আমেনার সংসার

পরিবার (এপ্রিল ২০১৩)

শাহরীনা শারমীন ঈশি
  • ২০
‘‘আম্মা, আইজকাও আলুসিদ্ধ দিয়া ভাত?’’ দীর্ঘশ্বাস ফেলে আসমা বলল। ‘‘যা আছে তাই দিয়া খা, এইটুকের জন্য কত কষ্ট করতে হয় জানোস? তোর আব্বার ডাইবেটিস হইছে, তার ঔষধ, রহিমের ইস্কুলের বেতন, তার বই-খাতা আরো কত কি, এতো কিছু কি মাইন্ষের বাসায় কাম কইরা হয়?” ধমক দিল আসমার মা আমেনা বেগম ‘‘আব্বা যদি কাম করবার পারতো তাইলে তো আম্মার এতো কষ্ট করতে হইতোনা-রে আসমা’’ সালমা বললো।

সালমা, রহিম ও আসমা ৩ ভাই-বোন। বাবা আব্দুল করিম অসুস্থ হওয়ায় সালমার মা অন্যের বাড়ীতে ঝি-এর কাজ করে। সালমা, ও আসমা স্কুলে যায়না। মেয়ে হওয়াতে এবং অভাবের জন্য তাদের লেখা-পড়া বন্ধ। কিন্তু রহিম স্কুলে যায়, রহিমের বয়স ১০, সে ৪র্থ শ্রেণীতে পড়ে, রহিম লেখাপড়ায় খুব ভালো, সে তাদের গ্রাম থেকে ৩ কিলোমিটার দূরের এক স্কুলে পড়ে। এতো দূরের পথ তবু তাকে পায়ে হেটে আসা যাওয়া করতে হয়।

সালমার Ÿাবা একজন রিক্সাচালক ছিলো। তবু যে টাকা রোজগার হতো তাতে সংসার ভালোই চলতো। কিন্তু বর্তমানে তাদের পরিবারে এসেছে আঁধার। দেখতে দেখতে বছর যায়- বছর আসে, একদিন হঠাৎ সালমার Ÿাবা মারা যায়। বাবাকে হারানোর শোকে আসমা প্রায় পাগল হয়ে যায়, সারাক্ষন বাবার কথা বলে আর কাঁদে।

এদিকে সালমার মা যে বাড়ীতে কাজ করতো সেখান থেকেও তাকে তাড়িয়ে দেয়, এ অবস্থায় সালমা সংসার চালানোর জন্য কুড়ানীর কাজ শুরু করতে বাধ্য হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সালমার মা এক বাড়িতে কম টাকায় থালা-বাসন ধোয়ার কাজ পায়। এতো কিছুর পরও রহিম লেখাপড়া ছাড়েনি, সে ভালো ছাত্র হওয়ায় বিনা বেতনেই তার পড়ালেখা চলতে থাকে, সংসারে তাদের বাড়তি খরচ না থাকায় সালমা কুড়ানীর কাজ ছেড়ে দেয়।

এমনি ভাবে তাদের অভাবের জীবন আর রহিমের লেখাপড়া এগিয়ে চলতে থাকে এবং এক সময় রহিম মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো রেজাল্টসহ পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়।

