"মা" ছোট্ট একটি শব্দ ,কিন্তু অনেক মধু আছে যেন এই ডাকটিতে | সারা বিশ্বে এমন কোনো একটি নারী পাওয়া যাবে না যে একবার তাকে মা বলে ডাকবে না | মা না হতে পারা যেন নারীর জন্য একটি কলঙ্ক কতো কথায় না শুনতে হই সেই নারী কে...কত কিছু না সহ্য করতে হয় সেই নারীকে ................
মা বাবার আদরের একটি মাত্র সন্তান পুলক | বাবা ইউসুফ ইসলাম আর মা শ্রাবন্তী ইসলামের এক মাত্র বুকের ধন "হৃদয় ইসলাম পুলক " | ইউসুফ ইসলামের সাথে শ্রাবন্তীর বিয়েটা হই একদম হুট করেই সাত দিনের মধ্যে বিয়ে দেখতে এসে পছন্দ হলে শ্রাবন্তিকে একবারে তুলে নিবে ঘরে এটাই ডিসিশন নেন ইউসুফ ইসলাম | ইউসুফের বাবা মা বলতে ছিল না কেও | সে যখন কলেজে উঠে তখন এক দূর ঘটনায় মারা যাই বাবা আর মা মারা যাই ছোট বেলায় যখন ইউসুফ হাটা শিখেছে মাত্র | পৃথিবীতে ইউসুফের বাবা আর এক দূর সম্পর্কের ফুপু ছাড়া কেও ছিল না | বাবা মারা যাবার পর ইউসুফ এই ফুপুর কাছেই ছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই ফুপু তাকে ছেড়ে চলে গেছে | কেও ছিল না তাকে বুঝার মত |তাকে সঙ্গ দিবার মত | একা বাড়িতে আর ভালো লাগেনা তাই সে শেষ পর্যন্ত চিন্তা করলো এবার একটা বিয়ে করবে একটা সংসার করবে | কিন্তু ইউসুফ এই কথাটা কাকে বলবে বুঝে পাচ্ছিল না | শেষ পর্যন্ত ইউসুফ তার খুব ঘনিষ্ঠ একটা বন্ধু অনিককে বলল যে আমি তো একা মানুষ দিন তো একা আর ভালো লাগেনা একটা মেয়ে খুঁজে দে বিয়ে করব | তখন অনিক বলে এই কথা আগে বলবি তো আমি তোর বিয়ে করিয়ে ছাড়ব এক সপ্তাহ সময় দে দেখ | কেমন করে তোর জন্য মেয়ে খুঁজে বিয়ে দিয় তোকে | তুই কি সত্যি বলছিসতো নাকি আবার মেয়ে দেখতে বলে পলাবি | এই কথা বলে হাসে অনিক |আরে না সত্যি বলছি বিয়ে করব এক জীবন আর কতো দিন ভালো লাগে বল |তো কেমন মেয়ে চাস শুনি যেমন মেয়ে চাস ঠিক তেমন মেয়ে তুই পাবি | তখন ইউসুফ বলে তুই মনে হয় ঘটকালি করিস |অনেক মেয়ে হাতে মনে হয় |আরে না ভাবছি তোকে দিয়ে শুরু করব |তবে আছে একটা মেয়ে দু'দিন পর জানাবো এই বলে অনিক বিদায় নেই ইউসুফের কাছ থেকে .........
