প্রিয়ার চাহনি

প্রিয়ার চাহনি (মে ২০১২)

সাজ্জাদ সরকার
  • ১৫
  • ৭০
পটলচেরা চোখের পূজারী আমি। গায়ের রং কালো হোক আর ফর্সা হোক। সুন্দর চোখ ছাড়া কাউকেই ভালো লাগেনা আমার।আমার স্বপ্নের রানীর এমন চোখেই আমি কল্পনা করে আসছি সব সময়। কিন্তু এতদিন পরেও আমার প্রিয়া আমার দিকে তাকাল না। অবশেষে প্রিয়া আমার আমার দিকে চাইল এবং আমার প্রেমে ভেঙে গেল। ঘটনাটা তাহলে খুলেই বলি। তখন আমি রংপুরের কামাল কাছনায় থাকতাম। এলাকার বিখ্যাত বিড়ি কোম্পানি ‘বেঙ্গল’ এর একজন এজেন্ট হিসাবে কাজ করতাম পড়াশুনার পাশা পাশি, অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিলাম। কিন্তু স্বপ্ন আমার মোটেও দারিদ্র ছিল না। সবসময়ই রঙ্গিন স্বপ্ন বিভোর থাকতাম। ভালো একটা চাকুরী, লাল টুকটুকে একটা বউ এর পাশা পাশি টাকার বস্তা আছে শ্বশুর আশা করতাম। আমি প্রচুর পরিশ্রম করতাম তবু নচিকেতার । ঐগানটা গুনগুনিয়ে গাইতাম প্রেম করব যাকে তাকে /বিয়ে করব শ্বশুর দেখে। কার মাইকেল কলেজের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলাম আমি। কামাল কাছনা থেকে জাহাজ কোম্পানির মোড় যাওয়ার আগেই নুরপুর কবর স্থান। সেখানেই মেয়েটিকে দেখি প্রথমবার।নুরপুর কবর স্থান সংলগ্ন বাজারের উত্তর দিকের বাড়িটার দোতালায় দাড়িয়ে ছিল মেয়েটি। নজর তার টবে লাগানো গাছের দিকে। দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে ছিলাম, কিন্তু মেয়েটি একবারও এদিকে তাকাল না। আমি তার চোখ দেখবই। কারণ “চোখ যে মনের কথা বলে”। ব্যর্থ হয়ে ফিরে এলাম কিন্তু তাকে ভালবেসে মন প্রাণ দিয়ে এলাম। ক্লাস শেষে টিউশনি, চাকুরীর ডিউটির সাথে অতিরিক্ত একটা ডিউটি বেরে গেল আমার । ঐ দোতালা বিল্ডিং এর সামনে সময় পেলে ফিল্ডিং মারতে লাগতাম। । আল্লাহ্ আমার চেষ্টার ফল দিলেন। আমি অনেক তথ্য জোগাড় করতে পরলাম। নাম তার মিতা। নামটিকে ভালবেসে ফেললাম। সে পড়ে রংপুর সরকারি কলেজে দ্বাদশ শ্রেণীতে। বাবা একজন আইনজীবী। তিন ভাই বোনের মধ্যে মিতাই বড়। ফলো করে একদিন পেয়ে গেলাম তার মোবাইল নাম্বার। ফ্যাক্সি লোডের দোকানদার টের পেল না আমার মতলব। সমস্যা বাঁধল কথা বলা নিয়ে। নিজেকে শুরুতেই ভালভাবে উপস্থাপন করতে হবে। কিন্তু কিভাবে যে শুরু করব, বুঝতে পারলাম না। ব্যস্ততার কারণে সময় দিতে পারি না। দারিদ্রর কারণে পয়সা ব্যয় করতে পারি না বলে আমার বন্ধু নেই বললেই চলে। অবশেষে মুঠো ফোনে বার্তা পাঠালাম। মেয়েরা না কি প্রশংসায় পটে যায়,তাই প্রশংসার বন্যা বইয়ে দিলাম। কেন যে এক দৃষ্টিতে ফুলের দিকে তাকিয়ে থাকে ইত্যাদি অনুযোগ করলাম। সে একজন ফুলপূজারী, অথচ নিজেই একটা ফুল। সে কি ।ঐ ভাষাহীন ফুলের মতোই উদাষীন্ন ? অনেক রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম, জবাব তো দুরের কথা একটা মিস কলও পেলাম না। ভগ্ন হৃদয় নিয়ে রাতে ঘুমাতে গেলাম। সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত বাজারে ঘোরাঘুরি করব আর তাকে দেখব বলে সিদ্ধান্ত নিলাম। কিন্তু থাকতে পারলাম না।তার আগেই চোখাচোখি হলো আমার প্রিয়ার সাথে। বেলা তখনও বিদায় নেয়নি । তখনি মশারা আড়মোড়া ভেঙে বেরিয়ে পড়েছে। আমি তখন তার কাছ থেকে মাত্র কয়েক হাত দূরে। সম্ভবত একটা মশা তার পায়ে পড়েছিল। সাবধানী শিকারির মতো তার নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেল। দ্রুত মোবাইল বের করে কবি জনডান এর “The Play” কবিতার লাইন কয়েকটি এস এম এস করলাম “যে মিলন আমাদের এখন হয়নি/তা হো আমাদের রক্ত কনিকায়/যা পান করেছে মশা/এবং মিশে আছে তার রক্তে” ফোনটা তার হাতেই ছিল। বেঁকে যাওয়া অবস্থা থেকে সে সোজা হল। মেসেজ পড়েই সরাসরি তাকার আমার দিকে।পটলচেরা চোখের জায়গায় দেখতে পেলাম দুটো স্বতন্র চোখ যার একটা অন্যটার সাথে মেলে না। সেই টেরা চোখের চাহনি দেখেই বুঝলাম “চোখ সত্যিই মনের কথা বলে” মিহি গলার তীব্র চিৎকার শুনতে পেলাম আমি। সে ডাকছে তার আইনজীবী বাবা কে। এরপর তীব্র ভাষায় কি কি মেন বলল আমাকে উদ্দেশ্য করে। কেউ কিছু বোঝার আগেই আমি জনগণের সাথে মিশে গেলাম। জনসংখ্যাকে কেন জলসম্পদ বলা হয় সেদিনই বুঝলাম। গণধোলাই খাওয়ার ভয়ে রুমে চলে আসলাম। কারণ জানি গরিবের ছেলে এই আমাকে মেরে ফেললেও আমার বাবা মা কেয়ামতের আগে বিচার পাবে না। বড় বিচিত্র আমার এই সোনার দেশ|
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আরমান হায়দার আবারো দেখছি এ সংখ্যার সব লেখা পড়া হয়নি। এই লেখাটি পড়ে আবার বুঝতে পারলামা কারো কারো লেখা হয়তো পড়াই হবে না। যাই হোক এই লেখাটি পড়ে মনে হল , লেখাটি যতটা না গল্প তার চেয়েও বেশী আত্মজীবনির অংশবিশেষ। কারন লেখার মধ্যে বর্ণিত স্থান , লেখক কর্তৃক দেয় ঘটনার বর্ননা------ এরকমটি ধারনা দেয়। সার্বিক বিবেচনায় লেখাটি সুখপাঠ্য। শুভকামনা লেখকের প্রতি।
রোদের ছায়া বেশ সুন্দর গল্প, মজা আছে গল্পে , তবে এই যুগের একজন অর্থনীতির ছাত্রের টাকার বস্তা ওয়ালা শশুর দরকার কেন ? আর আজকালকার মেয়েরা বোধ হয় আর প্রশংসায় পটে নারে ভাই ...নাহলে তেরা চোখের মেয়েটি কেন বাবাকে ডাকবে ? সব মিলিয়ে ভালো লাগলো ..
সূর্য পাবলিক মার এ ডরে না প্রেমিক হা হা হা। কেন যে জনস্রোতে মিশে গেল সে.............. ট্যারা বলে? মজার গল্প
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন ....................চমতকার গল্প, অকল্পনীয় কল্পনা। শুভেচ্ছা রইল।
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ ভাল লাগলো বেশ। ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।
আহমেদ সাবের "গণধোলাই খাওয়ার ভয়ে রুমে চলে আসলাম" বললেও আমার মনে হয় পালানোটা বোধ হয় "সেই টেরা চোখের চাহনি দেখে"। মন্দ লাগেনি গল্পটা।
মৃন্ময় মিজান মজারু। বলার ধরনটা ভাল লেগেছে।
Afzal ভাল হয়েছে। গল্পের ভিতরই প্রবেশ করা গেল না। লেখকের জন্য শুভ কামনা রইল।
মিলন বনিক বেশ মজা পেলাম। শুভ কামনা ...।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি golpo valoi hobe bobei mone hoy tobe aro srom deya dorkar onnder lekha beshi kore porte hobe....S. Sarker...onek dhonnobad....

০২ মে - ২০১২ গল্প/কবিতা: ০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“মে ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ মে, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী