পরিণতি

অন্ধকার (জুন ২০১৩)

মীর মুখলেস মুকুল
মোট ভোট ২৬ প্রাপ্ত পয়েন্ট ৬.৪৯
  • ২২
  • ৩৮
ম্যানাকুত্তা সম্ভবত তখনও ত্যানা ছেঁড়ার যম হয়ে উঠেনি। তবে হয়ে যে উঠবে সে ব্যাপারে সে খু-উ-ব আশাবাদী। সেই ভাবনার সুতো ধরে ইতোমধ্যে সে একটা আশার বীজ বপন করেছে। তা থেকে কচি একটা গাছও গজিয়েছে। সেটা দিনকে-দিন একটু-আধটু বড়ও হচ্ছে। কখনও রোদ-বৃষ্টিতে পিতাভ লকলকে হয়ে উঠে। আবার ক্ষরায় নেতিয়ে যায়, বন্যায় তলিয়ে যায় বা পা’য়েরতলায় পিষ্ট হয়। সময়ে সময়ে ঠাণ্ডায় ফ্যাকাসে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। নানা প্রতিকুলতায় তবু সে একটু একটু করে বড় হচ্ছে। হয়ত অদূর ভবিষ্যতে বড় হবে, হতেই থাকবে। একদিন প্রকাণ্ড হবে। তাতে ডাল-পালা পাতায় ছেয়ে যাবে। ফুল ধরবে। ফল হবে। ফলটা খাওয়া তার জীবনের এক চরম আকাংখা। এই আশা নিয়ে ম্যানাকুত্তা বাস করে কোন এক জেলা শহরের উপকন্ঠে এক হরিজন কলোনিতে।
সেমিপাকা স্কুল ঘরের মত লম্বা বেশ কয়েকটা সার করে গড়ে উঠেছে কলোনি। প্রায় পঞ্চাশ-ষাট ঘর হরিজনের বাস। সেখানকার সুধিরলালের বাড়ির আশ-পাশটা ম্যানাকুত্তার অতি পছন্দ। সুধির বছর পাঁচেক হল বিয়ে করেছে কিন্তু বাচ্চা-কাচ্চা হয়নি। তার বউ লছমিয়া মিশ্র বর্ণের। বিয়ের সময় বেশ রোগাটে ছিল। দিন গড়াতে গড়াতে গায়ে পায়ে বেশ তেলের ধারা বইতে শুরু করেছে। সেই সাথে রূপ-যৌবন ফুলে-মধুতে যেন ছলকে উঠছে। কলোনিজুড়ে লছমিয়ার রূপ-যৌবনের গুন-কেত্তন। লছমিয়ার এটা ভাল। ওটা গোল-গাল। সেটা টসটসে, টানটান। ভেতরটাতে যে কী আগুন আছে, কে জানে? ইত্যাদি ইত্যাদি। একেবারে ফাটাফাটি ব্যাপার। ম্যানাকুত্তা এসব শুনে শুনে তার নিজেরই কৌতুহলটা আকাশ ছুঁতে চায়। লছমিয়াকে দেখলে তার নিজের মধ্যেই কেমন নিসপিস করে। মানুষ এত সুন্দর হয়? মাথার চুল থেকে পায়ের নোখ পর্যন্ত সব খানেই দগদগে উত্তেজনা। কলোনির উঠতি বয়সের ছেলে-পুলে সহ প্রৌঢ়-বৃদ্ধরা এমনকি কলোনির বাইরেও লছমিয়ার রূপ-যৌবন দেখে অনেকেই নিজের আগুনে জ্বলে মরে। কেউ কেউ নিশি রাতে কিংবা গোপন সময়ের ফাঁকে অনন্যপায় হয়ে হাতিয়ে নিজের জ্বালা ঝরিয়ে ফেলে।

