আমার কাছে সবুজ মানেই গাছ গাছালি,পাহাড়,মুক্ত বাতাস ও সুস্থ্য পরিবেশ। বর্তমানে মালয়েশিয়া অবস্থান করছি। এই দেশটাকে বলা যায় সবুজের দেশ। পাহাড়ের দেশ। মালয়েশিয়ার যেখানে যাই আর যেদিকে তাকাই শুধূ পাহাড় আর পাহাড়। নানা প্রজাতির বিশাল বড় বড় গাছ। পুরোটাই প্রাকীতিক সৌন্দর্য। যে কারণে এখানকার আবহাওয়া খুবই ভালো। প্রতিদিন বৃষ্টি হয়। সবুজের মাঝে ক্ষনিকের জন্য মন শান্ত করতে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন। যারা আসেন তারা এই দেশের মায়ায় পড়ে যান।
মালয়েশিয়া যখন এসেছিলাম প্রথম দিকে গিয়েছিলাম লাংকাউই নামক জায়গায়। পুরো ছবির মতো একটা শহর। বলা হয় লাংকাউই মালয়েশিয়ার সব চেয়ে সুন্দর জায়গা। কুয়ালালামপুর থেকে প্রথমে বাস তারপর জাহাজ সব মিলিয়ে দশ ঘন্টার পথ। অল্প সময়ে যেতে হলে বিমানে যেতে হবে। সেখানে একটি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর আছে। সমুদ্রের মাঝ খানে একটি দ্বীপ লাংকাউই। জাহাজে করে যাওয়ার পথে সমুদ্রের মাঝ খানে আরও অসংখ্য ছোট ছোট দ্বীপ চোখে পড়েছে। এরকম দৃশ্য শুধূ সিনেমায় দেখেছিলাম। জাহাজ থেকে নেমে দ্বীপের পথে ঘুরা ঘুরি করার জন্য একটি মটর সাইকেল ভাড়া করেছিলাম। চলতি পথে বৃষ্টি নেমে গিয়েছিল। বৃষ্টিতে ভিজে গিয়ে পৌছালাম পান্তাই চেনাই নামক বিচে। সেখানে হোটেলের একটি কক্ষ ভাড়া করলাম থাকার জন্য। সমুদ্রে গোসল করতে গিয়ে লক্ষ করি দূর দুরান্তে ছোট আইল্যান্ড। সবুজ আইল্যান্ড, দূর থেকে তাই মনে হচ্ছিল। সমুদ্রের পানি নাকি নীল রঙের বাস্তবে এই প্রথম দেখা হলো সমুদ্রের পানি নীল। সেখানকার পানির রং নীল পরিস্কার পরিচন্নতার কারণে স্পষ্ট বুঝা যায়। গোসল শেষে দুপুরের খাবার খেয়ে ক্যাবল কারে চড়ার উদ্দেশে রওনা হলাম। ক্যাবল কার নাকি লাংকাউইর সব চেয়ে বড় আকর্ষণ। পাহাড়ি পথ.....কখনো উচু কখনো নিচু। পথের দু'পাশে পাহাড়। পাহাড় কেটে এই দেশের বেশির ভাগ রাস্তা নির্মান করা হয়েছে। ফাকা রাস্তার শান্ত পরিবেশে ছুটে চলছে আমাদের মটর সাইকেল। গাছে পাখিদের কিচির মিচির। নিরব শান্ত পরিবেশ। চলতি পথে একটি গলফ ক্লাব চোখে পড়ল। ভিতরে প্রবেশ করে অবাক হয়েছি। অনেক সুন্দর। সাজানো গোছানো,পরিস্কার। হাজার হাজার গাছ গাছালি। আকা বাকা পথ। মানুষ জন নেই। সেখানকার ঘাস ঝক ঝকে উজ্জল সবুজ। মটর সাইকেল থামিয়ে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিলাম সেখানে। ঘাসের উপর শুয়ে পড়লাম। মুক্ত বাতাস ও সুস্থ্য অক্সিজেন গ্রহণ করেছিলাম। মনে হয়েছে এখানে থাকলে আমার আয়ু বেড়ে যাবে। আসলেই সত্যি জানতে পেরেছি এই দ্বীপে যারা থাকে তাদের গড় আয়ু নাকি অনেক বেশি। গলফ ক্লাবের শেষ প্রান্তে সমুদ্র। আবার উল্টো পথে চলা শুরু হলো। ক্যাবল কারের মেইন গেটের সামনে মটর সাইকেল পার্কিং করে ভিতরে প্রবেশ করলাম। টিকেট নিয়ে উঠে বসলাম ক্যাবল কারে। তারে বাধা বিদ্দুতে চলিত ঝুলন্ত ক্যাবল কার সামনের দিকে চলছে। আসতে আসতে করে পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে থাকে। একটা সময় এতটাই উচুতে উঠে যায় যে বিশাল উচু উচু গাছ গুলোকে নিচে ফেলে দেয়। উপর থেকে নিচের দিকে সবুজ ছাড়া আর কিছুই বুঝা যাচ্ছিল না। একটু ভয় করছিল যদি ছিড়ে পড়ে যায়। কিন্তূ না ছিড়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই। শেষ পর্যন্ত ৭৫০ মিটার উচুতে গিয়ে ক্যাবল কার থেমে যায়। এত উচুতে পর্যটক আকর্ষণের জন্য নির্মান করা হয়েছে ব্রিজ। যা অবাক হওয়ার মতো। মানুষ চাইলে সব কিছু করতে পারে তার একটি নমুনা। এক পাহাড় থেকে আরেক পাহড়ে ব্রিজের সীমানা। কাঠের ব্রিজ আবার লোহার ব্রিজ। ব্রিজে দাড়িয়ে দেখা যায় পুরো সমুদ্রের দৃশ্য। দেখা যায় কিছু কিছু জাহাজ ও বোট চলছে সমুদ্র পথে। এছাড়া দেখা যায় আশে পাশের সব পাহাড় গুলো। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না নিজ চোখে এত সুন্দর দৃশ্য দেখছি। সেখানে সব সময় পর্যটকদের ভীর। আনন্দময় পরিবেশ। ক্যামেরায় ছবি তুলে বন্দি করে নিলাম কিছু দৃশ্য।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।