সামনে ঈদ। কেনাকাটায় ব্যস্ত মানুষ। ঈদ উপলক্ষে সবাই রং বেরঙের পোশাক কিনে বাসায় ফেরে। ঈদের দিন ঐ পোশাক পরে ঘুরতে যাবে। এসব ভাবনায় চোখের পলক ফেলতে পারছে না জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকা সুমী। মা অন্যের বাসায় কাজ করে যা আয় করে তাতে মায়ে-মেয়ের কোন মত দিন কেটে যায়। ঈদের দিন একটু সেমাই খেতে পারবে এতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় ওদের। অভাবের সংসারে মায়ের কষ্টের কথা ভেবে অন্য কোন আকাঙ্খার কথা প্রকাশ করে না এই আট বছরের বালিকা সুমী। বাবা হারা সুমী মাকে কষ্ট দিতে চায় না। মনের সান্ত্বনা একটাই, ওর তো অন্য সবার মত বাবা নেই। বাবা নেই বলে অন্য সকলের মত ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে না সুমী। তবে এবারের ঈদ বিগত আট বছরের জীবন থেকে একটু আলাদা কাটাতে চায় সুমী। মামা একটা জামা দিয়েছে। ঈদের দিন জামাটা গায়ে দেবে সুমী। সারাক্ষণ স্বপ্নে বিভোর থাকে কবে ঈদ আসবে। ওর যেন আর সময় কাটতে চায় না। আর পাঁচ দিন পর ঈদ। নতুন জামা পরে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ সুমীর জীবনে এই প্রথম। তাই তো সারাক্ষণ আনন্দে উদ্বেলিত ওর মন। বন্ধুদের বলেছে ওর জামার কথা। ওরা অবশ্য দেখতে চেয়েছিল। দেখার জন্য বেশ জোরও করেছিল। কিন্তু কিছুতেই সুমী তা দেখায়নি। অনেক যত্নে বিছানার নিচে ভাঁজ করে রেখেছে। দেখালে পুরাতন হয়ে যাবে এই ভাবনা কাজ করে সুমীর মধ্যে। বহু প্রতীক্ষার পর সুমীর জীবনের আনন্দঘন দিন আজ। কাল সারারাত ঘুমোতে পারে নি সুমী। এমন কি রাতে মাকেও ঘুমোতে দেয়নি। একটু পর পর জিজ্ঞাসা করেছে কখন সকাল হবে, সবার আগে ও গোসল করবে, তারপর জামাটা গায়ে দিয়ে মাকে সালাম করবে, কোথায় যাবে ইত্যাদি প্রশ্ন। মা শুধু মেয়ের দিকে তাকিয়ে চোখের জল ফেলেছে নীরবে। চোখের জল শুকিয়ে কখন যে একটু তন্দ্রাভাব হয়েছে বুঝতে পারেনি সুমীর মা। বেড়ার ফাঁক দিয়ে আলো এসেছে ঘরে। তাতেই সুমী ডাকতে শুরু করেছে মাকে। ঃ এই মা তাড়াতাড়ি উঠ্। সকাল হয়ে গেছে । আমার গোসল করায়ে দে। সারাদিনের পরিশ্রমে মা বড্ড ক্লান্ত। ঈদের দিনও শান্তি নেই মার মনে। তবুও সব কিছু সহ্য করে যাচ্ছে মেয়ের জন্য। চোখ ডলতে ডলতে ঘুম থেকে ওঠে মা। মেয়েকে গোসল করায়ে দেয়। সুমী এবার দেঁৗড়ে যায় জামা আনতে। ওর জীবন আজ ধন্য। ঈদে নতুন জামা পরবে। খুশিতে লাফাতে লাফাতে ঘরে যায় সুমী। কোমল হাতে বিছানা উল্টায়। তারপর চিৎকার দিয়ে কেঁদে ওঠে। মা দেঁৗড়ে আসে। দরজায় থমকে দাঁড়ায়। মায়ের পা অচল যায়। রুদ্ধ হয়ে যায় হৃদ স্পন্দন। বহু কষ্টে অনিচ্ছায় অসার দেহটাকে ঘরের মধ্যে নিয়ে যায় মা। দেখে মেয়ে তার নিষপ্রাণ দেহ নিয়ে কয়েক টুকরা কাপড় অাঁকড়ে পরে আছে। বুঝতে দেরি হয় না, মেয়ের জামা ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলেছে তেলাপোকা নামের ক্ষুদ্র প্রতঙ্গ। যা কি না কেড়ে নিয়েছে তার সুখ শান্তি আর এই নিষপাপ শিশুটির জীবন।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রোদের ছায়া
বেশ ভালো, ঈদের নতুন জামা ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দিল .......সুমর জন্য খারাপ লাগছে ভিষণ , বেচারী জামার শোকে মারাই গেল? কিন্তু এক রাতে তেলাপোকা কি একটা জামা ছন্নভিন্ন করে দিতে পারে ? আমার জানা নাই .........আগামীর জন্য শুভকামনা /
আর পাঁচ দিন পর ঈদ। নতুন জামা পরে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ সুমীর জীবনে এই প্রথম। তাই তো সারাক্ষণ আনন্দে উদ্বেলিত ওর মন। বন্ধুদের বলেছে ওর জামার কথা। ওরা অবশ্য দেখতে চেয়েছিল। দেখার জন্য বেশ জোরও করেছিল। কিন্তু কিছুতেই সুমী তা দেখায়নি। অনেক যত্নে বিছানার নিচে ভাঁজ করে রেখেছে। দেখালে পুরাতন হয়ে যাবে এই ভাবনা কাজ করে সুমীর মধ্যে। এটি গল্পের ভিতরের দ্বিতীয় পারা.
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।