নিরুপমা, কোথায় তুমি এখন ; কোথায় ? সেই কবে যে তুমি চলে গেছ। তবুও তো তোমার বিচরণ আছে। একটি দিনের জন্যেও কি আর ফিরে আসতে পারো না ! সর্বস্ব হারিয়ে এখন যে আমি নিঃস্ব প্রায় তুমিই বা কোন অতল গহ্বরে বাঁধা আছো কিংবা ফিরে আসার পথ কি ভুলে গেছ ? নাকি ধূসর অন্ধকারে ডুবে আছ। খুব, খু-উ-ব জানতে ইচ্ছে করে। আর কোনদিনই কি তুমি ফিরবে না ! কেন ফিরবে না ; কারণটা কি জানতে পারি না- ওগো ব্যর্থ দয়িতা !
এখন আমার মনের খোরাক, আমাদের পুষ্প- আর তোমার লেখা সেই কবিতা গুচ্ছ। ওরাই আমার হৃদয় দরজার কড়া নাড়ে মাঝে মাঝে মনে হয় বেশ হয়েছে- ফিরিয়ে কী লাভ ! যে গেছে সে তো আসবার নয়।
আমাদের পুষ্প ; এখন অনেক বড় হয়েছে মাকে সে খুঁজে ফেরে। অথচ এই আমি তার মাকে এনে দিতে পারিনি। এক মুহূর্তের জন্যেও না ! আচমকা কখনও বলে ওঠে, বাবা- ও বাবা ! আমার মা কোথায় ? মাকে তুমি এনে দাও না বাবা ! কোন ভাষা খুঁজে পাই না আমি। এমনকি দু\'ফোটা পানিও চোখে আনতে পারি না ওর মুখের দিকে চেয়ে। বলি এই তো আর কিছুদিন পরেই তোমার মা আসবে, মামণি ! ফ্যাল ফ্যাল করে মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে দৃষ্টি যেন আমার কষ্ট বোঝার চেষ্টা।
পুষ্পের কথা বলতেই তুমি একদিন খুব করে হেসেছিলে তখনও আমাদের পুষ্পের জন্ম হয়নি বলে। কী দুর্বার সে হাসি- কী নির্মল অভিপ্রায় সে হাসিতে দোল খাচ্ছিল ; কী লাজুক সে চাহনি ! দেখে মনে মনে আমিও অনেক হেসেছিলাম। আর সেই হাসি মাখা মুখ নিয়েই হঠাৎ তুমি নিজেকে সরিয়ে নিলে। আসলে তুমি পারো- আকাশ ছোঁয়ার মোহে তুমি বিভোর হলে। আচ্ছা, পুষ্পকে তোমার মনে পড়ে না ? আর কেনই বা মনে পড়বে তুমি যে এক পাষাণী দার। স্বার্থপরের মত তুমি যদি লুকিয়ে থাকতে পারো আমি কেন পারবো না নিজেকে গুটাতে। এখন বলবো তুমি মনকে ছিনিয়ে নিয়েছ তোমার নিজকে প্রকাশ করতে যখন তোমাকে শোভন-অশোভনের মাঝে দেখেছি তখন ভেবেছি, আমিই না হয় ভুল করেছিলাম নষ্ট ফুলের পরাগ মেখে। এই তো এখন বেশ আছি। ভাবাতে পারছি অন্যকে নিজের করে। আর যখন নিজেকে নিয়ে ভাবি-এভাবেই হয়তো বা একদিন আমিও হারিয়ে যাব অন্যের মাঝে হৃদয়ের মণি-কুঠিরে ; আপন বনে- নির্জনে যেখানে আর হারানোর ভয় থাকবে না স্বার্থপরতা থাকবে না ; থাকবে না কোন ছলনা- তাই ব্যর্থতাও গ্রাস করবে না কাউকে মর্ম আমার ঝলসে দেবে না কেউ অনল প্রবাহে ! সেই তারই প্রতীক্ষায় রয়েছি এই আমি। তখন মনে হয়- আমার যে পুষ্প আছে ও একদিন বড় হবে। অনেক বড়। তখন না হয় একবার ওকে দেখে যেও ! না'ই বা দেখা দিলে- ক্ষতি কী ! অন্তত তোমার পুষ্পকে দেখে যেও ! জানি ! তুমি ফিরবে না তোমার আমিত্ব থেকে তবে তোমার নিজকে তুমি বজায় রেখো ! কিন্তু তাও যে তুমি পারবে না , এও আমি ঢের জানি।
আজ আমি পুষ্পের মা-বাবা দুটোই ওকে ঘিরেই তো আমার সবকিছু প্রবহমান। কতটুকু পথ পাড়ি দিয়েছি তা এখনও জানিনা আরও কত ঋতু হয়তো পার করতে হবে এভাবে তাও ঠিক জানিনা- জানতেও চাই না। জানি- একদিন আমাদের পুষ্পও আমাকে ছেড়ে যাবে তারপরও যে আমি ওর বাবা আমারই রক্ত কণিকা মিশে আছে ওর দেহে হৃদয়ের স্পন্দনে, প্রতি শিরা-উপশিরায় আমার কণ্ঠ ধরে আসে-- আমি পারিনা তোমার মত হতে আমি হারাতে চাই না আমার পুষ্পকে। পুষ্পই তো আমার অনর্ঘ ঐশ্বর্য ! বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন তাই এভাবেই আমি বাঁচতে চাই, একজন বাবা হয়ে আমি কেবল পুষ্পের বাবা হয়েই থাকতে চাই। আর তুমি -- অদম্যকাল ধরে ভাল থেকো !
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
প্রজ্ঞা মৌসুমী
নামটা খুব সুন্দর। কবিতায় অন্যরকম বাবার গল্প পেলাম। কষ্টটা খুব সুন্দর তুলে ধরেছেন... পড়ে মনে খারাপ হচ্ছিল। বেশি ভালো লাগলো কবিতার ভেতর দিয়ে যেভাবে চরিত্রগুলা সৃষ্টি করেছেন। কাব্যিকভাবটা চাইলে কবিতায় আরও আনতে পারতেন। কিছু কিছু কথা মন ছুঁয়ে গেল... বিশেষ করে "অদম্যকাল ধরে ভাল থেকো"... কবির জন্য শুভকামনা
খোরশেদুল আলম
একদিকে সন্তানের কষ্ট অন্য দিকে বাবার দায়িত্ব। কবিতায় মা হারা সন্তান কে নিয়ে একজন বাবার সুন্দর গল্প। যে বাবা মা ও বাবার দায়িত্ব পালন করছে। চমৎকার কবিতা। শুভকামনা ।
সেলিনা ইসলাম
একজন পিতা কতটা গুরুত্ববহন করে একটা মাতৃহীন সন্তানের কাছে তা খুবই সাবলীল ভাবে তৃপ্তি ভরেই কাব্যকথায় তুলে ধরেছেন কবি -খুব ভাল লাগল শুভেচ্ছা কবি ।
Sujon
খুব সুন্দর ভাবে বাবা চরিত্র কে রুপায়ন করেছেন। মায়ের জন্য সন্তান পালন যে কত কষ্টের বাবা হযে তা উপলব্ধি করেছেন এই কবিতার মাধ্যমে.....................ধন্যবাদ..........
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“জানুয়ারী ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ জানুয়ারী, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।