ম্যানাকুত্তা এখানে সেখানে এইটে সেইটে খেয়ে বেড়ায় আর সুধিরলালের ঘরের আশ-পাশে শুয়ে বসে থাকে। হাই তোলে। প্রচন্ড গরম অথবা লছমিয়ার যৌবন উত্তাপে উত্তপ্ত হয়ে জিবের ডগা বের করে শুষতে থাকে আর লালা ঝরিয়ে নিজের গরমভাবটা ঝেরে ফেলে আর ইস উস করে। প্রতিবেশী কুকুর দেখলে ঘেউ ঘেউ করে, তাড়িয়ে দেয়। যেন লছমিয়া একান্তই তার একার। তবে দু একজনের সাথে আবার বেশ সক্ষতা।
তাদেরই একজন ঘিজাকুত্তা। ঘিজাকুত্তার ব্যাসবাক্য সহ সমাস করলে এমনটা দাঁড়ায়; ঘিয়ে ভাজা যে কুত্তা। ঘিজাকুত্তা মাস চারেক আগে এক বিয়ে বাড়িতে মাত্রাধিক গোস্ত পোলাও রোস্ট খাবার সুযোগ পেয়েছিল। সেসব নাকি খাঁটি ঘি’য়ে ভাজা ছিল। হজম করতে না পেরে দেহটা অনেকটাই ঘি’য়ে ভাজার মত অবস্থা। গা জুড়ে লোমের বালায় নাই। মনে হয় আস্ত ছাগলের জ্যান্ত রোস্ট।
আরেকজন আছে যাকে দেখলে ম্যানার গায়ে আগুন ধরে যায়। তারপরও চার হাত-পা টান টান করে দেহের আড়মড়া ভেঙ্গে ওর কাছে যেতে ইচ্ছা করে। কেল্লাকুছি করতে ইচ্ছা করে। ওর গায়ের গন্ধে যেন জ্ঞান-কান্ড লোপ পায়, মাতাল হয়। মুখ-কান থেকে শুরু করে সবগুলো অঙ্গ-প্রতঙ্গ শুকে শুকে ভাব জমাতে ইচ্ছা করে। এমনটা বেশি হচ্ছে গত ফালগুন থেকে। যখন থেকে ও এক পা উচু করে হিসি দিতে শিখেছে এবং পেটের পিছনের একটা মাংশপিন্ড সময় অসময় শক্ত হয়ে উঠে, তিরবির করে। ওই শালি হারামি কুত্তিকে দেখলে গা বেজায় চিটমিট করে। ঐ মাংশপিন্ডটা ধিকধিক করে উঠে। ম্যানার ইচ্ছে করে ওর পিছনের যে একটা বিশ্রি জায়গা আছে সেটাকে ছিঁড়ে কুটে ত্যানা-ন্যানা বানিয়ে ফেলতে। শালি খুব হিংশুটে। আবার শয়তানের হাসিও হাসে। চরম হাভাতে। এসব কারণে মনে হয় সবাই ওকে হাসুকুত্তি বলে। হাসুকুত্তি মাসখানেকের বড় ম্যানাকুত্তার চেয়ে। তারপরও লজ্জা-শরমের বালায় নেই। সুযোগ পেলেই ম্যানাকুত্তার কানের কাছে মুখ নিয়ে খচ্চরিপনা করে, পচা কথা বলে। এবার শরতে হাসুকুত্তির যা দাম বেড়েছে। ম্যানা ওকে একা পায়ই না। সারাক্ষণ ওর পিছনে দু-চারটা কুকুর ঘুর ঘুর করে। ম্যানার পিত্তি জ্বলে যায়।