দুইদিন পর একটা বইয়ের দোকানে ইউসুফের সাথে অনিকের দেখা .এই ইউসুফ শোন ডাকলো অনিক | তোকে বলে ছিলাম না একটা মেয়ে আছে আসলে মেয়েটা আমার খালাতো বোন শ্রাবন্তী | খালা বলছিল শ্রাবন্তির জন্য একটা ভালো ছেলে খুজতে কাল খালার কাছে তোর কথা বলতে খালা বলল নিয়ে যেতে তোকে যদি শ্রাবন্তির তোকে পছন্দ হয় আর তোর যদি শ্রাবন্তির পছন্দ হয় তবে খালা আর কোনো দিমত নাই কারণ আমার বন্ধু বলে কথা কি বলিস কবে জাবি আমাকেকে জানাবি আর আমি ছবি আনিনাই আমি চাই আমার বন্ধুটি নিজে যায়ে দেখুক |অনিকের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে ইউসুফ বলে যদি লাগে তোমার বোনকে আমার ভালো তবে আমি তখন হয়ে যাব তোর বড় শালা বলতে থাকে ইউসুফ আর হাসে অনিক তো কথা থাকলো কবে যাবি আমাকে জানাবি ..
ইউসুফ ঠিক করে মে মাসে যাবে মেয়ে দেখতে | কারণ এই মাসের আছে আর তিনদিন এই তিনদিনে কিছু কিনা কাটা করবে অফিস থেকে ছুটি নিয়েছে ইউসুফ এক সপ্তাহের জন্য | কাওকে বলেনি যে বিয়ে করবে বলেছে একটু কাজে বাস্ত থাকার কারণে দুর্বল হয়ে গেছে শরীর তাই একটু বিশ্রামের জন্য ছুটি চাই | যদি বিয়ে না হয় তাহলে সবাই ওকে খেপাবে এটা ইউসুফের মোটেও ভালো লাগে না বিয়ে ঠিক হলে সবাইকে জানাবে কিন্তু ইউসুফ যেদিন শ্রাবন্তিকে দেখতে যাবে সেদিন আরো দুযোজন কলিগ কে বলল রিপন আর রাতুল কে এদিকে আছে অনিক মোট চারজন যাবে সেদিনের এক দেখাতে ইউসুফের কি হল | ইউসুফ বলল আমি এই মেয়েকে বিয়ে করব এবং এখন যদি শ্রাবন্তী রাজি থাকে পরে জানা গেল শ্রাবন্তিও রাজি তো বিয়ে করে নিয়ে বাসায় চলে এল | বিশাল বড় বাড়িতে ইউসুফ ছিল এত দিন একা আজ দুজন |
পরের দিন ইউসুফ মিষ্টি নিয়ে গেল অফিসে সবাইকে করালো মিষ্টি মুখ আর বলল বিয়ে করেছে সেই মিষ্টি |অফিসের কলিগরা তো কেও খুশি না ইউসুফ এভাবে বিয়ে করেছে তাদের কথা বড় করে একটা পার্টি দিতে হবে | কি আর করা বাসায় এসে শ্রাবন্তী কে বললে বলল তাহলে এক কাজ কর একবারে আমাদের আত্তীয় স্বজন সহ সবাই কে একবারে বলো |ইউসুফ ও বলল এটাই ভালো হবে তোমাদের সবার সাথে পরিচয় হওয়া যাবে এভাবে আনন্দে কেটে গেল এক মাস......
ইউসুফ এক মাস গেলেই বলল শ্রাবন্তিকে আমরা খুব শিগিরই একটা বাবু নিবো কি বলো |বাবুটা হোকনা ছেলে বা মেয়ে কিন্তু আমাদের ঘর করবে আলোকিত তোমার সময় কাটবে ভালো ইউসুফের কথাতে শ্রাবন্তির রাজি হলো | কিন্তু শ্রাবন্তির কোল জুড়ে এল না কোনো সন্তান | বিয়ে হয়েছে ছয় মাস কিন্তু কোনো কিছু বুঝলো না | বিয়ের একবছর পার হয়ে গেল কিন্তু কোনো সন্তান এলোনা তাদের ঘরে |ডাক্তার দেখিয়েছে কত | প্রতি মাসে কত চেকাপ করছে শ্রাবন্তিকে কিন্তু কোনো সমসসা খুঁজে পাছে না ডাক্তার কোনো সমসা নাই দুজনের তবে কেন এমন হচ্ছে বুঝে পাচ্ছে না ইউসুফ কি করবে.....? প্রতিনিয়ত কেমন যেন আসা হারিয়ে ফেলছে শ্রাবন্তী দেখতে দেখতে কেটে গেল আরো তিনটি বছর | চার বছর যায়ে পাচ বছর পরলো | এখনো শ্রাবন্তী মা হতে পারল না | শ্রাবন্তী ঠিক করলো ইউসুফ কে আবার বিয়ে করতে বলবে একটি সন্তানের জন্য | কিন্তু কথাটা বলবে কি ভাবে ইউসুফ কে ..? ইউসুফ কি শুনবে শ্রাবন্তির কথা রাখবে কি বুঝে উঠে পাচ্ছিল না শ্রাবন্তী ঠিক এই কথাগুলো ভাবতে ভাবতে বলছিল আমি কি করব কখন যেন ঘুমিয়ে গিয়েছিল শ্রাবন্তী |ঘুম এর মধ্য সপ্ন দেখে শ্রাবন্তী একটি বাচ্ছা মা বলে ডাকছে শ্রাবন্তী লাফ দিয়ে উঠে বলে আমি আসছি .তখন ইউসুফ উঠে বলে কি হলো কি হয়েছে তোমার শ্রাবন্তী ....?শ্রাবন্তী বলে আমাকে কে যেন মা বলে ডাকলো এ কথা বলে ডুকরে কেদে উঠলো শ্রাবন্তী সেই থেকে বিছনায় অসুস্ত ডাক্তার ডাকা হলো | ডাক্তার দিল সু সংবাদ শ্রাবন্তী মা হবে ইউসুফ হবে বাবা এই খুশি যেন ধরেনা শ্রাবন্তী আর ইউসুফের | দেখতে দেখতে কেটে গেল চার মাস ঠিক তখন ঘটল একটি আরো বড় দূর ঘটনা এই আনন্দটা যেন সইলনা শ্রাবন্তির কপালে তার শরীরের ভিতরে যে একটা নবজাতক শিশু জন্ম নিচ্ছিলো | একটু একটু করে বড় হছিল সেই শিশুটি পৃথিবীর আলো দেখার আগে নিল মা'র কোল থেকে বিদায় আবার সেই আনন্দে পরলো ভাটা |এবার সুখের ঘরে লাগলো আগুন | সংসারে এবার নেমে এলো অশান্তি কিন্তু কিছু করতে পারছে না শ্রাবন্তী ...............
এভাবে কেটে গেল আরো পাচটা বছর | আবার এক দিন রাতে শ্রাবন্তী দেখল সেই একই সপ্ন কিন্তু এবার আর চিত্কার করে উঠলনা শ্রাবন্তী এবার বুঝলো এবার আসছে তার কোলে ফুট ফুটে একটি সন্তান আর সেটি ছেলে সেদিন থেকে শ্রাবন্তী নাম ঠিক করলো ছেলেটির নাম রাখবে সে পুলক অনেক চাওয়ার পরে একটি সন্তান তার ঘরে | ইউসুফকে ডেকে শ্রাবন্তী বলল তুমি বাবা হবে আর এবার তোমার বংশ রাখবে তোমার ছেলে | ইউসুফ বলল তুমি কি করে বুঝলে যে তোমার গর্ভের সন্তান ছেলে হবে | ইউসুফ বলল তুমি কি করে বুঝলে যে তোমার ছেলে হবে যদি মেয়ে হয় তাহলে তখন সাবন্তি বলল না ওযে আমার স্বপ্ন দেখিয়েছে আমাকে মা বলে ডেকেছে ওটা যে ছেলে ছিল |তুমি বুঝবে না শ্রাবন্তী বলে |দেখতে দেখতে কেটে গেল আট মাস এদিকে দুজনে মিলে কিনছে ছেলের জন্য খেলনা ছেলে আসবে ঘরে তার চলছে প্রস্তুতি অবশেসে সেই দিন এলো | শ্রাবন্তী অনেক দুখ কষ্টের পরে সে দিন টি আসলো সত্যি সত্যি শ্রাবন্তী একটি ছেলে সন্তান জন্ম দিল খুশিতে জোয়ার ভেসে গেল আর নাম রাখলো পুলক শ্রাবন্তী ইউসুফ দুজনায় খুশি এই দিনটির জন্য এগারো টি বছর অপেক্ষা করেছে আজ ইউসুফ কে শ্রাবন্তী বলল যেন আমি ঠিক করে ছিলাম তোমাকে আবার বিয়ে দিব এই সংসারের একটি বাচ্ছা চেয়েছিলে তুমি আমি দিতে পারছিলাম না কিন্তু তখন ইউসুফ বলল এখন তো তুমি মা হয়েছ তবে এখন বলছ কেন ? তখন শ্রাবন্তী বলে বলছি এই কারণে এই বছর যদি আমি তোমাকে এই সন্তান টি না দিতে পারতাম তবে তোমাকে আমি এই বছর বিয়ে করতে বলতাম কিন্তু তুমি যদি বলো আমাকে বিয়ে করতে আগে বলতাম তুমি কি বিয়ে করবে বলে হাসতে থাকে দুজন.........
