'বন্ধুত্ব' - এটা একটা সম্পর্ক মাত্র হলেও এই শব্দটাকে ছোটবেলা থেকেই অনেক শ্রদ্ধা করি। আর যার সাথে এই সম্পর্ক গড়ে ওঠে সে-ই বন্ধু। বন্ধু তৈরী হয় না, জন্ম নেয়। আর এ কথা ভেবেই জীবনের সবচেয়ে ভালো বন্ধু ভেবেছিলাম রোমানাকে। তার সাথে পঞ্চম শ্রেণী থেকে টানা দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার সুযোগ হয় আমার। তাকে কখনো সহপাঠী মনে করিনি বরং এর চেয়ে বেশি কিছু। সে-ই তো একবার বলেছিলো, ভালো বন্ধু জীবনেরর বড় সম্পদ। তার এই কথার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই মনে প্রাণে ভালো বন্ধু হিসেবে ঠাঁই দিয়েছিলাম তাকে। মাধ্যমিকে পড়ার সময় কোনো এক ক্লাসে থাকা অবস্থায় সেও বলেছিলো, ক্লাসে আমিই নাকি তার একমাত্র বন্ধু হওয়ার যোগ্য ছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে তার কথাকে আর বিশ্বাস করতে পারিনি।
২. দু'জনা যখন একই কলেজে পা রাখলাম- পাল্টে গেল রোমানা। কথা না বললেই নয়- এরকমভাবে কথা বলতে লাগলো। কিন্তু এটা তো তার কাছে কখনো আশা করিনি! ছোটবেলা থেকে যে মানুষটার সাথে মান-অভিমান, অভিযোগ, অনুযোগের মধ্যে দিয়ে সখ্যতা গড়ে উঠেছিলো, তার কাছে এরকম আচরণ কার-ই বা কাম্য হতে পারে? তাই আমার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হয়নি। তবে দিনদিন নিজেকে কেমন যেন একাকী মনে হতে লাগলো। মাঝে মাঝে এই ভেবে বুকের মাঝখানে একটা অপরিচিত ব্যথা চিন্চিন্ করতো। পরে অবশ্য নিজেকে সামলে নিয়েছিলাম যদিও বেশ সময় লেগেছিলো।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ে আর একসাথে পড়ার সুযোগ হলো না। সে চান্স পেয়ে ভর্তি হলো বুয়েটে। চলে গেল ঢাকায়। আর আমাকে পড়ে থাকতে হলো খুলনায়। ভালো একটা সাবজেক্টে আমারও পড়ার সুযোগ হওয়ায় না পাওয়ার হতাশা কিছুটা হলেও হ্রাস পেল। কলেজ জীবন শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখার পরও ভুলতে পারলাম না তাকে। তার কথা ভেবে মাঝে মাঝে বেশ খারাপ লাগতো। আমার কাছে তার মোবাইল নম্বর থাকার পরও পূর্বে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা মনে পড়লে কখনো ফোন দিতে হচ্ছে হতো না। কিন্তু শেষমেশ নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। কোনো একদিন তার কথা খুব বেশি মনে পড়তে লাগলো। স্বভাবসুলভ ভাবেই হারিয়ে গেলাম ছেলেবেলার কোনো এক মুহূর্তে। বালিশের পাশে রাখা ফোনটা হাতে নিলাম। অর্ধযুগ আগে শেষবারের মতো কথা হওয়া এক পরিচিতার কাছে ফোন দিলাম। অপর প্রান্ত থেকে 'কে' শব্দ ভেসে আসতেই বললাম, আমি..........। চিনতে পারলো না। কোথা থেকে বলছি সেটাও সুবোধ বালকের মতো বললাম। একই সাথে পড়াশুনা করেছি - এটাও তার কথার জের ধরে বলতে হলো আমাকে। কিন্তু এর পরেও যখন সে আমাকে চিনতে পারলো না , তখন নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অপরাধী মনে হলো। 'কেন ফোন দিলাম?'-এই একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে সারারাত ঘুমবিহীন কাটলো আমার। আর ভাবতে লাগলাম, মানুষ কতো সহজে বদলে যায়!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ আক্তারুজ্জামান
প্রাঞ্জল লেখা আমার খুব পছন্দ, আমার মনে হয় সবাই পছন্দ করেন| কাজেই আপনি বিষয় বস্তুকে গভীরতা দিয়ে লিখতে চেষ্টা করুন আপনি খুব ভালো করবেন বলে আমার বিশ্বাস|
Akther Hossain (আকাশ)
আপনার মত আমারও একটা বন্ধু ছিল অনেক দিন পরে আমিও তাকে ফোনে করেছিলাম তবে স আমাকে চিনতে পেরে ফোন বন্ধ করে দেয়ে আর কোনো দিন তার নম্বর খোলা পাইনি, জানিনা সেকি আমার বন্ধু ছিল না অন্যকিছু ................
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।