সেদিন মরা বাড়ির ফকির খাওয়া অনুষ্ঠানের একটু দূরে দু’পা খারা করে পাছার উপর ভর করে ম্যানাকুত্তা বসে আছে। লেজ নাড়ছে, এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। একটু আগে এঁটো-কোটায় মুখ দিতে যেয়ে বড় একটা পাটকেল খেয়েছে। ফুলে আছে। ব্যাথা করছে। আর একবার বাঁশের ঘা থেকে অল্পের জন্যে বেঁচে গেছে। খেও খেও করে পালিয়েছে। শালা মালিকের ছেলে-পুলেগুলো ত্যাঁদর, ছোট-লোক। এঁটো-কোটায় মুখ দিলেও তেড়ে আসে। মার খেয়েও ম্যানাকুত্তা বেহায়ার মত সুযোগের অপেক্ষায় আছে। হঠাৎ সুযোগ বুঝে ঝুটা-ঝাটির মধ্যে থেকে আধখাওয়া হাড় নিয়ে ঝেড়ে দৌড়। তফাতে এসে মজা করে খেতে যাবে, ওমনি হাসুকুত্তি কোথা থেকে এসে ঘেও ঘেও, খেও খেও শুরু করে দিল। ম্যানা গোস্ত ফেলে ওকে তেড়ে গেল।
দাঁত খিঁচিয়ে খাউ খাউ খাউ Ñ দুনিয়ার পিটনি হজম করে গোস্ত নিয়ে এলাম আমি, তুই ভাগ নেবার কে হে? ভাগ, শালি হারামি মাগী।
এই ফাকে ঘিজাকুত্তা এসে গোস্তের সৎকার করে বসে আছে। ম্যানা এসে দেখে; ঘিজা জিভ দিয়ে চুটুক চুটুক ঠোঁট চাটছে।
খেউ খেউ খেউ। এই চুতমারানির পুত এটা কি করলি?
ঘিজা দাঁত বের করে হাসতে হাসতে Ñ গু-য়োম-অউ-অউ-অউ, আয়ুম Ñ হে হে হে খেয়ে ফেলেছি।
হাসু আবারও এসেছে গোস্তের লোভে।
ম্যানা শব্দ করলো -ঘেউ-ঘেউ-উ উ, উম উম, গো ও ও। এই সিজনে তুই যা দেখতে হয়েছিস। চলনা ওদিকে, কেউ নেই। পরেরবার সত্যিই খাওয়াব।
হাসু কিছুই বললো না। গোস্ত না পেয়ে গোসা হয়ে মুখ ঘুরিয়ে পাছা দোলাতে দোলাতে চলে গেল।
য়ুউম অ অ অ। ম্যানা মুখ সোজা করে শব্দ করলো। শালিটা শ্রেফ একা, এটাই মোক্ষম সময়। ওর মাথার শিরা দপ দপ করে উঠলো। মুহূর্তেই ওর পিছনে ছুটল।

