ফেরা

অন্ধকার (জুন ২০১৩)

sakil
  • ১৬
  • 0

কনা যেখানে বসে আছে সেখানটা একেবারে ফাঁকা । দীঘির এই পাড়ে সাধারণত কেউ তেমন একটা আসে না। কনা আজ দারুন সেজেছে যাকে বলে নববধূর সাঁজ। কনা ছোট বেলা থেকেই সুন্দরী। কনার দাদু আদর করে তাকে শ্রীদেবী বলে ডাকত। রুপটা আসলেই তার শ্রীদেবীর মতই। সারাক্ষণ মুখে হাসি লেগেই আছে। একবার যদি কেউ ভুল করে তাকায় সে পুনরায় তাকাবেই। কনা ছিল বাবা মায়ের একমাত্র আদরের মেয়ে। লেখাপড়া এবং দুরন্তপনায় ও সে ছিল সকলের আগে। নবম শ্রেনী থেকে দশম শ্রেনীতে সে নওয়াব ফয়জুন্নেছা স্কুল থেকে প্রথম স্থান অধিকার করে।
তার বাবার স্বপ্ন ছিল মেয়েকে একজন উকিল বানাবেন। মেয়েকে উকিল বানানোর পেছনে ও একটা কারন ছিল। কনার বাবা আহমেদ সাহেব একবার অফিসের ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। সেই সময় তিনি একজন মহিলা এডভোকেটের কাছে যান। সে মহিলার ব্যাবহার এবং কর্মদক্ষতা আহমেদ সাহেব কে বেশ মুগ্ধ করে। সেই থেকে তিনি স্বপ্ন দেখতেন তার মেয়েকে ও তিনি একজন এডভোকেট বানাবেন ।কনার বাবার সেই স্বপ্ন পুরন হয়নি। কেন হয়নি? তা আস্তে আস্তে জানা যাবে।
কনাদের বাসা থেকে স্কুলের দূরত্ব বেশী নয়। শহরের স্কুল অনেক ছাত্রী লেখাপড়া করে সে কারনে বিশেষ করে একজনের দিকে খেয়াল তেমন একটা থাকে না। শহরের রাস্তার পাশের ছোট ছোট চায়ের দোকান গুলো বখাটে ছেলেদের আড্ডাস্থল। সেই দোকানের সামনে লাগোয়া বেঞ্চে বসে একেকটা বখাটে মেয়েদের স্কুলের সময়ে বসে অনায়াসে আড্ডা মারে আর সিগারেট ফুঁকে।
কনার উপর নজর পড়ে তেমনি এক আড্ডাবাজ বখাটের । কনা স্কুলে যাবার পথে সামনে এসে দাঁড়ায়। কনার সাথের বান্ধবীরা সকলে চলে যায় কনাকে একা রেখে। এভাবে ঘটনা ঘটতে থাকে দিনের পর দিন। কনা প্রতিবাদী হতে চায় কিন্তু পারে না। বাসায় ও কাউকে কিছু বলতে পারে না। এভাবে দিনের দিনের পর দিন অবস্থা চরমে উঠে যায়। কনা বাধ্য হয় পরিবারে ঘটনা জানাতে। কনার বাবা আহমেদ সাহেব সব শুনে একদিন মেয়েকে ফলো করেন। রাস্তার মাঝে কনা’কে আটকে রেখে জুলহাস এটা সেটা বলে। আহমেদ সাহেব এগিয়ে যান। আহমেদ সাহেব কে দেখে কয়েকটি ছেলে চলে যায়, তবে জুলহাস যায়না। আহমেদ সাহেব সরাসরি জুলহাসকে উদ্দেশ্য করে বলেন
-কি বাবা তোমার কি সমস্যা? আমার মেয়েকে স্কুলে যেতে দাও। রাস্তায় ওর পথ আটকিয়ে দাঁড়িয়ে আছ কেন?
-চাচা চুপ থাকেন।বেশী বাড়াবাড়ি কইরেন না, তাইলে কিন্তু সমস্যা আছে।
-তাই। নাকি! সেদিনের ছেলে তুমি আমাকে সমস্যা শিখাতে এসেছ?
-বেশী বাড়াবাড়ি কইরেন না। আমি এসিড মাইরা দিমু, তহন দেহি আপনার মাইয়ারে কে পছন্দ করে।
দু’জনের বাক বিন্ডতায় লোক জড় হয়। সাধারন মানুষ আহমেদ সাহেব কে বুঝিয়ে বলে
‘ছেলে গুলো ভাল না , আপনি ওদের সাথে লাগতে যাইয়েন না । বাসায় যান’
রাগে দুঃখে আহমেদ সাহেব মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যান। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সব শুনে থানায় ডায়রী করতে বলেন। আহমেদ সাহেব মেয়েকে নিয়ে থানায় ডায়রী করেন । এতে হিতে বিপরীত হয়। পুলিশি তদন্তের সময় কেউ জুলহাসের বিপক্ষে কথা বলেনি। এতে করে জুলহাসের সাহস বেড়ে যায়। পাড়ার দোকান ছেড়ে জুলহাসের দল বাসার সামনে আড্ডা দেওয়া শুরু করে, মাঝে মাঝে সিটি বাঁজায়, আহমেদ সাহেব কে দেখলে তিরস্কার করতে থাকে। আহমেদ সাহেব অফিসের কর্তা কে জানান । তিনি বলেন আপনি বদলী হয়ে যান। একসময় বদলির ব্যাবস্থা হয়ে যায়। আহমেদ সাহেব মনে মনে হাফ ছেড়ে বাঁচেন। কিন্তু নিয়তি বলে একটা কথা থেকেই যায়। আহমেদ সাহেবের বোন কনার জন্য এক বিদেশী পাত্রের সম্বন্ধ নিয়ে আসেন। মেয়ের বয়স সবে পনের তারপর ও আহমেদ সাহেব রাজি হয়ে যায়। এক রাতে বোনের বাসা চট্রগ্রামের উদ্দেশ্য সকলের অগোচরে বাসার সকলে ট্রেনে করে যাত্রা করে। কনা এসব বিশয়ে তখনো কিছুই জানেনা ।

হুট করে আমার বিয়ে হয়ে যায় বাবার বয়সী এক লোকের সাথে। তার অনেক পয়সা আছে । আর কুমিল্লায় জুলহাসের ঘটনার কারনে বাবা তার মেয়েকে উকিল বানানোর স্বপ্ন বাদ দিয়ে অপরিনত বয়সে বিয়ে দিয়ে দেন আমাকে ফুফুর বাসায় এনে। বিয়ে মানে কি ? আমার জানা ছিল না। টিভিতে হিন্দি মুভি এবং গল্পের বই পড়ে জানতাম একে অন্যেকে ভালোবাসে, প্রেম করে বিয়ে করে। ব্যাস বিয়ে সম্পর্কে আমার ধারনা অতটুকুই। একদিন সন্ধ্যায় আমাকে সকলে মিলে একটা কমিউনিটি সেন্টারে গায়ে হলুদ দিল। আমাকে বেশ করে সাজানো হল । আমি তখনো শাড়ি পড়তে শিখিনি । কিন্তু তবু ও আমাকে জোর করে শাড়ি পড়ানো হল। আমার গায়ে হলুদের ভিডিও করা হল । আমি তখন কেমন যেন একটা ঘোরের মধ্যে বাস করতে লাগলাম। এরপরদিন আমার বিয়ে হয়ে গেল । আমাকে বেশ সুন্দর করে সাজিয়ে লাল বেনারসি শাড়ি পরিয়ে বাবার সমান এক লোকের সাথে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হল। বরের ভাড়া করা ফুল দিয়ে সুসজ্জিত গাড়িতে করে আমাকে ফেনীতে বরের বাড়ি নিয়ে আসা হল। আসতে আসতে রাত প্রায় বারোটা বেজে গেছে। সকলে আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে সু সজ্জিত এক রুমে নিয়ে বসিয়ে দিল । একে একে সকলে চলে গেল। আমি একা সুসজ্জিত খাটে বসে রইলাম।
এক সময় আমার বর এল। সে আমাকে কোন কিছু না বলার সুযোগ দিয়ে কাপড় ছাড়তে বলল। আমি কি করব বুঝতে পারছিলাম না। বিয়ে মানে কি এই? আমি জানি না আমার জানা ছিল না। এরপরের ঘটনাগুলো আমাকে বাস্তব জীবন থেকে আঁধারে নিয়ে গেল। আমি বাচ্চা একটা মেয়ে তার সাথে কি করতে পারি। আমার বড় আমাকে নিয়ে সারা রাত খেলল। আমি একটা কাটা মুরগির মত সারারাত যন্ত্রনায় ছটপট করলাম। তাতে তার কিছুই আসে যায় নি। কান্নায় আমি বুক ভাসালাম। কাকে বলব দুঃখের কথা ।
তারপর ও বাবার সন্মানের দিকে তাকিয়ে আমি বেঁচে থাকতে চাইলাম। কিন্তু সেই বেঁচে থাকা ছিল শুধুই বেঁচে থাকা । ভালবাসা কিংবা জীবনের কোন পুর্নতা ছিল না সেখানে। তার পর ও বেঁচে থাকার স্বপ্ন ছিল , ছিল ভবিষ্যত।একদিন আমার পাসপোর্ট করা হয়। আমি দুবাই চলে যাব আমার বরের কাছে। বাবা মা দারুন খুশি। মঙ্গল বারে গালফ এয়ারের এক ফ্লাইটে করে আমি দুবাই চলে গেলাম আমার স্বামীর কাছে। তখন সকল কষ্ট ভুলে আস্তে আস্তে স্বামীকে ভালোবাসতে শুরু করেছিলাম, মেনে নিতে চেষ্টা করছিলাম তার আর আমার বয়সের ব্যাবধান কে। দুবাইয়ে এক সপ্তাহ পরে আমি বড় ধাক্কা খেলাম। সেদিন রাতে আমার স্বামী সাথে করে দুইজন বন্ধ নিয়ে এল । তাদের কে আপ্যায়ন করে খাওয়ালাম। রাত বাড়তে লাগল তাদের যাওয়ার কোন নাম নেই। একসময় আমার স্বামী আমাকে আসল কথা বলেই ফেলল। তার বন্ধু দুইজন আমার সাথে থাকবে রাতে। আমি আকাশ থেকে পড়লাম। বলে কি? কিন্তু পরে জানলাম এটাই তার ব্যাবসা , দেশ থেকে বিয়ে করে এনে এখানে দেহব্যাবসা করায়। আমি অসহায় হয়ে গেলাম। দেশ ছেড়ে এই সুদূর প্রবাশে আমি কি করতে পারি? এই কলঙ্কের কথা কি কাউকে বলা যায়। আমি চুপ করে থাকলাম। আর প্রতি রাতে এক জন দুইজন করে নতুন মানুষের শয্যাসঙ্গিনী হতে লাগলাম ইচ্ছের বাইরে। এদিকে আমার বাবাকে রাতের আঁধারে কে বা কারা বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। আজ পর্যন্ত তার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। আমার মা অসহায় হয়ে পড়েন । আমি তখন আমার স্বামীর কাছ থেকে কিছু টাকা মায়ের জন্য পাঠালাম। আমার স্বামীর কাছে আমি আরো বেশি অসহায় হয়ে গেলাম। ধীরে ধীরে লোকের সংখ্যা বাড়তে লাগল। সেই সময় একদিন খবর এল ,আমার মা ব্রেইন স্ট্রোক করে মিডল্যান্ড হসপিটালে ভর্তি হয়েছে। আমার স্বামীকে অনেক বুঝিয়ে দেশে এলাম।

আমি দেশে আসার চার দিনের মাথায় আমার মা মারা যায়। এরপর পৃথিবীতে আমার আপন বলতে আর কেউ রইলো না। আজ আমি আমার গ্রামের বাড়ি মানে আমার দাদার বাড়িতে এসেছি পাঁচ দিন হল। দাদার বিশাল বাড়ি, দাদা আমাকে পেয়ে অনেক খুশি। কিন্তু আমি আমার অপবিত্র শরীর নিয়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে চাইনা। শুনেছি এই দিঘী অনেক গভীর। ছোট বেলা থেকে আমি সাতার জানিনা। তাই ভাবছি দীঘিতে লাফ দিয়ে জীবন বিসর্জন করে দেই। এই আঁধারে ঘেরা জীবন নিয়ে বেঁচে থেকে কি লাভ?
