ও গতিময় রুপ অসাধারন । ধন্যবাদ ।।
এশরার লতিফ শেষে গিয়ে সুন্দর একটা সমাধান টেনেছেন. ভালো লাগলো .
সূর্য একটা ভয়াবহ সমস্যা সৃষ্টি করা গেছে, যদিও দাবা খেলা প্রাণঘাতী নয় তবু তার হারের ফল হতো প্রাণঘাতী। যাক শেষ পর্যন্ত ভবিষ্যতেও মানুষ জয়ী হবে। সুন্দর সাই-ফাই, ভালো লাগলো।
রাজিব হাসান সংক্ষিপ্ত হলেও শেষের দিকে সত্যি খুব ভালো লেগেছে.........Just Carry On............
Lutful Bari Panna সাইন্স ফিকশন সব সময়েই ভাল লাগে। এটাও অনেক ভাল লাগল। ব্যাপক বর্ণনা থাকলেও কাহিনীতে চমক ছিল, ক্রাইসিস ছিল, ছিল ক্রাইসিস থেকে মুক্তি। খুব ভাল গল্প।

২৪ মে - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী