কর্পোরেট অপিসে উঁচু মাইনে চাকুরী করে সাহেদ।একা এক ফ্লাটে থাকে।বাবা-মা সবাই গ্রমের বাড়িতে থাকে।ঢাকা শহরে তেমন কোন আত্মীয়-স্বজন নেই।সকাল আটটার আগে সে কখনও ঘুম থেকে উঠে না।কিন্তু আজ কেন জানি আগেভাগে ও ঘুম থেকে উঠল।পৌষ মাসের প্রথম সপ্তাহ।শীত এবার কেন জানি খুব তাড়াতাড়ি চলে এসেছে।গতকাল তাপমাত্রা ছিল পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস।ঠান্ডায় যেন সব জমে যাবার মত অবস্থা।কিন্তু একি গায়ে যে কম্বলটা চাপানো ছিল তাতে মনে হচ্ছে যেন কয়েক মন ওজনের কোন বস্তুর নিচে সে চাপা পড়ে আছে।খুব কষ্টে কম্বলটা সরিয়ে যখন বের হল তখন বাধল আরেক বিপত্তি।যে ট্রাওজার আর গেঞ্জি পরে সে শুয়েছিল তা কয়েক গুন লম্বা হয়ে গেছে।মনে হচ্ছে যেন সে কোন বস্তার মধ্যে লুটোপুটি খাচ্ছে।বিছানার মাঝখানে সে উঠে দাঁড়াল।খাটের পিছনের আয়নায় নিজেকে সম্পূর্ণরুপে দেখতে পেল।ভূত দেখার মত নিজেকে দেখে নিজেই চমকে উঠল।একি অবসথা শরীরের ! এত ছোট হয়ে গেল কেন সে ? গতকালতো সবই ঠিক ছিল,তাহলে আজ কেন এত পরিবর্তন ? হাজারো প্রশ্ন মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে কিন্তু কোন উওর নেই ।যে খাটটাকে খুব ছোট মনে হত আজ তা যেন ফুটবল মাঠের মত মনে হচ্ছে আর যে ফ্লাটটাকে পায়রার খোপের মত মনে হত তা যেন আজ বিশাল মহলের মত মনে হচ্ছে।কারো সাথে কথা বলা দরকার। কিন্তু কার সাথে কথা বলবে ? হঠাৎ মনে হল সে স্বপ্ন দেখছে।পাশেই টিভির রিমোড ছিল।সে টিভিটা চালু করল।প্রতিটি চ্যানেলে ব্রেকিং নিউজ হিসেবে দেখানো হচ্ছে - হঠাৎ প্রচন্ড শীতের তীব্রতায় মানুষ স্বভাবিকের তুলনায় অনেক ছোট হয়ে গেছে।বর্হিবিশ্বের খবর এখনো জানা যায়নি তবে বাংলাদেশে এ অবস্থা হয়েছে । উদ্ভূত এ অবস্থায় হতাশ না হয়ে পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে চলতে বলা হয়েছে। চ্যানেলে চ্যানেলে টকশো চলছে।কেউ বলছে-প্রাকৃতিক বিপর্যয়,কেউ বলছে - পাপের ফল ইত্যাদি ইত্যাদি । সাহেদ কিছুটা হলেওে স্বস্তিবোধ করে।তাহলে ওর একার অবস্থা এরকম নয়।খুব তড়িঘড়ি করে বাইরে বের হয়।রাস্তায় জ্যাম যেখানে নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার সেখানে কোন জ্যাম নেই।লোকজন তেমন দেখা যাচ্ছে না।দোকান-পাট দু'একটা খোলা ছিল কিন্তু তারাও বন্ধ করে দিচ্ছে। কাছে গিয়ে একজনকে দোকান বন্ধ করার কারণ জানতে চাইলে লোকটি বলল "কারো যহন কিছু খাওনের দরকার নাই তহন দোহান খোলা রাইখা লাভ কি?" সাহেদ বলে"কেন?" পুতুলের মত চেহারার লোকটি রেগে উঠে বলল"ওই মিয়া আপনি কী চান্দের দ্যাশ থ্যাইকা আইছেন? জানেন না আহন মানুষ না খাইয়াও চলতে পারব?" সাহেদ যেমন অবাক হয় তেমন খুশিও হয়।যখন খাবার দরকার নেই তখন কাজ-কর্মের আর কোন বালাই নেই।অফিস-আদালতে যাওয়ার আর প্রয়োজন নেই।কারণ মানুষ এত কিছু করে শুধু দুবেলা দু'মুঠো খাবারের জন্য।হঠাৎ কিছু ছেলেপেলে দেখা গেল।তারপর তারা দোকানে ঢুকে লুটপাট শুরু করল।গ্যালিভার ট্রাভেলসের সেই লিলিপুটদের মত মানুষগুলো যে যা পারছে সে তা নিয়ে যাচ্ছে।মনে মনে ভাবে যদি খাবারের প্রয়োজন না থাকে তাহলে এরা লুটপাট করছে কেন?কাছে গিয়ে একজনকে জিজ্ঞেস করতেই নিজের শরীরের চাইতে বড় একটা চাকু দেখিয়ে বলল"খাবার দরকার নেই তাই বলে গাড়ি বাড়ি করার জন্য ,ভাল পোশাক-আশাকের জন্য টাকার দরকার আছে না? তাড়াতাড়ি ভাগ নইলে কিন্তু খবর আছে ।" সাহেদ বলে "কিন্তু আমার সামনে এত বড় অন্যায় হতে দিতে পারিনা।" কোন কছু বুঝে উঠার আগেই ছেলেটা সাহেদের গলায় চাকু চালাল।সাহেদ মা বলে চিৎকার দিয়ে উঠল এবং নিজেকে আবিস্কার করল নিজের বিছানায়।নিজেকে ভাল করে দেখে নেয়। কোন পরিবর্তন দেখতে পায় না।তার মানে সে দুঃস্বপ্ন দেখছিল।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সাড়ে আটটা বাজে ।সাহেদ তাড়াতাড়ি বিছনা থেকে উঠে ব্যস্ত হয়ে পড়ে আফিসে যাবার জন্য।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মারুফ মুস্তাফা আযাদ
ভাইরে, এই জন্যই আমরা মানুষ। পশু শুধু ক্ষুধার্ত হলেই আক্রমন করে, আর মানুষ ইচ্ছে হলেই আক্রমন করে। আপনি ব্যাপারটা ধরতে পেরেছেন বলে ধন্যবাদ।
Lutful Bari Panna
ফ্যান্টাসী ভাল লাগল, তবে ছোট্ট একটা অসংগতি। মানুষটা নিজেও যখন লিলিপুট তখন আশেপাশের মানুষদের লিলিপুট মনে হবার কথা না। বরং বিশাল বিশাল দোকান পাট ঘরবাড়িতে স্বাভাবিক চেহারার মানুষগুলো ডাকাতি করছে- বর্ণনাটা এরকম হলে ভাল শোনাতো।
রোদের ছায়া
প্রায় একই রকম কাহিনী নিয়ে একজন ভারতীয় লেখকের একটি উপন্যাস আছে, নাম তা এই মুহুর্তে মনে পরছে না , সেখানে হটাত করে সবাই কংকাল এর মত হয়ে যায় , যাই হোক গল্পটি ভালই লাগলো আমার / তবে গল্পটিকে আরো বড় আকারে লিখলে ভালো হতো /
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।