বাজান আমাগো মায় থাকলে আর ভিক্কা করন লাকতো না। তুমি তো রানতে পারনা আইজকা খামু কি ভাত নাই।কালকে রাইতে খাইনাই।ভাত খামু আমার খুব খিদা পাইছে আমার খুউব খিদা পাইছে বাজান। মিয়ার অটেল থাইকা রুটি আমার ভাল নাগে না।টাহা দিলেও আমাগো কাছে রুটি বেচতে চায়না ক্যামন দুর দুর কইরা তাড়াইয়া দেয় দেহনা।তুমিনা আগে কইতা বাজান,মায় সামনের বছর ফিরা আইব কো কোনদিন তো আইল না। এইবার থাম খেমতি দে বান্দির পোলা। অইযে ওই সাহেবের কাছে যা।ভিক্কা কর ভিক্কা না করলে খাবি কি? তর মার কতা আর কইবি না ওই মাগি একটা বেবসা। যাইয়া কি অইব দেয়না সাহেবেরা মানুষ ভালা না বাজান। আমি যেদিন সাহেব হমু কত টাহা ভিক্কা দিমু মানুষেরে। বান্দির পোলা সাহেব অইব যা তড়া কইরা যা।মায়ের লেহাজ পাইছস।আইজকা কোন টাহা উটে নাই বাদলের দিনে মানুষ খালি ঘুমায় আর পোলাও কুমরা খায়।ফকিরে ফকিরে ভইরা গেছে এই দেশডা। নও বাজান কলেজতে যাই কলেজে ভিক্কা করতে আমার ভালা নাগে।
২
এইযে দেহ দুই টাহা দিছে।কইছি বাজান দুইদিন ভাত খায়নাই। হ রে আইজকা ভাত খাইতে মন চাইছে।ভাতের খিদায় মনডা পুইড়া যায়।পুঁড়া কপাল দিনকে দিন ফকিরের সংখ্যা বাইরা যাইতাছে। বাজান তুমি মায়রে নিয়া আহ। তর মায় এহন বান্দি খাটে গতর ব্যাচে ওই মাগি আর আইব না।আমরা তো গরীব মানু ভিক্কা করি। ওর অহন মান ইজ্জত অইচে।গেটের দারুয়ান আর মালির কাছে রাইতে ইজ্জত বেইচা খায়।হেতে মাগির ইজ্জত যায়না।আমরা ভিক্কা করি এইডা মাগির ইজ্জতে বাজে। আমার ঘর করবি না তরে শয়তানে পাইছে মাগি বুঝবি একদিন। চল এহান থাইকা। বাজান মুন্সি তোমারে বকে ক্যান?মুন্সি মানু ভালা না বাজান আমারে মায় কইছে। তর মায় আরও ভালা না।তর মায়ের কতা আর কবিনা।আমাগোরে এমন রাইখ্যা মাগি অন্য মানু ধরছে। তোমার থিকা মুন্সি টাহা চায় ক্যান বাজান। মুন্সি না মায়রে কত টাহা দিত! চুপ কর হারামির বাচ্চা। আর কমু না বাজান আর কাইন্দ না বাজান।তোমার পায়ের গাও আর থকথকা হয়ে গ্যাচে। রক্ত আইচে। বাজান তুমি বহ আমি বাইন্দা দেই। এই পাও কাইটা হালা আর সহ্য অয় না। বোডঘরের সরকারি ডাকতর তোমারে অসুদ দিলো তুমিত খাইলানা।অসুদ খাইলে মানু আমাগো ভিক্কা দিবনা রে।দেহস না একটা টাহা দিতে ক্যামনে করে।ডাকতর কইলো আমরা খৃষ্টান অইলে আমাগো আর ভিক্কা করন লাগব না।বাজান আমরা খৃষ্টান অইনা ক্যান, আমরা কি মুসলমান? ওই যে ওই দিকে যা খালি কতা কয়। দিলো না বাজান। ভিক্কা করতে ভালা লাগেনা বাজান নও আমরা দালানের কাম নেই।তোমার পাও দেইখা আমার কানতে ইচ্ছা করে বাজান তুমি মইরা যাইবা বাজান। কান্দিস না চল বস্তিত চলে যাই আইজ ভাত রাইন্দা খামু আমার খুব খিদা পাইছে। চল যাইগা। সারাদিন ভিক্কা করলেও এ্যাকবার ভাত খাওনের টাহা অয়না বাচুম ক্যামনে! বাজান চলো আমরা বিদ্যাশ চইলা যাইগা। হা হা হা চল বস্তিত চল।
৩
দ খা। না বাজান তুমি আগে খাও। খুব ভাল হইছে বাজান। হ। বাজান তোমার লটারির টিকিটটা যদি মোল্লার ডাকাতরা না নিয়া যাইত আমারা বড়লোক হইতাম। ওই টাহা দিয়া দালান দেওয়া যাইত না বাজান? যাইত।আর কতা কইবি না খা।ওটা আমাগো নসিবে নাই।গরীবেরে ঠকাইয়া কে বড় হয় দেখসনাই কেমন করে ট্রাকের তলে পইরা মরল। বাজান একটা কতা কই? ক চলো আমরা গেরামে চইলা যাইগা।শহরতে আমার ভাল লাগেনা। গেরামে ম্যালা ভাত জমিত ধান অয়।গেরামেই তো ভালা।প্রেততেক দিন ভাত খাইতে পারুম। বাজান কালকে ভিক্কা করুম না । ক্যান? তুমি ভুইলা গ্যাছ।কালকা শ্যাখ মজিবরের খিচুরি দিবো।কতদিন খাইনাই আমি গুইনা রাখচি কাল ক্যা হুনছি বস্তিত সবাই কইছে।
(দলীয় কোন্দল ও তুমুল হট্টগোল উপর্যোপুরি গোলাগুলি মানুষ দিক্বিদিক)
জোড় হস্ত
মিথ্যা বলিব নাঃ আমি স্তব্ধ!!(গল্পে লেখকের কথা বলার অধিকার নাই,লেখকের অস্তিত্ত তার চরিত্র সমূহে বিলিন হবে এটাই আমার একান্ত ব্যক্তিগত চাওয়া) ক্রমিক নাম্বার দেওয়াটা আমার পছন্দ না, তাই পূর্ন নাম্বার দিতে পারলাম না, আফসোস!
সেলিনা ইসলাম
পেটের দায়ে অনেকে নিজের হাত পা নিজেই কেটে ফেলে জানতাম যদিও এটা ভন্ডামি কিন্তু দগদগে ঘা নিয়ে ভিক্ষা করা এবং সেই ঘা সেরে গেলে ভিক্ষা পাবে না বিধায় চিকিতসা না করা এটাকে কি বলব বুঝে পেলাম । তবে কষ্ট লেগেছে বাচ্চাটার কথা ভেবে বাবার কথা ভেবে । মা,বাবার প্রতি বাচ্চাটার ভালবাসা তো অন্ন দশটা বাচ্চার মত স্বাভাবিক কিন্তু নিজের গ্রামের প্রতি ভালবাসা বড়দেরকেও হার মানায় । পুরো গল্পটা একটা জীবন্ত চিত্র ।অসাধারন লিখনী শক্তি শুভকামনা
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।