জল, শব্দ এবং ভালোবাসার গল্প

ভালবাসি তোমায় (ফেব্রুয়ারী ২০১৪)

জলধারা মোহনা
  • ১৪
  • ৭৮
"ছেলেটি অনেক দূরের পথ পেরিয়ে
পা রাখে চেনা শহরের রাস্তায়..
মেয়েটি সেদিন ব্যস্ততার অভিনয়ে
ছটফট করে অস্থিরতায়!
অবশেষে একসাথে থাকা কিছুটা সময়,
বহুদিন পর ফিরে পাওয়া ভালোবাসার মেঘালয়!
ছেলেটি চোখ রাখে বিপরীতে থাকা পরিচিত চোখে..
সে চোখে আনন্দ রংধনু হয়ে কবিতার রঙ মাখে।
ছেলেটি জানে,
হাজার চোখের ভীড়েও সে ঠিকই
খুঁজে নিতে পারে
এই একটি মানবীর চোখ...."

এইটুকু লিখে থামলো মেয়েটি। তার অসম্ভব সুন্দর চোখের অবাধ্য জলের তোড়ে ভেসে গেলো কবিতার বাকি অংশ। ডায়েরির পাতায় গোটা গোটা অক্ষরে লেখা অসমাপ্ত কবিতার নীচের ফাকা জায়গায় চোখের জলে সমাপ্তি আঁকলো সে।

ধরে নেয়া যাক, মেয়েটির নাম জল আর ছেলেটির নাম শব্দ। শব্দের সাথে জলের পরিচয় হয়েছিলো অন্তর্জালের কোন মুখরিত এলাকায়। জল মেয়েটি ভীষণ ছটফটে, মুহূর্তে ছুটে চলে অন্তর্জাল আর বাস্তবতার আনাচে কানাচে। অন্তর্জালের নীল পৃথিবীতে অসংখ্য বন্ধুদের সাথে কথায় কথায় কেটে যেতো জলের প্রত্যেকদিন। একদিন হঠাত্‍ পরিচিত হলো জল আর শব্দ। চুপচাপ এককোনে থাকা শব্দের নিঃশব্দ পৃথিবীতে কথায় কথায় তুমুল আলোড়ন তুললো জল। জলের এঁকে দেওয়া এলোমেলো সব স্বপ্নকে চোখ বন্ধ করে দেখতো শব্দ। সেইসব স্বপ্নে কখনো প্রকৃতির রূপ, কখনো রূপকথার রাজ্য আবার কখনো জলের উপস্থিতিতে বহুদিনের ঘুম শেষে জেগে উঠতে লাগলো শব্দ। একটু একটু করে গভীরে যেতে থাকলো সম্পর্কের শিকড়। ওদের দুজনের সম্পর্ক ঠিক যেন বন্ধুত্বের নয়, আবার ভালোবাসারও নয়.. বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার মাঝখানে আটকে রইলো তাই।
তারপর একদিন রৌদ্রময় সকালবেলায় টিএসসির ব্যস্ততায় দেখা হলো দুজনের। বহুদূর থেকে দেখা করতে এসেছিল শব্দ। জল কলাপাতা রঙের পোশাকে অপেক্ষায় স্নান করছিল সেদিন। শব্দ দেরীতে আসায় প্রথম দেখার লজ্জা ঝেড়ে ফেলে তাকে বকাবকি করে অস্থির করে তুললো জল। তারপর একেকটা দিন একসাথে রিকশায় ঘোরা, ঘাসের উপর গল্প বোনা, চায়ের কাপে কবিতা লেখা, দ্বিধা নিয়ে হাতে হাত রাখা.. একটু একটু করে খুব কাছের মানুষ হয়ে গেলো তারা।
কোনদিন একে অন্যকে ভালোবাসি বলতে পারেনি ওরা দুজন, বলতেই চায়নি হয়তো। কারনটা যে কি কেউ জানে না..
হয়তোবা শব্দের নির্লিপ্ততা ও ভীরুতার কারনে, অথবা জলের দ্বিধা আর সিদ্ধান্তহীনতার কারনে, কিংবা দুজনেরই অনুভূতির অস্পষ্টতার কারনে।
ধীরে ধীরে সময় পেরিয়ে যেতে থাকলো। জলের চিন্তাভাবনা বদলে যাচ্ছিলো একটু একটু করে। নিজের চেয়েও বেশি ভাবতে শুরু করলো পরিবারের কথা। তারচেয়ে দ্রুত বদলে গেলো শব্দের আচরন। আগের চেয়েও বিচ্ছিন্ন ও নির্লিপ্ত হয়ে পড়ে সে। জলও সেই শীতল আচরনে ক্ষতবিক্ষত হতে হতে দূরে সরে যেতে থাকে। কখনো কখনো সেই আগের মত কাছে আসার চেষ্টা করে সে। কিন্তু শব্দের নির্লিপ্ততা আর জলের বিষন্নতা একাকার হয়ে তাদের দূরের মানুষ করে দেয়।

তারপর তারপর..
ছেলেটি আর কোনদিন বহুদূরের পথ পেরিয়ে মেয়েটিকে কিছুক্ষনের জন্য হলেও দেখতে আসেনি। নাহ.. আধুনিক প্রেমের গল্পের মতো ছেলেটি মারা যায়নি.. বরং বেঁচে আছে বহাল তবিয়তে! কে জানে, হয়তোবা অন্য কেউ এসেছে তার জীবনে। মেয়েটিও বেশ আছে তার নিজের পৃথিবীতে.. পরিবার, বন্ধুবান্ধব আর পড়ালেখা নিয়ে। তবে মাঝে মাঝে সবার কাছ থেকে কিছুক্ষনের জন্য একা হয়ে যায় সে। ছেলেটির দেওয়া কালো চুড়ি আর সাদা পাথরের আংটি হাতে নিয়ে আয়নার সামনে শুকনো চোখে পাথরের মত বসে থাকে মেয়েটি.. আয়নার ওপাশে তার প্রতিচ্ছবির চোখে বৃষ্টি নামে অঝোরে॥
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রেনেসাঁ সাহা দারূণ ভালো লাগল গল্পটি।
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
মোহাম্মদ সানাউল্লাহ্ বেশ ভাল লাগল চমৎকার গল্পটা ।
ভালো লাগেনি ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
তানি হক চমৎকার লাগলো আপুনি ! অনেক অনেক শুভকামনা রইল ।
ভালো লাগেনি ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মোস্তাক আহমেদ বেশ লাগল
ভালো লাগেনি ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
আল জাবিরী গল্প বেশ ভাল লেগেছে--
ভালো লাগেনি ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মোঃ আক্তারুজ্জামান ভালবাসা এবং কষ্ট .......... সুচিত্রিত হয়েছে। অনেক অনেক শুভ কামনা রইল ভাই।
ভালো লাগেনি ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
বশির আহমেদ সুন্দর খুব সুন্দর ।
ভালো লাগেনি ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মিছবাহ উদ্দিন রাজন সুন্দর কাব্যিক গল্প ।
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মিলন বনিক খুব সুন্দর অনুগল্প...শেষ হয়েও হইল না শেষ....খুব ভালো লাগলো....শুভকামনা.....
ভালো লাগেনি ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মামুন ম. আজিজ রিয়েলিটির এক টুকরো চিত্র......তেমন কাহিনী সবর্স্ব নয় কিন্তু কাব্য ঢং টানে পাঠক কে।
ভালো লাগেনি ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

১৪ জুলাই - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