লুথি দোকানে গেছে ট্যাবলেট আনতে বাড়িতে মেহমান তাই দামি টেবলেট আনবে। নিজেরা সারা বছর যাতা খায়না কেন আজ মেহমান বলে কথা। ভাল বাজার তো করতেই হবে। সম অধিকার যাকে বলে তা আর চাওয়ার বাকী নেই চাওয়া শেষ হয়েছে ২০৫০ সালে। আজ ২১০০ সাল। লুথি নিজেই সব করে। লুথি ও তার ভাই সুপার এর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। নাম পোষাক এমন কি সম্পত্তি ভাগাভাগীতে। যেমন এখন আর নেই ২০১১ সাল। গত হয়েছে অনেক আগে। তেমনি তারাও এখন স্বাধীন ভাবে চাকুরী করে ব্যবসা করে বাজার করে রান্না করে। বন্ধু নিয়ে ঘুরে।
কলিগের জন্য উন্নত মানের ট্যাবলেট এনেছে। প্রতিদিন একটি করে ট্যাবলেট খেলে সারাদিন আর ভারী খাদ্যের দারকার পরে না। শরীরেরর পানি পূরণের জন্য আর ভিটামিনের জন্য আছে গুড়ো পাউডার। সকাল দূপুর রাতে এক চামচ করে খেলেই সব প্রয়োজনীয় হাইমাল্টি ভিটামিন্স পাওয়া যায়। ভাত রুটি ফল এখন আর চোখে দেখা যায় না। কৃত্তিম খাদ্যের উপর ভারসা।
লুথিরা তেমন অর্থ সম্পদের মালিক নয়। কিন্তু তারাও এখন উন্নত সুবিধা ভোগ করে। বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে। সৌরজগতের এই গ্রহে চরম বিপর্যয় ঘটে গেছে আবহাওয়ার। যখন তখন ঝড় তুফান তেল এসিড বৃষ্টি হয়। ভূমি কম্প সুনামীতে অনেক এলাকা নিশ্চিহৃ হয়ে গেছে। যেকোন সু্স্থ মানুষ মুহূর্তেই অসুস্ত হয়ে যায়। প্রাকৃতিক ভাবে গড় আয়ু কমে হয়েছে ৩৭ বছর। মানুষের শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রতঙ্গ আজ মার্কেটে পাওয়া যায়। কিন্তু বিজ্ঞানের কল্যাণে প্রতিটি নষ্ট অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা যায় অনায়াসে। তাই মানুষ ৩৭শে ইহকাল ত্যাগ করে না। বরং গড় আয়ু এসে দাঁড়িয়েছে ৮৫ তে। ২০১২তে ছিল ৫৭। ২১০০ সালের শেষের দিকে ১৫০ শে যাবে বলে বিজ্ঞানীদের আশা। গাড়ীর পুরাতন যন্ত্র পাল্টে নতুন যন্ত্র লাগালে যেমন গাড়ী চলতেই তাকে মানুষও তেমনি বুড়া হবে না। বাঁচবে অনেক দিন।
লুথির কলিগ হঠাৎ অসুস্ত হয়ে পড়েছে। কোন কথা বলছে না। বিশ বছর বয়সে তার দু’টি পা পাল্টাতে হয়েছে। গাড়ি এক্সিডেন্টে তার দুটি পা উরু থেকে কেটে ফেলতে হয়ে ছিল। ২০৮০ সালে লেগস্ হোম থেকে অর্ডার দিয়ে বানিযে নিয়েছে রক্ত মাংসের দুটি পা। সম্পূর্ণ পা তৈরী হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৭ মাস। এখন ২১০০ সাল। এই বিশ বছরে চিকিৎসা বিজ্ঞানে অকল্পনীয় অগ্রগতি হয়েছে। ০.৫সে.মি বাই ০.৫ সে.মি একটি চিপ্স পাল্টে দিতে পারে সম্পূর্ণ জীবন ধারা। ঘাড়ে চামড়ার নিচে লাগিয়ে ব্রেনের সাথে সংযোগ দিলেই শরীরের দুর্বল অঙ্গ সচল হয়। শরীরের প্রতিটি অঙ্গের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা চিপ্স।
১৯৮৫ সালে এইডস্ ছিল পৃথিবীর মারাত্নক ছোঁয়াচে রোগ। এই রোগের প্রতিসেধক টিকা তৈরী হয়েছে ২০৩০ সালে। ক্যান্সার রোগের উৎপত্তির কারণ ধরা পড়ে ২০২৩ সালে এই রোগ মুক্তির সফল চিকিৎসা শুরু হয় ২০৩৫ সালে। এখন তারও টিকা পাওয়া যায়। ডায়বেটিস উচ্চরক্তচাপ হার্ট এ্যটাক সহ যাবতীয় পুরানো রোগ নির্মূল হয়েছে ২০৫৫ সালের মধ্যেই। এখন রক্ত বমি, শ্বাস ফেল, অঙ্গ অক্ষম ব্রেন ফেল ড্রাগ নামক নতুন নতুন রোগের জন্ম হচ্ছে। রক্ত বমি রাসায়নিক দ্রব্য মৃশ্রিত ভেজাল খাদ্য খেতে খেতে পাকস্থলির ভিতর একপ্রাকার গ্যাস উৎপন্ন হয়। তার সাথে পাকস্থলি ক্ষয় হতে থাকে। এক সময় গ্যাস বিষ্ফোরন হয় সাথে সাথে পাকস'লি ফেটে যায়। তখন রক্ত বমি হয়। সাথে সাথেই রোগী মারা যায়।
শ্বাস ফেল দেশে দেশে নিউক্লিয়ার ব্যবহারের মাত্রা অতিরিক্ত হওয়ার ফলে বায়ুতে এক ধরনের জীবাণু ভেসে বেড়ায়। শ্বাস গ্রহণের মাধ্যমে এই জীবাণু দেহের ভিতর প্রবেশ করলে শ্বাস প্রশাস বন্ধ হয়ে সাথে সাথেই রোগী মারা যায়।
