সরল সমীকরণ

সরলতা (অক্টোবর ২০১২)

মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন
  • ২৬
  • ৩৩
দেশের নামঃ পি.আর.এম.এম.বি.এল.সি- দ্যা পিপলস রিপাবলিক আফ মাদার মেরি ব্লেসড লবষ্টার ক্রিক।
আয়তনঃ ১৭৫.৭৭ বর্গ কি.মি. জনসংখ্যাঃ ৭৯,৭৪৫ জন।
ঘনত্বঃ ৪৫৩.৬৯/বর্গ কি.মি.।
রাজধানীঃ বোরজিও। দেশের সবচেয়ে বড় শহর, ৪৯,৯৩৭ জন।

সাংসদিয় গণতান্ত্রীক দেশ। সংসদের আসন সংখ্যা ত্রিশ। জনগণের পছন্দের তেইশজন আর বাকি সাতজন তেইশ জনের দ্বারা নির্বাচিত।

এটা ভাল। স্যাটেলাইটের ইমেজ থেকে কপি করা নিজের দেশের ফটোটা হাতে নিয়ে দেখতে দেখতে আপন মনে ভাবছিল হরটেক ভরমুঠ। এদেশের ডাকসাইটে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। সম্প্রতিকতম। দ্বিতীয়তম।

সে ছোট বেলায় কবে এদেশ ছেড়ে ইউরোপে গিয়েছিল, তা মনে করতে পারেনা। মাঝেমধ্যে কয়েকবার যে দেশে আসেনি তা নয়, তবে সেগুলো মনে হয় যেন স্বপ্নের ঘোরে কিছু একটা করা।

বোরজিও ছাড়া এদেশের বাকি অংশটা তার কাছে জংগলা মনে হয় । ম্যাপে এটাকে দেখলে দেখায় একটা চিংড়ি মাছের আকারে। লবষ্টার। সাগরে ভাসছে। কিন্তু মরা। অনবরত সাগরের পানির থাপড় খেয়ে চলেছে। জ্যান্ত হলে এটা নিশ্চয় সোজা হয়ে থাকত। ল্যাজটা আধা খাওয়া। দেহটা বাঁকা- হাতের পাঞ্জাটাকে আধমুঠো করলে যেমন হয়, অর্ধ গোলাকার। বেশির ভাগ ঠ্যাং আর দাঁড়ি টাড়ি হাওয়া হয়ে গেছে। আত্মরক্ষা আর আক্রমণের অস্ত্র করাতটার জায়গায় বিদঘুটে হাতুড়ি জাতীয় কিছু একটা, যেটা আবার বত্রিশ ডিগ্রির মত হেলে আছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হবার আগেও তিনি এটা ভালই জানতেন, হাতুড়িও একটা মারাত্মক অস্ত্র। মাথার দিক দিয়ে।

আর দেশটার নাম? দ্যা ...। কোন মানে হয় এই ধরণের একটা বিশাল নামের? পুরো দেশটা সাগরে ভাসা, কাজেই লবষ্টারে ঠাসা। শুধু পানিতে নামো, ফটাফট ধরো, প্রসেজ করো আর পেটে ভরো। তিনি প্রথম তিনটে পারেন না, কাজেই শেষেরটা গুণিতক ভাবে বাড়িয়ে দিয়ে সমতা রক্ষা করেন। লবষ্টার হরের খুবই প্রিয়, হরদম খেয়ে থাকেন। খাবার উপযুক্ত আকারে পেলেই হল। পৃথিবীর যেখানেই গিয়েছেন, খেয়েছেন। অবশ্য ইউরোপের বাইরে একমাত্র ইন্দোনেশিয়া ছাড়া আর কোন দেশে এখনো তার যাওয়ার সুযোগ হয়নি।

মাদার মেরি ব্লেসড- সেটা অবশ্যই। সবারই বি ব্লেসড হওয়া জরুরি।

কিন্তু ক্রিক? যে দেশে দেড়খানা- খুব বেশি হলে দুইখানা স্প্রিং, যারা বছরের ন’মাস শুকিয়ে থাকে সেই দেশের নামের সাথে ক্রিক? আর ক্রিক হলেও তাতে লবষ্টার থাকে না হাতি! শ্রিম্প থাকলেও থাকতে পারে। চিলি-লবষ্টার হলেও মুখের রুচীটা একটু বদলে নেওয়ার সুযোগ থাকত। একবারই মাত্র এক ইন্ডিয়ান রেস্তোরায় বেনেগালি রেসিপিতে রান্না চিলি-লব খাওয়ার লোভ দেখাতে গিয়ে... না, খুব একটা ক্ষতি হয়নি, শুধু স্যাম্পেনের পরিমাণটা একটু বাড়াতে হয়েছিল আর কিছুনা।

আথবা বার্লি-লবষ্টার।

বার্লিটা এদেশে ভালই হয়। না হলে হয়ত না খেয়ে মরত এদেশের মানুষ। তাছাড়া বার্লিনের সাথে কেমন একটা আত্মীয় আত্মীয় ভাব দেখা দিত। গম আর ভুট্টাও হয়। হওয়ার পরে মাঝে মাঝে সাগর পানি দিয়ে সব ঝেঁটিয়ে নিয়ে যায়, এটাই যা সমস্যা।

তবে পাহাড়ি এলাকার দিকে গ্রেপটা ভাল স্বাদের হয়, সেটা মানতেই হবে। আর সেটা থেকে যা হয়ে বোতল ভরা হয়ে টেবিলে এসে পৌছায় সেটার জন্য এদেশে থেকে যাওয়াটা দোষের কিছু নয়।

হাতের ফটোটা সামনের ওক কাঠের টেবিলে রেখে নিজেকে কাল চামড়ায় মোড়া বিশাল আরাম কেদারার গভীরে গুঁজে দিল। দফতর হিসাবে তাকে এই বিশাল রুমটা দেওয়া হয়েছে। ওয়েল ফারনিশড। চকচকে পালিশ করা বিশাল টেবিল। বিপরীত দিকে তার মুখোমুখি ছ’টা দারুণ ধরণের আরাম কেদারা। অবশ্য তারটার সাথে তুলনার উপযুক্ত নয়। বাম দিকের দেওয়াল ঘেসে দুই সেট সোফা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। সেদিকের দেওয়ালের প্রায় পুরোটাই কাঁচের। তার বাইরে একশ মিটারেরমত লালচে কাল রঙ্গের নানান আকারের বোল্ডারে ভরা একটা প্রান্তর উঁচুনিচু হয়ে সোজা সামনে এগিয়ে গিয়ে যেন ঝপ করে সাগরে নেমে পড়েছে। সেখানে লোহার নিচু রেলিং দেখা যাচ্ছে। তার পরে নীল পানির বিস্তার। সেটা শেষ হয়েছে ছাই রঙ্গা আকাশের প্রান্তে। আনেক দূরে ছোট কয়েকটা কালচে পাথর যেন পানির ভিতর থেকে মাথা উঁচু করে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
এটা দেখারমত কিছু না। তবে রেলিঙ্গে ভর দিয়ে ঘন্টার পর ঘণ্টা সাগরের ঢেউ দেখলেও হয়তো বিরক্তি আসবে না। আর মাঝে মধ্যে যখন পরিব্রাজক পাখির পাল বাতাশে ভর দিয়ে যেতে শুরু করে তখন মনে হয়না সেটা দেখা ছাড়া পৃথিবীতে আর কিছু দেখার থাকতে পারে। আর ঘড়ির ঘণ্টা ধরে যেটা মুগ্ধ হয়ে দেখা যেতে পারে সেটা হচ্ছে সূর্যাস্ত আর সেটার উদয়।তবে এই ঘরটা থেকে শুধু অস্তটাই দেখা যেতে পারে।

ডান দিকের দেয়ালের মাঝের দিকে কাঁচের পাল্লা লাগানো বিশাল কাঠের আলমারি। পুরোটাই বই দিয়ে ভরা। তার অবশ্য সেটার এখনো পাল্লা খুলে দেখার সময় হয়নি। যিনি স্থাপন করে গেছেন, তিনি নিশ্চয় তা করেছেন, কিন্তু...।

টেবিলটার বাম দিকে কোনার কাছে বুক সমান উঁচু একটা ফ্লাগ ষ্টাফের ডগায় জাতীয় পতাকাটা যেন জবুথবু হয়ে ঝুলছে। টেবিলের উপরে কয়েকটা সুন্দর পেপার ওয়েট থাকলেও কোন ফাইলের চিহ্ন নেই। ছোট একটা সুদৃশ্য বাস্কেটে কিছু কাপজ পত্র, আর একটা ছোট প্লাষ্টিকের ট্রেতে কলম পেন্সিল আর গোটা দুয়েক পেপার নাইফ।

হরের পিছনে দেওয়ালে নানান আকারের বেশ কিছু ফ্রেমে বাঁধানো ফটো টাঙ্গিয়ে রাখা হয়েছে। এগুলোর প্রায় সব কটিতেই নানান বয়সের একজন মানুষকে নানান ভঙ্গিমায় একা বা নানান জনের সাথে দেখা যাচ্ছে। হরের এর কোনটাকেই খুব একটা পরিচিত বলে মনে হয় না। তবে এর ভিতরের একটাতে মানুষটা একজন মহিলার পাশে দাঁড়ানো অবস্থায় আছে। মহিলা তাদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটা নয়-দশ বছর বয়সের ছেলের ঘাড়ে দুই হাত রেখে সোজাসুজি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে। মহিলার পরনে কাল গাউন আর সাদা ব্লাউজ। ঘাড়দুটোকে আর হয়ত পিঠের কিছুটা একটা ভাঁজ করা কাল স্কার্ফ জাতীয় কিছু দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। মাথায় একটা ফিতে লাগানো মেয়েলি টুপি। ইনি হরের খুবই পরিচিতা। জীবনের এই বত্রিশটা বছর তিনি তার সাথে আছেন। তার মা। মানুষটা তার জন্মদাতা, পিতা। ঠিক তিন মাস দুই দিন আগে এদেশের রীতি অনুযায়ী তাকে সাগরে সমাহিত করা হয়েছে। এই আসনটাতে মানুষটা এতদিন বসে এসেছে। এখন দুই মাস ধরে সে এটাতে বসছে। কিন্তু তার মনে হচ্ছে, আসনটা তাকে সাচ্ছন্দ দিতে পারছেনা। সে ইন্টারকমের দিকে হাত বাড়াল।
‘মারে?’
‘ইয়েস স্যার, আসছি।’ তার পিএর ধাতব কন্ঠস্বর যন্ত্রটার ভিতর দিয়ে বলল।

পঞ্চাশের কাছাকাছি বয়সের ইউরোপিও পিএ বিশাল কাঠের দরজা ফাঁক করে ভিতরে ঢুকল। পরনে ধূসর রঙ্গের নিঁখুত কাটিঙের স্যুট। চোখে গোল্ড ফ্রেমের চশমা, পায়ে ঝা চকচকে বিলেতি জুতা। গটগট করে এগিয়ে এলো টেবিলের কাছে। হর সোজা হয়ে টেবিলের দিকে কাছিয়ে এলো।

‘ইয়েস স্যার?’
‘আর তো এখানে থাকতে ভাল লাগছে না, হে।’ হাতের ইশারায় তাকে একটা চেয়ারে বসার ইঙ্গিত করে বলল।
‘অধীর হবেন না, স্যার,’ লোকটা বসতে বসতে বলল। ‘এক মাস আগেই তো সাত দিনের জন্য ঘুরে এলেন। আপনাকে এত সুন্দর একটা আফিস দেওয়া হয়েছে। ডিফেন্স মিনিষ্টার। আপনাকে প্রথমে কাজ দেখিয়ে এদের আস্থা অর্জন করতে হবে। তারপরে...।’
‘আহ!’ মুখের সামনে ডান হাতের একটা ঝাঁকি দিয়ে বলল। ‘ডিফেন্স মিনিষ্টার। ডিফেন্ড করার কোন ইয়ে আছে এখানে? একশ নটিক্যাল মাইলের ভিতরে একটা কাক পক্ষীর বাসা নেই। চারিদিকে পানি পানি আর পানি। কী কাজ দেখানো যেতে পারে এখানে? আর খাওয়া দাওয়া? ডিজগাষ্টিং।’
‘স্যার,’ পিএ একটুও বিব্রত না হয়ে বলল। ‘আপনি একজন সরল মানুষ। সরলতা জনপ্রিয়তা এনে দিতে পারে। কিন্তু সম্পদ কখনই নয়।’ সে একটু থেমে হরের মুখের ভাব লক্ষ করল। ‘সরলতা বরং সম্পদ নষ্ট হতে সাহায্য করে। আপনার পিতা আপনার জন্য যে সম্পদ রেখে গেছেন, আপনাকে সেটাকে নষ্ট নয়, বরং বাড়িয়ে তুলতে হবে। আপনার পিতা একজন বুদ্ধিমান আর চালাক মানুষ ছিলেন। আর আপনার মা একজন সরল সোজা মানুষ। আপনি তারমত অন্তর পেয়েছেন, আপনার পিতারমত নয়।‘ সে আবার হরের মুখের দিকে তাকাল। ‘আপনার পিতার উচিত ছিল, ইউরোপের উঁচু বংশের মাদামকে বিবাহ না করে এদেশের উপযুক্ত কোন মহিলাকে ঘরে আনা...।‘

‘তাহলে আমি কার সন্তান হতাম? আমার বাবার, না আমার বর্তমান মায়ের?’ সে কিছুটা ঝাঁজের সাথে তাকে বাধা দিয়ে জানতে চাইল। এই বাচাল হতভাগাটার তার পারিবারিক বিষয়ে কথা বলাটা হরের একেবারেই অপছন্দ। কিন্তু তার ব্যবসা বানিজ্য থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুই এর নিয়ন্ত্রণে। একে খাতির করে চলা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। কীভাবে অর্থ কামাতে হয়, সেটা এ তাকে দেখিয়ে দিয়েছে। আর সত্যি বলতে কি, সে নিজে যেটা ধারণা করতে পারেনি, তারচেয়েও বেশি সম্পদের মালিক বানিয়ে দিয়েছে। তবে এখানে একটা কিন্তুর কাঁটার খচখচানি তাকে যন্ত্রনাও দিয়ে চলেছে...।

কিন্তু আর কিছু বলতে পারার আগেই তাকে মুখ উঁচু করে সামনের দিকে তাকাতে হল। বিশাল দরজারটার প্রায় পুরোটাই হাট করে খুলে গেল। সেখানে এসে দাঁড়িয়েছে একজন সুটাম দেহী পৌঢ়। সে এক হাত দিয়ে কয়েক মুহূর্ত কপাটটা ঠেলে ধরে রেখে চোখ মিটমিট করে তাকিয়ে থাকল। মাথায় কাউবয় হ্যাট, পরনে রংচটা ডেনিম আর পায়ে ধূলি ধূসরিত হাই বুট।মারে অত্যান্ত বিরক্তির সাথে পিছন ফিরে তাকাল। কিন্তু প্রায় সাথেসাথেই ছিটকে উঠে দাঁড়াল।

