বালিকা ও বধু /প্রথম পত্র

অন্ধকার (জুন ২০১৩)

মাদার ল্যান্ড
  • 0
  • ৬২
সোনার বাংলার নারীদের অন্ধকার জীবন নিয়ে

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি। এই সোনার বাংলাকে ঘিরে গর্ব করার মতো অনেক নিদর্শন পাওয়া যায়। সেই সাথে পাওয়া যায় বিভিন্ন কুসংস্কারের নিদর্শনও। তার মধ্যে সব চাইতে ট্রেজেডি বহন করে চলেছে বিবাহ। বিবাহ কোন ট্রেজেডির মধ্যে পরে না। কিন্তু সে বিবাহ যদি হয় অপ্রাপ্ত বয়স্কা ৭ বছরের [বালিকার] তবে তা হয়ে যাবে অপরাধের সিমা লংঘন। যে অপরাধ আমাদের সমাজ ব্যাবস্থাকে যুগ যুগ ধরে কালিমা লেপন করছে ও আমাদের নারী সমাজকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করে রেখেছে। অন্ধকারে নিমজ্জিত সমাজের ৭ বছরের বালিকা হয়ে যায় [ বালিকাবধু ]। সোনার বাংলার ঘড়ে ঘড়ে এমন হাজারো [ বালিকাবধুরা ] আমাদের পূর্ব পুরুষ দ্বারা শাষিত ও শোষিত হয়েছে। অথচ আমাদের সভ্য সমাজ আজো এই অসভ্যতাকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যেতে ব্যার্থ হচ্ছে। একজন নারী, পুরুষ দ্বারা শোষিত হয়েছে। একজন নারী, নারী দ্বারা শোষিত হয়েছে। সে নারী আরো এক নারীকে শোষনের শিকার করেছে। নিজে শোষিত হয়ে অন্যকে শোষন করছে। একেক জন প্রতিশোধের আগুনে জ্বলে পুড়ে মরেছে। আমাদের প্রিয় কবি, সাহিত্যিক ও সমাজ সুধারকরা নানা ভাবে নারী সমাজকে শোষনের হাত থেকে বাঁচাতে নিজেকে উজার করে দিয়েছেন। তার জ্ঞান, শিক্ষা, কর্ম ও লেখনি দ্বারা নারী সমাজের স্বাধীনতার দ্বার খুলে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু অনেকেই আজ ব্যার্থতার গ্লানী নিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন।

যে নারী আপনাকে জন্ম দিয়েছেন, যে নারী আপনার সন্তানকে জন্ম দিয়েছেন, যে নারীর জন্য আপনি বাবা ডাক শুনতে পারছেন, যে নারী আপনার সকল চাহিদা পুরন করেছেন সে নারীদের নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা, নির্যাতন করে আমাদের পূর্ব পুরুষ গন কি প্রমান করতে চাইতো। কোন কিছুই নয়, ধর্মীয় কুসংস্কার ও সমাজে পুরুষত্ব বজায় রাখার জন্য। আর পুরুষ প্রধানদের সংযোগিতা করত তখন কার বয়স্কা নারী সমাজ। বয়স্কা নারীরা পুরুষের থেকেও অনেক বেশি রুট হতো। শুধু তাই নয় বাংলার প্রতিটি ঘড়ে ঘড়ে বয়স্কা নারীদের শাষন ও শোষনের শিকার হয়েছে অপ্রাপ্ত বয়স্কা নারী ও বালিকা বধুরা। কত বালিকা বধু প্রান দিয়েছে বলা বাহুল্য। কখনো শাশুরির হাতে আগুনের ছেকা, কখনো মারের শিকার হওয়া, যৌতুক দিতে না পারায় নির্যাতিত হয়ে কষ্ট সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। কখনো মেরে ফেলে বলা হয়েছে আত্মহত্যা করেছে। সমাজে যদি নারীরা এতো অবহেলিত ছিল তবে নারীদের সংস্পর্শে পুরুষ সমাজ কেন আসত। শুধুই ভোগের সামগ্রীর মতো ভোগ করার জন্য। স্বামির মৃত্যুর পরে একই চিতায় জ্বলে মড়ার জন্য।

