১
খুব সকালেই ঘুম ভেঙ্গে গেল। কোত্থেকে যেন এক টুকরো রোদ ঘরের মাঝে খেলা করছিল। আর ঘুমাতে ইচ্ছা হলোনা। চমকে উঠলাম হঠাৎ মোবাইল ফোনের রিং বাজাতে। রিসিভ করতেই এক চেনা গানঃ “স্বপ্নে তার সাথে হয় দেখা, বসে বসে ভাবি তা একা একা।” অনেক বার হ্যালো হ্যালো করলাম। কিন্তু ঐ পাশ থেকে কোন সারা আসলো না। মন খারাপ হল। তবে ভালো লাগার একটা মোহ কাজ করল। ফোনের কলার কে ধন্যবাদ দিতে পারলে হাল্কা লাগত। একটু পরে আমি ফোন করলাম, ফোন অফ ।
২
দুদিন পর পোস্টম্যান একটা চিঠি হাতে ধরিয়ে গেল। প্রেরকের কোন নাম, ঠিকানা নেই। এক নিঃশ্বাসে পরলামঃ
আপন, তোমার জন্য লিখা
“বিশৃঙ্খলতার বাতাস থিতু
হয়ে যাচ্ছিল বলেই,
ভাবতে পারছিলাম তোমার কথা।
মেঘের পর ভেজা রোদ হয়ে
তুমি আসবে ভেবেছিলাম।
ভেবেছিলাম,
কাঁচাপাতায় জলবিন্দু হয়ে
তোমার আদর নিয়ে নিঃশেষ হব।
উশৃঙখল বায়ু বয়েই চলেছে
তোমার ভাবনা তাই,
উড়ে উড়ে, ভাসে দূরে।”
------- ইতি কথা ।
৩
তার পরদিন একটা এসএমএসঃ “ মন ভালো নেই, বার বার মনে হয়, তুমি পাশে নেই। ভাবি ধুর ছাই, কেন কাটে না সময়। । বৃষ্টি শেষে দেখা না পেলে বড় অভিমান হয়। সাতটি রঙে তোমাকে খুঁজে বেড়াই। রাত কাটে নির্ঘুম, আমি নিশ্চুপ, নিঃস্ব ভেবে যাই। ভালবাসি তোমায় এতটাই।” --কথা ।
বেশ লাগছিল। পরক্ষনেই আরেকটি এসএমএসঃ “ গানটা সুন্দর না?”
আমি রিপ্লাই দেবার আগেই ফোন বাজল। কথার কণ্ঠ শুনলাম। অনেক কথাই বলল কথা। আমায় নিয়ে কতটা স্বপ্নে বিভোর। অবাক হলাম কেউ আমায় এত আপন ভাবতে পারে। ওর একটা ঠিকানা পেলাম এই শর্তে যে দেখা করা যাবে না। তবে লিখার জবাব দেয়া যেতে পারে। ইতিমধ্যেই আমরা দুজনে অনুভুতির খুব কাছে চলে এলাম। আমাদের সকাল, দুপুর, বিকাল, সন্ধ্যা আর রাত হয় একই সাথে।
৪
রবিবার সকালে কিছু একটা না ভেবেই ওকে লিখলামঃ
কথা তোমার প্রতি
“ আমার জন্ম তোমার জন্য, প্রশ্ন করো না কিছু
শুধুই শুনে যাও,
যত অভিমান আছে সব দিয়ে যাও
শুধু এই ভালবাসা টুকু,
নাও শত যত্নে রাখা যা তোমার অপেক্ষায় ।
তোমায় ঘেরা সবটুকু প্রেম গ্রহণ করো,
আমায় দায়মুক্ত করো ।”
-------আমি আপন।
কথা আমাকে দেখতে অস্থির হয়ে গেল। আর আমিও চাইলাম দেখা হোক। কত আয়োজন একে ঘিরে। ও বলল, “তুমি যদি আমায় ভালবাস, তবে সেদিন বৃষ্টি হবে।” আমি নিরব সায় দিলাম। আমার ভেতরও যে বর্ষার আগমন। ঠিক হল দেখা হবে শ্রাবণের তিন তারিখ ঠিক সকাল ১১ টায় আমার প্রিয় নদ ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে।
৫
সকাল ১০ টায় পৌঁচে গেছি। খুব অস্থির আমি। হাঁটাহাঁটি করছি, কখনও বসে থাকছি। ও কেমন হবে, কি বলবে, আমায় ভালবাসবে তো? ইত্যাদি ইত্যাদি। ঘড়ি জানান দিল ১১ টা বেজে গেছে আরও ৩০ মিনিট আগেই। কথা এখনও এলনা। উদাস হয়ে ঢেউয়ের দিকে তাকিয়ে আছি। হঠাৎ, পেছন থেকে কেউ বলল, “ আপন, আমি আসেছি।”
পেছন ফিরে তাকিয়ে থাকলাম অনেকক্ষণ, কথার দিকে। বোকার মত অপলক তাকিয়ে থাকলো ও ।
আমার হাত দুটো খুব শক্ত করে ধরে কথা বলল, “ভালবাসার অর্থ বুঝালে তুমি ভালবেসে। আমায় ছেড়ে যাবেনা তো? ”
না সুচক মাথা নারালাম।
খেয়াল করলাম ওর চোখে জল।
আচমকা ঝুম বৃষ্টি।
নদীর পাড়ে ঘাসের উপর আমরা দুটি প্রাণী মাত্র। ভেজার ভয়ে সবাই নিরাপদ ছাউনিতে ঠাঁই নিয়েছে।
ওর চোখের জল বৃষ্টিতে মিলে গেল।
কথা আমায় বলল, “ দেখো আপন, তুমি আমায় ভালবাস বলেই বৃষ্টি এসেছে। ধুয়ে যাচ্ছে আমাদের সব দুঃখ, কষ্ট আর পাপ । কথা দাও হারিয়ে যাবে না, একা করে ছুঁড়ে ফেলবে না আমায়।”
আমি কথা দিলাম। আর প্রতিজ্ঞা করলাম।
সেই থেকে আজ অবধি আমরা পাশাপাশি, আর থাকবো আজীবন...
“ কথা, আপন আর নীরবতা
এই নিয়ে সব ভালবাসার কথকতা।”
১৩ জুলাই - ২০১২
গল্প/কবিতা:
৮ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