রমিজ আলী এবং তার কবর

বন্ধু (জুলাই ২০১১)

আলী ইবনে মুসাই
  • ৪০
  • 0
  • ২২
রমিজ আলী মেস্বাক দিয়ে দাত ঘষছে. রাত গভীর হইতেছে. আকাশ ফাত্ত চাঁদের আলো মাটিতে পরতেসে. রমিজ আলী আরও জোরে মেস্বাক ঘষে. আজকের কাজ অনেক বেশি হইব. আকাশে যেইদিন ভরা চাঁদ থাকে সিই দিন কাজ অনেক বেশি হয়. খাটনি বারে. তিরিশ বছর ধৈরা এই কাজ করে রমিজ আলী. তাই পরিবেশ দেইখাই বৈলা দিতে পারে কোন দিন কাজ কেমন হবে. মেসাক ঘষা শেষ করে কুলি করে তারপর কৌটায় পানি নিয়ে আসতে আসতে অজু করে. অত্তক্ষণে দু একটা লাশ চলে আসার কথা. এত দেরী হবার তো কোনো কারণ নাই. সে তার হাত ঘড়ি তার দিকে তাকে. দুইটা বাজে. না এই রকম তো হার কথা না. একে তো চাদনী পরশ রাত চাঁদের এল মাটি কামড়ায়া ধরসে. যেদিন চাঁদের এল মাটি কামড়ায়া ধরে সেইদিন বেশি লাশ আসে কবর দেওনের জন্য. আর আসে বর্ষা কালে যেইদিন অকাহ্স ভাইঙ্গা বৃষ্টি হয় সেই দিন ও. আল্লাহ র দুনিয়ায় সব কিছুই হিসাবে চলে. সব কিছুরই একটা নির্দিষ্ট হিসাব আছে. মানুষ যে যার জায়গায় থাইক্কা হই হিসাব ধরার চেষ্টা করে. কেউ বুঈজ্ঝ ধরে কেউ না বুইজ্ঝা. তবে রমিজ আলী তিরিশ বছর ধৈরা হিসাব মিলাইতে চায়. তার এই জীবনে কত গুলা কবর খুর্সে সে. প্রথম প্রথম হিসাব করসিলো. কিন্তু তারপর আর হিসাব রাখা হয় নাই. তবে কাজ তা রমিজ আলীর পছন্দের. এখন বয়স হইসে তাই একটু কষ্ট হয়. কিন্তু সেইটা কাজের আনন্দের চেয়ে বড় না. একটা লাশ আসলেই রমিজ আলী মেস্বাক করে. অজু করে, তারপর দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় কইরা কবর খরা শুরু করে. কষ্ট হয় যখন আগের একটা কবরের ওপর আরেকটা কবর হয়. এই কবর সনের প্রায় সব কবরের সাথেই রমিজ আলীর ভাব. এই কবর সনের বেশির ভাগ কবরী তার হাতে কাটা. এক এক তা কবর রমিজ আলী দরদ দিয়া কাটে. একটা মুনশ ঘুমাইবো আরেক দুনিয়ায় গিয়া . তার জন্য ঘর টা সুন্দর হওয়া দরকার. রাতের বেলা যখন কাজ থাকে না. তখন রমিজ আলী কবরের সাথে কথা কয়. রমিজ আলীর সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে মৌলানা আবু ইউসুফের কবরের সাথে কথা বলতে. এই কবর অনেক পুরাতন. রমিজ আলী এই কাজ শুরু করার আগে এই কবর হইসে. রাতের বেলা কোনো এক অজ্ঞাত কারণে মাউলানা আবু ইউসুফ সাহেবের কবর দিয়া সুন্দর ঘেরান আসে. বেলি ফুলের ঘেরান. রমিজ আলী র মন খারাপ থাকলে, এই কবরের পাশে বৈসা দুই একটা বাক্কালাপ করে. কখনই কবর থেইকা উত্তর আসে না. রমিজ আলীর এই দীর্ঘ কবর খরার জীবনে, সে একবার কবরের মরার সাথে কথা বলসে. যখন সে তার পাচ বছরের মিটারে কবর দিল. পরীর নাহল সুন্দর ছিল মায়িয়া. ফুট ফুটে চেহারা , খিল খিল কইরা হাসত. একদিন কি খাইল বাইরে গিয়া. মায়িয়ার বমি থামে না. মা মরা মায়িয়া . রমিজ আলী মায়িয়া রে ঘুম পারিয়া কাজে আসে. সারাদিন পর বাড়ি ফিরা দেখে মায়িয়া ঘুমায়া আসে. ঠান্ডা হিয়া ঘুমায়া আসে. এই মেয়ের কবর ও রমিজ আলী নিজ হাত এ কাটসে. নিজের হাতে মায়া রে কাটা কবরে শুয়াইসে. যেইদিন মায়ার কবর হিল সেইদিন থেইকা রমিজ আলীর অত্তীয়তা হিল কবরের সাথে. রমিজ আলী ছাড়া তার সব আপনজনই এই কবরে. মিয়াদারে কবরে দেওনের পর. কেমন এক তান অনুভব করে সে কবরের প্রতি. যেদিন মায়ার কবর হিল তার দুই দিন বাদে সে মায়ার কবরের পাশে বৈসা ছিল. তন্দ্রা আসতেসিল হঠাথ দেখা মায়া তার কবর দিয়া উইথ বসছে. সে তাকায়া দেখে খিল খিল কইরা হাসতেসে. সে অবাক হিয়া ছায়া থাকে. মেয়ে কয় বাবজান তুমি আমারে চারা যাইও না কিন্তু. এই খানে আমার ভয় করে. রমিজ আলী কান্দা কয় না রে মা যামু না. কিয়া মেয়েটারে জড়ায়া ধরতে নেই. তখনি সব আগের মত হযে যায়. মেয়ের কবরের ওপর দুই হাত দিয়া বৈসা থাকে সে. এর পর থেইকা রমিজ আলী আর বাড়ি যায় না. কবর স্থান ই তার বাড়ি. এই কবর গুলা নিয়াই তার সংসার. তার এই মেয়েটার কবর এখন নাই. অনেক আগেই এই কবরের ওপর আরেকটা কবর হইসে. সেই কবর ও রমিজ আলী নিজে কাটসে. সেইদিন চোখে পানি আসছিল তার. সারা রাত কাদ্সিলো. একহন আর সেই কষ্ট তাও নাই. কষ্ট অনেক দিন গেলে ভোতা হিয়া যায়. তার তাও মনে হয় ভোতা হযে গেসে. তবে আজকের এই চাদনী পসর রাইতে তার মন তা ভালো. তার অনেক দিন এর স্বপ্ন আইজ পূরণ হইব. আইজ সে এইসব কবর বাশির সাথে নিজের কবর কাটব. কবরের সব মানুষ গুলানের সাথে আইজ তার আরেকটা বন্ধন তৈরী হইব. অনেক বছর ধৈরাই রমিজ আলী এই স্বপ্ন পুষ্টাসিলো. বড় মসজিদের ইমাম সাহেবকেও বার কেক বলসে. আইজ বাদ এশা ইমাম সাহেব রমিজ আলী কে দীক্ষা কইলো , ও রমিজ আল্লাহ তোমার ইচ্ছা পূরণ করসে. তোমার কবরের জায়গা হইসে এই খানে. আল্লাহ র ইচ্ছে আমি পের্মিস্সিওন বাহির করসি. রমিজ আলী শুইনা চোখের পানি আটকাতে পারে নাই. আনন্দের তা চোখ দিয়া দর দর কইরা পানি বের হইসে. ইমাম সাবের জন্য মন দিয়া দওয়া করসে সে.
না দেরী হযে যাইতেসে . এখন তাহাজ্জুদ আদায় কইরা কাজে লাইগা যাইতে হবে. খুব যত্ন কইরা কাটতে হবে নিজের কবর. রমিজ আলীর মনে আনন্দ হয়. অদ্ভূত আনন্দ.
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আলী ইবনে মুসাই ধন্যবাদ সবাইকে ....বর্ষা সংখায় কোনো লেখা দিলাম না.......বর্ষায় বিদায়.... !!! আপনাদের বর্ষা দেখার অপেক্ষায় রইলাম.
রনীল অসাধারণ আপনার লেখনী... অসঙ্গতির কথা সিনিয়ররা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছেন। সেদিকে আর গেলাম না... চাঁদের আলো মাটি কামড়ে ধরলে সেদিন বেশি লাশ আসে গোরস্তানে... দুর্দান্ত পর্যবেক্ষণ আপনার... খুব ভালো লাগলো।
Akther Hossain (আকাশ) বানান ভুল আছে ! তাছাড়া একটু বেমানান গল্প মনে হলো এই সংখার জন্য !
পন্ডিত মাহী কারো সৃষ্টিকে খারাপ বলতে কষ্ট হয়, আমি খারাপ বলবো না এটাকেও। তবে এত বেশী ভুল বানান যা লেখার সৌন্দর্য কে নষ্ট করেছে।
আলী ইবনে মুসাই ধন্যবাদ ..আমি কৃতজ্ঞ স্রষ্টার কাছে... যে উনি আমাকে এই দেশে জন্ম দিয়েছেন... যেখানের মানুষ ভুল ত্রুটির মধ্য থেকেও যেটুকু ভালো তা গ্রহণ করতে জানেন .....আমি একজন পাঠক ও লেখক হিসেবে আপনাদের কৃতজ্ঞতা শিকার করছি......
আহমাদ মুকুল ভুল ভ্রান্তি নিয়ে লেখকের সরল স্বীকারোক্তি এবং সীমাবদ্ধতার বিষয়টি মেনে নিলাম। এমন একটি গল্পের জন্য তা মানাই যায়। কবরের সাথে সখ্যতা এবং কবরের ডাক শুনে রমিজের প্রস্তুতি মুগ্ধ করেছে। আপনার আরও লেখা চাই।
খন্দকার নাহিদ হোসেন আমি ও আপনার মতো কাগজ কলমের মানুষ আর তাই প্রথম প্রথম বেশ সমস্যা হত। আজকাল হয় তবে আগের চেয়ে কম। গল্পটা খুব সুন্দর হইছে। বানান গুলোর কথা বাদ দিলে আপনাকে ৫ না দেয়ার কোন কারণ দেখছি না। আর এখনো বেশির ভাগ গল্পকার আমি-তুমির গল্প থেকে বের হতে পারলো না কিন্তু কত সুন্দর সুন্দর বিষয় আছে যেমন কুয়া, স্বপ্ন, মাটি, কবর............ তো আপনার গল্পের এই আলাদা আয়োজন খুব ভালো লাগলো। সামনে এমন আলাদা কিছুই কিন্তু চাই।
মিজানুর রহমান রানা বন্ধু, ভালোই লিখেছেন, তবে পরবর্তী সংখ্যায় আরো ভালো করার জন্যে যথেষ্ট খেয়াল রাখবেন আশা রাখছি। আপনার শুভকামনা করছি। ভোট দিলাম।
আলী ইবনে মুসাই ধন্যবাদ সবাইকে.....ভাই সুর্য .... আপনার তেজ এর সামনে সব ই ম্লান ...... আপনি যা জানতে চেয়েছেন তার উত্তর আছে ভাই.. কিন্তু এর উত্তর এই গল্প কে সমৃদ্ধ করবে না আমার মনে হয় একটু যদি খবর নিতেন দয়া করে....... পাঠকের উপদেশ শিরোধার্য..........ভালো থাকবেন.....

০৩ জুন - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