এই গল্পে যারা রুপদান করেছেন ও নিজের ভুমিকা সঠিক ভাবে পালন করে গল্পকে সুন্দর ও প্রানবন্ত করে তুলেছেন। তাদের পরিচিতির নি¤œরুপ।

রূপ নগরের জমিদার - শ্রী ভানু প্রতাব ঠাকুর।
ঠাকুরানি সহধর্মিনী - শ্রীমতি তনুশ্রী রানী ঠাকুর।
বড় ঠাকুরানি - শ্রী ভানু প্রতাব ঠাকুরের মা-
- শ্রীমতি মৃনময়ী রানী ঠাকুর।
বড় পুত্র - শ্রীমান অভয় প্রতাব ঠাকুর।
দ্বিতীয় পুত্র - শ্রীমান রুদ্র প্রতাব ঠাকুর।
তৃতীয় পুত্র - শ্রীমান রনবীর প্রতাব ঠাকুর।
একমাত্র কন্যা - কুমারী প্রীতিলতা ঠাকুর [তনুশ্রী, মম,
- মহুয়া, সোনামনি, খুকুমনি ইত্যাদি।

রূপ নগরের জমিদার শ্রী ভানু প্রতাব ঠাকুর। যুগ যুগ ধরে এই ঠাকুর পরিবারের জমিদারি প্রথা চলে আসছে। শী ভানু প্রতাব ঠাকুর তার মাতাশ্রী - শ্রীমতি মৃনময়ী রানী ঠাকুর দ্বারা সত্য ও সুন্দরের পথ খুঁজে পেয়েছেন। কথায় বলে সত্যের পথ যতো কঠিন হোক না কেন সত্য ও সুন্দরের পথ শেষ ভাগে পরিস্কারই হয়। পূর্ব পুরুষের সকল বদনাম ঘুচিয়ে দিয়েছেন। তার কর্ম ক্ষমতা এবং ভালবাসা দ্বারা জনগনের মন জয় করে নিয়েছেন। প্রজা সাধারনের সাথে তার সম্পর্ক মধুর ছিল। তার জমিদারি চলা কালে সবাই অনেক সুখে ও শান্তিতে বসবাস করত। ঠাকুর পরিবারের ঠাকুরানি মানে শ্রী ভানু প্রতাব ঠাকুরের সহধর্মিনী শ্রীমতি তনুশ্রী রানী ঠাকুর নিজের সংসারকে ১৫ বছর ধরে সুন্দর ভাবে পরিচালনা করে আসছে। পরিবারে কোন অভাব বা অশান্তি ছিল না। কোন কিছুর কমতিও ছিল না। ঠাকুর পরিবারের ৩ পুত্র সন্তান। সব কিছু মিলিয়ে ঠাকুর পরিবার সুখী ও সুন্দর পরিবার।

কিন্তু একটা কমতি কারো মনে না দেখা গেলেও ঠাকুর ভানু প্রতাব ঠাকুরের মনে একটা কমতি ছিল। ঠাকুর মহাশয় কন্যা সন্তানের জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে সব সময় প্রার্থনা করতেন। সৃষ্টিকর্তা ৩ বারই পুত্র সন্তান দিয়েছেন। আর এই কারনেই ঠাকুর মহাশয় কন্যা সন্তান মিছ করতেন। সৃষ্টিকর্তা হয়তো ঠাকুর মহাশয়ের প্রার্থনা শুনেছেন। ১৮ বছর পরে ঠাকুরানী নতুন করে ৪ বারের মতো সন্তানের মা হতে চলেছেন। সবাই এই খবরে ভীষন খুশি ছিল। সবাই প্রার্থনা করছে এই বার যেন ঠাকুর মহাশয়ের সহধর্মীনির কোল জুড়ে কন্যা সন্তান আসে। তবে ঠাকুর মহাশয়ের সকল আশা পরিপূর্ন হবে। সৃষ্টিকর্তা ঠাকুর মহাশয় ও প্রজাদের প্রার্থনা শুনেছেন, অবশেষে ঠাকুরানীর কোল জুড়ে কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। এই খবরে ঠাকুর পরিবার ও প্রজাদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। ঠাকুর ভানু প্রতাব এই খুশিতে এলাকার প্রজাদের ৩ দিনের জন্য ঠাকুর বাড়িতে খাবার গ্রহন সহ, কন্যা সন্তান জন্মের খুশিতে সামিল হতে নিমন্ত্রন করেন। ৩ দিন চলে ঠাকুর বাড়িতে বিভিন্ন পূজা পার্বন সহ খাবারের আয়োজন। প্রজাদের মন ভরে যায় ঠাকুর ভানু প্রতাব মহাশয়ের আপ্যায়ন দেখে। ঠাকুর ভানু প্রতাব এর পরে যা করলেন প্রজাদের জন্য তাতো চিরদিন প্রজাদের মনকে প্রফুল্ল করে রেখেছেন। যা প্রজারা সারা জীবন মনে রাখবে।

কন্যা সন্তান লাভের খুশিতে ও কন্যার জন্য সকল প্রজারা যে ভাবে ঠাকুর পরিবারকে উদ্বুদ্ধ করেছে সে আনন্দ থেকে ঠাকুর পরিবারের মাতাশ্রী- শ্রীমতি মৃনময়ী রানী ঠাকুর মুল্লুকের সমস্ত প্রজাদের আদেশ করেন, প্রতি বছর যে পরিমান ফসল প্রজাদের ঠাকুর পরিবারকে খাজনা হিসেবে দিতে হয়। এই বছর সে খাজনা ঠাকুর পরিবারকে দিতে হবে না। সকল খাজনা মওকুফ এই বছরের জন্য। এই আনন্দে প্রজারা এতো খুশি যা বলে বোঝানো যাবে না। ঠাকুর পরিবারের এমন উদারতায় ও কন্যা সন্তান জন্মের আনন্দে আশে পাশের মুল্লুক থেকে মুল্লুক প্রধানরা ঠাকুর ভানু প্রতাবকে অভিনন্দন জানায়। কিন্তু ঠাকুর পরিবারের এমন খুশিতে কারো যেন নজর লেগে যায়। সে দিন সন্ধায় ঠাকুর বাড়ির বাইরের মহলে হঠাত করেই চিতকার শোনা যায়। সমস্ত ঠাকুর বাড়ির বাতাস যেন ভাড়ি হয়ে যায়। ঠাকুর পরিবারের ফসলের গুদাম ধাউ ধাউ করে জ্বলছে। অনেক চেষ্টা করেও আগুন নিভানো গেল না। সময় যাচ্ছে আগুনের লেলিহান শিখা যেন বেড়েই চলেছে। গুদামের ফসলে এমন ভাবে আগুন ছড়িয়ে পরেছিল নেভানো দূরের কথা সামনে কেউ আগাতেই পারছিল না। প্রজা ও ঠাকুর পরিবারের কাজ করা মানুষ গুলো দাড়িয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার ছিল না। ঠাকুরের চোখের সামনে পরিবারের ভবিশ্যত পুড়তে দেখে অশুস্থ হয়ে পরে। শুরু হয় ঠাকুরকে নিয়ে দৌড়া দৌড়ি। ২ দিন পর্যন্ত গুদামে আগুন জ্বলার পর অবশেষে আগুন সব ছাই করে নিজে থেকেই নিভে যায়। তবুও ছাইয়ের তাপের কারনে আশে পাশে ভিরা সম্ভব হয় নি। আষাড় মাস আকাশে মেঘের ঘনঘটা। প্রচন্ড বেগে ঝড় তুফান শুরু হয়ে যায়। সারা রাত প্রচন্ড বৃষ্টিতে মুল্লুকের বেশীর ভাগ জমির ফসল তলিয়ে যায়। সকাল বেলা এই দৃশ্য দেখে প্রজাদের মধ্যে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তারা কান্নায় ভেংগে পরে। ঠাকুর পরিবারকে এ বছরের ফসল দেয়া লাগবে না বলে যে আনন্দিত প্রজারা হয়ে ছিল সে আনন্দ মাটি হয়ে যায়। প্রায় ফসলই নষ্ট হওয়ার পথে।

তবুও প্রজারা পানি সরানোর খাল কেটে যতটা সম্ভব ফসল বাচানোর চেষ্টা করে। প্রজারা এই ভাবে অনেকটা ক্ষতি মেকাপ করতে পারে। পর্যাপ্ত ফসল না পেলেও সে বছরটা কোন মতে চলে গেলেই হয় এমন আশাতেই প্রজারা নিজের মনকে শান্তনা দেয়। অন্যদিকে ঠাকুর পরিবারের সকল মজুদি ফসল পুড়ে গেলে ঠাকুর পরিবার ভিষন সমস্যায় পরে যায়। এতো লোক ঠাকুর পরিবারের উপর চলে কি হবে তাদের। গুদামে ৪/৫ বছরের মজুদকৃত খাবার সহ আরো অনেক ফসল ছিল। যে ফসল ঠাকুর পরিবার বিক্রি করে অন্যান্য সকল চাহিদা পূরন করতো। তার উপর এ বছর ফসলতো মাফ করে দিয়েছে প্রজাদের। তবে কিভাবে ঠাকুর পরিবার এই বছরের খারাপ দিনকে কাটিয়ে উঠবে। প্রজাদের মাঝে কেউ কেউ এই ক্ষতির কারন হিসেবে ঠাকুর পরিবারের কন্যা সন্তানকে দায়ি করে। এ কন্যা দুনিয়ায় আসতে আসতে ঠাকুর পরিবারের জন্য অন্ধকার দিনকে উপহার নিয়ে এসেছে। নইলে এই ঠাকুরের সময় কালে আজো পর্যন্ত এমন দিন দেখতে হয় নি প্রজাদের। এতো চেষ্টা করার পরেও কেন আগুন নিভানো গেল না। এমন খবর ঠাকুর পরিবারের কানে আসলে ঠাকুর যেন আরো অশুস্থ হয়ে পরে। ঠাকুরের মাতাশ্রী পরিবার ও মুল্লুকের ভার ছেলের অশুস্থতার জন্য নিজের হাতে নেয়। মাতাশ্রী পরিবারের খাশ লোকদের কাজে লাগায় কিভাবে এমন বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়। কেউ কেউ মাতাশ্রীকে পরামর্শ দেয় প্রজাদের পুনরায় নতুন আদেশ করার জন্য। এ বছরের ফসল যেটা মাফ করা হয়েছিল তা প্রজাদের দিতে হবে। কিন্তু মাতাশ্রী এই প্রস্তাবে রাজি হল না।

মাতাশ্রী নায়েব ও কর্মচারিদের বলে ঠাকুর পরিবার দরকার পরলে মুল্লুকের বাইরের সব জমি সরকারের কাছে বেচেঁ দিবে। কিন্তু যে কথা দিয়েছে ঠাকুর পরিবার সে কথা থেকে সড়ে আসবেন না। মাতাশ্রী নায়েবদের আদেশ করে জমি বিক্রির সকল বন্দোবস্ত করতে। যে পরিবার আশে পাশের সব মুল্লুকের চেয়ে বেশি সাবলম্বি ও অর্থ সম্পদের মালিক ছিল আজ সে পরিবার অনেকটাই পিছু টানে পরে যায়। এদিকে যে সকল প্রজারা জমিদার কন্যাকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করেছে বা এই অবস্থায় যারা মনে করে বসে আসে ঠাকুর পরিবার যদি ফসল এ বছর নিতে চায় তখন কি করবে। কেউ কেউ বলে না কেন দিব, দিব না। কারন তার কন্যার জন্য প্রজাদের অনেক কম ফসল নিয়ে সন্তুষ্টি হতে হচ্ছে। কিন্তু বেশির ভাগ প্রজাই ঠাকুর পরিবারের সাথে আছে। ঠাকুর পরিবারের অবদানের কথা বেশির ভাগ প্রজাদের মনে আছে।

