সবেমাত্র লিখতে বসেছি, হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে ছন্দপতন ঘটল। দরজা খুলে দেখলাম আমার বাল্য বন্ধু মিজান দাঁড়িয়ে আছে। রাত্রি দশটা বাজে। এ সময় কেউ আমার কাছে এলে বিরক্ত হই। কিন্তু যত বিরক্তই হই না কেন হাসি মুখে ওকে অভ্যর্থনা জানালাম। প্রইমারিতে ও হাই স্কুলে একসাথে পড়েছি কিন্তু কলেজে এসে আলাদা হয়ে গেলাম। তারপর দীর্ঘদিন কোন যোগাযোগ ছিল না। গ্রামের বাড়িতে মাঝে মাঝে বেড়াতে গেলে লোকমুখে শুনতাম ও নাকি ঢাকায় থাকে। হঠাৎ একদিন নিউমার্কেটে দেখা। তারপর চা-সিগারেট এবং কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে ফোন আর ঠিকানা বিনিময় করে চলে এসেছিলাম। হঠাৎ যে ও এভাবে হাজির হবে ভাবতেই পারিনি। একটা ফোন দিয়ে আসলে ভাল হত। আমি সৌখিন লেখক। লেখার ভাবনা খুব একটা মাথায় আসে না। হয়ত মাসে সাত দিন লিখি বাকি সময়টা ভাবনা চিন্তা করি। আজ একটা সুন্দর গল্পের প্লট একে নিয়ে লিখতে বসেছিলাম কিন্তু মিজানের আগমনে সব এলোমেলো হয়ে গেল। ব্যপারটা হয়ত সে অনুধাবন করতে পেরেছিল তাইতো চা পর্ব শেষ হওয়া মাত্র মিজান বলল: আমার ছোট্ট একটা কাজ করে দিবি? বুকটা ধড়াস করে উঠল কারণ আমি জানি আমাকে দিয়ে কারো কোন কাজ হয় না। কাজ হয় তবে উল্টোটা। মুখে বললাম: একটা কেন একশোটা কাজ করে দিব। বল কি কাজ? পকেট থেকে একটা খাম বের করে বলল: এটা বাবাকে দিস। আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম এই ফোন-মোবাইলের যুগে কেউ আবার কাউকে চিঠি লেখে! আমি খানিক্ষণ হাসলাম, বললাম: আঙ্কেল তো মোবাইল ফোন। ফোনে সব বলে দিলেই হয়। চিঠি লিখার প্রয়োজন কি? একটা দীর্ঘনিঃশ্বস ফেলে বলল: প্রয়োজন আছে, ও তুই বুঝবিনা। চিঠিখানা হতে নিয়ে বললাম: ঠিক আছে আগামী সপ্তাহে যখন বাড়ি যাব তখন তাকে দিয়ে আসব। মিজান হাসি মুখে বলল: থ্যাঙ্ক ইউ দোস্ত । তারপর বিদায় নিয়ে চলে গেল। মন মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। গল্পের বিষয় হারিয়ে ফেললাম। কাগজ কলম দেখে গা যেন ছমছম করে উঠল। এমনিতে কারো ব্যক্তিগত চিঠি পড়া ঠিক না কিন্তু এই অত্যাধুনিক যুগে যদি কেউ চিঠি লেখে -
সে যে কারণেই হোক না কেন, চিঠি খানা পড়ার লোভ সামলাতে পারলাম না। অবশেষে খুব সন্তর্পণে খামের মুখ খুললাম, চার পাতার একটা চিঠি। একটা গল্প আমি তিন পাতায় লিখতে পারি না, আর সে কিনা একটা চিঠি লিখেছে চার পাতায়! মিজান লিখেছে,
শ্রদ্ধেয় বাবা,
সালাম নিবেন। শুরুতেই মাফ চাইছি আপনার কিছু মুল্যবান সময় নষ্ট করার
জন্য। বুঝতে পারছি না কোথা থেকে শুরু করব আর কোথায় বা শেষ করব। কোনটা
