পরি হিনা ও আজব দেশে আকমল ( নবম পর্ব )

বাংলা ভাষা (ফেব্রুয়ারী ২০১৩)

হোসেন মোশাররফ
  • ১১
  • ১৩
‘সত্যিই কী তুমি পরী হিনা?’ অবাক হয়ে প্রশ্ন করল আকমল।
‘কেন? বিশ্বাস হচ্ছে না বুঝি তোমার।’ খুব স্বাভাবিক ভাবে উত্তর করল হিনা।
‘বিশ্বাস হবে না কেন? ভীষন অন্ধকার তো তাই জিজ্ঞেস করছি। আমি তো আর তোমার মতো না যে অন্ধকার হলেও সবকিছু ঠিকই দেখতে পাব।’ কথা গুলো বলে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল আকমল।
কিন্তু আকমলের কথা শেষ হওয়ার আগেই আলো জ্বেলে ফেলল পরী হিনা। তার হাতে ধরা ছিল একটা মোমবাতি। সেটাতে সে এক ফুৎকারেই আগুন জ্বেলে ফেলল। তারপর বলল, ‘ভারি হিংসা তো তোমার মনে, আমি অন্ধকারে দেখতে পাই বলে ভারি ইয়ে হচ্ছে না? তাই বলে কী আগুন নেই আমার কাছে?’
এবার মোমবাতির আলোতে পরিস্কার দেখতে পেল আকমল পরী হিনাকে। আর সন্দেহ রইল না তার মনে। মোমবাতির কাঁপা কাঁপা মৃদু আলোয় মিটি মিটি হাসতে হাসতে পরী হিনা বলল, ‘না দেখে বিশ্বাস করার মধ্যে কৃতিত্ব আছে আর দেখে বিশ্বাস করার মধ্যে আছে ফাঁকি।’
‘কেমন ফাঁকি?’ কিছুটা অবাক হয়ে বলল আকমল।
‘কেমন ফাঁকি, তাহলে এই দেখ....’ বলতে বলতেই অদৃশ্য হল পরী হিনা। এখন শুধু মোমবাতিটাই শুন্যে ঝুলে পিট পিট করে জ্বলতে লাগল। তারপর অন্ধকার থেকে কে যেন বলল, ‘এবার বুঝেছ কেমন ফাঁকি।’
গোটা ক’দিনের পরিশ্রমে আকমল বেশ ক্লান্তি বোধ করছিল। ছোট খাট একটা হাই তুলে বলল সে, ‘দেখ, ভয়ংকর এক ভিমরুলের দুর্গে বন্দি হয়ে তোমার এই যাদুর কেরামতি দেখতে মোটেও ভাল লাগছে না আমার। এখন কেমন করে এখান থেকে মুক্তি পাব সেই কথাই ভাবছি আমি।’
অন্ধকার থেকেই পরী হিনা জবাব দিল, ‘ বিপদে পড়লে বোকা লোকেরা ভাবনা ভাবে আর বুদ্ধিমান লোকেরা খোদার উপরে ভরসা করে নিশ্চিন্ত হয়। এখন দেখ তুমি বোকা থাকতে চাও; না এই দেশের রাজার মত বুদ্ধিমান হবে।’
রাজার কথা তুলতেই আকমলের মনে পড়ে গেল রাজকুমারী নিমুর কথা। সাহসী লোকেরা নিজের বিপদের চাইতে অপরের বিপদ কে বড় করে দেখে। রাজকুমারী সেই ভয়ংকর দৈত্যের হাতে দুই হাজার বছর ধরে বন্দি জীবন যাপন করছে সেই তুলনায় আকমল মাত্র কিছুক্ষণ আগে ভিমরুলের দুর্গে বন্দি হয়েছে। রাজকুমারীর তুলনায় তার বিপদ সামান্যই। কোন কিছু না ভেবেই আকমল বলল, ‘ আমি বোকাই থাকতে চাই তবে রাজকুমারী নিমুর কথা ভেবে।’
পরী হিনা আবার ফিরে এল মোমবাতি হাতে। তারপর বলল, ‘এইতো সাহসী ছেলের মতো কথা বলেছ তুমি। যে নিজের বিপদ কে অপরের বিপদের তুলনায় তুচ্ছ মনে করে তার জন্যে পুরষ্কার সব সময় তোলাই থাকে। আর তা হল অতি সহজে নিজের বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়া।’
তারপর আর এক ফুঁ তে মোমবাতি টা নিভিয়ে দিয়ে আবার বলল পরী হিনা, ‘তার প্রমাণ এখনই হাতে হাতে দেখতে পাবে তুমি।’
পরী হিনার কথা শেষ হওয়ার আগেই ভিমরুলের দুর্গ ফেটে চৌচির হয়ে গেল। দিনের আলো প্রবেশ করল সেখান দিয়ে। পরী হিনা তখন বলল, ‘এবার বল তোমার সমস্যাটি আর কোন সমস্যা রইল কিনা?’