ফসল উঠল। সব প্রজারা ফসল মেপে দেখে এতো ক্ষতি হবার পরেও যে ফসল হয়েছে অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি। এই খবরে ঠাকুর পরিবারে স্বস্তি ফিড়ে আসে। কন্যাকে নিয়ে প্রজাদের মধ্যে যে প্রশ্নের জন্ম হয়ে ছিল আজ একটু হলেও তা দূর হলো। ঠাকুর ভানু প্রতাব এ খবর শুনে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। যে কন্যা তার কলিজার টুকড়া সে কন্যাকে নিয়ে চিন্তা করতে করতে অশুস্থ হয়েছিল আজ সে কন্যার ভাগ্যেই প্রজাদের মনে শান্তি ফিড়েছে। ঠাকুর ভানু প্রতাব যেন এক লাফেই সুস্থ হয়ে গেল। ঠাকুর পরিবার ও প্রজাদের মাঝে শান্তি ফিড়ে আসে। সেদিন সকাল বেলা মুল্লুকের প্রজারা লাইন ধরে ঠাকুর বাড়ির বাইরের মহলে জমা হতে থাকে। সবার কাছেই ঠেলা ও ঠেলা ভর্তি ফসল দেখা গেল।

মাতাশ্রী ও ঠাকুর ভানু প্রতাব এসে দেখে মুল্লুকের প্রায় ৯৫ ভাগ প্রজা ঠাকুর পরিবারের প্রাপ্প ফসল নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। মাতাশ্রী ও ঠাকুর ভানু প্রতাব প্রজাদের অনুরুধ করেন ফসল নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু কোন প্রজাই ফসল ফেরত নিবে না। প্রজাদের মধ্যে যারা স¤œানী তারা মাতাশ্রী ও ঠাকুর ভানু প্রতাবকে বলে এই পরিবার তার প্রজাদের জন্য যা করেছে আশে পাশে এমন নিদর্শন পাওয়া যাবে না। আজ যে ফসল আমরা ক্ষতির পরে ও আপনাদের প্রাপ্য দিয়ে আমাদের ভাগে পেয়েছি তাতে আমাদের বছর অনেক ভাল ভাবে কেটে যাবে। পরের বছর আমরা সবাই অনেক কষ্ট করে হলেও ভাল ফসল ফলাব। যাতে সব সমস্য এর পরের বছর সমাধান হয়ে যায়। এই কথায় ও নায়েবদের অনুরুধে মাতাশ্রী ও ঠাকুর ভানু প্রতাব ফসল নিতে রাজি হয়। ফসল আসার পরে ঠাকুর পরিবারের সকল সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। জমিও আর সরকারের কাছে বিক্রি করার দরকার পরল না। শুরু হলো ঠাকুর পরিবারের নতুন খুশির দিন। কন্যা ছোট ছোট পায়ে হাটতে শিখেছে। মা, বাবা, দাদা, বড় মা ও আরো যারা ঠাকুর পরিবারের সদস্য আসে তারা সবাই ঠাকুর পরিবারের একমাত্র কন্যাকে নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পরে। সকলের আদরের কলিজার টুকরা। কন্যার নাম রাখা হয়। কন্যার নাম রাখে বড় ঠাকুরাইন অর্থাত মাতাশ্রী- শ্রীমতি মৃনময়ী রানী ঠাকুর নিজেই [ কুমারী প্রিতীলতা ঠাকুর ] কেউ ডাকে তনুশ্রী, কেউ ডাকে মম, কেউ ডাকে মহুয়া, কেউ ডাকে সোনামনি, কেউ ডাকে খুকুমনি যে যেমন নাম ধরে ডাকতে আনন্দ পায় সে সেই নাম করে ডাকে। তবে ৩ ভাইয়ের কাছে বোন কলিজার টুকরা, জান, প্রান, বোন, জীবন ইত্যাদি। ৩ ভাইয়ের স্বপ্ন বোনকে নিয়ে হাজার।