ইউসুফ আর শ্রাবন্তির দুজনার হাসির মধ্যে হটাত করে পুলক কেদে উঠে তখন আবার দুজন পুলকের দিকে তাকিয়ে হাসে ........এ হাসি যেন খুশির হাসি হাসতে হাসতে শ্রাবন্তী কেদে ফেলল এই অশ্রুতে যেন অনেকটা আনন্দ লুকিয়েছিল..........আজ কোনো কষ্ট নেই শ্রাবন্তির আজ সে মা হতে পেরেছে..............এই মা ডাকটি শুনার জন্য শ্রাবন্তী কতটা দিন কতটা রাত পার করেছে শুধু এই মা বলে কেও ডাকবে শ্রাবন্তী কে
........আজ শ্রাবন্তির সেই স্বপ্ন পূরণ হলো আজ পুলক তাকে মা বলে ডেকেছে | আজ যেন শ্রাবন্তী বার বার একটি কথা জানতে চাচ্ছে পুলকের কাছ থেকে বলনা বাবা আমাকে মা | নতুন কথা শিখেছে পুলক তাই বার বার জানতে চাচ্ছে শ্রাবন্তী ........শ্রাবন্তির তিপ্তি যেন মিটছে না ..........
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এস, এম, ফজলুল হাসান
আমার দৃষ্টিতে মা সংখ্যার সেরা গল্প-কবিতা গুলি হলো (১) প্রথম : # সাত মা # লেখক : মামুন ম.আজিজ , (২) দ্বিতীয় : # ভিখারিনী মা # কবি : Oshamajik , (৩) তৃতীয় : # আমার ভালোবাসার ফুল মায়ের হাতে দেব # কবি : মোহাম্মদ অয়েজুল হক জীবন , (৪) চতুর্থ : # মা # কবি : Khondaker Nahid Hossain , (৫) পঞ্চম : # ২০০০০০০০৯৭ সালের মা # লেখক : মাহাতাব রশীদ (অতুল) , আমার দৃষ্টিতে বিজয়ীদের বলছি , " আপনারা গল্প-কবিতা থেকে বিজয়ী হবেন কিনা তা জানি না তবে , আমার অন্তর থেকে রইলো আপনাদের জন্য বিজয়ী শুভেচ্ছা , ধন্যবাদ সকলকে " ,,
বিষণ্ন সুমন
গল্পটা অনেক সুন্দর. একজন মার জীবনে মাতৃত্ব কতটা আনন্দদায়ক হতে পেরে এখানে তাই তুলে ধরা হয়েছে. তবে লিখন শৈলীতে কিছুটা অপরিপক্কতা রয়ে গেছে. এই দিকটায় নজর দিলে বেশ পাঠকপ্রিয়তা পাবার পূর্ণ অবকাশ রয়েছে.
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।