ইমতিয়াজ খুব ছোট। মাত্র দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। বাড়ির সবার সাথে খুব চঞ্চল পদচারণয় ভাব আর ভাল ধরনের বাচাল। এক কথায় চাঞ্চল্য তাকে আষ্টেপিষ্টে ধরেছে। বাবা-মার সাথে শহর থেকে গ্রামে দাদা বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। বাড়ির পাশের বাগানের পাশ দিয়ে হেটেঁ যাচ্ছে ইমতিয়াজ আর ওর দাদু। সাথে ওদের পোষা কুকুরটা (প্রিন্স) । ভয়ানক আওয়াজ করতে পারে,তবে খুবই শান্তশিষ্ট। ঐ আওয়াজ করা পর্যন্তই। অবশ্য অন্য কোন সাহসিকতার পরিচয় দিতে হয়নি প্রিন্সের। আওয়াজ শুনেই আগে ভাগেই অন্য কুকুরগুলো পালিয়ে যায়। -দাদু ,ঐ পাখিটা দেখেছ। নাম কি ওটার। -কোন পাখিটা। -ঐ যে ছোট ছোট পাখিগুলোর ভেতরে। -ও ঐগুলো তো চড়ুই পাখি।-তাতো জানিই। -তাহলে? -যেটা একটা চড়ুইকে পায়ের নিচে নিয়ে ঠুকরাচ্ছে। -হবে কোন পিশাচ পাখি। -আমরা কোথায় যাচ্ছি দাদু। -রক্ত আনতে। -কার জন্য?কেন?কোথা থেকে? -তোর বাবার অসুখটা বড্ড বেড়ে গেছে। ডাক্তার বলেছে কয়েকটা পিশাচের হৃদয়ের রক্ত পান করালে সেরে উঠবে। -তাহলে ঐ পিশাচ পাখিগুলোর রক্ত নিলেই তো হতো,আমরাতো ওগুলোকে ছেড়ে আসলাম। -এটা ঐ পাখিপিশাচ নয় এরা নরপিশাচ। -এদের তুমি পাবে কোথায়? -যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে। শুনেছি আজ কয়েকজনের ফাঁসি হবে। এরা যে কত জনের হনন করেছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। এদের চেয়ে বড় ধরনের পিশাচ আর হতে পারে না। এদের হৃদয়ের রক্তই উত্কৃষ্ট হবে। কুকুরটা ওদের পিছু ছাড়েনি। অও আমাদের সঙ্গী হতে চাই।অপরাধীদের ফাঁসি হবার পর আদালতের পাশেই একটা কবর স্থানে কবর দেওয়া হবে। ওখানে গিয়ে ওরা একটা ঝোপের ঝারে গা ঢাকা দিল। রাত ১টার দিকে কবর দেওয়া সম্পন্ন হলো। সবাই চলে গেলে ইমতিয়াজের দাদা কবরের কাছে এসে কবর আলগা করতে লাগলো। ওদিকে কতগুলো শিয়াল চলে এসেছে গন্ধ শুকতে শুকতে। প্রিন্স রীতিমত হুঙ্কার শুরু করলো।শিয়ালগুলো দৌড়ে পালালো। ইতোমধ্যে দাদু একটা লাশ উঠিয়ে ফেলেছে। ধারাল ছোট জাতীয় একটা চাকু বের করল পকেট থেকে। সোজা বসিয়ে দিলো বুকের উপরে। যেন একটুও গা কাঁপলো না,চোখের পলক পড়লো না। হয়তো অভ্যাস করে ফেলেছে ৭১এর দিনগুলির কথা মনে রেখে। ছুরি বক্ষ পিঞ্জরের ম্যানুব্রিয়ামের পাশ দিয়ে ঢুকে গেলো। পাশের কশেরুকাগুলোকে কেটে বুক বিদীর্ণ করা হলো। বেড়িয়ে গেলো হৃদপিন্ড,ফুসফুস। ভেতরটা থেকে মৃদু অসহ্য ভুকসা গন্ধ বের হচ্ছে আর গরম বাষ্প। সব অঙ্গগুলো যেন তাজা। মনে হচ্ছে লাশটা এখনই জীবন ফিরে পেতে পারে। হৃদপিন্ডটা আকড়ে ধরে হেঁচকা টানে ছিড়ে ফেললো দাদু। একটা পলিথিন ব্যাগে হৃদপিন্ডের রক্ত সংগ্রহ করলো। এরপর বাকি লাশগুলো থেকে। রাত তিনটা নাগাত আমাদের কাজ শেষ হলো। বাড়ি ফিরে দাদু একটা গ্লাসে করে ইমতিয়াজের বাবাকে রক্ত খেতে দিল।রক্ত এতো গাঢ় যে এর কালো রঙটাই চোখে পড়ছে। -কি ওটা? -ঔষুধ। -এটা এতো নুনতা কেন? -কারণ এটা যে আর এক যুদ্ধে পাওয়া।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
তাপসকিরণ রায়
প্রতিশোধ পাগল একটি মানুষের গল্প পেলাম।নাতিকে সঙ্গে না নিয়ে গেলে বোধ হয় ভালো হতো।ওর পক্ষে এতটা বীভৎসতা কি সহ্য হবে?তবু সহ্যের বাইরেও অনেক কিছু হয়--তাই তো?
নাইম ইসলাম
অন্য ধারার বাইরে গিয়ে নিজস্ব একটা ধারায় গল্পটি লিখেছেন বলে মনে হলো। গল্পে স্বাধীনতা বিরিধিদের প্রতি প্রচন্ড ক্ষোভ ছিল! এই ক্ষোভ শুধু আপনার একার নয়, যারা এই সোনার বাংলাকে ভালবাসেন তাদের প্রত্যেকেরই খাইরুল ভাই!
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।