নারী, তোমার দেহবল্লরীর খাঁজে খাঁজে প্রেম খুঁজতে গিয়ে আমি খুঁজে পেয়েছি প্রতারণা বিশুদ্ধতার অনুভূতিতে শুদ্ধ হৃদয় তোমার দ্বিচারিতায় বাকহীন শোকে অবরুদ্ধ। খোদার কসম তোমার জন্য জীবন দিয়ে দিতে পারি বিসর্জন দিতে পারি না আমার আত্মসম্মানবোধের সেই ছোট্টবেলায় মাথার চুল আঁচড়ে দেয়ার ছলে যে বোধের উদ্বোধন করেছিল শৈশবে মা। সেদিন মায়ের মুখের উপর বলে দিয়েছিলাম ‘পশ্চাৎপদ কেন শুধু? ও যদি পশ্চাৎপদদের শেষ সারিতেও হয়, আমি ওকে হারাতে পারব না’ অথচ মা আমাকে বানিয়ে বানিয়ে বলছিল ‘ওদিকে যাস না ছেলে, ও পথ বড়ই বিষমাখা। বদনামের কোন ধুলি যেন উড়ে এসে আমাদের বংশের গায়ে না লাগে’ কথাগুলো বলতে বলতে বিছানায় ঢলে পড়ছিল মা’র মাথা, ক্লান্তিতে বুজে যাচ্ছিল মা’র চোখ আমি যেন ঠিক মা’র পাশ থেকেই বুঝে উঠছিলাম ব্যথার শোকে ফিনফিনিয়ে ককিয়ে উঠছিল বুকের অসুখ; মা ছিলেন হার্টের রোগী।
আমার মুখের কণ্ঠধ্বনিতে কেঁপে উঠছিল বাড়ির দেয়াল প্রতিধ্বনিত সেই রুদ্ধস্বর আজো কানে বাজে আমি আজ চিন্তনপ্রবণ অনুভূতির আবছা আলোয় হাতড়ে ফিরি। ভালোবাসার আধিক্যে সমাসীন হয়ে কিংবা বেয়াদবিতে সেদিন আমার গলার স্বর মা’র বুকের যন্ত্রণা বাড়িয়ে দিয়েছিল? হয়ত বেয়াদবিই করেছি ভালোবাসার যে সীলমোহর বুকের অসীমে এসে গেঁথে দিয়েছিলে সেটিই আমার কণ্ঠস্বর উঁচু করেছিল সেদিন। মাকে আমি বুঝাতে পারি বিশ্বাস করাতে পারি না কিন্তু মা বুঝা ও বিশ্বাসের কোনটাই করল না; দীর্ঘদিন ও বাড়ির চৌকাঠ, ও পাড়া, ও গ্রাম, ওই বৃহৎ এলাকায় পদচিহ্ন পড়েনি আমার কতোদিন মাকে দেখিনি বলে কষ্ট হয়নি আমার!
যে তিন হাজার টাকা পাঠানো হয়েছিল ও টাকা আমি ছুঁইনি টাকাবাহক আমাকে এখানে ওখানে খোঁজলো সে টাকা কি আজো বাহকের কাছে আছে? বন্ধু মারফত রটিয়ে দিয়েছিলাম ‘যে বাড়িতে তোমার স্থান হবে না, সে বাড়ির টাকায় আমি চলতে পারব না’।
গভীর এক রাতে পাতা বিয়োগের মর্মর শব্দে বাতায়নে কান পেতে শুনি মর্মাহতের খবর তখনো কি আমার মায়ের জন্য এতটুকু বেদনা জাগেনি? কোত্থেকে উড়াল খামে মা’র খবর ভেসে আসে ‘ওকে বলিস, যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়ে সেই রাতের আঁধারে এসে আমার সাথে একটু দেখা করতে । মা’র মন তো, ওকে বলিস ওর মা ওর জন্য অনেক কাঁদে। নিভৃতে ওর জন্য নামাজে বিলাপ করে, আমার ছেলেকে যেন হেদায়েত করেন আল্লাহ’। মায়ের আর্তি বন্ধুর কাছে শুনতে শুনতে হয়ত কেঁদেছিলাম দুয়েক ঘন্টা কিংবা দুয়েক রাত আমি তখনো যাইনি শুঁকিয়ে আসছিল বন্ধুর গলা বন্ধু ও বন্ধুর মা’র মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে সে কিংকর্তব্যবিমূঢ়।
