বৃষ্টি ভেজা বনভোজন

বৃষ্টি (আগষ্ট ২০১২)

তানজির হোসেন পলাশ
  • 0
  • ৩৪
১৯৯৮ সাল। আমাদের বনভোজনের স্থান ‘সোনা পাতিলের বিল’। এটি কুষ্টিয়া জেলার খোকসা থানায় অবস্থিত একটি বিলের নাম। কথিত আছে, বৃটিশ শাসন আমলে সওদাগররা এই বিল দিয়ে বাণিজ্যে আসতেন। তৎপরবর্তী সময়ে এই বিলে অসংখ্য সোনার পাতিল পাওয়া গিয়েছিল। যা এই নামকরণের উল্লেখযোগ্য কারণ।
আমাদের বনভোজন ছিল ঘরোয়া পরিবেশে। অনেকটাই ফাল্গুন মাসের গুফাগুণির মতো। এক সপ্তাহ আগের পরিকল্পনা মাফিক সবাই যার যার মত চাল, ডাল, ডিম, হাড়ি-পাতিল ইত্যাদি প্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ পৌঁছলাম সোনা পাতিলের বিল। সময়টা ছিল বর্ষাকাল। আকাশ কিছুটা মেঘাচ্ছন্ন থাকলে দুই একটা তারকার আনাগোনা দেখা যাচ্ছিল। বিলের মাঝ দিয়ে যাওয়া রাস্তার উপর অনেকেই পাটকাঠি সাজিয়ে রেখেছে। তারই এক ফাঁকে আমাদের এই ক্ষুদ্র আয়োজন। যদিও আমরা মাইক ব্যবহার করিনি কিন্তু একটা বাঁশের মাথায় সাউন্ড বক্স ঝুলিয়ে অতিরিক্ত সাউন্ড দিয়ে ক্যাসেট বাজাচ্ছি। ইতিমধ্যে আশেপাশের লোকজন জেনে গেছে কারা যেন পিকনিক করছে। রাত তখন ১০ পেরিয়েছে। আমি, মতিয়ার, জাকের ও মজিদ বসলাম তাসের আড্ডায়। মান্নান, জেহের ও রেজাউলকে দিলাম রান্নার দায়িত্বে। আর জামাল ছিল ক্যাসেটের গান সিলেকশনে।
হঠাৎ পেলাম আমাদের আনন্দ নস্যাৎ হওয়ার পূর্বাভাস। অনুভব করলাম কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি। এতে অবশ্য খুব একটা শঙ্কিত হলাম না। কারণ আমাদের রান্নার কাজটা প্রায় শেষের দিকে। কয়েক মিনিটের মধ্যে ভীষণ শব্দ শুনতে পেলাম। ’শ ’শ শব্দে কি যেন আমাদের দিকে ছুটে আসছে। আর অবিশ্বাস করতে পারলাম না বৃষ্টি হবে। সবাই মিলে পাটকাঠি দিয়ে খাবার ও ক্যাসেট ঢাকার চেষ্টা করলাম। ক্রমেই বৃষ্টি বাড়তে থাকে। উপায় না পেয়ে সবকিছু নিয়ে ছুটলাম একটা বাড়ির উদ্দেশ্যে। এত রাতে কার বাড়িতে যাব। আবার আশে পাশে বাড়িও নেই। ঐ বৃষ্টির মধ্যে প্রায় আধা কিলোমিটার হেঁটে পেলাম মান্নানদের বাড়ি। সেখানে গিয়ে থেমে থাকিনি আমরা। ঐ বৃষ্টির মধ্যেই ক্যাসেট বাজিয়ে শুরু করলাম খেলা।
রাত প্রায় ২টা। বৃষ্টির প্রকোপ কিছুটা কম। খাবার জন্য সবাই প্রস্ত্ততি নিচ্ছি। ঠিক এমনই মূহুর্তে দৈবভাবে হাজির হলেন আমাদের গ্রামের নেতা শিমু ভাই। আমরা তো সবাই ভয়ে অস্থির। এত রাতে মানুষের ঘুম নষ্ট করে ক্যাসেট বাজাচ্ছি তাই হয়ত আগামিকাল কোন বিচার সালিশ বসতে পারে। কিন্তু অবাক হলাম যখন দেখি প্লেট হাতে নিয়ে শিমু ভাই আমাদের সাথে খেতে বসলেন। সেদিনের বৃষ্টি ভেজা বনভোজন জীবনের এক নতুন স্বাদ উপলব্ধি করার আবেশও বটে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সালেহ মাহমুদ UNION ALL SELECT NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL# নৈশ ভনভোজনের বিষয়টা জানতাম না। পড়ে ভালো লাগলো। আমরা ছোটবেলা বাড়ীতেই সবাই মিলে জোলাভাতি খেলতাম। সবাই যার যার ঘর থেকে এটা সেটা নিয়ে এসে নিজেরাই রান্না করতাম, আর আমাদের মা-দাদীরা এসে মাঝেমাঝে দেখে যেতো। রান্না শেষ হলে সবাইকে দিয়ে-খুয়ে কি মজা করেই না খেতাম সেই জোলাভাতি’র খাবার। ভাবলে এখনো হাসি পায়। ধন্যবাদ পলাশ।
মিলন বনিক চমৎকার স্মৃতিচারণ...ভালো লাগলো....
আহমেদ সাবের বনভোজনের চমৎকার অভিজ্ঞতার গল্প। তবে, সাথে একটু কল্পিত ঘটনার ভেজাল মেশালে গল্পটা আরও হৃদয়গ্রাহী হত।
Sisir kumar gain খুবই ভালো লাহল আপনার বনভোজনের কাহিনী।শুভ কামনা ।
তানি হক দারুন লাগলো ...বৃষ্টি ভেজা বনভোজন...আপনাকে ধন্যবাদ
আরমান হায়দার লেখাটি হৃদয় ছুয়ে গেল। আরো লিখা পড়ার অপেক্সায় থাকলাম।
তান্নি জীবনের কিছু অংশ যা গল্পের চেয়েও ভিন্ন, কল্পনার চেয়েও মধুর যেটি আপনার অল্প লেখার মাঝেই পুরোপুরি প্রকাশ পেয়েছে.খুবই ভালো লেগেছে আমার. ভালো থাকবেন.
ইউশা হামিদ পলাশ ভাই , আপনার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু শিক্ষা পাওয়া গেল ; যা অমূল্য । অনেক শুভ কামনা ।

২২ নভেম্বর - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী