বাংলা নববর্ষ- নতুনের জয়গানে মুখর

নববর্ষ (এপ্রিল ২০১৭)

এম, এ, জি হান্নান
  • 0
  • ৫৩
‘ এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ।
তাপ নিঃশ্বাস বায়ে মুমূর্ষের দাও ঊড়ায়ে,
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক।
যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে যাওয়া গীতি,
অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক’।
(কবিগুরুর আগমনি গান)
নব বর্ষ মানে নতুন বছর। প্রতি বছরের শেষে আবার ঘুরে ফিরে আসে এই দিন।নতুন আশা ভরাসা, চিন্তা ভাবনা, প্রেরণা নিয়ে আসে এই দিন। পুরাতন দিনের গ্লানি ভুলে গিয়ে নতুন কিছু করার চিন্তা আসে মানুষের মনে।আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে বাংলা নববর্ষের সাথে একটা যোগসূত্র আছে। এই দিনের উৎসব কে ঘিরে সারা দেশে, গ্রাম গঞ্জে, হাট বাজার থেকে আরম্ভ করে নাগরিক জীবনে নানান অনুষ্ঠান, পর্ব যোগ হয়েছে। বর্তমান আধুনিক বিশ্বের সমাজ কাঠামোর ভেতর এই ইতিহাস ঐতিহ্য ভিত্তিক অনুষ্ঠান মালা নতুন করে আমাদের কে বস্তু কেন্দ্রিক সংস্কৃতির উপাদানে কে আরো বেগমান করে। নতুন আঙ্গিক, সাজ সজ্জ্বা, নতুন চিন্তা চেতনা, নব নব আবিস্কার এই পহেলা বৈশাখের দিন কে কেন্দ্র করে আত্মিকরণ হয়েছে। এই জন্য এই অনুষ্ঠান গুলোতে সকল ধর্মের মানুষ একাত্মতা বোধ করে। অংশ গ্রহন করে। নিজদের আনন্দ কে অন্যের সাথে ভাগ করে নেয়। এখানে একটা আত্মীয়তা বোধের সৃষ্টি হয়।
নব বর্ষের দিন মূলত একটা সার্বজনিন আনন্দ প্রকাশের দিন। নতুন জামা। নানান রঙের বর্ণিল উৎসব। সব বয়সের মানুষ, শিশু, কিশোর-কিশোরি, বয়স্ক নারী –পুরুষ সবাই এতে অংশ নেয়। এই দিন কে কেন্দ্র করে চলে নানান ধরনের মেলা। র‌্যালি, গানের অনুষ্ঠান। বর্তমানে মিডিয়ার কল্যানে এই অনুষ্ঠান লাইভ টেলিকাস্ট চলে দিনভর। টক শো। আমাদের দেশে প্রাচীন কাল থেকেই বণিকেরা এই দিন কে ঘিরে আয়োজন করত হাল খাতা। পুরানো দিনের হিসেব নিকেশ শেষ করে নতুন দিনের হিসেব বই খোলা হত। বণিকের লাল মলাটের হিসেব বই রাখার রেওয়াজ ছিল। এই হাল খাতা কে কেন্দ্র করে আয়োজন গানের অনুষ্ঠান হত। বাউল গান, জারি গানের মেলা। দোকানের সামনে টানানো হত সামিয়ানা, মিষ্টি খাওয়ানো হত। বাকিতে যারা সারা বছর কেনা কাটা করেছে তারা তাদের আগের বছরের বকেয়া হিসাব শেষ করে নতুন বছরের হিসাব খোলে নিত। দোকানিরা এই দিন আদাইয়ের হিসাব শেষ করে আনন্দে মেতে উঠত। গ্রামের হাট বাজারের দোকানে এই রেওয়াজ চালু ছিল। এখনো আছে কোথাও কোথাও।