‘প্রাইম মিনিষ্টার, স্যার!’ সে উঠে দরজার দিকে এগিয়ে গেল। কিন্তু প্রাইম মিনিষ্টার তাকিয়ে আছে হরের দিকে।
‘কেমন আছো, মাই বয়?’ তার মুখে আনাবিল হাসি ফুটে উঠেছে। সে দ্রুত এগিয়ে এল।
হর চিনতে পেরেছে, লোকটা তার বাবার বড়ভাই। সে উঠে দাঁড়াল।

‘তোমাদের ক্ষেতটাতে একটু কাজ করলাম,’ সে হরের কাঁধে মৃদু চাপড় দিয়ে আদর করল। ‘তোমার বাবা নেই, কিন্তু এটা তো ফেলে রাখা যায়না, কি বল?’ হর আমতা আমতা করে কিছু বলল। ‘তুমি বাবা, এবার আমাদের ভার নাও। আমাদের যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। তোমার বাবাকে নিজের হাতে...।’ সে একটু থেমে ঘরের চারিদিকটা তাকিয়ে দেখল। ‘তোমার ঘরে তো ফার্নিচার কিছুই দেখছি না? এডওয়ার্ডকে পাঠিয়ে দেব, ছবি দেখে পছন্দ করে এনে দিতে বলবে। তোমার কোন সমস্যা হচ্ছে না তো?’ হর মাথা নাড়ালো। ‘একটা অধিবেশন ডাকার দরকার। কিন্তু আমাদের ক্ষেতে কাজের চাপ এখন বেশি, সেখানেই পড়ে থাকতে হচ্ছে। তুমি এসেছো, সময় এবার একটা বের করতেই হচ্ছে। অনেক দিন হয়ে গেল...।’

...বৃটিশ এ দেশটা প্রায় আড়াই’শ বছর নিজের অধীকারে রেখেছিল। এ দেশ থেকে তারা খুব একটা কিছু নিয়ে যেতে পারেনি, কারণ, এদেশে ছিলই বা কী? বনজ সম্পদের ভিতরে উত্তরাঞ্চলের পাইন সিডার আর এই ধরণের কয়েক জাতের গাছ আছে। আর আছে বুনো আপেল গাছ। কিন্তু দূরত্বের কারণে টিম্বার মিম্বার টেনে নিয়ে যাওয়াটাতে তারা লাভের কিছু দেখেনি।

ছোটখাট কয়েকটা কোবাল্ট আর আয়রনের খনির সন্ধান পাওয়া গেলেও খরচের দিকটা হিসাব করে তারা প্রথম দিকে এগুলো নিয়ে মাথা ঘামায়নি। তবে শেষের দিকে এসে দুটো খনিতে কাজ শুরু করেছিল। সেগুলোতে এখনো কাজ চলছে। এগুলো এখন এদেশের মালিকানায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যবসার ক্ষেত্রটার দেখাশোনার ভার এখনো বৃটিশদের হাতে। সে দেশে কিছু কল কারখানা এই উপলক্ষে স্থাপন করা হয়েছিল যার মালিকানা এখন এদের। এখানকার অর্থ জমা হচ্ছে সেখানকার ব্যাংকে। চিন্তার কিচু নেই, চাহিবা মাত্র চাহিদা মিটাতে তারা সদা প্রস্তুত। কিন্তু বিনা কারণে চাওয়ার দরকারটা কী? এদেশের মানুষের পেটের চাহিদার জন্য মাটি- হোক না সেটা পাথুরে- আর সগর রয়েছে। শখের খরচ মেটানোর জন্য সাগর ভরা মাছ। ধরো, জাহাজে ভরো আর শখ মেটাও।

দেশের দক্ষিণ এলাকাটা উত্তরের তুলনায় অনেক নিচু। সমুদ্র সমতল থেকে মাত্র কয়েক মিটার উঁচুতে হবে। এদিকের মোটামুটি সমতল ভূমিতে দেশের চাষাবাদের প্রায় নব্বুই ভাগ হয়ে থাকে। একমাত্র এদিকেই সি-ফ্লোর ঢালু ভাবে পানির নিচে দিয়ে মাইল খানেক এগিয়ে গেছে। আর মাত্র কয়েক বছর আগে প্রাক্তন শাসন কর্তাদের সহযোগিতায় একটা অফ-শোর পেট্রোল উত্তেলন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। যুদ্ধকালিন কাজের প্রয়োজনে অনেক আগে থেকেই একটা এয়ার ষ্ট্রিপ ছিল। সেটাকে অবলম্বন করে ক্ষুদে একটা এয়ার পোর্ট গড়ে তোলা হয়েছে। সম্বলের মধ্যে দুটো সিপ্লেন। তাদের দৌড় সবচেয়ে কাছের উন্নত প্রতিবেশী ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত। সেটাও নিয়মিত নয়, কেউ ভাড়া করলে তবেই। আর সেটা ঘটে থাকে ন’মাসে-ছমাসে। গোটা দশেক ওসেন গোইং শিপ আছে, আটটাই চাটাড।

