----ওপর প্বার্শে যে ফাইলটা দেখতে পাচ্ছেন? ওটাতে আছে আপিল করার সুযোগ .এবার আপনিই ঠিক করেন, কোন ফাইলটা আপনি বেছে নেবেন . ---বেছে নেব মানে ?তোমাদের কান্ড-কারখানা দেখে তো মনে হচ্ছে -তোমরা একেক জনকে জজ-ব্যারিষ্টার মনে করছ .আচ্ছা তোমারা নিজেকে ভাবটা কি?
---আমরা নিজেকে মহান কিছু ভাবি .ভাবি -আমার সবাই মুক্তিযোদ্ধা . ---মুক্তিযোদ্ধা? ---হ্যা .আমরা ডিজিটাল যুগে ,ডিজিটাল দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ,ডিজিটাল মুক্তিযোদ্ধা. ---হা-হা-হা....মুক্তিযোদ্ধা ?তোমাদের বোধহয় আমার ডিজিটাল পাওয়ার সমন্ধে কোনো ধারনাই নেই . আমার শুধু মাত্র একটা ডিজিটাল ফু-তে তোমার সব কুপোকাত হয়ে যাবে ? ---কুপোকাত ?কুপোকাতের সহজ বাংলা বলেন . ---আমার সাথে ইয়ার্কি মারছো? কদ্দুস নামের জৈনক এক মুক্তিযোদ্ধা হুঙ্কার ছেড়ে বলে উঠলো-- ---মুরুব্বি, আপনি কিন্তু কথা বেশি বলছেন .বড় ভাই আপনাকে যা জিগ্গেস করবে, তা সোজা-সাপ্টা উত্তর দিবেন .no প্রশ্ন . খোরশেদ সাহেব কদ্দুসের দিকে তাকালো .কদ্দুস রক্ত লাল চোখে তাকিয়ে আছে .মোটা-মুটি ভয়ংকর চোখে .খোরশেদ সাহেব এই ভয়ংকর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকার সাহস পেলেন না . তিনি চোখটা সরিয়ে নিয়ে ঠান্ডা গলায় বলে উঠলেন -- ---কুপোকাতের সহজ বাংলা জানি না. কুপোকাত দিয়ে বুঝাতে চেয়েছি --ফু -দিয়ে উড়িয়ে দেব. ---ফু -দিয়ে উড়িয়ে দিবেন মানে ? অসভ্যের হাড্ডি . আসলাম এবার খুব জোরে গলা ঝাড়ল .যার অর্থ হলো- তুমি চুপ কর, আমাকে বলতে দাও .কদ্দুসও চুপ হয়ে গেল .আসলাম বলে উঠলো -- ---আপনার ডিজিটাল ফু-র দেখছি অনেক পাওয়ার ;আচ্ছা; এবার আপনার ডিজিটাল ফু-র একটা পরীক্ষা হয়ে যাক . ---পরীক্ষা মানে ? ---মানে -আমরা ত্রিশ জন মুক্তিযোদ্ধা আপনার সামনে দাড়াব. আপনি আপনার ডিজিটাল ফু-দিয়ে আমাদের উড়িয়ে দেবেন .দিতে পারলে আপনাকে স্ব-সম্মানে মুক্তি .না পারলে চরম অপমান .ডিজিটাল অপমান. ---উহ; তোমরা বড্ড উন্মাদ .পাগল .তোমাদের বারবার বলছি .তোমাদের এই পাগলামির ফল কিন্তু ভালো হবে না. আমজাদ ভাই ? এম. পি. সাহেবকে একটু ডিজিটাল পাগলামি দেখাও তো ?উনি বেশি কথা বলছেন .যা খুব খারাপ .বন্দীদের বেশি কথা বলতে নেই . আমজাদ এম.পি. সাহেবের পিছনে গিয়ে দাড়ালো .এবং সে আসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করলো . আসলামের অনুমতি নেওয়ার জন্য .আসলাম তাকে চোখের ইশারায় অনুমতি দিল .অনুমতি পেয়ে আমজাদ মুচকি একটা হাসি দিল .হাসি দিয়েই সে খপ করে এম. পি. সাহেবের মাথার চুল ধরে টান দিল . টান দিয়েই আমজাদ অবাক . সে এত জোরে এম.পি. সাহেবের মাথার চুল ধরে টান দিল .অথচ এম. পি. সাহেব একটুও উহ; জাতীয় শব্দ করলেন না .বরঞ্চ তিনি মুখ টিপে হাসলেন. আমজাদ রাগে দাঁতে দাত চেপে বলে উঠলো-- ---আসলাম ভাই .উনি ব্যথা পান নি .মজা পেয়েছেন .মজা পেয়ে দাত বের করে হাসছেন . আসলাম বলে উঠলো- ---তাহলে এবার তুমি কানের সামেন যে চুল গুলো আছে -মানে চিপ আছে না ?তুমি ওই চিপ ধরে টান দাও . আমজাদ এবার এক মহূর্ত দেরি করলো না . সে স্ব-জোরে এম.পি. সাহেবের চিপ ধরে টান দিল . এম.পি. সাহেব এবার খুব জোরে "উহ" করে চেচিয়ে উঠলেন .এবং ব্যাথায় এক প্রকার হামাগুড়ি দিয়ে বসে পড়লেন . সবাই হাতের তালি দিয়ে আমজাদ কে স্বাগত জানালো . আসলাম বলে উঠলো-- ---মরতুজ ভাই এবার তোমার পালা.
মরতুজ এগিয়ে যাচ্ছে এম. পি সাহেবের দিকে .তার যাওয়ার ভঙ্গিটাও অদ্ভুত. অনেটা মার্শাল আর্ট টাইপ .সে এম.পি সাহেবের সামনে গিয়ে অদ্ভুত ভঙ্গিমায় দাড়ালো .এবং সে কাল-বিলম্ব না করে 'ইয়া হু" বলে চেচিয়ে উঠে স্ব-জোরে এম.পি সাহেবের পেট বরাবর ঘুসি মারলো .কিন্তু দুর্ভাগ্য এম.পি সাহেবের .তিনি ঘুসি বাচানোর জন্য মাথাটা নিচু করলেন ঠিকই .কিন্তু তিনি ঘুসি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারলেন না. ঘুসিটা পড়ল তার নাক বরাবর .এম .পি সাহেব "উহ "বলে নাক চেপে ধরে বসে পড়লেন .এবং প্রলাপ বকতে লাগলেন ----- ---উহ; গড .ব্লাড .পাগল .সব পাগল .উন্মাদ .বড্ড উন্মাদ; আসলাম ধমক ছেড়ে বলে উঠলো --- ---চুপ ,মুরুব্বি .চুপ করেন . ---এই চুপ করলাম বাবা.আর কোনো কথা বলব না .তোমারা যা করতে বলবে .করব. ---ফু-দিয়ে উড়িয়ে দিন . ---দিচ্ছি বাবা .সোজা হয়ে দাড়াও. আসলাম সবাইকে নিয়ে এম. পি. সাহেবের সামনে দাড়ালো . সবার চোখেই কৌতুহল .এবং হাসি . এম. পি সাহেব তার ডিজিটাল ফু-দিয়ে সবাইকে উড়িয়ে দেবেন . এম.পি সাহেব দম নিয়ে নিচ্ছেন .খুব জোরে ফু- দেওয়ার জন্য .এম.পি সাহেব এবার রেডি বলে -খুব জোর নি-স্বাসে তার ডিজিটাল ফু-টা দিয়ে দিলেন . কিন্তু এই ফু-তে কেউ উড়ে গেল না .সবাই হাতের তালি দিল .এবং শর্ত অনুযায়ী খুব তারাতারি ডিজিটাল অপমানের ব্যবস্থ্যা করা হলো .জুতার পেটানোর ব্যাবস্থা. মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে থেকে কেউ আবার একজন প্রস্তাব রাখল--- ---আসলাম ভাই .জুতাটা বেশি দামী হলে কিন্তু চলবে না .কম দামী জুতা চাই . সবাই এই প্রস্তাবের সমর্থন করলো .এবং সাথে আরেকটি প্রস্তাব যোগ হলো -জুতার পেটানোর দৃশ্যটি ,কেমেরাবন্দী করার জন্য. অবশেষে জুতা পেটানোর দৃশ্য কেমেরাবন্দী করা হলো .এ ঘটনার পর থেকেই এম পি সাহেব কেমন যেন নিথর ভঙ্গিতে বসে আছেন .তার চোখে -মুখে কেমন যেন একটা হতাশার ছাপ. তিনি কখনো কল্পনাও করেন নি যে -এরকম একটা ঘটনা ,তার জীবনে ঘটে যাবে . এই পুচকে ছেলেরা তাকে জুতা পেটা করবে. বিষয়টি খুবই অকল্পনীয়. এম পি সাহেবের গলা শুকিয়ে যাচ্ছে .তার কেমন কেমন যেন লাগছে . শরীরের ভিতরে কেমন যেন ভয় চেপে বসেছে .শরীর কাপছে . আসলাম বলে উঠলো--- ---এম পি সাহেব .ডিজিটাল অপমানের পর্ব শেষ .এবার একটি গান ধরুন .আমাদের জাতীয় সঙ্গীত. এম. পি. সাহেব কথা বলছেন না .এ রকম একটা ঘটনার পর, মুখ দিয়ে কথা বের হওয়ার কথাও না . আসলাম আবার বলে উঠলো--- ---কি হলো? কথা বলছেন না যে ? এম. পি সাহেব তবুও নিশ্চুপ . তিনি মাথা নিচু করে বসে আছেন . আসলাম করা গলায় বলল-- ---কি ,কথা কানের ভিতর ঢুকছে না ? এম.পি সাহেব এবার গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলেন -- ---জানি না . ---কি জানেন না ? ---জাতীয় সঙ্গীত. ---জাতীয় সঙ্গীত জানেন না ? ---পুরোপুরি জানি না. প্রথম দু লাইন জানি. ---দু লাইন মানে কি? যদি কোনো মঞ্চে আপনাকে বক্তিতা বাদ দিয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে বলা হয়? ---তাতে অসুবিধে নেই .অন্যরা গাইবে .আমি শুধু ঠোট মেলাব. ---ঠোট মেলাবেন মানে ?জাতীয় সঙ্গীতেও দুই-নম্বরী ? আপনারা দেশের সাথে দুই-নম্বরী করবেন ঠিক আছে .দেশের পাবলিকের সাথে দুই-নম্বরী -তাও ঠিক আছে .পাবলিক আপনাদের কিছু বলবে না . কিন্তু জাতীয় সঙ্গীতের সাথে দুই-নম্বরী করলে তো মেনে নেওয়া যায় না. আজ আপনাকে পরোপুরিই জাতীয় সঙ্গীত শিখিয়ে ছাড়ব.আপনি এবার দু লাইনই গাইতে থাকেন. এম.পি সাহেব ইতস্ত করতে লাগলেন .কারণ তিনি দু-লাইন জাতীয় সঙ্গীত জানেন ঠিকই .কিন্তু সঠিক ভাবে জানেন না . আসলাম হুংকার ছেড়ে বলে উঠলো-- ---গান বলছি. এম.পি সাহেব গাইতে লাগলেন 'আমার সোনার............................'হঠাত এম.পি সাহেব হু-হু করে কেদে উঠলেন .এবং আপিলের ফাইলটি বুকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলেন-- --আমি আপিল করতে চাই .আমি আপিল করব.(চলবে)
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।