শরতের মেঘমুক্ত নীল আকাশটা নীলের উপাশনায় মেতেছে। শিকলমুক্ত গর্জিলারমত বর্ষার অবসরে বাধা না পেয়ে রোদ সবাইকে পুরিয়ে খাস্তা বানাতে ব্যস্ত। এখনও মাঠ-ঘাট, খানা-খন্দ, ডোবা-নালা টুই টুম্বুর। সাদা লাল নীল পদ্মে পুকুর ছেয়ে গেছে।
নদীর পানি উপচে এবার ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। অথচ শুষ্ক মওসুমে মরুভুমির দশা। সব দোষ নাকি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের।
দু’জন খদ্দের দুধ চা-এ বিস্কুট ভিজিয়ে খাচ্ছে আর দেশের রাজনীতি নিয়ে চা’এর কাপ’এ ঝড় তুলেছে।
ঠিক এমন সময় বিস্কুট পড়ে গেল একজনের হাত থেকে। ম্যানা এ ধান্দাতেই ছিল। টুক করে গিলে ফেললো।
ম্যানাকুত্তা স্থানীয় উপ-শহর বাজারে ফেলু মুন্সির চা’য়ের দোকানে বসে এসব কথা এক কান দিয়ে শোনে, আরেক কান দিয়ে বের করে দেয়। তার শুধু পেটের ধন্ধা। সমস্যা হল আগের মত আর কেউ কিছু খেতে দিতে চায় না। এঁটো-কোটা, উচ্ছিষ্ট খাদ্য আগের মত কোথাও পাওয়া যায় না। ম্যানা পরিস্কার বোঝে দেশে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ চলছে।
ম্যানা দু’দিন আগে হাসুকুত্তির উপর ভর করেছিল। প্রায় ঘন্টাখানেক দাপাদাপি করে সে নিজেকে পাতলা করেছিল এবং ওর কাছ থেকে ছুটিয়ে নিতে পেরেছিল। তিন দিন শেষ হতে না হতে মাথার ভিতর হাসুর গায়ের গন্ধটা সুরসুরি দিতে শুরু করেছে। সে হাসুকুত্তির খোঁজ না পেয়ে ফেলু মুন্সির দোকানে এসে কান খাড়া করে বসলো।
এভাবে ধান্দা করতে করতে তার দুপুর গড়িয়ে যায়। তার ধান্দা দুটো; এক পেট এক চেট। অথচ মানুষের? নারী বাড়ি গাড়ী ক্ষমতা সম্মান, আরও কত কী?
ম্যানা ফেরার পথে পুকুরের ধারে পাড়ার এক বুড়ো কুকুরকে দেখলো Ñ জিভ বের করে ঘাম ঝরাচ্ছে।
ম্যানা ডেকে উঠলো, ঘেউ ঘেউ উ উ উ Ñ কাকা, গরম কেমন?
ঘেউ উ উ উ Ñ খুব গরম, বাপু। হবে নাই বা কেন। দেখছো না কাঠ-ফাটা রোদ। একটা গাছ আছে, যে সেখানে বিশ্রাম নেব? এসব হল গ্রিন হাউজ এফেক্ট। দেশের লোকজন খালি গাছ কাটে, লাগায় না। নগড়ায়ন। একদিন দেশের অর্ধেক নাকি ডুবে যাবে। এসব নিয়ে রাজনীতিবিদদের এক বিন্দুও মাথাব্যথা নেই...।
খামাকা বক বক করলাম, কিছু মনে কর না ম্যানা।
ম্যানা বিরাট হাই তোলে, দীর্ঘ শ্বাস নেয়। হ কাকা আমরা এসবের কী বুঝি। তয় দেশের বারটা বেজে যাচ্ছে। ওরা বুঝুক আর না বুঝুক। আমরা বুঝি। কেননা ক্ষুধার জ্বালা সব আমাদেরই সইতে হয়। আচ্ছা যাই কাকা। হাসু কোথাই গেল, দেখি।
বুড়ো কুকুরটা ভেউ ভেউ করে উঠলো। এই বেয়াদব! হাসু মার সাথে তোর এত কিসের পিড়িত?
এসব কথায় কান না দিয়ে ঘোউ ঘোউ, গুউম গুউম ও ও করতে করতে ম্যানা চলে গেল Ñ মানে Ñচুপ কর লুচ্চা, বুড়ো ভাঁড়। হাসু মা হাসু মা করিস না। চান্স পেলেই তো পুঙা মারার জন্য সারাদিন নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে পিছ পিছ ঘুরিস।

বেলা পড়ে এসছে। ম্যানা সুধির লালের ঘরের সামনে এসে দাঁড়াল। ঘরের সামনে পৌর কর্পোরেশনের কলের উপর লছমিয়া প্রায় খোলা গা হয়ে ¯œান করছে। আশে-পাশে বা দূরে কোথাও কেউ নেই। পেঁয়াজের খোসার মত পাতলা ভেজা কাপড় দেহের সাথে সেঁটে আছে। গায়ে ব্লাউজ ছায়া নেই। গোল আপেলের উপর একটা বোঁটার মত স্তন যুগল কেঁপে কেঁপে উটছে। কোমরটা সরু মাজা-ঘষা। তার নিচটা বৃত্তের মত ফোলা চওড়া। কোমরের সামনে নিচে ভেজা কাপড় লেপটে থেকে একটা ধনুকের মত বাঁকানো অংশ ফুটে উঠেছে। ম্যানাকুত্তা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করলো। কিন্তু দেখার লোভ কিছুতেই সামলাতে পারে না। সে এদিক ওদিক তাকায় আর লছমিয়ার দেহের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পানির প্রবাহিত ধারা দেখতে দেখতে ¯্রােতের তোরে হারিয়ে যেতে থাকে। সে আড়মোড়া ভেঙ্গে ভেঙ্গে দেখে আর দেখে। শুধু ভাবে, ইস আমি যদি...।
ক্ষুধা আর যৌবন জ্বালায় বিধ্যস্ত হয়ে আজ আর কোথাও গেল না ম্যানা।
সন্ধ্যায় গিজাকুত্তা কাঁদতে কাঁদতে এলো। ম্যানা বললো Ñ
কিরে ঘিজা, কাঁদিস কেন?
ঘিজা আকাশের দিক মুখ করে করুণ সুরে Ñ
ও ও উ উ উ ও ও শব্দ করতে লাগলো।
ওর চোখে পানি। খুব খারাপ খবর-রে। আজ বিকালে শহরে তত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে দু’দলের ভয়াবহ গন্ডোগোল হয়েছে। দু’দলেরই ক্যাডাররা এলোপাথারি গোলা-গুলির এক পর্যায়ে এক পথচারি, এক রিক্সাঅলা আর আমাদের সজাতির একজন মারা গেছে।
ম্যানা বললো, যা যা দুঃখ করিস না। যারা নিজেদের ভাল-মন্দ নিজেরা বুঝতে পারে না তাদের বোঝাবে কে। ম্যানা আকাশের দিক মুখ তুলে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে ঘিজার মত শব্দ করে কাঁদতে লাগলো।