বাজার অর্থনীতির বিকাশের কারনে গ্রামীন সামাজিক কাঠামোর যেমন পরিবর্তন হয়েছে সেই সাথে আবার যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। শহরে জীবন ধারার কাঠামোগত ব্যাপক পরিবর্তন আসে। কিন্তু পহেলা বৈশাখের এই সার্বজনীন ধারা আরো গতিশীল হয়। আমাদের জাতীয় জীবনের রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক চিন্তা চেতনার অনেক সংকীর্ণতা থাকলেও নব বর্ষ উৎসব একত্রে পালন করে। সাধারণ মানুষ তাদের ঐক্যের বন্ধন হিসাবে এই দিনের কর্মসূচি পালন করে থাকে। সাম্প্রতিক দিন গুলোতে এই অনুষ্ঠান পালনে কিছুটা রাজনৈতিক বিভাজন লক্ষণীয়। তথাপী তা ব্যাপক মাত্রার নয়। কেনানা অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতেই দেখা হয়ে থাকে এই দিনটি কে।
পহেলা বৈশাখ চালুর দিনক্ষণ নিয়ে নানা মত আছে। তেমনি চালু আছে বছরের নানান হিসাব। যেমন চন্দ্রবর্ষ, সূর্ষবর্ষ। চন্দ্র বর্ষ হিসাব করা হয় চাঁদের উদয় আর অস্তের হিসাব করে। আরবে এই প্রথা প্রচলিতে আছে। আবার চীনারাও অনুরূপ হিসাব করে। তবে আরবের চন্দ্র বৎসর হিজরি সন হিসাবে গণ্য। আবার চীনারা এই হিসাব চাঁদের উপর করলেও তারা একে ভিন্ন নামে ডাকে। মুন ইয়ার হিসাবেই এক জানে। খৃষ্টান পঞ্জিকা মতে অর্থাৎ পশ্চিমা ধাঁচের হিসাব মতে বছরের হিসাব করা হয় সূর্য বৎসর কে কেন্দ্র করে। মজার ব্যাপার হলে বাংলাদেশে যে নব বর্ষ চালু আছে তা চন্দ্র আর সূর্য হিসাবের মাঝে এক ধরনের সমন্বয় করা। বাংলাদেশে যেমন পহেলা বৈশাখ প্রতি বছর একই দিন অনুষ্ঠিত হয়। ইংরেজি মাসের ১৪ই এপ্রিল প্রতি বছর ১লা বৈশাখ হবে। কিন্তু পশ্চিম বঙ্গ সহ ভারতের অন্যান্য স্হানে ১লা বৈশাখের এই দিন নিয়ে কিছুটা তারতম্য আছে। হিন্দু পুঞ্জিকা বৎসর সৌর সনের সাথে মিল রেখে করা। কিন্তু আমাদের দেশের ক্যালেন্ডার সংশোধিত হিসাব গ্রহন করেছে। মাসের ১১ মাসের দিন ঠিক রেখে শুধুমাত্র ফালগুন মাসের দিনের সমন্বয় করা হয়। যেমনটা ইংরেজি ক্যালেন্ডারে ফেব্রুয়ারি মাসে করে থাকে। এইভাবে এখানে ১৪ই এপ্রিলই প্রতি বছর বাংলা নব বর্ষ পালন করা হয়ে থাকে।
বাংলা সন প্রবর্তন কে করেছিলেন তা নিয়ে দুইটি ধারা প্রচলিত আছে। বাংলা বছরের ক্যালেন্ডার প্রবর্তনে গৌড়ের রাজা শশাংকের নাম আসে। তিনি সংস্কৃত জ্যোতির্বিদের মতের উপর ভিত্তি করে সৌর সন ক্যালেন্ডার তৈরি করেন। এই সাল প্রবর্তনের সময়কাল ছিল ৫৯৪ শতক।এখানে উল্লেখ্য যে যারা শশাংকের বাংলা সাল প্রবর্তনের পক্ষ যুক্তি দেখান তারা মনে করেন যে শশাংক আসাম বিজয়ের স্মারক হিসাবে বাংলা সাল প্রবর্তন করেন। মজার ব্যাপার হল শশাংক বেনারস অধিকার করার পর চিল্কা হ্রদের দিকে যাত্রা করেন। তিনি আসামে কখনই আসেননি।