মৃদু হাসতে হাসতে আকমল বলল, ‘ খোদার ইচ্ছায় খুব সহজেই মুক্তি পেলাম বোধহয় এবার। জানিনা আর কী বিপদ কপালে লেখা আছে।’
পরী হিনা বলল, ‘চল, এখনই আমরা এখান থেকে বের হয়ে পড়ি। ভিমরুল টা ফিরে এলেই আবার বিপদে পড়তে হবে আমাদের।’
পরী হিনা আকমলের হাত ধরে সেখান থেকে উড়ে বেরিয়ে যেতেই ভিমরুলের দুর্গটা আবার আগের মতোই নিখুঁত ভাবে জোড়া লেগে গেল। আকমলকে এবার পিঠে নিয়ে পরী হিনা উড়তে লাগল। কিন্তু কথায় আছে যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই রাত হয়। পড়বি তো পড় একেবারে বাঘের মুখের উপরেই পড়ল ওরা।
পরী হিনার পিঠে চেপে নিশ্চন্তে উড়ছিল আকমল। এমন সময় ভিমরুল টা কোথা থেকে একটা দশাশই পোকা ধরে তার দুর্গে ফিরছিল। ওদের দেখে পোকা ফেলে ওদের পিছু নিল সে। ভোঁ শব্দ করে ছুটে এল সে ওদের দিকে। শেষ পর্যন্ত সে বার কয়েক পাক দিল ওদের চারদিকে। শিকার ধরার আগের মহড়া চলতে লাগল ওর। যে কোন সময় আকমলকে তুলে নিলেই হল। ভয়ে আত্মারাম খাঁচা ছাড়া হল আকমলের। মনে মনে খোদাকে ডাকতে লাগল আকমল।
পরী হিনার আচরণে কোন ভয়ের চিহ্ন পর্যন্ত পাওয়া গেল না। সে যেমন স্বাভাবিক ভাবে উড়ছিল তেমনি উড়তে লাগল। ভিমরুলটা আরও বার কয়েক চক্কর দিয়ে শেষ পর্যন্ত রণে ভঙ্গ দিয়ে উড়ে গেল।
ভিমরুল টা দূরে শূন্যে মিলিয়ে যেতেই পরী হিনা বলল, ‘দুর্বৃত্ত দেখে সে-ই ভয় পায় খোদার উপর যার বিশ্বাসে কমতি আছে।’ কিছুক্ষণ থেমে থেকে পরী হিনা আবার বলল, ‘আর সে-ও চায় অকারণে সবাই তাকে ভয় করে চলুক; তার অন্যায় কাজটাও সহজে উদ্ধার হয়ে যাক্।’
আকমল বলল, ‘আমি ভয় পেয়েছিলাম। তবে তা মোটেও অকারণে নয়; কেননা সে আমাকে একটু আগেই ধরে নিয়ে গিয়েছিল তার দুর্গে।’
‘কিন্তু শেষ পর্যন্ত কী হল?’ বলল পরী হিনা।
‘খোদার ইচ্ছায় আমি রক্ষা পেয়েছি। ’ বলল আকমল।
‘এমনই হয়, শয়তানের কাজ সবাইকে ভয় দেখানো। তবে যে ভয় পায় তার সর্বনাশ করতে সে মোটেও পিছপা হয় না। শয়তান কে ভয় পাওয়াও পাপ।’ বলল পরী হিনা।
এরই মধ্যে কথায় কথায় উড়তে উড়তে ওরা একটা বনের ধারে চলে এল। বিশাল বন। দিনের আলো সেখানে প্রবেশ করে কিনা সন্দেহ। পরী হিনা বলল, ‘আমরা চলে এসেছি।’
বোকার মতো আকমল বলল, ‘কোথায়?’
‘এখনই তা দেখতে পাবে।’ বলল পরী হিনা।
বনের যেখাটায় ওরা নামল সেখানে পাথর দিয়ে বাধানো একটা ছোট্ট পুকুর। পরী হিনা বলল , ‘ তুমি হয়তো ভেবেছ এটা একটা পুকুর। আসলে তা নয়। ভাল করে লক্ষ্য করে দেখ এটা একটা চৌবাচ্চা। এর পাশেই যে পাতার ঘর দেখতে পাচ্ছ সেটাই রাজার ঘর। রাজপ্রাসাদের মোহ ছেড়ে রাজা এখন এই পাতার ঘরে বাকি জীবন কাটাচ্ছেন।’
পরী হিনার কথা শুনে আকমলের আবার রাজকন্যা নিমুর কথা মনে পড়ে গেল। ভাবল সে রাজাকে যখন হাতের কাছেই পাওয়া গেল তখন তো রজকুমারী নিমুর বন্দি দশার কথা তাকে অবশ্যই জানাতে হয়। কিন্ত তার আগে জানতে হবে রাজা তার রাজ্য আর রাজত্ব ছেড়ে এই পাতার ঘরে কেন বাকি জীবন কাটাচ্ছেন। তবে সব কিছুর আগে পরী হিনা কী করে তা দেখার অপেক্ষায় রইল আকমল।
একটু হেঁটেই রাজার কাছে পৌঁছে গল ওরা। মৌনব্রত রাজা গভীর মনোযোগের সাথে এবাদতে মগ্ন। পরী হিনার পাখার শব্দে সাময়িক ধ্যান ছুটে গেল তার। নির্জন এই বনে অপেক্ষাকৃত ক্ষুদে মানুষ ও পরী কে দেখে যারপরনাই অবাক হল রাজা। খুক্ খুক করে একটু কেশে নিয়ে বলল রাজা, ‘আজ প্রায় দু’হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে এই নির্জন জঙ্গলে বসে আমার সৃষ্টি কর্তার ধ্যানে মগ্ন আছি। আজ পর্যন্ত কেউ আমাকে আমার ধ্যানে বিঘœ সৃষ্টি করতে সাহস দেখায় নি। অথচ তোমরা তা করেছ, নিশ্চয় তোমরা ঘোর পাপাচারী নতুবা আমার শুভাকাঙ্খী। তোমাদের দেখে মনে হয় তোমরা একজন পরী অপরজন মানব সন্তান কিন্তু আকারে এতটাই ছোট যে আমার ধারণার বাইরে। তবে তোমাদের আগমণের কারণ সঠিক ভাবে জানাতে ব্যর্থ হলে অবশ্যই তোমাদের আমার হাতে শাস্তি পেতে হবে।’
এমনিতে রাজা তার উপর বিশাল দেহের অধিকারী; দেখেই ভয় পেতে হয় এমন ব্যাপার স্যাপার। এর উপর তার হাতেই যদি শাস্তি পেতে হয় তাহলে সেটাকে শাস্তি না বলে মৃত্যু বলাই ভাল। কিন্তু সাহস হারালে মোটেও চলবে না। কেননা যুদ্ধ জয়ের জন্য বড় ছোট কোন বিষয় না, বিষয়টা হল ন্যায় এবং অন্যায়ের। আর আকমলের সামনে যে বিষয়টা এখন প্রধান তা হল নিজে বাঁচার চাইতে রাজকুমারী নিমুর জন্য কিছু করা। কেননা মায়ের মুখে সে অনেক বার শুনেছে পরের জন্য কিছু করতে পারাটাই জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ। যে পরের কাজ করে তার কাজ খোদা করে দেয়। সুতরাং পরী হিনা কিছু বলার আগেই আকমল বলল, ‘ভেবেছিলাম এত বড় দেশের বিশাল সব মানুষের রাজাও নিশ্চয় অনেক বুদ্ধিমান রাজা হবে কিন্তু এখন দেখছি মোটেও তা না; বরং একেবারেই বোকা।’