লিখব আর কোনটা লিখব না! বাবা, আজ আমি যা লিখব তা হয়ত কোন বাবা তার সন্তানদের কাছ থেকে এটা প্রত্যাশা করে না কিন্তু আমি নিরুপায়। এছাড়া আমার কোন রাস্তা নেই। আমি আপনার কাছে অনেক মিথ্যে কথা বলেছি। একদিন একটা সত্য কথা বলতে পারিনি তাই আজও মিথ্যা কথা বলে চলেছি। জানিনা এর শেষ কোথায়। আজ হোক কাল হোক আপনি সত্য কথাগুলো জানবেন তাই আমি নিজে থেকে সত্যটা জানাচ্ছি। সব জানার পরে আপনি যদি আমাকে ক্ষমা করেন তবে সেটা আপনার মহানুভবতা আর যদি ক্ষমা না করেন তবে বুঝব এ আমার কর্মফল। ২০০০ সালে আমি যখন অনার্স ফাষ্ট ইয়ারে ভর্তি হই তখন প্রথম তিন চার মাস আমি খুব ভাল ছিলাম। কোন পাপ পঙ্কিলতা আমাকে স্পর্শ করেনি কিন্তু এরপর কিছু খারাপ বন্ধু-বান্ধব জুটে যায়। ফলে নেশা থেকে শুরু করে ছিনতাই-চাঁদাবাজি এমন কোন অপকর্ম নেই যা আমি করিনি। আমি এতটাই বোকা যে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছি। লেখাপড়া বাদ দিয়ে ঘুরে বেড়াতাম। জীবনে অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি। তবে তা ভাল অভিজ্ঞতা নয় । সবই খারাপ অভিজ্ঞতা । যা বাস্তব জীবনে কোন কাজে আসবে না। প্রথম বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষায় আমি কোন বিষয়েই পাশ করতে পারিনি। অথচ আমি আপনাকে বলেছিলাম আমি পাশ করেছি। একটা ভয় ছিল সত্য কথা জানার পর আপনি যদি আমার লেখাপড়া বন্ধ করে দেন। ভেবেছিলাম পরবর্তীতে ইমপ্র“ভ দিয়ে কভার করে নেব। কিন্তু বিধি বাম। দীর্ঘ দিন না পড়ার কারণে পড়ার প্রতি কেমন যেন ভয় ও অনীহা চলে এল। মনে হত আমাকে দিয়ে আর পড়াশোনা হবে না। তাইতো একদিন পড়াশোনা করবনা বলে সব গুছিয়ে নিয়ে বাড়ি চলে এসেছিলাম। আপনি ক্ষোভের সাথে বলেছিলেন “ যে টাকাগুলো তোর লেখাপড়ার জন্য ব্যয় করেছি সে টাকাগুলো দিয়ে যদি মদও খেতাম তাহলে নিজেকে এই বলে সান্তনা দিতে পারতাম যে - টাকাগুলো স্বহস্থে খরচ করেছি। ” কথাটা শতভাগ সত্য ছিল। তাইতো আপনি যখন বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বললেন আমি তখনও আপত্তি করিনি। এরপর আমার ঠিকানা হল নানার বাড়ি। গ্রাজুয়েট হবার ইচ্ছা আমার সব সময় ছিল। তাইতো পাস কোর্সে ভর্তি হলাম।
কোন একটা কবিতায় পড়েছিলাম “হীরা ফেলে কাঁচ তুলে ভিখারি সেজেছি আমি। ”
আমার অবস্থাও ঠিক সেরকম হল। বড়লোক হঠাৎ দরিদ্র হলে যেমন তার প্রতি মানুষের আচার-আচরণ বদলে যেতে থাকে আমার অবস্থাও ঠিক সে রকম হল। ক্রমাš^য়ে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন সবাই আমাকে অবহেলা শুরু করল। যে রেবা আমাকে প্রতিদিন একটি করে চিঠি লিখত,আমাকে না দেখলে পাগল হয়ে যেত সেই রেবা নানার বাড়িতে থাকার ছ’মাসে মাত্র তিনটি চিঠি লিখেছে। তাও আবার নেহায়াত দায়ে পড়ে। রেবা