প্রায় শেষ মুহূর্তে- শ্রদ্ধার সবটুকু দেখানোর পর মানুষটাকে নতুন করে জানতে পেরে ব্যথিত হল মিলু। তাকে সে অনেক বড় ভেবেছিল। তার গাম্ভীর্য, মহত্ব মিলুর হৃদয় ছুঁয়ে যেত। অথচ এখন- অন্ধকারে চেনা হল তাকে। তার আলোর খোলসে ঢাকা কৃত্রিমতা পলকেই উবে গেল।
নির্জন ঘরে পরম নির্ভরতায় মানুষটার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল সে। হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে মানুষটা দানবের মত তাকে জাপটে ধরলো, কিছু বুঝে ওঠার আগেই বুকে হাত চালালো অবলীলায় এবং সেই বুক নিয়ে খেলতে এত জোরে চাপ দিল যে মিলুর মনে হল কোন ভোঁতা ছুড়ি দিয়ে ঘ্যাচর ঘ্যাচর করে বুকের উঁচু অংশটা কেটে ফেলতে চাইছে কেউ।
"উহ........." বলে ককিয়ে উঠলো সে। চিৎকার করার সাধ্য হল না- নিজের জন্য নয়, লোকটার মান-সম্মান বাঁচানো দরকার। কিন্তু আর কিছুক্ষণ এভাবে চাপতে থাকলে নিঃশেষ বন্ধ হয়ে মরে যাবে সে। শেষে নিরুপায় হয়ে হাত কামড়ে দিয়ে ওড়না সেখানে রেখেই ছুটে পালালো- সোজা নিজের ঘরে। ফুঁপিয়ে কাঁদলো বহুক্ষণ। নিজের অসহায়ত্বকে ধিক্কার দিল এবং স্বাভাবিকতার প্রলেপ দিয়ে ফিরে এল কাজে ব্যসত্দ হতে।
জামিলকে সে কখনোই এমন ভাবেনি, ভাবার সুযোগ পায়নি বা জামিলই দেয়নি। সুযোগ পেলে সবাই যখন তাকে ছুঁইতে চেয়েছে তখন জামিলই তাকে আগলে রেখেছে। ওরা যত গুলো ভাই- চাচাতো, জ্যাঠাতো- রাসত্দায় বেরুলে পুরো রাসত্দা ভরে যায়। এই ভাইয়েরা যখন মিলুকে নিজেদের স্বার্থে ঘায়েল চেয়েছে তখন জামিলই তাকে আশ্বস্থ করেছে- কথায় নয়, ভাবে। তবে কি সে এজন্যই যে তাকে বিশ্বসত্দ ভেবে যখন আর সবার সাথে দূরত্ব রেখে নিরাপদ কোথাও তারা কথা বলবে তখন জামিল তার ওপর ঝাপিয়ে পড়ে তাকে আগলে রাখার প্রতিদান নিতে চাইবে? আর ভাবতে পারলো না মিলু। আবার অঝোরে কান্না এল তার। হালকা হতে এখন এর বৃহত্তর পরিসরের প্রয়োজন হল।
শানত্দ এল, তাকে কাঁদতে দেখে চোখের পানি মুছে দেবার ছলে গাল টেনে দিল। তার দুঃখ হল না। এমন টানা-হেঁচড়াকেই সে জীবন ভেবেছিল, এটাতো তারই অংশ। কিন্তু জামিল যখন বোঝাল এটা স্বাভাবিকতার পরিপন্থি তখনই তো সে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করলো। অবশ্য ততদিনে তার নিজেকে একেবারেই বাঁচিয়ে রাখা সাধ্যাতীত হয়ে পড়েছিল।
মন স্থির রইলো না মিলুর, সারাক্ষণ দুঃস্বপ্ন তাড়া করলো। নিজেকে ধরে রাখার অর্থ খুঁজলো, পেলো না। কিন্তু দেহটাকে খুবলে খেতে যত কাক-শকুন ওত পেতে আছে সবার চাহিদা মেটানোর উপযোগিতা বা যৌক্তিকতা নেই মোটেও। নয়ন এসে ওড়না টেনে ধরল। দু'হাতে শক্ত করে মুখটা কাছে টেনে গালে কামড় দিতে গেল। মিলুর ইচ্ছে হল ওর মুখটাতে জোরছে একটা থাপ্পর কষে দেয়। কিন্তু তার মূর্খতা তাকে বাধা দিল। সে ভাবল, এই বুঝি স্বাভাবিকতা, সভ্যতা। আর এমন সভ্যতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সামর্থ সে রাখে কোথায়, কিভাবে?
এসব নতুন কিছু নয়, ধারাবাহিকতার দৃশ্যায়ন মাত্র। সে চায় না তাদের কোন ভাবে সুযোগ দিতে- তবু তার পদবী তাতে বাধ্য করে তাকে। যারা এসব করে কেউ তাদের ব্যাপারে নিশ্চিত ধারণা দূরে থাক সন্দেহ করতেও দ্বিধা বোধ করে। অতএব তার আক্রোশ নিরুপায় হয়ে তাকেই আষ্টে-পৃষ্টে বেধে রাখলো। শাহিন এসে ঘুর ঘুর করে সুযোগ পেয়ে পেছন দিক থেকে নাভীর নিচটা চেপে বললো, শুনেছি মেয়েদের এ জায়গাটা নাকি অসম্ভব নরম হয়, আসলে কি তাই? মিলু নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে তার বাহুতে শক্ত ভাবে বাঁধা পড়ে গেল। "এই ছাড়ো, ছাড়ো... ... ... ..., ভাবি এল বলে... ... ..." কাতর স্বরে বললো সে। কে শোনে কার কথা? হঠাৎ পাশে পদধ্বনির আশির্বাদে সেবারের মত মুক্তি পেল সে।
"ভালো কথায় আজকাল মান পাওয়া যায় না, তাই না? এত সাধছি তবু জল খসছে না... ... ... ।" আজাদের কথায় চমকে উঠলো মিলু। পেছন ফিরে চোখাচোখি হলে আবার হাঁটতে থাকলো। "কী হল? দাঁড়াও বলছি।" গম্ভীর কণ্ঠ আজাদের। "সেদিন কী বললাম? শুধু এক................." কথা শেষ হবার আগেই হনহনে হাঁটতে থাকলো মিলু। ছেলেটা বাইরে থেকে পড়াশোনা করে। একবার ফিরে মিলুকে দেখে তাকে ভাইয়ের কোন আত্মীয়ই ভেবেছিল। ভাব করতে এসে যখন বাড়ির কাজের চাপে তাকে ব্যসত্দ দেখল তখনই ভাবির কাছে জানতে চাইল তার পরিচয়। "কাজের মেয়ে" কথাটা শুরুতে সে মেনে নিতেই পারেনি। ভাবিকে বলে ফেলেছিল, এত সুন্দর মেয়েও "কাজের মেয়ে" হয়! সুন্দর মেয়ে বললেও কাজের মেয়ে বলে আর ভাব করতে আসেনি। সুযোগ সন্ধানে ব্যসত্দ হয়ে পড়েছে।
ছেলেটা ভীতু গোছের। সুযোগ পেলেও অন্যদের মত জড়িয়ে ধরতে পারেনি। একদিন সবার সামনে চুপ কথা বলতে যেয়ে কানে মুখ ঠেকিয়ে বলেছিল, "তোমকে একটা চুমু দেব।" মিলু ধেৎ বলে হেসে দিয়েছিল। সে হাসিতে চেয়ে থাকতে বাধ্য হয়েছিল আজাদ। এরপর থেকে তার আবদার মেটাতে এমন ঘ্যান ঘ্যান করা।
পাশের বাড়ির কাজের ছেলেটা প্রায়ই আসে। তার "ওপেন চ্যালেঞ্জ" মিলুকে সে বিয়ে করবেই- তা যে কোন মূল্যে। যদি কেলেঙ্কারি হয় তাতেও আপত্তি নেই তার। নিজেকে সুদর্শন জানে সে এবং মিলুর যোগ্য হতে এর চে' বেশি বৈশিষ্ট্য থাকতে হয় না বলেই মনে করে। এমন কি ভাবি শ্রেণীর সবার সামনে মিলুকে আজেবাজে ইংগিত দেয়। ভাবিরা শুধু পেছন ফেরা থাকলেই তাকে ছুঁয়ে দিতে চায়। চলতে পথে রাসত্দা সামান্য ফাকা পেলে প্রবল ঝুকি নিয়েও তাকে ছুঁয়ে দেয়, ধাক্কা মারে, পায়ে খোটা দিয়ে ফেলে দিতে যেয়ে পড়ার মুহূর্তে ধরে ফেলে তৃপ্ত হয়। বর্তমানে মিলুর সবচেয়ে বড় সংকট, অস্বসত্দি এই ছেলেটি।
সেই ছোটবেলা থেকে বড় রকম চাঁপা স্বভাবের মেয়ে সে। যা ঘটে তা তার মুখ থেকে অন্য কারো কানে যাওয়া এমন অসম্ভব যে সুযোগ সন্ধানীরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত নিরাপদ জেনেই আড়ালে আবডালে তাকে উত্যক্ত করতে মোটেই সংকোচ করে না। তার লজ্জাবোধও শাণিত- যদিও এখন ভেবে পায় না লজ্জাটা আসলে কার পাওয়া উচিত।
বিছানার সাথেই ভাঙ্গা জানালা। রাতে শুইতে ভয় হলেও কখনো বিপদ হয়নি। তাছাড়া ঘুমানোর পর সে নাই হয়েই থাকে। ঘুমের এত গভীরে যায় যে ঘুমের ডিপোতে তার পাহাড়াদাররাও নির্বিঘ্নে আয়েশ করতে পারে।
অস্বাভাবিক আঘাতে ঘুম ভাংলো মিলুর। আধ জাগরণে বুঝলো তার ওপর কেউ চেপে বসেছে। গা কেঁপে ঝড়ঝড়ে হলে বুঝলো একটা হাত নাভীর নিচে খেলা করছে। হাতটা লক্ষে পৌঁছতে সব বাধা অপসারিত করেছে। উত্তেজনায় আবার কেঁপে উঠলো শরীর। তবু প্রতিবাদী সে উঠে বসলো, নিশ্চিত হল হাতটা কোন জানোয়ারের নয়। খপ করে ধরে ফেললো ওটা। "কে তুমি? কী করছ এসব?" ফিসফিসিয়ে বললো সে। "বাইরে এসো। আমি জানি তুমি কি অবস্থায় আছ। অযথা কষ্ট পেয়ে কী লাভ.............." একই ভাবে বললো হাতওয়ালা দেহটা। মিলু কণ্ঠ বুঝতে পেল না। সখেদে বললো, "আমাকে শেষ করে দিলেই পারো............."
"আত্মাহুতি দেবে কে? অমৃত তুমি.......... অফুরান............. এত কৃপণ হওয়া কি সাজে?" জহির! ইসরে, পৃথিবীতে আর ভাল মানুষ নেই বুঝি। তারপর, প্রচন্ড ধাক্কায় জানালার কপাট বন্ধ করে দিল।
বিধাতার ওপর খুব রাগ হল তার। যে আলো বিলোবার নয় তা সংরক্ষণের সামর্থ দিলে না কেন? এত ঐশ্বর্য যদি আর কাউকেই না দিলে, যদি এমন পক্ষপাতদুষ্টই হলে তো আর সব উপকরণ- একটা বলয় দিতে বাধল কেন তোমার? নিজেতে সবার এত মোহ দিলে তো একটু ভালবাসা দিতে এত কার্পণ্য না করলে কি চলত না? মিলুর ভেতরটা ভালবাসা পেতে অস্থির হয়ে উঠলো। হৃদয়ে চর জাগলো আর তার ক্রমবিসত্দার এক সময় মরুভূমির রূপ নিল।
আবেদ সাহেব- গৃহকর্তা- লোকটাকে সবাই শ্রদ্ধা করে। বয়স এখন গড়াচ্ছে তার, তবু তারুণ্যে টগবগে। সুদর্শন, পৌরুষদীপ্ত- স্ত্রীটাও সুঠাম। এই লোকটার বুকের নিচে পড়ে হাসফাস করতে থাকলো মিলু। পৌরুষে পশুত্বের যোগ হওয়ায় বুকটাকে খেয়ে ফেলা ঘাসের মত করে দিতে চাইলো- থলথলে কিংবা সমতল। ক্ষুদ্রাকৃতির সে তাকে রুখবে কেমন করে? হাতির পিঠে ব্যাঙের লাথির মত তাকে প্রতিহত করতে চাইলো, ছটফট করলো, কেঁদে উঠলো। তাতে রক্ষা হল না। বাইরে লোকটার স্ত্রীর কণ্ঠ- অবশেষে অনেকবারের মত- এবারও তার খোলসকে মূর্ত করতে বাধ্য করল।
লতিফ মেয়ের বেতন নিতে এলো। মেয়ের সাথে কথা বলতে অসহায় পিতা তার করা ধারের ফিরিসত্দি তুলে ধরলো। বাবার মুখে চেয়ে টপটপ করে অশ্রু ফেলে মিলু। নরকপুরি থেকে বাড়ি ফেরার অপরিহার্য স্বপ্ন তার নিমিষেই ঝরে গেল। পেটের ভেতর অকথ্য সব অভিযোগ অনুযোগের কবর রচিত হল। বাবা ভাবলো মেয়ে তার ব্যাথায় ব্যথিত । কৃতজ্ঞতায় তার চোখেও অশ্রু ঝড়তে থাকলো।
হাজার দৃষ্টি ঘিরে থাকে তাকে। সব দৃষ্টিতেই তার ঘৃণা। এককভাবে কোন দৃষ্টিসীমায় সে ঠাই পেল না। কারো চোখেই নিরঙ্কুশ, নিঃস্বার্থ ঢুকতে পারলো না সে। এমন কোন চোখই পেল না যেখানে তার চোখ স্থির হতে পারে।
এ উপলব্ধি ক্ষণেক আগের। এই মাত্র যে দৃষ্টি তার চোখে পড়েছে তা হৃদয় ছুঁয়ে গেল। লজ্জাশীল, নম্র, ব্যতিক্রমি বিশেষত: বিশ্বাসী। আগে থেকেই ও দু'টো চোখে পড়ত। কিন্তু হৃদয় ছুঁল মাত্র এখনই এবং কোন যুক্তি তর্ক ছাড়াই তার গত জীবনের সব হিসেব ওলট পালট করে দিল।
বিনয়ী দৃষ্টিটা স্বপ্ন নিয়ে লুকোচুরি খেলতে থাকলো। শিক্ষিত, সব কিছুই শিল্পায়িত তার। এখন ও চোখে শুধুই চেয়ে থাকতে ইচ্ছে করে, সাহস হয় না। আবার নিজেকে গোটাতেও মন চায় না। প্রকৃত অবস্থা জানতে অনুসন্ধান চালাতে দেখে হৃদয়ের মরুভূমিতে ছায়া পড়েছে। আরো পাশে গেলে বোঝে ওটা তাবু। চারদিকে দৃষ্টির দেয়াল, একজনের দৃষ্টি, একটাই দৃষ্টি। তার পাশে সেই জন ঘুরঘুর করছে- ক্লানত্দ, পরিশ্রানত্দ। ভেতরে ঢুকছে না- সংকোচ, শংকা তাড়া করছে তাকেও। সেও ডাকতে পাচ্ছেনা। ভুল বুঝে যদি দূরে সরে যায়। তাবুটা ভেঙ্গে পড়ে। ভেতরের হাহাকারের উপশম হবে কি করে? তাই শুধু অপেক্ষায় থাকলো।
পাশের লোকটাকে জামিল ভেবে কেঁপে উঠলো মিলু। "ভয় পেলে?" ও পক্ষের জিজ্ঞাসা। "না না............ এমনিতেই.............." উভয় পক্ষ চুপ, অনেকক্ষণ।
"মিলু" গম্ভীর, আবেগে সিক্ত কণ্ঠ বেজে উঠলো, "তুমি খুব সুন্দর। এত সুন্দর যে, সত্যি বলতে কি, কর্মস্থলের হাজার শিক্ষিত, সুন্দরী মেয়ে যাকে আকৃষ্ট করতে পারেনি সেই আমাকে তুমি, মাত্র ক'দিনেই অদৃশ্য বাধনে বেধে ফেলেছ।.................... আমি তোমার সব অবস্থা জানি। আমার ইচ্ছেও করে- মাঝে মাঝে- তোমাকে তাদের মত খুবলে খুবলে খাবার চেষ্টা করি এবং তা পারিও................ কিন্তু এইসব অনৈতিক কামনাই আমাকে শাসন করে, দ্যর্থহীন ভাবে জানিয়ে দেয়, আমি তোমাকে ভালবাসি।" কণ্ঠটা ধরে এল। মিলু নড়ে চড়ে বসলো, মাথা নিচু করলো। তার ইচ্ছে হল পাশের বুকটাতে ঝাপিয়ে পড়ে, পারল না। অজানা সংকোচ আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রাখলো তাকে।
"মিলু" আবার কণ্ঠটা বলে যেতে থাকলো। "তোমার প্রতি আমার ভালবাসা আমার অসত্দিত্বের মত সত্য। আমি বুঝে গেছি এতে কোন শঠতা নেই। জানিনে এরপর নিজেকে একাই গুছিয়ে রাখতে পারব কিনা? তবু চিরনত্দন সত্য এই যে, আমি কখনোই তোমাকে আপন করে নিতে পারবো না............." কণ্ঠটা ফুপিয়ে উঠলো।
মিলু কি ভাবছে বোঝা গেল না, তবে স্পষ্ট পরিবর্তন দেখা গেল। কাঁপতে কাঁপতে সে পাশের বুকটাতে ঢলে পড়ে কেঁদে উঠলো। দুটো বাহু তাকে পরম মমতায় জড়িয়ে নিল, প্রাণ খুলে কাঁদতে সুযোগ করে দিল যেন।
"আমার কী হবে শরীফ?" কান্নার ভেতরে শব্দ ভাসতে থাকলো, "এতসব শেয়াল কুকুরের ভিড়ে নিজেকে লুকাবো কোথায়?.............. প্রতিমা গড়ার সামর্থ যাকে দিলে জীবন দেবার অধিকার তাকে কেন দেবেনা..........বল.........তুমি বল......."
অনেক ক্ষণ কেউ কিছুই বলল না। দ'জন দু'জনকে অসত্দিত্বের সাথে মিশিয়ে ফেলতে চাইলো, পারলো না। একসময় পুরুষ কণ্ঠটা ফিসফিসিয়ে উঠলো, "তুমি ভয় পেও না। আমি তোমার বন্ধু হয়ে আছি, থাকবো। তোমাকে আগলে রাখবো আমি। আর কেউ তোমাকে কখনো বিরক্ত করবে না। তুমি দেখে নিও। আমি তো তোমার বন্ধু হয়েই আছি।" মিলু হঠাৎই নিজেকে হারিয়ে ফেলল। তার সব কিছু বাসত্দবতার বাইরে চলে গেল যেন। এরপর সামান্য ধাতসত্দ হলে মনে হল কেউ তাকে হাত ধরে দাঁড় করাচ্ছে, সাবলীল হতে মন্ত্রণা শেখাচ্ছে। কে সে? ঐ তো............. ঐ যে চলে যাচ্ছে। চোখ মেলে ভালো করে খুঁজে দেখলো আশে-পাশে কেউ নেই। কিন্তু বাতাসে সে কারো শরীরের গন্ধ অনুভব করল। আর তখনই যেন তার কানের কাছে সুমধুর ধ্বনি ভেসে উঠলো "আমি তো তোমার বন্ধু হয়েই আছি।"