নারী হয়ে ওঠা ভ্রূণের গল্প

স্বাধীনতা (মার্চ ২০১৩)

নাজনীন পলি
  • ২২
  • ৬১
ভীষণ ক্লান্ত লাগছে । মাঝে মাঝে মনে হয় আর কত , কত দিনই ত হল এ পৃথিবীর বুক থেকে আলো হাওয়া নিয়ে বেঁচে থাকা ।চলে যাওয়াটা খুব কি কঠিন ? না ; কতোগুলো ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে নিলেই চলে ।এর থেকে শান্তির চলে যাওয়া আর নেই ।ফানের সাথে ওড়না ঝুলিয়ে বিদায় নেয়ার দৃশ্য বহুবার দেখেছি টিভি তে অথবা ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়া ।খবরের কাগজ গুলোর কমন খবর গায়ে আগুন ধরিয়ে গৃহ বধূ হত্যা , স্বামী পলাতক। পৃথিবী কে বিদায় জানাতে এমন কিছু ও করা যায় ।কিন্তু না পৃথিবীর মায়া কিছুতেই ছাড়তে পাড়ি না । এভাবে হেরে যাওয়ার কি মানে হয় ?

আমার যেদিন জন্ম হল সেদিন কারো মুখেই হাসি ছিল না পরপর তিন মেয়ে , তাই আমাকে পৃথিবীতে আসার জন্য কেউ অভিনন্দন জানাইনি ।মার মুখে শুনেছি আব্বা নাকি শিশু সন্তান টিকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলেন। এখনকার দিন হলে নিশ্চিত সেই ভ্রূণটির আর নারী হয়ে ওঠা হত না । আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান শিশু জন্মের আগেই জানিয়ে দেয় সে মেয়ে না ছেলে । তাই অনায়াসেই হত্যা করা যায় ভ্রূণটিকে । ভ্রূণ হত্যার দায়ে কারো ফাঁসি হয়েছে কিনা আমার জানা নাই।
খুব হাবিজাবি চিন্তা মাথাই আসছে । সৃষ্টিকর্তার উপর ভীষণ অভিমান হচ্ছে , সেই ভ্রূণটিকে যদি নারীই বানাবে তবে কেন ফর্সা বানালে না । পাত্র পক্ষের সামনে নিজেকে প্রদর্শিত করতে করতে আমি ক্লান্ত ।রঙ মেখে সং সাজার পক্ষে আমি কখনই ছিলাম না। টিভি তে ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি বিজ্ঞাপন দেখলে মনে হয় সব সমস্যার সমাধানই ক্রিম ।সত্যিই কি ক্রিম দিয়ে সমস্যা মেটে ? কি জানি !

কত ধরনের পুরুষ যে আছে সেটা পাত্রপক্ষের সামনে ইন্তারভেউ দিতে যেয়ে বুঝেছি ।কারো আগ্রহ আমার শরীরের প্রতি আর কারো বা আমার চাকরির । আমার সত্ত্বাটার উপর কেন কারো আগ্রহ জন্মে না !

ছোট বেলায় দাদির কাছে রাজকুমারের গল্প শুনতাম আর স্বপ্ন দেখতাম আমি রাজকুমারী , কোন এক রাজকুমার পঙ্খীরাজ ঘোড়াই চড়ে আসবে আমাকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে তার রাজ্যে ; ভালোবাসার বন্ধনে করবে আবদ্ধ । কিন্তু আমার সে রাজকুমার আর আসেনা । চলতে পথে শুধুই রাক্ষস । রাক্ষসের হাত থেকে বাজতে ছুতে চলেছি ।শুধু ছুটছি আর ছুটছি কোথায় রাজকুমার ? রাজকুমার আমার স্বপ্নের রাজকুমার আসো আমাকে বাঁচাও ।

গল্পের রাক্ষসের ইয়া বড় নখ, শিং , দাঁত থাকে । বাস্তবের রাক্ষসেরা কি ভদ্র, কি সুন্দর তাদের বেশভূষা দেখলে বুঝা যাই না এরা রাজকুমার না রাক্ষস !

একদিন আমার সেই রাজকুমারের দেখা পেলাম।কি যে ভাললাগার ছিল প্রতিটি মুহূর্ত ! একটুখানি স্পর্শ এনে দিত স্বর্গ সুখ । মনে হতো প্রকৃতির সকল আয়োজন যেন শুধুই আমাদের দুজনের জন্য। ভালোলাগা আর ভালবাসাই ভেসে বেড়াতাম দুজন ।পৃথিবীর কাছে আর কিছুই চাওয়ার ছিল না তোমাকে ছাড়া ।

কিন্তু নারীর কপালে সুখ সইলো না । শুনেছি নারীরা নাকি মায়াবিনী হয় । কৈ আমি তো তোমাকে মায়াতে বাঁধতে পারিনি ।তুমি মধুকর হয়ে মধু নিয়ে চলে গেছো অন্য মধুর খোঁজে । তোমরা পুরুষেরা এক এক জন জাদুকর তোমাদের জাদুতে বশ কর নারীকে আর মধু নিয়ে চলে যাও অন্য নারীর খোঁজে । কে বেশি উত্তম বলতে পারো রাক্ষস না তুমি রাজকুমার ?
** ৮ মার্চ , নারী দিবস । সকল নারীর বেড়ে ওঠা কণ্টক মুক্ত হয় যেন ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আবু সাইফ গল্পের রাক্ষসের ইয়া বড় নখ, শিং , দাঁত থাকে । বাস্তবের রাক্ষসেরা কি ভদ্র, কি সুন্দর তাদের বেশভূষা দেখলে বুঝা যাই না এরা রাজকুমার না রাক্ষস ! - খুব সুন্দর বলেছেন! (গল্পের ব্যাপারে আমারও কিছু বলার আছে মনে হয়- তবে আজ নয়, আরেকদিন...)
সৈয়দ আহমেদ হাবিব আপনার লিখার গতিময়তা আপনার ভাষার সাবলীলতা আপনার ভাবার গভীরতা আপনার মনের শুভ্রতা কলকল অবিরল ছলছল যেন নদীর স্রোতবহতা
ও তাই , এবার বুঝলাম :)
সৈয়দ আহমেদ হাবিব নদীর স্বচ্ছ চলমান জলের মতো কলকল ছলছল
কবির ভাষা এই ক্ষুদ্র লেখক বুঝতে পারছে না
নাইম ইসলাম আপনার লেখা পড়ে মন্তব্য করেছি বলে মনে হচ্ছে কিন্তু খুঁজে পেলাম না!
মোঃ কবির হোসেন আপনার গল্পটি অসাধারণ এবং হৃদয় ছুয়ে গেল. ধন্যবাদ.
মারুফ আহমেদ অন্তর খুবই ভালো লাগলো বন্ধু আপনার লেখাটি...এককথায় অসাধারণ ................আমাদের সমাজ, দেশ, পরিবার সকলের দায়িত্ত নারীকে যোগ্য সম্মান দেয়ার............
তানি হক কিছুই বলার নেই আপু..শুধু মনটা ভীষণ খাপার করা ছাড়া ..ধিক্কার আমাদের এমন মন মানুষিকতার যে আমরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ মানব সন্তানকে ..কালো বা সাদা চামড়া ..আর নারী ও পুরুষের ভেদাবেদ খুজি ..তবে সত্যি কথা হলো আপু সৃষ্টি কর্তা কিন্তু আমাদের মানুষ হিসেবেই তৈরী করেছেন এবং সবাইকে সমানে সমান অধিকার দিয়েছেন ..কিন্তু আমরা কিছু মানুষ নামের অমানুষ রাই ..নারী পুরুষ আর সাদা কালোর তফাত তৈরী করেছি ..অধিকারের অপব্যবহার তৈরী করেছি ..তোমার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা আর ভালোবাসা রইলো ..এবং নিয়মিত লিখা যেন পাই সেই আবেদন করে যাচ্ছি ..ধন্যবাদ
রনীল বোঝা যাচ্ছে একটু তাড়াহুড়ো করে লিখেছেন, তবে তাতে খুব একটা সমস্যা হয়নি। লেখনীতে নিবিষ্টভাব আছে। সাহিত্যের প্রতি আপনার একটা একটা অনুরাগ তৈরি হয়েছে বোঝা যাচ্ছে। আশা করি নিয়মিত চর্চা চালিয়ে যাবেন।
আহমেদ সাবের সুন্দর গল্প। বাস্তব হলেও নারীবাদী লেখা এবং প্রচলিত থিম। সময় পাননি বুঝাই যাচ্ছে কিছু সাধারণ বানান ভুল দেখে। ভালো লাগলো গল্প।
লেখাটা অনেক আগে লেখা যখন আমি প্রথম অভ্র দিয়ে লেখা শিখছিলাম তাই বানানগুলো ভুল হয়েছে । আর পুরানো লেখা কোন রকম পরিবর্তন ছাড়াই পোস্ট করেছি । বানান ভুলের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত । ধন্যবাদ ।
মামুন ম. আজিজ বেড়ে উঠুক সকল নারী ভ্রুণ মাথা উঁচু করে।

০৫ অক্টোবর - ২০১২ গল্প/কবিতা: ১৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