কে নিশ্চয় মনে আছে- ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার পর যে মেয়েটি আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল ওই রেবা। ইন্টারমিডিয়েট লাইফ থেকে সে আমাকে খুব পছন্দ করতে। আমি তাকে পাত্তা দিতাম না। তবে ও যদি আমার সাথে দেখা না করত,কথা না বলত,চিঠি না লিখত তাহলে খুব খারাপ লাগত। যাই হোক ছ’মাস নানা বাড়িতে পার করার পর আমি বুঝলাম মস্ত বড় ভুল করেছি। যে করেই হোক এই ভুল সংশোধন করতে হবে। তাইতো আবারো আপনার শরণাপন্ন হলাম। আপনার দয়ায় আমি আবারো উচ্চ শিক্ষার জন্য শহরে গেলাম। ডিপার্টমেন্টের স্যারের কাছে জানলাম আমি সেকেন্ড ইয়ার পরীক্ষা দিতে পারব না কারন ফাষ্ট ইয়ারে কোন সাবজেক্টে আমি পাস করিনি কিংবা ইমপ্রুভ পরীক্ষা দিইনি। আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। কি করব কিছু ভেবে উঠতে পারলাম না। দিন যতই গড়াতে থাকে হতাশা ততই বাড়তে থাকে। কি নরকীয় যন্ত্রণায় প্রতিটি দিন পার করেছি তা লিখে বোঝাতে পারবনা। জীবনের এই অধ্যায়ে আমার একমাত্র সান্তনার আশ্রয়স্থল ছির রেবা। একদিন ছোটখাট ব্যপার নিয়ে ওর সাথে গন্ডোগোল হল। নিজেকে কোনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলাম না। সিদ্ধান্ত নিলাম যে জীবনকে নিয়ে এত হতাশা, এত যন্ত্রণা সে জীবন আমি রাখব না। তিন পাতা ঘুমের ঔষধ খেয়েও দেখলাম মৃত্যুও আমাকে ডাকে না। ঔষধ খাওয়ার দু’দিন পর আমার জ্ঞান ফিরেছিল। যখন বেঁচেই গেলাম তখন ভাবলাম জীবনটাকে উপভোগ করব। ততদিন আমি রেবাকে খুব ভালবেসে ফেলেছি। তাইতো রেবা যখন বলেছিল বাড়ি থেকে ওর বিয়ে দিয়ে দেবে তখন বলেছিলাম আমি ওর সমস্ত খরচ বহণ করব। তাইতো ধার-কর্য করে একটা এম এল এম কোম্পানিতে টুকলাম। খুব তাড়াতাড়ি সফলতাও পেলাম। কিন্তু সুখ আমার কপালে নেই। ক’দিন পরে ওর বিয়ে হয়ে গেল। সে খুব মেধাবী ছাত্রী না হলেও আমার চাইতে বেশী মেধা ওর ছিল। প্রেমিক নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভুল করলেও স্বামী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সে
ভুল করেনি। আর যাই হোক সে আমার মত নির্বোধ নয়। মানুষ যখন গভীর সমুদ্রে ডুবে যায় তখন নাকি খড়কুটোকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চায়। আমার জীবনে রেবা ছিল ঠিক সেরকম একটা খড়কুটো যাকে আশ্রয় করে বাঁচতে চেয়েছিলাম। যে মৃত্যুকে একবার আলিঙ্গন করতে গিয়েও বেঁচে গিয়েছিলাম আর একবার সেই মৃত্যুর কাছে ফিরে যাওয়ার চেষ্ঠা করলাম। ওর বিয়ের খবর শোনার পরদিন রতে রেললাইনে শুয়েছিলাম। আগেই বলেছি মৃত্যুও আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বাবা বাংলাদেশের ট্রেন যে সময়মত আসে না তার প্রকৃষ্ট উদাহারন আমি!সেদিন রাত তিনটা পর্যন্ত রেল লাইনে শুয়ে থেকেও কোন ট্রেন আসেনি। মাঝেমাঝে ভাবতাম কোন মনোরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখাব - আমি বোধহয় পাগল হয়ে গেছি। কিন্তু লোক লজ্জার ভয়ে আমি তা রিনি। বাবা, জীবনে একবার ভুল হলে নাকি তার মাসুল সারা জীবন দিতে হয়। আমিও দিচ্ছি জানিনা আরো কত মাসুল দিতে হবে। এসব ঘটনার পর রাজশাহী শহরে টিকে থাকা আমার জন্য দুস্কর হয়ে পড়ল। তাই চিন্তা ভাবনা করলাম রাজশাহী ছেড়ে ঢাকায় চলে যাব। অবশেষে ঢাকায় আসলাম। আপনাকে বোঝালাম রাজশাহী কলেজ থেকে ট্রান্সফার নিয়ে টঙ্গী কলেজে ভর্তি হলাম। আপনি আমাকে এতটাই বিশ্বাস করতেন যে কখনও যাচাই-বাছাই করেননি। আর আমি আপনার সাথে মীরজাফরের চাইতেও বেশি বিশ্বাসঘাতকতা করেছি। না চাইতেই আপনি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছেন কিন্তু বিনিময়ে আমি আপনাকে কিছুই দিতে পারিনি। আপনি যদি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবাদের একজন হন তবে আমি সর্বনিকৃষ্ঠ সন্তানদের একজন সেজন্য ক্ষমা চাওয়ার মত দুঃসাহস দেখাচ্ছি না। বাবা, ছোটবেলায় পড়তাম “স্বধীনতা অর্জন করার চেয়ে স্বধীনতা রক্ষা করা বড় কঠিন”
আপনি আমাকে অপার স্বধীনতা দিয়েছেন কিন্তু আমি তা রক্ষা করতে পারিনি। এখন মনে হচ্ছে জীবনে বড় হবার জন্য একজন মানুষের স্বাধীনতার প্রয়োজন আছে তবে তা সব সময়ের জন্য প্রজোয্য নয়। কিছূ ব্যক্তি স্বধীনতা মানুষকে নষ্ট করে দেয় তার জ্বলন্ত প্রমাণ আমি।
ঢাকায় আসার পরে ভাবলাম প্রয়োজনে রিকশা চালাব অথবা কুলিগিরি করব কিন্তু
আপনার কাছ থেকে আমি আর কোন টাকা নেব না। বছর খানেক একটা বাড়িতে
জায়গীর ছিলাম, টিউশানি করে হাত খরচ চালাতাম পরে ভাবলাম চাকুরী করতে হবে অনেক টাকা আয় করতে হবে। আবশেষে গার্মেন্টসে চাকুরী নিলাম। যে আমি মাস গেলে সতেরোশ টাকা সিগারেটের পিছনে ব্যয় করতাম সেই আমি সতেরোশ টাকা বেতনে চাকুরী নিলাম। পানির ধারা যেমন সব সময় নিচের দিকে ধাবিত হয় তেমনি আমার জীবন রেখাও ক্রমাš^য়ে নিচের দিকেই ধাবিত হয়েছে। সকাল আটটায় গার্মেন্টে প্রবেশ করতাম বের হতাম রাত দশটা, বারোটা কখনও বা সারা রাত ডিউটি করতাম।
চাইলে সবকিছু মিলত কিন্তু ছুটি মিলত না। রোদ-বৃষ্টি-ঝড়-কিংবা অসুস্থতা কোন কারণে ডিউটি করতে না পারলে উপরোস্থ কর্মকর্তাদের অকথ্য ভাষা শুনতে হত। নিজের অতীত জীবনের সাথে যখন তুলনা করতাম তখন কান্না ছাড়া আর কোন রাস্তা থাকত না।
বাথরুমে লুকিয়ে লুকিয়ে কত যে কেঁদেছি তার কোন ইয়াত্তা নেই। সবই সহ্য করেছি এই ভেবে যে আমাকে বড় হতে হবে এবং বেশী বেতনে চাকুরী করতে হবে। প্রয় তিন বছর চাকুরী করেছি। পদন্নতি হল, বেতন বাড়ল কিন্তু বন্ধু-বান্ধবদের সাথে, তাদের ক্যারিয়ারের সাথে যখন নিজেকে তুলনা করতাম তখন আর ঠিক থাকতে পারতাম না।
আবশেষে গার্মেন্টস ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। এরপর ভাবলাম যে করেই হোক গ্রাজুয়েশন আমাকে করতেই হবে। তাইতো একটা প্রাইভেট ইউনির্ভাসিটিতে আবারো ইংরেজিতে অনার্সে ভর্তি হলাম। দু’বছর শেষ হয়েছে আর দু’বছর লাগবে।
বাবা, মাঝখানে প্রায় দশ বছর আমি পিছিয়ে পড়েছি। সময়ের কাজ সময়ে না করলে যে কি পরিণতি হয় তা আমি হাড়ে হড়ে টের পাচ্ছি। দোয়া করবেন যেন আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করে আপনার সামনে দাঁড়াতে পারি। এখন আমি এক বন্ধুর সহয়তায় একটা কর্পোরেট অফিসে চাকুরী করি। বেতন যা পাই তা দিয়ে লেখাপড়া ও নিজের অন্যান্য খরচ বহন করি। আপনার স্বপ্ন ছিল আমাকে একজন সরকারী চাকুরীজীবি হিসেবে দেখবেন। দুঃখ এই জন্য যে আপনার এ স্বপ্ন আমি কখনো পূরণ করতে পারব না। বাবা, মানুষের সব স্বপ্ন কি পূরণ হয়? মাঝে মাঝে আপনি আমাকে মোবাইল ফোনে বলেন, আমি যেন গ্রামে গিয়ে কোন স্কুল-কলেজে চাকুরী নিই। আসলে বাবা আমার কোন যোগ্যতায় নেই ঐ সব চাকুরী নেওয়ার। নইলে কবে গ্রমে ফিরে যেতাম! জ্যাম আর দুনিয়ার গ্যাস চেম্বার হিসেবে খ্যাত এই ঢাকা শহরে এক মূহুর্ত থাকতে ইচ্ছে করে না। কৃত্রিমতা আর মুখোশে অচ্ছাদিত এই নগরের প্রতিটি মানুষ চেহারা, যেখানে না খেয়ে মরে গেলেও কেউ কারো খোঁজ নেই না। এ শহর থেকে প্রতিটি মুহুর্ত ছুটে পালাতে ইচ্ছে করে কিন্তু পারিনা নিজের কিছু ভুল সিদ্ধাšে—র কারণে। জীবনে সবাই হোঁচট খায় কিন্তু সবাই উঠে দাঁড়াতে পারে না। আমিও জীবনে হোঁচট খেয়েছি, পুরোপুরি উঠে দাঁড়াতে পারিনি তবে চেষ্টা করছি যদি না পারি তবে মৃত্যুই হবে আমার শেষ ঠিকানা।
গাছ যত বড়ই হোক শেকড় কিন্তু মাটিতেই থাকে, আমি যেখানেই থাকি যেভাবেই থাকি মন কিন্তু পড়ে থাকে আপনাদের কাছে। বিধাতার কাছে প্রর্থনা করি আমি যেন শেষ নিঃশাস গ্রমের মাটিতেই ত্যাগ করতে পারি। বিশেষ আর কি?পারলে ক্ষমা করবেন। নিজের শরীরের যতœ নিবেন।
ইতি
আপনার হতভাগ্য সন্তান
মিজান।
খুব তন্ময়ভাবে চিঠিখানা পড়ছিলাম। তারপর অনেক্ষণ বসে বসে ভাবলাম, বাইরে থেকে দেখে একজন মানুষকে বোঝা যায় না তার ভেতরে কি যন্ত্রণা আছে। ভাবলাম ওকে একটা ফোন দেব পরক্ষণে ভাবলাম তার আর প্রয়োজন নেই। চিঠিখানা সযতেœ খামে পুরে চেয়ার টেবিল ছেড়ে উঠলাম। গল্প লেখা শিকায় উঠল। তাড়াতাড়ি বিছানার দিকে ধাবিত হলাম কাল সকালে আবার অফিসে যেতে হবে।
২৫ জানুয়ারী - ২০১২
গল্প/কবিতা:
৩ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