এবারের চৈত্র মাসের দোল পূর্ণিমায় আনন্দ-ফুর্তি আগের মত লক্ষ্য করা গেল না। রঙ মাখামাখি অবশ্য জমে উঠেছে। ভাল-মন্দ খানা-পিনাও হচ্ছে। হরিজন কলোনির পুঁচকে-পাঁচকা ছাড়া প্রায় সবাই দারু পান করে নাচানাচি করছে। লছমিয়াকে কে যেন কেরু এন্ড কোং এর সিংহ মার্কা অরিজিনাল মাল দিয়েছিল। বলেছিল Ñ
জীবনে একবার, ছুধু একবার পেয়ার করবো, বাধা করিছ না। না হলে আমি বাঁচবো না রে, বাঁচবো না।
অতিরিক্ত মদ্যপানে লছমিয়া এখন বেসামাল। প্রায় দিনভর নাচা কুদা করে খুব ক্লান্ত। ঘরের বারান্দায় বসে ঘন ঘন সিগারেট টানছে।
ম্যানা প্রায় সারাক্ষন লছমিয়ার কাছ ছাড়া হয়নি। ওর দারু পান করা দেখে ম্যানারও খুব ইচ্ছা হচ্ছিল। ওদের ফেলে দেওয়া বোতল জিভ দিয়ে চেটে যে ¯^াদ পেয়েছিল তাতে সে মহাবেজার। বিরক্তের সাথে ঘুউ ঘুউ করেছিল। তার মানে Ñ শালারা পাদ খায়।
ম্যানা এক মনে লছমির সিগারেট খাওয়া দেখছে। এমনভাবে দেখছে যেন এর চেয়ে তৃপ্তির কিছু নেই পৃথিবীতে। ওটা ফেলে দেওয়ার সাথে সাথে সে ছুটে গিয়ে শুকে দেখলো -গোঁ ও ও ও। উঁঃ, গন্ধ...।