কয়েক বছর পর রহিম তার এলাকায় পল্লী চিকিৎসক হিসেবে কর্ম জীবন শুরু করে, গ্রামের একমাত্র ডাক্তার এবং অত্যন্ত বিনয়ী হওয়ায় সবাই তাকে খুব ভালোবাসে এবং তার ভালো রোজগার হতে থাকে। কিছু টাকা-পয়সা জমানোর পর রহিম তার মা ও বোনদের নিয়ে একটি পাকা বাড়িতে ওঠে। ভাইয়ের আদর ও চিকিৎসায় আসমা আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে ওঠে, মা-এর মুখে ফোটে সুখের হাসি, সংসারে ফিরে আসে সুখ কিন্তু বাবার অনুপস্থিতিতে যেনো তা অসম্পূর্ণ। সালমার মা এত কিছুর মাঝেও সালমার বাবার কথা মনে করে রাতে চুপি চুপি মুখ লুকিয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদে আর ভাবে এই কি তার সংসার?
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সোহেল মাহামুদ (অতি ক্ষুদ্র একজন) সঠিক মন্তব্য করতে বললে বলব, 'গল্পটি অতি সাধারন ও ক্ষুদ্র আয়তনের হয়েছে।গল্প আরও বিস্তৃত করতে হবে। (রাগ করা স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর কিন্তু!:-P) তবে এটা ঠিক যে,আপনার বয়সে আমি নিজের সর্ম্পকে ১০টা লাইনও লিখতে পারতাম না।সে ক্ষেত্রে আপনি অনেক এগিয়ে।আপনাকে বাহবা দিতেই হবে।অনুশীলন চালিয়ে যান।ভাল কিছু করবেন অবশ্যই...।
অদিতি ভট্টাচার্য্য গল্পকবিতার সবচেয়ে ছোট লেখক বোধহয় তুমিই। প্রতিযোগিতার টপিকের ওপর তুমি ঠিকঠাক লিখতে পেরেছো বলেই আমার মনে হয়। লিখে যাও, আরো অনেক ভালো লেখো। অনেক শুভ কামনা তোমার জন্যে। একদম শেষ মুহূর্তে পড়লাম, সেজন্যে দুঃখিত।
তাপসকিরণ রায় হ্যাঁ,তুমি ত ছোট্ট লেখক দেখছি !সে হিসাবে তুমি খুব,খুব ভালো লিখেছ-- আগামীতে তোমার লেখা আরও অনেক ভালো হবে।সেই আশীর্বাদ রেখে গেলাম,কেমন ?আমার আগের লেখা মন্তব্যের জন্যে আমি কাল মলছি।
তাপসকিরণ রায় খুব ছোট গল্প--লেখার টেকনিক অতি সাধারণ মনে হল--কাহিনীতে কোন বিশেষ আকর্ষণ নেই।আগামীর শুভেচ্ছা রইল।
রনীল সুন্দর একটা দিনের ছবি জিইয়ে রেখেছেন বলে আপনাকে অতিরিক্ত ক্রেডিট দেবো। এমনটাই করতে হবে। যত কষ্ট হোকনা কেন, হাল ছাড়া যাবেনা। আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানবেন, নিয়মিত আপনার লেখা চাই এখানে।
সূর্য পিচ্চি একটা গল্পে পরিবারে অভাব অনটন, অধ্যাবসায়, কর্মফল অনেক কিছুই এসেছে। গল্পের শেষে এসে সেই ছোটবেলায় শোনা রূপকথার মতই মনে হলো যেন "... অত:পর সবাই মিলে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকলো।" গল্প চমৎকার হয়েছে, গল্পের রহিমের মতো করে যদি চর্চা চালিয়ে যেতে থাকো অসাধারণ সব গল্প পাবো তোমার কাছ থেকে। অনেক অনেক দোয়া আর শুভকামনা তোমাকে।
ছালেক আহমদ শায়েস্থা ধন্যবাদ খুব ভাল লিখেছ । চালিয়ে যাও তুমি পারবে।
মিলন বনিক সুন্দর ভাবনার গতানুগতিক গল্প...ভালো লাগল...নিয়মিত লেখার চর্চা করো......
নিলাঞ্জনা নীল জন্মদিনের তারিখ দেখে ত তোমাকে পিচ্চি মনে হয় ! এই বয়সেই এত সুন্দর করে লিখলে কি করে !
মোঃ আক্তারুজ্জামান সুন্দর ভাবনা থেকে রচিত গল্প। ভাল লাগল।

৩১ জানুয়ারী - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