অঙ্গ অক্ষম মানুষের জীবন ধারণ কঠিণ হওয়াতে হতাশায় ভুগতে ভুগতে ব্রেন অকেজো হয়ে শরীরের অক্ষমতা বেড়ে যায়। শরীরের যে কোন অঙ্গ বিকল হয়ে যায়। এমনকি পুরো শরীর। মৃত মানুষের মতো অড়ন হয়ে যায় রোগীর দেহ।
রক্ত জমাট বাতসে সিসার পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত হওয়াতে শ্বাস গ্রহণের মাধ্যমে এই সিসা শরীরে প্রবেশ করে। এক ঘন্টার মধ্যে রক্ত জমিয়ে রোগীর মৃত্যু ঘটায়।
ড্রাগ মানুষ নেশা করে ধ্বংশ করে দিচ্ছে নিজেকে। শেষ করে দিচ্ছে তার পরিবার দেশ, মানুব জাতী। চিকিৎসকরা সঠিক চিকিৎসা দিতে ব্যার্থ।
ব্রেইন ফেল বৈজ্ঞানিকের তৈরী যন্ত্রের অপপ্রয়োগের কারণে পৃথিবী আজ ধ্বংশের মুহূর্ত। কোন মানুষই আর এখন সুস্থ নয়। সব মানুষই কোন না কোন নতুন রোগে আক্রান্ত, অসুস্থ। যখন তখন যেকোন মানুষের ব্রেন ফেলহয়ে যায়। ভূলে যায় অতীত। মুছে যায় সমস্ত স্মৃতি। বর্তমানে শতকরা ষাট জন মানুষ বাড়ি অথবা কর্মস্থল ভুলে চলে যায় অনেক দূরে অচেনা কোন স্থানে।
পৃথিবীতে গাছের পরিমাণ হাতেগোনা কয়েকটা। ১২শ কোটি মানুষের নিঃশ্বাসে ছাড়া কার্বনডাই অক্সাইড শোধন করার করার মতো গাছ আর পৃথিবীতে অবশিষ্ট নেই। যে পরিমাণ গাছ সরকারী ভাবে সংরক্ষণ করে রাখা আছে তা দুএক জায়গায় সীমাবদ্ধ। সংখ্যায় অতি নগন্য। তাই বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড এর মাত্রা অতিরিক্ত। কৃত্তিম ভাবে তৈরী অক্সিজেন সাধারণ মানুষের পক্ষে গ্রহণ সম্ভব নয়। নাকের সাথে লাগিয়ে রাখা ছোট্ট বতলটা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।
বিভিন্ন শিল্প বর্জ সবুজ পৃথিবীকে একটি ডাষ্টবিন তৈরী করে রেখেছে। পৃথিবীর আবহাওয়া নষ্ট হয়ে অক্সিজেনের মাত্রা সাংঘাতিক মাত্রায় কমে গেছে। কৃত্তিম ভাবে তৈরী এসব রোগের কারণ মানুষের জানা। তবু তার উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে পারছে না। এত অল্প সময়ে রোগীর মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার কোন চিপ্স এখনো তৈরী হয়নি। দিন দিন মানুষ যত চিকিৎসা বিজ্ঞান এগিয়ে নিচ্ছে তার চাইতেও এগিয়ে আছে নতুন নতুন রোগ।
যেসব রোগ ডাক্তাররা সনাক্ত করতে পেরেছে সেই সব রোগের জন্য আছে চিপ্স। রোগীকে নিয়ে ডাঃএর কাছে যাওয়র দরকার পরে না। শুধু রক্তের গ্রুপ জানা থাকলেই চলে। রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী তৈরী করা আছে বিভিন্ন রোগের বিভিন্ন ধরনের চিপ্স। অনেক ঔষধ কম্পানি এগুলি তৈরী করে। পাওয়া যায় সাধারণ দোকানে। যার যা প্রয়োজন তা কিনে এনে চামড়ার নিচে বসালেই হয়ে গেল। কাটা স্থান জোড়া লাগানোর জন্য শুই শুতার যেমন দরকার পড়ে না। শুকানোর জন্য ও ঔষধ খেয়ে অপেক্ষা করতে হয় না। আঠা লাগালেই সাথে সাথে চামড়া জোড়া লেগে শুকিয়ে যায়। ট্যাবলেট সিরাপ এগুলি উঠে গেছে। শুই শুতা এখন বন্ধ হয়ে গেছে।
লুথির অফিস কলিগের একটি নতুন রোগ ধরা পরেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই রোগের কোন চিকিৎসা নেই। নেই কোন চিপ্স। চিকিৎসা বিজ্ঞানে নেই এই রোগের কোন নাম। আজ ২১০০ সালে অত্যাধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের চাইতেও রোগ এগিয়ে আছে বহু পথ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আহমেদ সাবের
আগামী পৃথিবীর কিছু রোগের নাম, রোগ-লক্ষণ এবং চিপ চিকিৎসা সম্পর্কে কিছুটা ধারনা পাওয়া গেল। গল্পকারের কল্পনার ঘুড়িতে উড়ে এলাম খানিকটা আকাশ। তবে গল্পটা পেলাম না। আশা থাকলো আগামীর।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।