অন্য মতানুসারে আলাউদ্দিন হোসাইন শাহ ( শাসন কাল ১৪৯৪-১৫১৯) সৌর সন ও চন্দ্র সনের হিসাব কে সমন্বয় করে বাংলা ক্যালেন্ডার চালু করেন। তবে এই দুই মতের ধারকরা একটা বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেন যে মোগল সম্রাট আকবরই ( শাসন কাল ১৫৫৬-১৬০৫) প্রথম বাংলা সনের ক্যালেন্ডার চালু করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন। আকবর বাংলা ক্যালেন্ডার কে, সমন্বয়, সংশোধন, পুনঃপ্রবর্তন করেন। তার উদ্দেশ্য ছিল রাজস্ব আদায়ে গতিশীলতা আনয়ন করা। এই সময় বাংলা ক্যালেন্ডারের নাম ছিল তারিখ- ই- ইলাহি। কৃষকদের খাজনা আদায় সহজ করার জন্য তিনি এই পুঞ্জিকা প্রবর্তনের নির্দেশ দেন। আগে বাংলা অঞ্চলের কৃষকরা চন্দ্র সনের ক্যালেন্ডারের হিসাব অনুসারে খাজনা দিত। এতে করে কৃষকদের ফসল তোলার সাথে তাদের খাজনা দেবার সময়ের মিল থাকত না। কৃষকদের এই অসুবিধা দূর করাই ছিল তার উদ্দেশ্য। অনেকেই আকবরের অর্থমন্ত্রি টৌটরমল কে এই বিষয়ে কৃতিত্ব দিতে চান। বাস্তবে এই কাজ করেছিলেন আকবরের জ্যোতির্বিদ ফতেহ উল্লাহ সিরাজি বাংলা পুঞ্জিকার বিকাশ সাধন করেন। তিনি ইসলামিক হিজরি সন অর্থাৎ চন্দ্র সনের পুঞ্জিকা আর হিন্দু সৌর সনের পুঞ্জিকার মাঝে সংশ্লেষণ সাধন করে বাংলা পুঞ্জিকা তৈরি করেন।
বাংলা বর্ষপঞ্জি সম্রাট আকবর ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে প্রবর্তন করেন। এই নতুন বর্ষপঞ্জিকাটি প্রথমে তারিখ –ই- এলাহী নামে পরিচিত ছিল; ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে ১০ বা ১১ই মার্চ এটি বঙ্গাব্দ নামে প্রচলিত হয়। নতুন এই সালটি আকবরের রাজত্বের উনত্রিশতম বর্ষে প্রবর্তিত হলেও তা গণনা করা হয় ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৫ নভেম্বর থেকে, কারণ এদিন আকবর পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে হিমুকে পরাজিত করে সিংহাসনে আরোহণ করেন।( সৈয়দ আশরাফ আলী; বাংলাপিডিয়া)। আকবরের সময়ে মাসের প্রতিদিনের জন্য একটি করে স্বতন্ত্র নাম ছিল। কিন্তু এতগুলি নাম মনে রাখা ছিল একটি কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাই সম্রাট শাহজাহান তাঁর ফসলি সনে সেগুলিকে সাপ্তাহিক পদ্ধতিতে রূপান্তরিত করেন। সম্ভবত একজন পর্তুগীজ পন্ডিতের সহায়তায় তিনি সাত দিনের সমন্বয়ে এই সপ্তাহ পদ্ধতি চালু করেন। ইউরোপে ব্যবহৃত রোমান নামকরণ পদ্ধতির সঙ্গে সপ্তাহের সাত দিনগুলি লক্ষণীয় মিল রয়েছে, যেমনঃ Sun (Sunday)এর সঙ্গে রবি ; Moon( Monday) এর সঙ্গে সোম ; Mars(Tuesday) এর সঙ্গে মঙ্গল ; Mercury( Wednesday) এর সঙ্গে বুধ ; Jupiter (Thursday) এর সঙ্গে বৃহস্পতি ; Venus ( Friday) এর সঙ্গে শুক্র ; Saturn( Saturday) এর সঙ্গে শনি। পাশ্চাত্য বর্ষপঞ্জির মতোই বাংলা সপ্তাহ তখন রবিবারে শুরু হত। (সৈয়দ আশরাফ আলী; বাংলাপিডিয়া)।
