শুভ, অনেক বিশেষণ লাগানোর ইচ্ছে ছিল- প্রিয় শুভ, প্রাণপ্রিয় শুভ, প্রিয় বন্ধু শুভ- সেসব না বলে শুধু শুভ। কেমন আছিস তুই? তোর পুরনো খাতাটা আজ খুঁজে পেলাম। মনে নেই? সেই যে তোর কবিতার খাতাটা..লুকিয়ে রেখেছিলাম? কত খুঁজেছিলি তুই-কত বার ফিরিয়ে দিব ভেবেও আর ফিরিয়ে দেয়া হয়নি তোকে| আচ্ছা...তুই থাকিস কথায় বলত? তুই কি এখনো কবিতা লিখিস? হয়তো বা না....সময়ই হয়তো হয় না| তোর কবিতা গুলো বসে বসে পড়লাম| হা হা হা...কি সব ছেলেমানুষীর দিন ছিল সে সব| আমাকে নিয়ে কবিতা লিখেছিলি মনে আছে? তুই ভীষণ ভালবাসতি আমাকে, তাই না রে? আচ্ছা আতিক, সুমনার কথা মনে আছে তোর? ওদের বাড়ির সামনে গিয়ে রোজ দাড়িয়ে থাকতি? আর ওর ভাই কি হালটাই না করেছিল তোর! সুমনা কে নিয়ে তো এই খাতায় পঁচিশটা কবিতা আছে| এসব কবিতা ও পড়লে তো সুমনার হাতেও মার খেতি....."সুমনা আমায় একটু বলনা/ কেন কর ছলনা/ভালবাসি বল না" পরে হাসতে হাসতে চোখে পানি চলে এসেছে আমার| তোর খাতা তা চুরি করার পর সবাই মিলে পড়েছিলাম এগুলো, সৌমেন তোর খাতায় ১টা স্কেচও করেছিল আমাদের তিন বন্ধুর| বলিস না যে সৌমেন কে তোর মনে নেই....আরে সৌমেন সেই যে মল্লিক বাড়ির ছেলেটা| রোজ মজার মজার টিফিন আনত| ওর খবর শুনেছিলি তো তুই? নাকি পাসনি? এসএসসি- র পর ঢাকায় কলেজে ভর্তি হল, তার ২মাস পরেই ওর ক্যান্সার ধরা পরে| এক বছরের মাথায় সব শেষ| সারা শহর যেন জমা হয়েছিল ওকে এক নজর দেখতে- শুধু তুই-ই ছিলি না। শেষ দিকে ও প্রায়ই বলত তোর কথা। কোথায় যে হাওয়া হয়ে গেলি তুই! আমাদের ফুটবল খেলার দিনগুলোর কথা মনে আছে তোর? কাজীপাড়ার স্কুল কে হারিয়ে দিয়েছিলাম ফাইনাল এ? সেদিন কিন্তু সৌমেন দুইটা গোল দিয়েছিল| আর তুই তোর প্রিয় ফাউন্টেন পেনটা ওকে দিয়ে দিয়েছিলি। সত্যি কথা বলতে কি খুব হিংসে হয়েছিল আমার, খুউব| আচ্ছা পুরনো কথা থাক, এখন কি করছিস বল? বিয়ে করেছিস? আর ছেলে-মেয়ে? তুই বউ-ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসার করছিস, এটা ভাবতেই অবাক লাগছে বন্ধু। জানিস,গত সপ্তাহে আমাদের পুরনো শহরে গিয়েচিলাম। সবকিছু কত যে বদলে গেছে। আমাদের খেলার মাঠটা আর নেই। কি যে কষ্ট লাগল দেখে। আর ওই যে পুকুরটা- ওটার তো নাম-নিশানাও নেই। খুব কষ্ট লাগছিল, তাই আজ তোর খাতাটা পেয়ে মনটা এতো ভালো লাগছিল...কত কথা যে লিখতে ইচ্ছে করছে তোকে! এই এতগুলো বছরে কত কি হয়ে গেল, কিছুইতো বলা হল না। তোর ঠিকানায়ও তো এই চিঠি পৌঁছবেনা কখনো। তোর ঠিকানাটাই তো জানা হল না আমার। হয়ত কোনদিনও জানা হবে না। কোনদিন তোর মুখটাও দেখা হবে না- তোর খাতাটাও আর তোকে ফিরিয়ে দেয়া হবে না... থাক তবে আমার কাছেই। শৈশবের একটা অংশ অন্তত থাকুক আমার কাছে... ইতি...
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ আক্তারুজ্জামান
আমাদের গ্রামের পুকুর পারে শতবর্ষী একটা বকুল গাছ ছিল| কালের কুঠারাঘাতে সে গাছটা আর নেই ওখানটায় গিয়ে দাড়ালে যেমনটা লাগে আপনার লেখাটা পড়েও আজ সেই রকম লাগলো.......
মিজানুর রহমান রানা
ইসরাত, আপনার চিঠিটা পড়ে খুব ভালো লাগলো। চিঠি হলেও সাহিত্যের পর্যায়ে তা নিয়ে এসেছেন। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আজ আমি প্রচণ্ডধরনের মাথা ব্যথায় আক্রান্ত। বন্ধু একটু দোয়া করুন।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।