একদিন দেখা গেল হরিজন কলোনিতে নিরব শোকের ছায়া। লছমিয়াকে কারা যেন কিডন্যাপ করেছে।
ঠিক দু’ রাত দু’ দিন পর লছমিয়াকে পাওয়া গেল। সন্ধ্যার পর একটা রিক্সা করে কাঁদতে কাঁদতে কলোনিতে আসে। মুহূর্তে লোক জড় হয়ে গেল।
জানা গেল; স্থানিয় কিছু প্রভাবশালি যুবকেরা তাকে ধরে নিয়ে যায় এবং উপর্যুপরি গনধর্ষণ করে।
এ নিয়ে বেশ ক’দিন ধরে মিটিং মিছিল হয়। প্রশাসন থেকে বার বার বলা হল আসামী ধরা হচ্ছে। তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দেওয়া হবে। আসামি ধরছি, ধরা হচ্ছে করে করে দু’ মাস কেটে গেল।
অবস্থা এমন হল যেন লছমিকে বাকিটুকুও বিলিয়ে দিলে কিছু একটা হয়।
সুধিরলাল-লছমিয়া কেঁদে কেটে শেষতক নিজেদের মধ্যে বনিবনা করে আপন মনে ঘর-সংসার শুরু করেছে।
একরাত্রে জায়া-পতি শুয়ে সুখ-দুখের কথা বলছে। ম্যানাকুত্তা অলস ভঙ্গিতে সেসব শুনছিল। লছমিয়ার কান্না শুনে হঠাৎ কান খাড়া হল।
চোখ মুছে বললো, জীবনটা কেমোন হোয়ে গেলো রে লাল। যে দেছে খাওয়া-পোরার নিরাপতা নাই, জীবনের নিরাপতা নাই, ইজ্জতেরভি নিরাপতা নাই, অপরাধীর বিচারভি হয় না। সে দেছে কি হোবে রে লালুয়া? শয়তানদের এত করে বোললাম _ বাবু হামকে ছোবেন না, হামি ছোট জাত আছি। তবুও ছুনলো না। দুঘাচা ...। লাল তুই কুচ বোল না, বোল...। কান্নায় ভেঙে পরে।
সুধির বললো, কি বোলবো রে লছমি? ছাহেবদের সব ক্ষ্যামতা আছে। ক্ষ্যামতার বাহদিুরি কোরে। দেছের আইন ওদের জন্য। হামাদের কোন আইন নাই। কেরমে কেরমে দেসের পরিস্তিতি খুব খারাব হোচ্ছে, আরও হোবে। আর কুনোদিন ভাল হোবে না। আজ মানুষের ইজ্জত মানুষ লুটছে, কোন বিচারভি হোচ্ছে না। সেদিন বেশি দূরে লয়, যেদিন কুত্তা-বিলায় মানুষের ইজ্জত লুটবে মাগার কিছুই হোবে না...।

ম্যানাকুত্তার বুক চিরে একটা গরম দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে গেল। জলন্ত বুকটায় একটা বরফ শীতলভাব এলো। কলিজার মাঝখানে একটা আশার বীজ বপিত হল।
কালের বিবর্তনে ম্যানাকুত্তা সে বীজ থেকে একটা গাছও গজাতে দেখতে থাকে।
এখনও ম্যানাকুত্তা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আর গাছটাকে দেখে। একদিন ফল খাবে!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Farid Ali অসাধারণ গল্প । চরিত্র চিত্রন-সংলাপ - বিষয় নির্বাচন অসাধারণ । লেখকের গভীর জীবনবোধ গল্পের ছত্রে ছত্রে বিধৃত । গল্পে বিশেষ বিশেষ মুহূর্ত সৃষ্টি করে মাঝে মাঝে কিছু কিছু সংলাপ রচিত হয়েছে যে গুলো পাঠকের মস্তিস্কের চিন্তন প্রক্রিয়ার সব দিকে আঘাত করবে । নির্মাণ ও তাৎপর্যের গভীরতার দিক থেকে গল্পটি বিশ্বমানের ।
জেকে প্রিন্স amra olpotei motivrom hoye pori. motivrom manus ra mana kuttar pothei dhabito hoy............
সূর্য আবারও প্রমান হলো খুব বেশি বা প্রায় সময় না দিয়েও গল্পকবিতা জয়ী হতে পারে। আপনার গল্প সেটা প্রমান করেছে। অভিনন্দন।
Lutful Bari Panna এসেই পুরস্কার জেতার মত চমৎকার একটা গল্প আপনার ছিল ভাই। অভিনন্দন।
ঘাস ফুল অনেক অভিনন্দন ভাইকে।
মিলন বনিক অনেক অনেক অভিনন্দন মুখলেস ভাই.....
রনীল N/A UNION ALL SELECT NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL# বিজয়ে অনেক অনেক অভিনন্দন ...
রীতা রায় মিঠু অনেক অনেক ভালোবাসা, শুভেচ্ছা রইলো মুকুল ভাই!

০৬ মে - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ২০ টি

সমন্বিত স্কোর

৬.৪৯

বিচারক স্কোরঃ ৩.৮৯ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ২.৬ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী