স্যার কি সত্যিই এই বাড়িতে থাকবেন? মজনু মিয়ার চোখে জিজ্ঞাসু চাহনি। এইবার আমার প্রায় মেজাজ খারাপ হওয়ার জোগাড়। বিকেল হতে এই প্রশ্ন প্রায় তিন চারবার শুনেছি। তবু নিজেকে সংবরণ করে বললাম, তোমার যদি কোনো অসুবিধা নাহয় তাহলেতো থাকতেই পারি। কি বল? ছি! ছি! কি যে বলেন। আমার আবার কিসের অসুবিধা, এমনি জিজ্ঞেস করলাম। তবে কি? মজনু মিয়া হয়ত আরো কিছু বলতে চাইছিল। আমি বাঁধা দিয়ে বললাম, খুব ক্লান্ত লাগছে। তোমার কথা পরে শুনব। আগে আমার ঘরটা দেখিয়ে দাও।
দোতলা প্রকাণ্ড বাড়ি। যিনি বানিয়েছেন , তিনি যে যথেষ্ট শৌখিন বলাই বাহুল্য। বাড়ির সামনে শান বাঁধানো পুকুর। উঠোনের মত কিছুটা জায়গা রয়েছে। তার একপাশে একচিলতে ফুলের বাগান। নাম না জানা কিছু ফুলও ধরে আছে! কি ফুল ওগুলো? মজনু মিয়া নিশ্চয়ই কোনো বিষয় নিয়ে গভীরভাবে চিন্তিত! অকস্মাৎ এই প্রশ্নে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে কিছুক্ষণ অপলক আমার দিকে তাকিয়ে থাকল। তারপর হঠাৎ করেই বলল, ও ফুল! কি ফুল জানিনা, স্যার। তবে সারা বছরই ফুল ধরে থাকে। আমি নিজ মনেই খানিক হাসলাম। আমার মজনু মিয়াকে নিতান্তই সহজ সরল একজন মানুষ বলে মনে হল। দোতলায় উঠে কোনার দিকে একটা ঘর দেখিয়ে বলল সে, স্যার এটাই আপনার থাকার ঘর। সাথে বাথরুমও আছে। আপনি আসবেন জেনে পরিষ্কার করে রাখছি। জিনিস পত্র যা লাগে সবই আছে। আরও কিছু লাগলে আমি তো আছি। এই বলে খানিক সংশয় নিয়ে সে আমার মুখের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে রইল। আমি খুব একটা পাত্তা দিলাম না। তুমি এখন যাও। প্রয়োজন হলে ডেকে পাঠাব। বলেই ঘরের দরজা বন্ধ দিলাম। ফ্রেশ হওয়া দরকার। সারাদিনে কম ধকলতো যায়নি। ট্রেন জার্নি তো আছেই। তারপর কয়েক রাত ঠিকমত ঘুমও হয়নি। আর কিছু না হোক, কাজের জন্য মাথাটা পরিষ্কার করা চাই।
২.
দৃক গ্যালারিতে চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন চলছে। সে এক বিরাট কর্মযজ্ঞ। দেশের বাঘা বাঘা চিত্র শিল্পীরা ছবি দেবেন সেই প্রদর্শনীতে। তাই নিয়ে এত তোড়জোড়। তোড়জোড় দেখলে মনে হবে শিল্পীরা বোধহয় এর জন্যই অনন্তকাল ধরে অপেক্ষা করে ছিল। অবশ্য সেটাই স্বাভাবিক। তবুও কেন জানি প্রথমে না করেই দিয়েছিলাম। কিছুটা বিশ্রামের দরকার ছিল। আগের সেই বয়সটাতো আর নেই। তবু আয়োজক প্রধান ছাড়লেন না। সম্মানীর অংকটা দ্বিগুণ করে দিয়ে বললেন, আপনি ছবি না দিলে পুরো আয়োজনটাই মাঠে মারা যাবে। শুনে হেসে ফেললাম। অবশ্য এটা আজ কে না জানে, দেশ সেরা চিত্র শিল্পীদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন মৃণাল রায়! অনেক পীড়াপীড়িতে শেষ পর্যন্ত রাজি হলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে না করে দেয়াই উচিত ছিল। কারণটা অবশ্য আমার নিজের কাছেই পরিষ্কার না। ছবি আঁকার ক্ষেত্রে বিষয় নির্বাচন যদিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবু কেন জানি এইবার বিষয় হিসেবে মৃত্যুটাই বেছে নিলাম। বৈচিত্রের জন্যই করেছিলাম। তবে বোধহয় ধরা খেয়ে গেছি! শুরু ঠিকই করেছিলাম। তবে শেষটা করতে পারছিলাম না। এদিকে প্রদর্শনীর প্রায় দিন দশেক বাকি! ভাবলাম এনভাইরনমেন্টাল চেইঞ্জ হয়ত কাজে দিতে পারে। তাই আধা শহর আধা গ্রাম টাইপের এই মফস্বল শহরে আসা। প্রকৃতির সান্নিধ্যে হয়ত কিছু বের হয়েও আসতে পারে!