এমন স্বপ্নের কথা ভাবতে ভাবতে এক বালতি জল এসে [প্রমাকে] ও সমস্ত বিছানা ভিজিয়ে দিয়ে গেল। প্রমা ভিজে যেন ভেজা কাকের মতো হয়ে গেছে। মা মা বলে চিতকার করতে করতে প্রমা বিছানায় বসে চোখ কচলে কচলে তাকানোর চেষ্টা করছিল। প্রমার মা এসে দেখে মেয়ে তার ভিজে কাক হয়ে আসে। প্রমা এমন কে করল তোকে। আদরের প্রমা কান্না কান্না শুরে কাঁদসে ও বলছে মা কেন তুমি কাচা স্বপ্নটাকে পাকতে দিলে না। কত সুন্দর স্বপ্ন দেখছিলাম। মা প্রমাকে ভেজা বিছানা থেকে টেনে তুলছে ও বলছে আমি তোকে ভিজাইনি। তোর দাদা তোকে ভিজিয়ে কলেজে চলে গেছে। প্রমা রেগে লাল হয়ে বলছে আজ আসতে দাও তোমার ছেলেকে কি মজা দেখাই। মা প্রমাকে বলছে আমার ছেলে তোর কিছু হয় না। না কিছু হয় না, জাও। এ কথা বলে প্রমা তার ঘড়ে চলে যায়।

পাঠক হয়তো ভাবছেন প্রমা হঠাত কর উড়ে এসে জুড়ে বসল কি করে। আসলে প্রমা উড়ে এসে জুড়ে বসে নি। জমিদার পরিবার প্রমার স্বপ্নে এসে দেখা দিয়ে ছিল। প্রমা এত সময় ধরে সে স¦প্নেই বিভোর ছিল। পাঠক আজ এ পর্যন্তই। পরবর্তি অর্থাৎ দ্বিতীয় [২য়] পত্রে প্রমার বাস্তব জীবনের বিভিণœ কথা জানব। ততক্ষনের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায়-

পরবর্তি পোষ্ট-

সোনার বাংলার নারীদের অন্ধকার জীবন নিয়ে-
বালিকা ও বধু /দ্বিতীয় পত্র।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এফ, আই , জুয়েল # সাবলীল লেখা । সুন্দর বয়ান । গল্পের প্লট অনেক সুন্দর । ধন্যবাদ ।।
মিলন বনিক দীর্ঘ ভূমিকার পর গল্পের শেষটা না পেয়ে মন খারাপ হলেও পরবর্তী পোস্ট এর জন্য অপেক্ষা করছি...সূচনা পর্বত ভালই হয়েছে...এগিয়ে যান...
তাপসকিরণ রায় শুরুর বাস্তব কথাগুলি খুব ভাল লেগেছে।তারপর দীর্ঘ কাহিনীর স্বপ্ন ভূমিকাতে গল্পের অপাত সমাপ্তি ঘটলো--অর্থাৎ গল্পটি ক্রমশ চলতে থাকবে।এখানে আমার কথা হোল তবে ভোটের ব্যাপারটা এখানে এলো কি করে?
এশরার লতিফ ভালো লাগলো স্বপ্ন আখ্যান। এখন দেখা যাক প্রমার জীবনে কি হয়।
সূর্য গল্পতো মাত্র শুরু হয়েছিল। বাব্বাহ এতবড় স্বপ্ন ভূমিকাতেই? পরের অংশটা পড়বো...
মামুন ম. আজিজ জমিদার স্বপ্ন পর্বটা পজিটিভ তো তাই বেশ লেগেছে ..এত নেগেটিভ চারপাশে,, লিখিও তাই.....পজটিভকে শেষ মেষ স্বপ্নে ঢুকিয়ে বাস্তববাদী হলেন লেখক....। চালিয়ে যান

১৭ মে - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