রাসত্দার পাশে পড়ে আছে একটি মেয়ে গায়ে তার পাতলা কাপড় যা এই ভয়ংকর শীতের থাবা থেকে তাকে আড়াল করতে পারেনি। পাশ দিয়ে হেঁটে যায় অনেকেই মোটা কাপড়ের শক্ত জালে বন্দি ওরা শুকুনের মত দু'টি চোখ দিয়ে তাকিয়ে থাকে। কেউ তাকিয়ে দেখে মেয়েটাকে কেউবা আবার নাড়াচাড়া দিয়ে দেখে মেয়েটি বেঁচে আছে কি-না। কৌতুহলী মানুষ পলকহীন চোখে তাকিয়ে থাকে যেন সাইপ্রাস থেকে আসা অতিথি পাখি দেখছে। কেউ জানে না তার পরিচয় কিংবা নাম জানার প্রয়োজনও কেউ মনে করেনা, দায় নেবার ভয়ে মেয়েটি তখন শীতে কাঁপছিলো... থর্ থর্ করে কাঁপছিলো। দাড়িয়ে থেকে দেখা ছাড়া আর কিছুই যেন কারো করার নেই একটি মেয়ে শীতের শীতলতা সইতে না পেরে একটু উষ্ণতা খুঁজে মরছে অন্যদিকে জনগণ একজন আরেকজনের মুখের দিকে তাকচ্ছে ভাবছে এ এবার কোথা থেকে এলো। সময় বয়ে চলে তবু বদলায় না কারো মন কেউ আসেনা তার কাছে এক অচেনা ভয় সবার মনের গৃহিণী বাসা বাঁধে কে নেবে তর দায় ভার... কেউ নেই এমন একজন এত মানুষের মাঝে আপসোস বড্ড বেশি আপসোস.......।
আঙিনার সৌন্দর্য নষ্ট হবে বলে কেউ মেয়েটিকে বাড়ির আশে-পাশে আসতে দেয়না; তাড়িয়ে দেয়... যেমনি একটি কুকুর খাবার পেলে অন্য কুকুরটিকে তাড়িয়ে দেয়। রাসত্দাই এখন মেয়েটির বসত-বাড়ি রাসত্দাই মেয়েটির শেষ ঠিকানা মেয়েটির অনেক কষ্টে দিন কাটে, কাটে শীতের দীর্ঘ রাত। ফুটফুটে সুন্দর কচি মুখটা কালো হয়ে গেছে চুলগুলো ধুলো পড়ে হয়েছে পাখির বাসা। কোন সাংবাদিক তার ছবি তোলেনি কোন পত্রিকা লেখেনি একটি কলাম। কেউ কোনদিন জানতে চায়নি; মেয়েটি কোথা থেকে এলো আবার কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে। বড় বড় লেকচার ছাড়া, আর কিছুই পায়নী মানুষের থেকে এটাই কি এই মেয়েটির জন্য যথার্থ? চোখ থেকে মেয়েটির জল ঝড়ে পড়ে সে জলে কারো হৃদয় গলে না বরং আরো শক্ত হয়।
রাত আসলেই মেয়েটির বুক চম্কে উঠে চমকে উঠে এই ভেবে কাল সকালে কি তার জীবনে সূর্য উদয় হবে? হয়তো বা হঁ্যা হয়তো বা না। কুকুরের সাথে বসে ডাস্টবিনের পঁচা খাবার খেয়ে থাকতে হয় মানুষ হয়ে যখন মানুষেরই সাহায্য পেল না তখন তো পশু-পাখির সাথেই বাঁচতে হবে। কে যেন বলে উঠলো, কাল এখানে নেতা আসবে আমাদেরকে দেবে লাল, নীল কম্বল আমাদের কষ্ট কমে যাবে, আমরা একটু শানত্দিতে ঘুমাবো অনেক দিন শানত্দিতে ঘুমাই না। হাজারো মানুষের ভীড় জমে এখানে কে জানে কয়টি কম্বল আছে নেতার থলিতে। মেয়েটিও আসে একটি কম্বলের আশায় দাঁড়িয়ে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা। কম্বল যেন সোনার হরিণ সবার কপালে জুটেনা ভীড় বাড়তে থাকে বাড়ে না কম্বল। শুরম্ন হয় প্রতিযোগিতা, কার আগে কে নেবে মানুষের ঢল মানুষের চাপাচাপি একটি আর্তনাদ ঘুরে ফিরে সেখানে কেউ শুনে না, শুনতে চায় ও না মানুষের কলরবে মিলিয়ে যায় সে শব্দ। এক এক করে সবাই চলে যায় পড়ে থাকে একটি মৃত দেহ। হাতে, মুখে ৰতের দাগ মাছি উড়ে যায় মুখের উপর দিয়ে মেয়েটি আর বেঁচে নেই একটি কম্বল আর তার পাওয়া হলো না। এভাবেই শীতে হাজারো মানুষ মারা যাচ্ছে রাসত্দায় পরে ওদের জন্য কি কেউ নেই আগামীর কাছে এর কি জবার দেবে আমাদের জাতি? আমাদের মনুষ্যত্ব?
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।