কতদূর কি হতে পারে সেটা বলা সত্যিই কঠিন। এইতো প্রায় দুদিন হয়ে গেল এসেছি। আঁকা আঁকির কাজটা ধরতেই পারলাম না। কাজের মধ্যে যা হয়েছে, পুরো এলাকাটাই ঘুরে দেখা হয়েছে। এলাকার মানুষ জনকেও যথেষ্ট পছন্দ হয়েছে বৈকি! অত্যন্ত সহজ সরল কিছু মানুষের ততোধিক সহজ সরল জীবন যাপন। আমরা শহরের মানুষগুলো জীবনটাকে আরো আধুনিক ও সরল বানাতে গিয়ে কতটা জটিল করে ফেলেছি তা এদের না দেখলে ঠিক বোঝা যাবেনা। তবে একটা জিনিস বেশ খটকা লাগার মত। যখনি কেউ শুনছে আমি অমুক বাড়িতে আছি, তখনি একজন আরেক জনের দিকে মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে। কারো কারো মুখে শঙ্কার ছায়া। হয়ত আমাকে কিছু বলতে চাইছে। কিন্তু পারছেনা। এর মধ্যে চেয়ারম্যান সাহেব আলিমুজ্জামান একদিন এলেন খোঁজখবর করতে। তিনি অবশ্য নামেই চেয়ারম্যান। আগের সেই চেয়ারম্যানি এখন আর নেই। কথা প্রসঙ্গে জানতে চাইলেন থাকা খাওয়ার কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা।
মজনুরে সব বুঝাইয়া বলা আছে। তারপরও কোনো সমস্যা হইলে বলবেন। আপনি গুণী মানুষ। আমাদের এইখানে বেড়াইতে আসছেন। আপনার দেখভাল করার দায়িত্ব আমাদের।
না! কোনো অসুবিধা হচ্ছেনা। আর মানুষ জনের সাথে সময়তো বেশ ভালোই কাটছে।
এই মানুষ জনের কথা আর বইলেন না! এত কুসংস্কার এদের। এই দুইদিনে নিশ্চয়ই পোড়া বাড়ি! পোড়া বাড়ি! বলে মাথা খারাপ কইরা দিছে আপনার? আলিমুজ্জামানের চোখে জিজ্ঞাসু চাহনি।
কোথায়? এরকম কিছুতো শুনিনি।
না শোনাই ভালো। আর আজকাল এসব কেউ বিশ্বাস করে বলেন। ঝাড়ফুঁক , জীন ভূত, কবিরাজির দিন তো শেষ! কি বলেন?
কি ব্যাপার বলুন তো?
ব্যাপার তেমন কিছুই না। এলাকার মানুষের ধারনা বাড়িটাতে খারাপ বাতাস আছে। কি জানি কি দেখা যায়!
খারাপ বাতাস?
তেমন কিছুই না। একবার এক লোক তার বউরে নিয়া আসছে। নতুন বউ। তাদের থাকা খাওয়ার বন্দোবস্ত ঐ বাড়িতেই করলাম। রাত্রি তিনটার সময় ফোন আসল। বলল, জলদি আসেন। গিয়া দেখি অবস্থা খারাপ। বউটা ফিট খাইয়া পইড়া রইছে। কি জানি কি দেখছিল। পুরান বাড়িতো! তবে আপনি ভয় পাইয়েন না। আপনার সব দায়িত্ব আমি যখন নিজ হাতে নিছি, তখন কোনো সমস্যাই হইব না। আর মানুষ জনের সাথে কম মিশবেন। এরাও বাতাসের চেয়ে কম খারাপ না। আর আপনি হইলেন শিক্ষিত মানুষ। এইসব নিয়া মাতামাতি অশিক্ষিত মানুষরেই মানায়!
চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে ঐ দিনই আমার শেষ কথা। পরের দুটো দিন ছবিটা নিয়ে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়লাম যে আর এসব নিয়ে চিন্তা করার অবকাশ পেলামনা। কিন্তু চিন্তা করার প্রয়োজন পড়ল। ঘটনাটা ঘটল পঞ্চম দিনের মাথায়। রাত তখন আনুমানিক একটা। আপনমনেই ছবিটাকে কোনো একভাবে দাঁড়ানোর একটা চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। হঠাৎই পাশের ঘরটা থেকে খুট খাট আওয়াজ আসতে লাগল। প্রথমে ভাবলাম, ইঁদুর বোধহয়। পর মুহূর্তে পায়ে চলার শব্দ আসতে লাগল। সাথে সাথে খুব মিহি কণ্ঠে কেউ যেন আমার নাম ধরে ডাকছে। প্রথম যেদিন বাড়িটাতে উঠেছি, স্পষ্ট মনে আছে পাশের ঘরটাতে তালা দেওয়া ছিল। এমনকি আজ দুপুরেও দেখেছি তালা দেওয়া। তবে কি মজনু মিয়া কোনো কারণে ঘরটাতে ঢুকেছে? বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম। মজনু মিয়া বলে কয়েকবার ডাকও দিলাম। পরে নিজেই লজ্জা পেলাম। হঠাৎ এই গ্রাম্য পরিবেশ হয়ত কোনো না কোনো ভাবে আমার উপর প্রভাব বিস্তার করেছে। এর চেয়ে গিয়ে দেখাই ভালো! আমার ঘরের ঠিক পাশেই ঘরটা। আশ্চর্য! দরজায় তালা দেওয়া নেই। হাতল ধরে হালকা চাপ দিতেই দরজাটা একপাশে সরে এল। মনে হল বহুদিন কেউ এই ঘরে ঢোকেনি। পুরো ঘর জুড়ে এক ধরনের ভ্যাঁপসা গন্ধ। নাক চাপা দিতে হল। ইঁদুর বা এ জাতীয় কিছু মরে পড়ে আছে বোধহয়। একটা টর্চ নিয়ে আসা উচিত ছিল। অন্ধকারে হাতড়াতে হাতড়াতে সুইচ বোর্ডটাও খুঁজে পেলাম। বাতি জ্বালালাম। কোথায়? কিছুইতো নেই! ধূলি ধূসর প্রাণহীন চারিদিক। ঘরে আসবাব বলতে একটা ভাঙ্গা খাটা, বহুদিনের জরাজীর্ণ একটা কাঠের আলমারি, একটা টেবিল। একটা পানির গ্লাস কাত হয়ে মেঝেতে পড়ে আছে। সাথে বিবর্ণ মলিন কিছু কাপড়, কাগজপত্র এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। জানালা দুটো বন্ধ। শ্বাস নিতে আসলেই কষ্ট হচ্ছিল। বের হয়ে আসলাম। বারান্দায় এসে দাঁড়াতেই মনটা ভালো হয়ে গেল। নিশুতি রাত। হাওয়া দিচ্ছে খুব। তবু সে হাওয়ার নির্মলতা মনটা মুহূর্তেই পরিষ্কার করে দেয়। তার সাথে বিশাল খোলা আকাশ আর তার বুকে এলোমেলো কিছু তারা বাতি হয়ে জলছে নিভছে। ঢাকায় এই পরিবেশ পাওয়া সত্যিই কঠিন হতো।
৩.
