রাজা হাঁটিয়া যায়। সুবেশী পোশাক পতপত করিয়া বাতাসে ওড়ে। দমকা হাওয়ায় এলোমেলো নড়ে, বস্ত্রকোণা বাতাসে ডানা ঝাপটায়। চেতনা সমুজ্জ্বল প্রজাসকল, শ্রদ্ধাব্যাকুল পারিষদ স্তুতি করে, তালি দেয় সপাটে- ‘‘কী সাধু কী সাধু….রাজা মোদের- গর্বে আসীন আছেন, থাকুন চিরদিন! তখত তাঁহার হউক আপন তালুক।’’
পাগলেও অগ্নি বোঝে, প্রমাদ আছে অধুনা অন্তঃকরণ অবাধ প্রকাশে। চেতনাপ্রতিবন্ধি অবুঝ শিশু, যেমনটা ঘটাইয়াছিল ইতিহাসে, তেমনটা উচ্চকিত হয় না এইবার। অস্ফূটে বলে- ‘‘একি…এ তো দেখি এইবারও দ্বিগম্বর!’’
গর্জনে জনরব শোনে না যে কালা, সেও টের পায় ওষ্ঠলিপি! জানে না, তাহার বিবেকই বোধ করি সাড়া দেয় অন্তরে। ফোটে না যদিও তাহা আপন কর্মে। পুরণো পোশাক ছাড়িয়া করে নবায়ন, ধরে নবতন্তুতে বোনা অতি মিহি আচ্ছাদন- রাজার আদলে।
‘‘-অতি উত্তম….উচিত…বিধেয়…হয় এই নয়াসাজ।’’ কদমে রাজার রক্ষেণ আপন স্বীকৃতি।
‘‘বিলক্ষণ বিলক্ষণ, যাহা ভূষণ তাঁহার তনুতে তাহাই উচিত কাজ। যাহা ঘটে তাহাঁর দ্বারা, তাহাই উচিত বটে, যাহা রটে তাঁহার বয়ানে, তাহাই মহাসত্য’’- বলিয়া চেঁচায়, আাঁকিয়া বেড়ায় শব্দ-দৃশ্য পটে।
‘‘ধন্য ধন্য’’ বলিয়া, দেন মহারাজা তাহাদের জ্ঞানের স্বীকৃতি। জ্ঞানজীবিরা হন আস্বস্ত তাহাদের ভবিতব্য নিশ্চিতে।
বৈয়াকরণ আকসার ভাঙে ব্যাকরণ। চলিতে থাকে মুণ্ডচর্চা না থাকুক সেথা কেশ। বিনা জলে চলে তরণি বিনা হাওয়ায় ফুলে পাল। না থাকুক তার তানপুরাতে, তবু থাকে ছন্দ লয় তাল!...বিষ্ঠায় সুগন্ধ খুঁজে পান যিনি তিনি হন আচার্যে আসীন।
অভাজনে…..কহতব্য নহে এমন গালি আসিলেও মুখে নিভৃতে গিলিয়া ফেলেন। চক্ষু আড়াল করিয়া চলেন, ভাবনা চাপিয়া রহেন- কুলাঙ্গার সকল।
নেংটা আধা-নেংটা সুট-কোটধারীরা ল্যাংগটে নয়া ফ্যাশন খুঁজিয়া লন। নিজেরা নিজেদের পিঠ চাপড়ান- ব্যাক্কল জনসকল দিব্যি মানিয়াছে পোষ আবার! তৃপ্ত মনে লক্ষ্য করে- আর কোন রাও-শব্দ নাই, নিকটে ঘটিবে তাহারও নাই সংকেত।
হালুয়া-রুটিতে পিছাইয়া পড়া কতিপয়। ফিরিয়া আসেন বেশরম দাঁত কেলাইয়া- ‘‘আহা হা…আহা হা…কী কীর্তি মোদের মহরাজার, কত উত্তম তাঁহার বিচার, কী অভিনব তাঁহার বেশ, …নবউদ্যমে আসিতেছে ঢেউ, ফুলিয়া উঠিছে দেশ!’’
হায়রে অভাগা জাতি! নিজে ত্যাগিতে পারে নাই বস্ত্র, তবু মানিতে হয় বস্ত্রহীন শীর্ষকূলের লোলুপ আদর।
পারে নাই দিতে উঁহাদের বস্ত্রহীনতার আপাতঃ উচিত শিক্ষা। তবে-
পারিয়াছে যাহা অতীতে, প্রতীতি আছে, করিবে আবার পারিবে সর্বকালে।
অদৃশ্য কাপড়ে ঘিরিয়া দিল, করিয়া দিল আড়াল। ধ্বজাধারীরা। টেরও পাইলো না, কতদূরে চলিয়া গেল তাহারা। রাজা আর প্রজার প্রকট আড়াল অস্পৃশ্য অদৃশ্য রহিল শুধূ….
‘‘হইল না মোক্ষমে সুমতি, তাই লিখিত হইলো আঁস্তাকূড়ের গতি!
…. বাগানো অস্ত্র, সামনে নিরস্ত্র সর্বহারা
ঘুরিয়া যায় নল অগোচরে, আপন শস্ত্রে বিদীর্ণ সঙ্গীনধারী
কাঁপিছে জল্লাদ নিজে- আজ আসামীর হাতে যূপকাঠি!’’
...সতত বিস্মৃত হয় অত্যাচারী- জনতায় নীরবতা কথা বলে।
০২ ফেব্রুয়ারী - ২০১১
গল্প/কবিতা:
২৩ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