মেয়েটি মারা গেল। তার জন্য কান্না করার মানুষের বড় অভাব। মা মারা গেছে অনেক আগে, বাবাও হয়েছে পাগলপ্রায় বহুদিন আগে, এর মধ্যেই মারা গেল মেয়েটি। তার জন্য কান্না করার মানুষের বড় অভাব। এক ভাই আছে। আছে এক বোন যে কিনা দিনের পর দিন সংসার গুছিয়ে নেয়ার চেষ্টায় মত্ত, যদিও তার আশা পুর্ণ হবে কিনা জানি না। মেয়েটি মারা গিয়েছিল তার শশুর বাড়িতে। তাই তার বোন গিয়েছিল তার লাশ আনতে। লাশ এনে কোথায় কবর দেয়া হয়েছিল আমি জানি না। চেষ্টাও করি নি কোনদিন। এক অস্বাভাবিক নির্লিপ্ততা ছিল আমার। শুনেছিলাম কিছুদিন মাত্র হয়েছে তার বিয়ে হয়েছে। ভালবেসে বিয়ে করেছে সে। তাকে দেখেছিলাম বার কয়েক, সপ্তদশী মেয়ে, স্বপ্নের মাদকতায় ভরা চোখ মুখ। আমি জানিনা সে হয়তো স্বপ্ন দেখতো সুন্দর জীবনের আমি জানি না সে হয়তো স্বপ্ন দেখত বৃদ্ধ হবার। আমি এও জানি না সে হয়তো সব চেয়ে বেশী ভালবাসতো বেঁচে থাকতে। না, এসবের কিছুই ঘটেনি তার জীবনে ভালবাসার মানুষকে কাছে পেয়েছিল ঠিকই কিন্তু কাছে পাওয়ার সাথে সাথে ভালবাসা চলে গিয়েছিল বহুদূরে। এমন কেন হল সে বুঝতে পারেনি হয়তো। সে কোন ভাবেই মানতে পারেনি এমন কেন ভালবাসা, প্রেম, সংসার। যাকে বিয়ে করেছিল সে ছেলে একা একাই বিয়ে করে নিয়ে গিয়েছিল তাকে। তার পিতা মাতা কেউ ছিলনা। তার পিতা মাতাও তাই মানতে পারে নি ছেলের বউকে। সেখানে তাই ঘটেছিল অস্বাভাবিক কিছু। তা মেনে নেয়া সম্ভব হয়নি সপ্তদশী বালিকার। সে হয়তো বুঝতে পারে নি কি ঘটতে যাচ্ছে তার জ়ীবনে। তার স্বপ্ন গুলো কেন হারিয়ে গেল। তার ভালবাসা কেন তারে এমন ভুলে গেল। তার জীবন কেন এমন নিঃস্ব হয়ে গেল। বিভিন্ন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছিল হয়তো তার সেই সময় টুকুতে অল্প কয়টা দিন তবু তার মনে হল তার জীবনের সব কয়টা দিন যেন শেষ হয়ে গেল। জীবনের সব কয়টা মুহুর্ত অতিবাহিত হল। ঘটে গেল জীবনের সব কয়টা ঘটনা। আমি জানি না কি ঘটেছিল। কেন মারা গেল সে এমন নি করে। শাশুড়ী হয়তো বলেছিল, ‘এই লক্ষীছাড়া তুই কেন এলি এমনি করে এসে বসলি আমাদের ঘারে, পিরিতের দোহাই দিয়ে। এভাবে আসার আগে তো আত্মহত্যা করতাম আমি’ স্বামীও হয়তো দেখিয়েছিল অস্বাভাবিক নির্লিপ্ততা। হয়তো শাশুড়ী নিজেই তার কাছে এনে রেখেছিল ধান খেতের বিষ। তারা হয়তো ভেবেছিল কিছুদিন এভাবে বকাঝকা করলে বিদায় নেবে লক্ষীছাড়া। না, সে সেই বিষ ছুয়েও দেখে নি। শতভাবে চেষ্টা করেছে সবাই কে খুশি করার। কিন্তু সে পারে নি তা করতে। কারণ তাদের কিভাবে খুশি করা যায় যারা চায়না খুশি হতে। তবু মেনে চলছিল। তবুও মেনে নিয়েছিল সব অদৃষ্টের দোহাই দিয়ে। কিন্তু যেদিন যার সাথে চলে এসেছে এতোদূরে সে যখন বলেছে ‘মরে যা, দূরে চলে যা’ সে মানতে পারে নি এ কথা। ভাবতেই পারেনি এও সম্ভব হবে। যে দেখিয়েছিল জীবনে প্রথম স্বপন সে দেখাবে স্বপ্নহীনতার তৃষা। না, সে বিষ ছুয়েও দেখে নি। ভেবেছে সে বহুদিন যে প্রিয় ওড়না জড়িয়ে রেখেছিল বুকের উপর যা পেয়েছিল সে তার ভালবাসার কাছ হতে প্রেমের প্রথম প্রহরে তাই জড়িয়ে জীবনের শেষ মুহুর্ত পেরিয়ে যাক। তাই করেছিল মেয়েটি। আত্মহত্যা করেছিল মেয়েটি। জানি না মরার ঠিক আগ মুহুর্তে কি ভেবেছিল সে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।