স্যারের মনে হয় রাইতে ঘুম ভালো হয় নাই?
কেন বলতো?
আজকে দেখলাম অনেক বেলা করে ঘুম থেকে উঠলেন।
মজনু মিয়া টেবিলে নাস্তা সাজাচ্ছে আর আড়চোখে আমাকে দেখছে। কিছু কিছু মানুষ বোধহয় কখনোই আরেক জনের চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারেনা। মজনু মিয়া হচ্ছে সেই দলের। আচ্ছা মজনু মিয়া, তুমি কি কাল আমার পাশের ঘরটার তালা খুলেছিলে?
মজনু মিয়া নিষ্পলক চোখে কিছু সময় আমার দিকে তাকিয়ে রইল। জি স্যার! একটা পুরান তোষক বাইর করছিলাম। মনে হয় আর তালা দেওয়া হয় নাই। আমি এখনি তালা দিয়া আসতেছি। মজনু মিয়া হন্তদন্ত হয়ে উপরে উঠে গেল।
সারাদিন আর ঘর ছেড়ে বের হলাম না। হাতে সময় কম। যে করেই হোক ছবিটা শেষ করতে হবে। এর মধ্যেই কয়েক রাউন্ড চা সিগারেট হয়ে গেছে। খুব ক্লান্ত বোধ করছিলাম। চোখ দুটো যেমন টনটন করছে তেমনি মাথাটাও ভোঁতা হয়ে আছে। সব কিছুতেই কেমন জানি একটা বিস্বাদ! সন্ধ্যার দিকে এক প্রকার ঝিমুনি আসতে লাগল। রাতে ঘুম ভালো হচ্ছেনা। এটাও একটা কারণ। কিন্তু উঠলাম না। ভাবলাম টেবিলে মাথা রেখেই কিছুক্ষণ চোখ বুজে থাকি। ঝিমুনি ভাবটা কেটে যাবে। আবার সেই মিহি কণ্ঠের ডাক! খুব রিনরিনে গলায় বহুদূর থেকে যেন কেউ আমায় ডাকছে। আরেকবার মনে হল চুড়ির শব্দ। কেউ যেন কানের কাছে দুহাতে চুড়ি নাড়াচ্ছে। আমি চোখ খুললাম। কিন্তু এ আমি কোথায়? আমার চারপাশের পরিবেশ প্রকৃতি পুরোপুরি বদলে গেছে। ঘরের দেয়াল, জানালা, আসবাব গুলো যেমন জীর্ণ বিবর্ণ ছিল, এখন ঠিক তেমন না। সবকিছুই যেন খুব পরিষ্কার, গোছানো। ঘরের আসবাবপত্রগুলো ঠিক জায়গায় নেই। টেবিলের সামনে ক্যানভাসটাও নেই। যেমন নেই প্রয়োজনীয় কিছুই। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই, বছর ষোলো কি সতেরর একটি মেয়ে ঘরে ঢুকল। আমি তার সামনেই দাঁড়িয়ে আছি অথচ মেয়েটি যেন আমাকে দেখতেই পায়নি। তাকে ডাকব? কিন্তু কি নামে? তবুও ডাকলাম। এবারের প্রতিক্রিয়াটাও ঠিক আগের মতই। যেন শুনতে পায়নি। তা না পাক! বেশ ভালোইতো লাগছে এই চঞ্চলা হরিণীর মত কিশোরী মেয়েটিকে। আবার কখনোবা মনে হচ্ছে দড়িতে বাঁধা কোনো ফড়িং। যার ছোটাছুটির জায়গা বলতে শুধু এই ঘরটাই। আমি জানিনা আমি ঠিক কি দেখছি! তবুও দেখছি। যেন কোনো অদৃশ্য মায়াজাল তৈরি করেছে মেয়েটি আমার মধ্যে। মেয়েটি একবার ঘরের কোনায় থাকা আলমারিটা খোলে। একজোড়া নূপুর বের করে নিয়ে খাটে গিয়ে বসে। কিন্তু পরে না। পরমুহূর্তেই একটা নীল শাড়ি শরীরে