হৃদরোগে মা অনেকদিন বিছানায় কাতরাচ্ছিল তখনো যাইনি মা’র হার্ট অ্যাটাকের খবরে কানের পর্দা ফোটো হয়ে যেন ফেটে বেরিয়ে যাচ্ছিল যাইনি তখনো আমি তখনো যাইনি যখন শুনেছি মা কথা বলতে পারে না কথা বলতে গেলেই জিহবা আটকে যায় মা’র।
আমার বড় ভাই যে ছিল আব্বার মতন সাবান গায়ে মেখে গোসল করিয়ে দিত নিজের পাতের মাছ মাংস তুলে দিত আমার পাতে খাইয়ে দিত না ঠিক, টেবিলের পড়া তুলে দিত আমার মুখে বিড়বিড় করে পড়তাম যখন, চেঁচিয়ে উঠতেন ফুঁসিয়ে উঠতেন রাগে আর বেত্রাঘাতে রক্তগোলাপ হতো আমার পৃষ্টদেশ। বর্ণমালা থেকে ক্রিয়ার কাল, এ্যালপাবেট থেকে টেন্স রপ্ত করাতে গিয়ে কখন আমায় ওই বিষয়ের বিশারদ বানিয়ে তুললেন বড় ভাই।
সে এক গভীর রাতে প্রান্তর পেরিয়ে ছুটছিলাম অজানা গন্তব্যে শুধু এইটুকু মনে পড়ে আমার সেই বড় ভাই আমার দু’পা জড়িয়ে কাঁদো গলায় বলছিলেন ‘আমার কথা ছেড়ে দে, আমরা তো তোর কেউ না কিন্তু মা। মা তো খুব অসুস্থ। মা’র জন্য হলেও বাড়ি আয়’ হয়তোবা আমার কয়েকটা অশ্রুফোঁটা গড়িয়ে পড়ছিল ভাইয়ার মাথার চুলের উপর আমি তখনো যাইনি
বেদনার আহাজারিতে ভারাক্রান্ত আমার ভালোবাসার আকাশ সততার জোয়ারের বেগে পবিত্র অনুভূতিগুলি দোল খাচ্ছিল অশেষের তীরে অথচ এমন কথায় শুনালে আমায় হৃদযন্ত্র যেন বেরিয়ে পড়ছিল বুক চিরে আহা! যন্ত্রনার দাহন লালনে অনভ্যস্ত মন আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল খুব সিদ্ধান্তের কঠোরতায় আরোহন করে এমন কথাও বলতে পারে মানুষ!
তুমি কষ্ট পাবে ভেবে তখনো এবং কখনো আমি আমার ব্যথা ও যাতনার কথা বলিনি তোমায় আমার আজ বড়ো বেশি জানতে ইচ্ছে করে ‘তুমি কি কখনো কোন মাধ্যমে শুনোনি আমার কষ্টের কথা?’ শুনলেনা, না হয় নাইবা শুনলে এতটুকুও তো মন দিয়েছিলে আমায় অথচ সেই তুমিই সব ভুলে বলেছিলে ‘ওটা দিয়ে দাও, আমায় ভুলে যাও’।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
গোবিন্দ বীন
তুমি কষ্ট পাবে ভেবে তখনো
এবং কখনো আমি আমার ব্যথা ও যাতনার কথা বলিনি তোমায়
আমার আজ বড়ো বেশি জানতে ইচ্ছে করে
‘তুমি কি কখনো কোন মাধ্যমে শুনোনি আমার কষ্টের কথা?’
শুনলেনা,
না হয় নাইবা শুনলে
এতটুকুও তো মন দিয়েছিলে আমায়
অথচ সেই তুমিই সব ভুলে বলেছিলে
‘ওটা দিয়ে দাও,
আমায় ভুলে যাও’।ভাল লাগল,ভোট রেখে গেলাম ।পাতায় আমন্ত্রন রইল।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।