এখানে উল্লেখ যে দিনের নামের মত মাসগুলোর নামও পরিবর্তিত হয়। প্রথম দিকে মাস গুলি ফারওয়াদিন, উর্দিবাহিশ,খোরদাদ, তীর, মুরদাদ, শাহারিবার, মেহের, আবান, আজার, দে, বাহমান এবং ইসফান্দ নামে পরিচিত ছিল।পরবর্তীকালে মাসগুলির নাম কিভাবে বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ ইত্যাদি হয় তা জানা না গেলেও এটা সন্দেহাতীত যে এ নামগুলির ভিত্তি ছিল বিভিন্ন তারকা। অনুমান করা হয় যে শক রাজবংশের স্মরণার্থে ৭৮ খ্রিস্টাব্দে প্রবর্তিত শকাব্দ থেকে এ নামগুলি এসেছে। যে তারকামন্ডলীর নামানুসারে বাংলা মাসগুলির নামকরণ হয় সেগুলিঃ
বিশাকা থেকে বৈশাখ
জ্যেষ্ঠা থেকে জ্যৈষ্ঠ
আষাঢ়া থেকে আষাঢ়
শ্রবণা থেকে শ্রাবণ
ভাদ্র পদ থেকে ভাদ্র
অশ্বিনী থেকে আশ্বিন
কৃত্তিকা থেকে কার্তিক
অগ্রাইহনি থেকে অগ্রহায়ন
পুষ্যা থেকে পৌষ
মঘা থেকে মাঘ
ফল্গুনী থেকে ফাল্গুন
চিত্রা থেকে চৈত্র
অগ্রহায়ন মাসের আরেকটি ব্যাখ্যাঃ অগ্র = প্রথম, হায়ন= বর্ষ বা ধান্য; পূর্বে এই মাস থেকে বর্ষগনণা শুরু হতো বা এই সময়ে প্রধান ফসল ধান কাটা হতো; তাই এই মাসের নাম হয় অগ্রহায়ন। (সৈয়দ আশরাফ আলী; বাংলাপিডিয়া)।
আমাদের সমাজে প্রতিটি পরতে পরতে লুকায়িত আছে প্রাচিন সংস্কৃতির নানা উপাদান। এই সকল সাংস্কৃতিক উপাদানে এক দিকে আছে আমাদের অতীত ইতিহাসের গৌরব। আর অন্যদিকে আছে আধুনিক সমাজের জটিলতার মাঝেও সরল জীবন যাপনের প্রাণবন্ত উপস্হিতি। এই হল আমাদের সংস্কৃতির মেলবন্ধন। আবার এই সরল মেলবন্ধন অনেক সময় হয়ে উঠেছে প্রতিবাদি কন্ঠস্বরের প্রতিনিদি। ১লা বৈশাখের উদযাপন এমনি একটি দৃষ্টিকোণ থেকে অনেক বৃহত্তর ভূমিকা পালন করে আসছে। ষাটের দশকে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের যাতাকলে যখন বাঙ্গালী তাদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার তখন সাধারণ মানুষ কে মূলধারা রাজনীতি তথা আইয়ুব বিরোধী ভুমিকা পালনে ১লা বৈশাকের ভুমিকা ছিল অত্যন্ত চমৎকার, উজ্জল। রবীন্দ্র সংগীত নিষিদ্ধ করা, পোশাকের পরিবর্তন, ভাষা, শিক্ষা ইত্যাদি আন্দোলনে সময় ১লা বৈশাখ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। নব বর্ষ কেন্দ্র ব্যাপক জনসমাগম হত তাতে সহজেই নেতা কিংবা সাংস্কৃতিক কর্মীরা তাদের তাদের মতামত রেখে জনমত তৈরি করত। এই প্রসঙ্গে কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের বক্তব্য অত্যন্ত প্রাঞ্জল। তিনি বলেন, “ ষাটের দশকে স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের প্রতিরোধে ছায়ানট সাংস্কৃতিক সংস্হা বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান কে হাতিয়ার করে ছিল। রমনার বটমূলে আয়োজিত হয়েছিল বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। স্বাধীন বাংলাদেশে মৌলবাদী জঙ্গি গোষ্ঠী এই অনুষ্ঠানের শক্তিকে দমন করার জন্য অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে বোমা ফাটিয়ে ছিল। মানুষের মৃত্যু মানুষ কে দমাতে পারেনি। ভীতও করেনি। পরের বছর দ্বিগুণ শক্তিতে মানুষ জড়ো হয়েছিল প্রতিরোধের অনুষ্ঠানে। বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে বাংলাবর্ষের ভূমিকা অপরিসীম। অসাম্প্রদায়িক চেতনাবোধে উজ্জীবিত এই মিলনমেলা বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্রস্বরূপ”। (সেলিনা হোসেন- বাঙালির নববর্ষঃ জাতির শিকর সন্ধানী)
এই অনুষ্ঠান উদযাপনে এক বিশাল আর্থিক কর্মকান্ড জড়িত। আমাদের প্রাচিন, ঐতিহ্যবাহি তাঁত শিল্প, বেনারসি শাড়ি, জামদানি, সূতি, খদ্দর কাপড়ের বিশাল বাজার গড়ে ওঠে। নানা রঙের কারুকাজ, শিল্পের সৃজনশীলতাকে বাড়িয়ে দেয়। মানুষের আর্থিক সামর্থ বাড়ার কারণে এখন শুধুমাত্র এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করার জন্যই আলাদা সাজসজ্জার আয়োজন করে। নতুন বাহারি কাপড় পরিধান করা। এতে শুধুমাত্র মেয়েরাই নয় বরং সব বয়সি নারী-পুরুষের একটা বিশাল আকর্ষণ নতুন কাপড়ের প্রতি। বর্ণিল পাঞ্জাবির প্রতি ছেলেদের আকর্ষণ থাকে।মেয়েরা সাজে নানান সাজে। এইদিন প্রেমিক প্রেমিকাদের জোটি দিনভর ঘুরেফিরে,আড্ডাদেয়। আমাদের দেশে নতুন বছরের অনুষ্ঠান পালনের জন্য শোভাযাত্রা বের হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ বের করে মঙ্গল শোভা যাত্রা। এই শোভা যাত্রাকে ইউনেস্কো বিশ্বঐতিহ্যের অংশ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। পান্তা-ইলিশ খাওয়া, রমনা বটমূলে রবীন্দ্র গানের আসর থাকে। দেশের প্রায় সর্বত্র এখন বাংলা নতুন বছর কে অত্যন্ত আনন্দায়ক, মজাদার আয়োজনের মাধ্যমে পালন করা হয়। গানে গানে নতুন বছর কে স্বাগত জাননো হয়। আত্মীয়স্বজনের খোঁজখবর নেয়া, বেড়ানো, পাড়া –পড়শির সাথে মিষ্টি বিতরণ করা হয়ে থাকে।
১লা বৈশাখ আকবরের সময় থেকে যে উদযাপান আরম্ভ হয় এতে কোন সন্দেহ নেই। মহামতি আকবর পহেলা বৈশাখ বা নওরোজ চালু করেন তার তারিখ – ই – এলাহী থেকে। এই নব বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে গিয়ে শাহজাদা সেলিম ( সম্রাট জাহাঙ্গীর) এর সাথে মেহেরুন্নেসার পরিচয় ও প্রণয় হয়। এই মেহেরুন্নেসাই ইতিহাসে নূরজাহান নামে খ্যাত। অনুরূপ আরেক নওরোজ উদযাপনে শাহজাদা খুররম ( সম্রাট শাহজাহান) মমতাজ প্রেমের সূচনা হয়। সেই প্রেমের অমর কাহানি আজও উজ্জল। তাজমলের তীর্থভূমিতে আজ হাজারো মানুষ প্রতিদিন ভ্রমণ করে। আজ যেখানে বাংলা নওরোজ পালিতই হয়না। তবু আমাদের প্রাণের ভাষা বাংলার নতুন বছর প্রতিবার আসে নতুন নতুন আবেদেন নিয়ে। এখানে বাংলায় নতুন বছর মানেই নতুন কিছু। চৈত্রের তাপদাহের পর আসে বৈশাখী আগমন। সেই আগমনের বার্তা আসে এইভাবে।
“ওগো বৈশাখী ঝড়। ল’য়ে যাও অবেলায় ঝরা এ মুকুল।
ল’য়ে যাও আমার জীবন, এই পায়ে দলা ফুল”।
(জাতীয় কবি- কাজী নজরুল ইসলাম)
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন

১৩ মে - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