এত বড় কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন আমি কখনও হইনি। মনে হচ্ছে কষ্টগুলো যেন পাহাড়সম রূপ ধারণ করেছে যার ভার আমার পক্ষে বহর করা একবারেই অসম্ভব। অসীম অন্তরিক্ষের পথ বাতলে নেওয়া ছাড়া আর যে কোন পথ পাচ্ছি না স্নেহা । অথচ সুখকর স্মৃতিগুলো ছেড়ে যেতেও মন সায় দেয় না। একই গ্রামের উদোম গায়ের বন্ধু ছিলাম আমরা। কিন্তু বর্ষণমুখর এক পড়ন্ত বিকেলে তোমার উর্বশী রূপ দেখে আমি সম্পূর্ণরূপে বিচলিত হয়ে পড়ি। তারপর থেকে প্রতিদিন তোমার পথ চেয়ে প্রতীক্ষার প্রহর গুনতাম দীঘির পারে। তুমি কলসি কাঁখে জল নিতে আসতে আর আমি তোমাকে একটি করে গোলাপ ফুল দিতাম। গোলাপের একটি পাপড়িতে তোমার জন্য কিছু লিখে রাখতাম । উত্তরের অপেক্ষায় তোমার আশে-পাশে কত যে থেকেছি কিন্তু তুমি কোন উত্তর দিতে না। ভাবতাম ফুলগুলো তোমাকে তেমন আকর্ষণ করে না। তাই সরাসরি মনের কথা তোমাকে জানিয়েও দিলাম। তাতেও তুমি সাড়া দিলে না। ভাবলাম তোমার সামনে আর মুখ দেখাবো না। সেটা যে পারা গেল না তাতো তোমার জন্যই। এতদিনের সস্নেহে রক্ষিত ফুলগুলো নিয়ে তুমি যেদিন আমার কাছে এলে মনে হয়েছিল জীবনের সর্ব সুখ আমি পেয়ে গেছি। সুখ যে চিরন্তন নয় তাও ঢেঁড় বুঝতে পেরেছি। শহুরে চাচাতো বোনকে নিয়ে গ্রামের দৃশ্য অবলোকন করাতে তোমার চোখে আমি অপরাধী হয়ে গেলাম। গ্রামের উপভোগ্য পরিবেশ আর আমার মায়ের স্নেহ চাচাতো বোনাকে আঁকড়ে ধরল। ওর অনেকদিন গ্রামে থাকাটা তোমার কাছে আমাকে দূরে ঠেলে দিল। তুমি প্রতিশোধ স্পৃহায় চেয়ারম্যানের শহুরে ছেলের সাথে চলাফেরা শুরু করে দিলে। আমার কথা তোমার কানে যাওয়া তো দূরে থাক তোমার কাছেই ঘেষতে পারতাম না। প্রকৃতির মিঠেকড়া রোদে আমি যখন পুড়ছি, প্রাসাদের ভয়ঙ্কর আঁধারে শহুরে ছেলের বিয়ের প্ররোচনায় তোমর তখন সর্বনাশ হচ্ছে। আমার প্রতি তোমার ভুল ধারনা একসময় ভাঙল কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। শহুরে ছেলে তোমাকে নিয়ে আদিম খেলায় মত্ত। তুমি আমাকে সব খুলে বললে নির্দ্বিধায়। স্নেহা জানো, তারপর থেকে তোমার প্রতি আমার বিশ্বাস পরিপূর্ণতা পেয়েছে। আমি আর দেরি করিনি। তোমাকে বিয়ে করেই ঘরে তুলেছি। তোমাকে ছাড়া আমি যে কাউকে তোমার স্থানে বসাতে পারি না সেটা তুমি সেদিন বুঝতে পেরেছিলে। তোমার হৃদয়ে নিংড়ানো ভালোবাসাও আমাকে উজাড় করে দিয়েছ সেটাও আমি স্বীকার করি। চেয়ারম্যানের ছেলের প্রদর্শিত ভয়-ভীতি দূর করে জয়ী হতে পারলেও আজ আমি সত্যিই পরাজিত। বাবার পেশাটাকে বেছে নিয়ে ভালোভাবেই সংসার চালাচ্ছিলাম। জায়গা-সম্পত্তির পরিমাণও বাড়তে থাকল আমাদের। কিন্তু তোমার আর মা’র বিরূপ মনোভাব আমাকে অতিষ্ঠ করে তুলল। বিয়ের কয়েকমাস যেতেই এমন অবস্থা দাঁড়াল যে তোমরা কেউ কারও মুখ দেখা পর্যন্ত বন্ধ করে দিল কত বুঝালাম তাতেও কাজ হলো না তোমাদের। এক ছাদের নিচে থাকলে তোমাদের মার মুখ দেখতে হবে এ কেমন বিচার আল্লাহ? স্নেহা, বাপমরা ছেলেকে কত মানুষ করতে হয় তা শুধু আমার মা আর আল্লাই জানে। এমন মাকে আমি কষ্ট দিতে পারি বলো? তোমাকেও কি কম ভালবেসেছি, স্নেহা? তোমাদের দুখানা মরা মুখের চেয়ে এর নরাধমের আমারই মরাই অনেক শ্রেয়। মা'র প্রতি গভীর শ্রদ্ধা আর তোমার প্রতি অসীম ভালোবাসা দিয়ে বিদায় নিচ্ছি। আর হ্যাঁ, আমার অনাগত সন্তানটির প্রতি খেয়াল রেখো।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“ডিসেম্বর ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ ডিসেম্বর, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।