জড়িয়ে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। অপলক তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ আবার সাথে সাথেই লজ্জাবনত হাসিতে চোখ নামিয়ে টেবিলে গিয়ে বসে ডাইরী নিয়ে। কি জানি কি লেখে? বেশ, থাক না তা আমার অজানা। আমার মনে হতে লাগল মেয়েটির চারপাশ যেন থোকা থোকা সুখ দিয়ে মোড়ানো। আর সেই সুখ বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ছে আমার চারপাশে। ঘরের পারিপার্শ্বিকতা আবার বদলাতে শুরু করল। আমি মেয়েটিকে হারিয়ে আবার খুঁজতে থাকি। হ্যাঁ, পেয়েছি! কিন্তু মেয়েটির মুখ এখন কালো মেঘে ঢাকা। যেন রাজ্যের সব দুঃখ এসে ভর করেছে তার উপর। আমারও খুব কষ্ট হতে শুরু করে। যেন মেয়েটির সুখ দুঃখ সবই আমার নিজের অনুভূতি। আমি তার দুঃখ ভারাক্রান্ত সেই মুখটা ছুঁয়ে দিতে চেষ্টা করি। কিন্তু পারিনা। সব রাগ ক্ষোভ এক হয়ে তার চোখে এখন যেই বন্য দৃষ্টি খেলা করছে তা আর কিছুই নয়, ঘৃণা। এই পৃথিবীর প্রতি ঘৃণা, সমাজ সংসারের হৃদয়হীন মানুষগুলোর প্রতি ঘৃণা। মেয়েটির এই দৃষ্টি আমার মধ্যে ভয় ধরিয়ে দিল। সে সোজা টেবিলের উপরে গিয়ে দাঁড়ায়। দু হাতে ওড়না পেঁচানো। তার দৃষ্টি এখন ঘরের সিলিঙে। পাখাটা ঝুলে আছে যেখানে। আমি বুঝতে পারি সে কি করতে যাচ্ছে। আমি অক্ষম আক্রোশে চীৎকার করি। কি করছ তুমি? তাকে জড়িয়ে জাপটে ধরে নিচে আনতে চাইলাম। এইবারও পারলাম না। শুধু আমি একাকী মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছি।
সিলিঙের দিকে শেষবারের মত চাইলাম। সেখানে একজোড়া নীরব শীতল চোখ হয়ত প্রতিবাদের ভাষা না পেয়ে আত্নদহনে পুড়ছে।
৪.
চিত্র প্রদর্শনীর আজ শেষ দিন। মৃণাল রায়ের ‘ইলিউশন’ ছবিটি সেরা ছবির পুরস্কার পেয়েছে। বোদ্ধা, বিচারক, সমালোচক সবাই এই বিষয়ে একমত হয়েছেন যে, ছবিটি একদিক থেকে যেমন ইউনিক অ্যাবস্ট্রাকশন অন্যদিক থেকে সত্যিকার অর্থেই বিভ্রম জাগানিয়া। রঙ তুলির এ ধরনের মুনশিয়ানা এর আগে কেউ দেখাতে পারেননি। কিন্তু শুধু মৃণাল রায় কিছু বলছেন না। তিনি আনমনে ছবিটির দিকে তাকিয়ে থাকেন আর ভাবেন অচেনা গ্রাম্য পরিবেশে প্রচণ্ড ক্লান্তিতে হয়ত তিনি সেদিন ঘোরের মধ্যে থেকে ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছেন অথবা পুরোটাই হ্যালুসিনেসন ছাড়া কিছুই নয়। কিন্তু সেই ঘোরের মধ্যে থেকেও তিনি যেই মৃত্যু দেখেছেন, এই ছবিটা দেখলে কেন জানি তা ঠিক বোঝা যায়না!
১৬ এপ্রিল - ২০১৩
গল্প/কবিতা:
৭ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