হঠাৎ পাওয়া বন্ধু

বন্ধু (জুলাই ২০১১)

রেজাউল রাজ
  • ২৬
  • 0
  • ২৩
সেবার রমজান মাসের কাপ্তাই লেকে ভরা পানি।কাজলের টিলার শুধু চান্দিটা জেগে আছে।এ টিলার সাত ঘর মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা নোকা।নৌকায় ইসলামপুর পার হয়ে তারপর যেখানে ইচেছ ।ইফতারের সাইরেন দেয় দেয় অবস্থা।ইসলামপুর নৌকার জন্য আটকে গেছি।গলা ছেরে অনেক ডেকেছি। কোন সাড়া নেই।সাইরেনের সময় ইফতার করতে না পারলে রোজা নষ্ট হয়ে যায় এমন একটা বিশ্বাস ছিল।পাশাপাশি পেটে রাক্ষুসে খিদে তো রয়েছেই।পকেটে চারআনা পয়সাও নেই।এখন কি করি?ইফতার ওয়াক্ত।যে যার ঘরে চলে গেছে।পরিচিত কারো কাছ থেকে ধার নেব তেমন কাউকে পাচ্ছিনা।ইস্কুল ঘরের বারান্দায় কয়েকটা লেংটা ছেলের সাথে দুষ্টমি করছে সাইফুল। সাইফুল আমার সমবয়সী।বেজায় দুষ্টু ।আলো বাতাসের মত দুষ্টামি তার নিত্য দিনের অবশ্য সেব্য। বিপরীত সভাবের হওয়ায় তার সাথে আমার বন্ধুত্ব দূরে থাক সাধারণ কথাবর্তাও তেমন হয়না।আজ বোধয় কথা বলতে হবে।তার দাদার দোকানে ইফতার পাওয়া যায় ।বাকীতে যদি ইফতারটা কোনরকম সারতে পারি কাল সকালেই টাকাটা দিয়ে দেব ।আসা খুব কম হলেও তাকে ব্যপারটা বললাম।অপরিবর্তিত পিটপিটে চোখ দেখে মনে হল অরন্যে রোধন করলাম।সাইফুল একটা দু টাকার নোট দিয়ে বলল-'দাদারে কইলেও বাকী দিবনা।এটা দিয়া ইফতার করগা।আর টেকা নাই,থাকলে দিতাম'।টাকা হাতে দোকানের দিকে ছুটলাম ।ইফতার করলাম দু টাকা দামের বাটার বন দিয়ে।পরের দিন সকালে দু টাকা নিয়ে হাজির সাইফুলের কাছে।নিতে না চাইলেও যেচে দিলাম,পাছে পরের টাকাই ইফতার করাই রোজার সোয়াব চলে যায়।নানা কায়দায় কৃতঙ্গতা জানালাম।'আরে অইছে ,অইছে'।বলে সে চলে গেল।এরপর থেকে সাইফুল আমার ঘনিস্ট বন্দু। বাহির থেকে দেখা বেজায় দুষ্টু ছেলেটার ভীতর দেখলাম কুসুমকোমল।প্যচগোচ বোঝেনা। গোপনীয়তা বলতে কিছু নেয় তার কাছে।সকালে ঘুম থেকে উঠেই শুনলাম দুঃসংবাদটা।আলমগীর কাকা আর সাই ফুল মারা গেছে কারেন্টে শট খেয়ে। মাথাটা চক্কর দিল।চারপাশে অন্ধকার ঠেকল।নৌকা চালানোর শক্তিও আমার নেই।মোরশেদ ভায়ের সাথে গেলাম ইসলাম পুর।আলমগীর কাকাদের উঠানে মানুষের ভীর ।কান্নার শব্দে চারপাশ ভারি।কারো কথা কেউ শোনার জো নেই।বেশির ভাগ লোক এসেছে আলমগীর কাকার জন্য।উনি ইসলামপুর গ্রামের যুবকদের নেতা।খেলা মাহফিল,পিকনিক বা গ্রামের কোন বিয়ের অনুষ্টানে সবার আগে দেখা যেত আলমগীর কাকাকে।গ্রামবাসীর চোখের মনি ছিলেন তিনি।তাই সবার চোখে জল আজ।সাধারণ কোন মৃতু্য এত মানুষের চোখের জল আনতে পারেনা।দুটো লাশ পাশাপাশি খাটের উপর শোয়ানো।উঠানভরা মানুষের চোখ লাশ দুটোর উপর।ভালভাবে বললে আলমগীর কাকার উপর।আমার চোখ আলমগীর কাকার দিকে না যেয়ে সাইফুলের অভিমানি মুখের উপর আটকে রইল।ও যেন অভিমানি সুরে বলছে-'তুমি চাইলে আমাকে বাচাতে পারতে ।পারতাম বৈ কি।ও সন্ধার সময় মারা যাবে জানলে সামান্য বৃষ্টির জন্য বিকেলের ডিসি বাংলো বেড়াতে যাওযা বাদ দিতাম না।তখন হয়ত সাইফুল মরতনা।শুধু আলমগীর কাকা মরত।অথবা সাইফুল নেই বলে আধারের মধ্যে একা একা মোবাইল এন্টিনা ঠিক করতে গিয়ে মেইন তারের সাথে বাশ জড়িয়ে মারা পরতনা।সব অনুমান,সব কল্পনা শেষ বিন্দুতে পৌছে আমাকে দোষী সাবস্থ করে।অভিযুক্ত হৃদয় নিয়ে চারটি বরষা পাড় করলাম।এবারের বর্ষাও স্মৃতির ডালা নিয়ে হাজির হয়েছে। প্রতিটি ফোটা যেন এক একটি কাব্য,যার বিষয় একান্তই সাইফুল-হঠাৎ পেয়ে হঠাৎ হারিয়ে ফেলা বন্ধুটি আমার।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রওশন জাহান আপনার অনুভুতি অল্প হলেও খুব গভীর ভাবে উঠে এসেছে .ছুয়ে গেছে আমার মনকে. সামনে সময় নিয়ে লিখবেন আশা করছি.
মোঃ আক্তারুজ্জামান অসাধারণ কাহিনী| কাজলের টিলা যেন দু হাতে ডাকছে....এই বর্ষায় দাওয়াত করেন আমরা চলে আসি|
মিজানুর রহমান রানা অনেক শূভ কামনা রইল। ভালোই লিখেছেন।
বিন আরফান. চেষ্টা ভালো. মনের ভাব প্রকাশ হয়েছে. চেষ্টা চালিয়ে যান. শুভ কামনা রইল.
শাহ্‌নাজ আক্তার তোমার বন্ধুর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি , আমিন I খুব অল্প পরিসরে ভালো বন্ধুত্বের উদহারন দিয়েছ ,, ভোট পেলে.
junaidal খুব সুন্দর হয়েছে। তবে বন্ধু প্যারা দিয়ে লিখলে ভাল হত। শূভ কামনা রইল।
AMINA থিম ভাল। লিখতে লখতে আরাো ভাল হবে।ভাল হয়েছে।

২২ মে - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