দীঘির জলে ঝাঁপ দেব দেব করে আমি ঝাঁপ দিলাম। কিন্তু একটা শক্ত মজবুত হাত আমাকে জড়িয়ে ধরল। তার হাতের বাঁধুনি থেকে আমি মুক্তি পেলাম না। সে আমাকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে এল দীঘির পাড়ের সেলু মেশিন ঘরে। সে আর কেউ নয় আমার দাদার খাস চাকর বিল্লাল। সে ইচ্ছেমত আমায় ভোগ করল। তারপর ছেড়ে দিয়ে বলল যা মরতে যখন ছেয়েছিস এবার গিয়ে মর।
এলোমেলো চুল শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বিল্লাল বুড়োর অত্যাচারের ক্ষত চিহ্ন নিয়ে আমি বাড়ি ফিরে এলাম। কেন জানি এখন আর আমার মরতে ইচ্ছে করছে না। পুরুষ গুলোকে দিখিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে এরপর ও বেঁচে থাকা যায়। কিন্তু আমার তো কিছুই নেই যা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করব। দাদার কাছে থাকতে মন সায় দিচ্ছে না । ভাবছি আবার ফিরে যাব দুবাই।
কিছুক্ষণ পর আমার ফ্লাইট। আমি লাউঞ্জে বসে আছি। গালফ এয়ারের বিমানটি এখনো এসে পৌঁছায়নি। আজ থেকে সাড়ে চার মাস পুর্বে আমি একটা জীবনের রঙ্গীন স্বপ্ন নিয়ে দুবাই গিয়েছিলাম। আর আজ আমি একটা অন্ধকার জগতে প্রবেশের জন্য পাড়ি দিচ্ছি। আমি জানি আমার সামনে এক আমবশ্যার আঁধার। বেঁচে থাকতে হলে আমাকে এই আধারেই পথ চলতে হবে। কারন নারীর শরীরই যে তার বড় শ্ত্রু, তার জীবনের বড় অন্ধকার।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক বাস্তবতা সবসময় নির্মম আচরণ করে...শাকিল ভাই আপনার গল্পের ধারাবাহিকতা সত্যিই মুগ্ধ করেছে,,,সুন্দর রচনা....
এফ, আই , জুয়েল # শাকিল ভাই---অনেক সুন্দর , দুঃখিত ও অবাক হওয়ার মত । সমাজের কঠিন কঠিন বাস্তবতা গুলোকে তুলে ধরেছেন----এর সাথে সাথে দায় এড়াবার চেষ্টায় ভুলের ইঙ্গিত গুলোও সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে । সব দিক থেকে গল্পটা চমৎকার । এটি পাঠককে দারুনভাবে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হবে বলে আমার বিশ্বাস । আপনাকে ধন্যবাদ ।।
কনা অনেক ভাল লেগেছে।লেখার ধরনটাও বেশ।তবে মজা পেলাম আপনার গল্পেও একটা কনা আছে দেখে.. :-)
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন ........বর্তমানটাকে গল্পে তুলে এনেছেন। ভাল লিখেছেন। শুভেচ্ছা রইল।
এশরার লতিফ ভয়াবহ অন্ধকারের গল্প। দারুন ফুটিয়েছেন।
রাজিব হাসান নারীদের মুক্তি নারীরাই দিতে পারেনা। একজন মেয়ে শিশুর মানসিকতা তার মা ছোট বেলা থেকেই দুর্বল করে দেয়। তাই পুরুষতান্ত্রিক পরিবার থেকে মেয়েদের মুক্তির জন্য মায়েদের ভুমিকা রাখতে হবে। সাথে সাথে আমাদের (চরিত্রহীন পুরুষদের) ও মানসিকতা টা পরিবর্তন করতে হবে। একজন নারীকে মানুষ হিসেবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হবে আমাদের; মানে সমাজের। ভাল লাগলো গল্পটি......
তাপসকিরণ রায় ভাল লেগেছে আপনার গল্প--বাস্তব কাহিনী লিখেছেন বোঝা যায়।আজকের দিনের সত্যি ধারাবহটা আপনার লেখায় ফুটে উঠেছে।
মোঃ আক্তারুজ্জামান খুব কষ্টের কথা- সুন্দর প্রানবন্ত লেখা|

১৯ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৫০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