নিজেদের কাছ থেকে পৃথিবীর এই দূরতম প্রান্তে বৃটিশদের আস্তানা গড়ার কারণ অর্থনৈতীক ছিল্ না, সেটা ছিল রাজনৈতীক। নিজেদের প্রাধান্য ঠিক রাখার জন্য তাদের একটা ঘাটির দরকার ছিল। বিশেষ করে মহাযুদ্ধের সময় তারা এরফলে ভাল লাভবান হতে পেরেছিল। সেটা তারা ভোলেনি। আগে তারা যা করুক না করুক, এদেশের সরল সোজা মানুষদের সাথে তাদের আচরণ এখন খুশি হওয়ারমত।

...স্যান্ডস উইলিয়াম মারে, একজন ষ্কটিশ এরিষ্টক্যাট। ক্যাটের কিছুটা চারিত্রিক বৈশিষ্ট তার ভিতরে দেখা যায় বলে মনে হতে পারে। বছর ছয়েক আগে হরের শিক্ষা জীবনের শেষের দিকে দু’জনের শুভ মিলন। এক বছরের ভিতরে হরের সমস্ত দায় দাযিত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেওয়া, আর চার বছরের ভিতরেই হরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে দেওয়ার পেছনে ইনি।

মারে তাকে তার মানষিকতার নৈতিক ‘উন্নতি’র জন্য একজন ‘এপ্লাইড’ অংকবিদের কাছে নিয়ে গেছিল। ইনি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন না, তিনি উন্নতমনাদের ব্যবহারিক অংক শেখান। হরের জন্মগত দিক দিয়ে মানষিকতার সাথে সরলতা ঘটিত বদ পদার্থ মিশে থাকার কারণে এটা আবশ্যিক হয়ে পড়েছিল...।

‘...আপনাদের নিজেদের যে অর্থ বৃটেনে জমা হয়েছে আর হচ্ছে, তার উপরে একমাত্র আপনাদেরই অধীকার আছে, আর কারো নয়।‘ সে হরকে বুঝিয়েছিল। ‘এটা ফেলে রাখা বা নিজ প্রয়োজনে ব্যবহার করার রাইট ‘আপনার’ আছে।‘
‘হ্যা, সেটা আছে,’ হর জবাব দিয়েছিল। ‘আমাদের, আমার দেশের সব মানুষের।’
‘হ্যা, সেটা ঠিক। কিন্তু আর কারো যখন প্রয়োজন হচ্ছেনা, তখন আপনাকে একাই এগিয়ে আসতে হবে।’
‘কিন্তু আমারও তো কোন প্রয়োজন দেখছিনা।’
‘এখানে আপনাকে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। উন্নতি করতে হয়ে। আপনার উন্নতি মানেই আপনার দেশের উন্নতি। আপনার কিছু হওয়া মানেই দেশের কিছু হওয়া। আর দেশের মানেই দেশের সবার।’

হরের কাছে মনে হল, এটাতে কিছুটা যুক্তি আছে। এই দেশটা তার খুবই পছন্দের। এটাকে ছেড়ে তার নিজের দেশের নির্বাসনে ফিরে যাওয়ার কথা চিন্তা করলেই বুক কাঁপতে শুরু করে। এখানে তার প্রতিষ্ঠা হবে, সম্পদ হবে সেটা তো তার মনের কথা। যা কিছু হোকনা কেন, সে তো আর নিজের দেশকে ভুলে যাচ্ছেনা। তার কিছু হলে সেটা তার দেশেরও উপকারে আসবে। আর নিজের কিছু না থাকলে দেশেরই বা সেবা করার সুযোগ পাবে কী করে? তার দেশ থেকে প্রতি বছর চারজন করে সরকারের আমন্ত্রণে শিক্ষা লাভের জন্যা এদেশে আসছে। তাদের সাহায্যের দরকার হতে পারে। পরে কী হবে না হবে, এখন তার নিজের (আর মায়ের জন্যও বটে) একটা বাড়ির প্রয়োজন। ব্যাসলে রোডে সে একটা বাড়ি দেখেছে, যেটা তার মনেরমত। সেটা বিক্রী হবে। সে সেটা কেনার কথা চিন্তাও করতে পারে না। কিন্তু সেটা কী একেবারেই অসম্ভব? তার দেশের এত অর্থ এখানে পড়ে আছে (আসলে কত, সেটা তার জানা নেই), কাজেই হয়ত...।

মারে খুব মনোযোগের সাথে তার মুখের ভাব লক্ষ করছিল। তার মনে হল, ডাল কিছুটা গলেছে, কিন্তু পুরোটা গলতে সময় লাগবে। সময়ের বৃদ্ধি মানেই জটিলতার বাড়াবাড়ি। কাজেই ঘুঁটনি ব্যবহার করতে হবে। এপ্লাইড ম্যাথামে...।

ছোট, কিন্তু রূচিস্মমত সুন্দর করে সাজানো একটা ঘরে তাদেরকে কয়েক মিনিটের জন্য অপেক্ষা করতে হল। সে সময়টুকু তারা সোফার নরম গদিতে দেহের অর্ধেকটা ঢুবিয়ে দিয়ে দেয়ালে টাঙ্গানো নামি শিল্পীদের দামি ছবি দেখে পার করল।

তারপরে সুবেশী এটেনডেন্ট মহিলা তাদের যে ঘরে নিয়ে গেল, সেটাও এটার মত ছোট। এই ঘরে ঝকঝকে সাদা দেয়ালে একটা সূতো পর্যন্ত ঝোলানো নেই। দুই সারিতে ষোলটা চেয়ার, প্রতিটার সামনে একটা করে ছোট ডেস্ক। প্রতিটা ডেস্কের উপরে একগোছা ফুলস্কেপ সাদা কাগজ, একটা কলম, একটা পেন্সিল আর একটা ক্যালকুলেটার। ক্লাস রুম। কিন্তু চেয়ারগুলোর প্রতিটাই দামি চামড়ায় মোড়া আরাম কেদারা। ইচ্ছা করলে হাত পা ছড়িয়ে আরম করে ঘুমানো যেতে পারে। তবে ঘণ্টায় দুইশ পাউন্ড করে ফি দিয়ে এখানে এসে ঘুমিয়ে যাওয়াটা হয়তো খুব একটা লাভজনক কিছু হবেনা।

এগুলোর সামনে ফুট দশেক্ দুরে একটা ডায়াস। সেটার উপরে একটা ডেস্ক আর একটা চেয়ার। তার পিছনে দেওয়ালের গায়ে মিটার দুয়েক উঁচুতে একটা পঞ্চাশ ইঞ্চি এলসিডি মনিটর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। সেটার উপরে মাঝামাঝি একটা গোলকার সাদা দোয়াল ঘড়ি। ডেস্কের উপরে ছোট একটা ল্যাপটপ ছাড়া আর কিছুই নেই। সেটা নিয়ে আমাদের আংকবিদ কিছু একটা করছিল। এরা ঢুকতেই সে এগিয়ে এসে একে একে হাত মিলাল।
‘উইলি,’ সে বলল।তারপরে সামনের সারির মাঝের চেয়ার দুটো দেখিয়ে বসতে অনুরোধ করল। তারা বসল। সে ফিরে গিয়ে নিজের চেয়ারে বসে ল্যাপটপটা কাছে টেনে নিল।

‘আপনাদের হাতে এক ঘণ্টা সময় আছে,’ সে কিবোর্ডে আঙ্গুলের খোঁচা দিয়ে বলল। মনিটরটা উজ্জ্বল হয়ে উঠল, কিন্তু সেটাতে কোন কিছু ফুটে উঠলনা। ‘আশা করি এর ভিতরেই আপনাদের সমস্যার সমাধান পেয়ে যেতে পারবেন। যদি এর বেশি সময় প্রয়োজন হয়, তাহলে আপনাদেরকে আবার এপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে, তবে সেটা এখন থেকে তিন ঘণ্টার আগে সম্ভব হবে না।’ সে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাদের দিকে তাকাল। হর মারের দিকে তাকাল, কিন্তু কেউ কিছু বলল না।

‘তাহলে আমরা শুরু করি। আপনাদের সমস্যাটা বলবেন, প্লিজ।’
আবার হর মারের দিকে তাকাল।

‘আমরা একটা বাড়ি কিনতে চাই,’ মারে ডেস্কে দুই হাত রেখে সামনে ঝুঁকে বলল।
‘হু।’ উইলি বোতাম টিপতে টিপতে বলল। সাদা স্কিনে ফুটে উঠতে শুরু করল...।
‘সেই সাথে একটা ফ্যাক্টরি, মানে ...।’
‘একটা ফ্যাক্টরি।’ স্কিনে সেটাও যুক্ত হল। ‘মূল্য?’
‘বাড়ি ৫,৫৫,০০০ পাউন্ড, ফ্যাক্টরি ২০,০০,০০০ থেকে ২৫,০০,০০০।’
‘বেশিটা ধরে নেওয়া যাক।’
ইকুয়েশন৯৩২১।
একটা বাড়ি + একটা ফ্যাক্টরি = ৫,৫৫,০০০ + ২৫,০০,০০০।
‘হাতে আছে?’
’১৫,০০,০০০।’ মারে বলল আর হর কিছুটা বিস্মিত ভাবে মুখ তুলে তার দিকে তাকাল।
ডান পক্ষে সেটা দেখানো হল।
‘দেশের জনসংখ্যা?’
‘প্রায়...।‘
‘সম্পদশালী?’
‘প্রায় ৪০%।’
’১৫,৫৫,০০০/৩১,৮০০= ৪৮.৯০ পাউন্ড মাথা পিছু।’ কম্পিউটার স্কিনে একটা ক্যালকুলেটরে হিসাব করে বলল। ‘ধরা যাক এর অর্ধেকের কাছ থেকে অর্থ বের করা যেতে পারে। তাহলে ৪৮.৯০ * ২ = ৯৭.৮ পাউন্ড মাথা পিছু।’
‘কিন্তু সেটা কেমন ভাবে সম্ভব?’ হরের মনে হচ্ছে, সে স্বপ্ন দেখছে।
‘শেয়ার,’ উইলি বলল। ‘দুটো ফ্যাক্টরির জন্য ’১৫,৫৫,০০০ * ২ = ৩১,১০,০০০ পাউন্ডের শেয়ার ছড়া হবে?’
‘কী ী ী ী!’ হর আঁতকে উঠল।

‘কাগজে কলমে। আপনার মূলধন দেখানো হবে ’১৫,৫৫,০০০ পাউন্ড।’
‘তারা দেখতে চাইবেনা যে, ফ্যাক্টরির কাজ চলছে বা শেষ হয়েছে?’
‘তাদেরকে বছরে বছরে লাভ দেওয়া হতে থাকবে। তাদের হাতে শেয়ারের কাগজ থাকবে। তারা জানবে, যে কোন মুহূর্তে তারা সেই কাগজের বদলে অর্থ ফেরত পাবে। যেটা তারা পেতে পারে অন্য কারো কাছে সেল করে। তাহলে তারা দেখার ঝামেলায় যেতে চাইবে কেন? তারা জানে, ফ্যাক্টরি না থাকলে লাভ আসবে কোথা থেকে?’
‘লাভ আসবে কোথা থেকে?’
‘মার্জিন ১৫,৫৫,০০০ পাউন্ড থেকে। এর যে অংশটা ব্যাংকে রাখবেন সেটা থেকেও আপনি লাভ পাবেন।’
‘আমি এটা পারব না।’ হর কোনমতে উচ্চারণ করল। তার মনের চোখে ঘোড়ায়টানা লাঙ্গলের পিছনে থেকে জমিচাষে রত দেশের ডিফেন্স মি্নিষ্টারকে দেখা গেল। তার হাতের দেড়ফুটি গাছের ডালটার আঘাত সত্যিই সে যেন নিজের পিঠে অনুভব করতে শুরু করেছে।
‘অবশ্যই আপনি এটা পারবেন না।‘ উইলি বলল। ‘পারলেও এটা করতে যাবেন না।’
‘তাহলে?’
‘আপনার নিযুক্ত লোকের নিযুক্ত লোকের নিযুক্ত লোকেরা সরাসরি এটা করবে।’
‘য়্যা?’ হর তো বটেই, মারেকেও হতভম্ব দেখালো।
‘তৃতীয় বা চতুর্থ স্তরের লোকেরা এটা করবে। তারা আপনাকে চিনবেও না।’
‘ভাল,’ হরের কন্ঠস্বরে হতাশা নাকি আশা বোঝা গেলনা।
‘হ্যা, ভালই,’ উইলি বলল। ‘তাহলে চূড়ান্ত ইকুয়েশনটা এভাবে হতে পারে...।’ সে বোতাম টিপে যেতে থাকল।
একটা বাড়ি + একটা ফ্যাক্টরি = (-)ব্যাংক ইন্টারেষ্ট (–)মিসলেনিয়ারস। মনিটরে দেখা গেল।
‘মিসলেনিয়ারস?’
‘ডিভিডেন্ট। ব্রাইব। তাছাড়া প্রয়োজনে গুম বা খুনের জন্য দরকার হতে পারে।’
হর শিউরে উঠল।
‘যদি দেশে আর না ফেরার ইচ্ছা থাকে তাহলে এটাও হতে পারে...।’
একটা বাড়ি + একটা ফ্যাক্টরি + শেয়ার এমাউন্ট + ব্যাংক ইন্টারেষ্ট = (-)মিসলেনিয়ারস।
‘একটা বিকল্প আছে।’ এবার মুখ খুলল মারে।
‘হ্যা?’
‘সরকারি তহবিলের কিছু অংশ এখানে সঞ্চিত আছে...।’
‘পরিমান?’
‘বিশটা মিল হতে পারে।’
‘উঁচু পর্যায়ের কারো সাথে পরিচয়?’
‘হ্যা।’
‘দেশে আইন রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান কতটা সক্রিয়?’
‘সেই জাতীয় কিছু নেই।‘
‘সাংসদরা?’
‘কোন সমস্যা দেখা না দিলে কোন অধীবেশনও ডাকা হয়না। বেশিরভাগ সমস্যা ঘরোয়া ভাবে মেটানো হয়।‘
‘মন্ত্রী?’
‘সমস্যার কিছু নেই। বিশেষ করে দেশের বাইরের কোন কিছুর জন্য। বিদেশে যে ছাত্ররা আছে, তাদের উপরে ভার দেয়া হয়েছে।’

...স্বভাবতই অর্থটা পেয়ে গেছে তারা। বাড়ি কেনা হয়ে গেছে। ফ্যাক্টরিও হয়ে যাবে। হরের জানার কথা নয়, কিন্তু ঘটনাক্রমে জেনে গেছে, মারেও একটা বাড়ি কিনেছে। সেটা হরেরটার চাইতেও উত্তম। আর তার চেয়েও যেটা খারাপ, মারের সম্পদ বেড়ে চলেছে হরের সম্পদের সমান্তরালে। কে জানে হয়তো তার চেয়েও বেশি পরিমাণে। কীভাবে? মহান স্বর্গীয় ঈশ্বর জানেন। আর জানে মারে। কিন্তু তাকে মেরে ফেললেও কি সে সেটা তাকে জানাবে? মনে হয় না।

মারে ভুল বলেছিল। সরলতাও সম্পদ এনে দিতে পারে। কিন্তু অপচয় করে ফেলে যা এনে দেয় তার চেয়েও বেশি।
সমাপ্ত।
পূরোপুরি কাল্পনিক গল্প। বাস্তব কিছুর সাথে মিলে গেলে সেটা কাকতালীয়।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক অত্যন্ত ভিন্ন স্বাদের শিক্ষামুলক একটি গল্প..অনেক কিছু জানলাম সেই সাথে উপলব্দি হলো সদিচ্ছা থাকলে সবকিছুই নতুন ভাবে গড়ে তোলা সম্ভব...অনেক শুভ কামনা...
........পড়া আর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল।
মাহবুব খান প্রথম বুঝিনি গল্পটা কোনদিকে জাস্ছে / ভালোলাগলো / আপনার গল্পতে বেস চিন্তার খোরাক পেলাম
.......পড়া আর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আসলেও আমি চেয়েছি, সবাই চিন্তা করুক- দেশটাকে নিয়ে।
তানি হক দুর্দান্ত একটি গল্প ..খুব খুব ভালো লাগলো ..বর্ণনা .. গল্পের থিম . সব কিছুই মন কারা..আর পান্না ভাইয়ের মত আমিও ..সেই স্বপ্নের দীপ সেন্ট মেরিকে অনুভব করলাম যেন ...... (((তার বাইরে একশ মিটারেরমত লালচে কাল রঙ্গের নানান আকারের বোল্ডারে ভরা একটা প্রান্তর উঁচুনিচু হয়ে সোজা সামনে এগিয়ে গিয়ে যেন ঝপ করে সাগরে নেমে পড়েছে। সেখানে লোহার নিচু রেলিং দেখা যাচ্ছে। তার পরে নীল পানির বিস্তার। সেটা শেষ হয়েছে ছাই রঙ্গা আকাশের প্রান্তে। আনেক দূরে ছোট কয়েকটা কালচে পাথর যেন পানির ভিতর থেকে মাথা উঁচু করে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। )))..মুগ্ধ হবার মত ...... .সালাম আর সুভেচ্ছা ভাইয়াকে ...
.........বোনটা পড়েছে আর মন্তব্য করেছে এজন্য ধন্যবাদ। ভাল লাগাতে পেরেছি জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ তানি। ওয়ালাই কুমাস সালাম।
মোঃ সাইফুল্লাহ ভাল লাগলো গল্প।
.......ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগল। পড়া আর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
শিউলী আক্তার অনেক অনেক সুন্দর গল্প !
.........পড়া আর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
মামুন ম. আজিজ এত গভীর চিন্তা প্রসূত গল্প আপনার পক্ষেই সম্ভব। দারুন কল্পনা শক্তি। দারুন রিখেছেন। দারুন খোঁচা
.......ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল। ধন্যবাদ।
মোঃ আক্তারুজ্জামান পি.আর.এম.এম.বি.এল.সি- দেশের বাহারী নামটা দেখেই আমার মনে হয়েছে একটা দারুন কিছু ঘটিয়ে ছাড়বেন। গল্প পড়তে গেলে গল্পের চরিত্র পাঠকের সামনে জীবন্ত হয়ে উঠে কিন্তু এই গল্পে আপনার বর্ণনা শৈলীতে এতই মুগ্ধ হয়েছি যে আপনি আমার কাছে আর লেখক থাকেননি রীতিমত নায়ক হয়ে উঠেছেন। আপনার কাছ থেকে নিয়মিত এই রকম সুন্দর সুন্দর অনেক অনেক লেখা পাবো এই প্রত্যাশায়- অনেক অনেক শুভ কামনা।
............পড়া আর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমার কাছে বেশি আশা করবেন না, মনের ক্ষোভ থেকে কীভাবে যেন এটা হয়ে গেছে। তবুও যতটা পারি আপনাদের আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করে যাব।
আহমাদ মুকুল পড়বো পড়বো করে পড়া হয়নি আপনার গল্পটি।.....ভ্যাবচ্যাকা খাইয়ে দিলেন পুরোদস্তুর। প্রথম দিকে দ্বীপরাষ্ট্রের সৌন্দর্যে মগ্ন ছিলাম, তারপর লবস্টারের ম ম গন্ধ....‘মারে’এর ভাবগতিক দেখে ‘মা রে....’ বলে পলায়ন দশা! অংকবিদের ইকুয়েশন আর ‘মিসসেলিনিয়াস’...বাড়ি গাড়ি ফ্যাক্টরি-এর স্বপ্ন ভেঙে মিলিয়ে দেখি তলিয়ে যাওয়ার দিকে এগিয়ে চলা একটি ব-দ্বীপে নিজেই খাবি খাচ্ছি।...বেড়ে লিখেছেন ভাই!
.........পড়া আর চমতকার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। দেশটা হয়তো সত্যিই তলাবে না, কিছু একটা ঘটেই যাবে।
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ জম্পেশ একটা লেখা । খুব মজা পেলাম ওয়াহিদ ভাই । অভিনন্দন ও শুভকামনা আপনার জন্য ।
..........অনেক ধন্যবাদ। মজা দিতে পেরেছি জেনে ভাল লাগল।

০৪ জুলাই - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৫৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