এমনিতে রাজা ক্ষেপে ছিল। আকমলের কথা শুনে তার পিত্তি জ্বলে গেল। হুংকার ছেড়ে বলল সে, ‘বেশতো, আমি বোকা রাজা। তা তুমি যখন বুদ্ধিমান ক্ষুদে মানুষ তখন তুমিই বলে দাও কেমন বোকা আর এমন কী বোকমুটা তোমার সাথে করলাম।’
আকমল বলতে শুরু করল,
‘আমার কথায় কী যায় আসে
আমি মানুষ অতি ক্ষুদে,
রাজপ্রাসাদে কন্যা রেখে
আছ তুমি বন বাসে।
রাজ্য ফেলে থাকে পড়ে,
এমন পাগল কোথায় আছে;
জগৎ ঘুরে দেখাও আগে,
বাকি কথা হবে পরে...’
আকমলের কথায় রাজার যেন টনক নড়ল। রাগটাও তার নিমিষে পানি হয়ে গেল। মা হারা মেয়ের কথা শুনেও বাবার চোখে পানি আসে না এমন বাবা জগৎ-সংসারে খুব কমই আছে। চোখের পানি মুছে রাজা তখন বলল, ‘এমনি কী আর রাজ্য ছেড়েছি, পরকালের কথা ভেবেই রাজ্য ছেড়েছি। বয়সটা তো আর কম হয়নি আমার; এই ধর দুই কুড়ি চল্লিস হাজার বছর প্রায় ধর ধর। এই বয়সে এবাদত টা না ধরলে আর ধরব কখন? আজকাল মানুষ আশি নব্বই হাজার বছর না হতেই সব পটল তুলছে। আমার আর কী দোষ, খোদার ভয়ে আমি রাজ্যও ছেড়েছি রাজপ্রাসাদও ছেড়েছি।’
আকমল তখন বলল,
‘শোন তবে বোকা রাজা
নয়তো মোটেও মজার কথা।
আমার দেশে মানুষ বাঁচে,
মোটে আশি নব্বই বছর ।

কেওবা বাঁচে আরও অল্প
নয়তো মোটেও কল্প-গল্প।
দেখতে চাওতো সেথায় চলো,
বুদ্ধি খোলে করলে সফর। ’


মাথা চুলকে রাজা তখন বলল, ‘এমন দেশের কথা আমি আগেও শুনেছি বাপ-দাদাদের মুখে। কিন্তু তখন বিশ্বাস করিনি তাদের কথা। তুমি এসে এতদিনে আমাার সে ভুল ভাঙল। রাজপ্রাসাদের মোহ ছেড়ে আমি পাতার ঘরে আশ্রয় নিয়েছি। রাজ্য ছেড়েছি, সম্পদ ছেড়েছি; এমন কী অন্তরের টান মহব্বতের কন্যা নিমু কেও ত্যাগ করে স্বেচ্ছায় আশ্রয় নিয়েছি এই মাটির ঘরে।....’ বলতে বলতে রাজা হো হো করে কাঁদতে লাগল।
আকমল তখন বলতে শুরু করল,

‘কাঁদছ কেন বোকা রাজা
বলার আছে আরও বাকি।
মেয়ে তোমার বন্দি খাঁচায়
রাজপ্রাসাদের বন্দি শালায়।’

আকমলের কথায় রাজা স্তম্ভিত হয়ে গেল। বাক শূন্য হয়ে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে শেষে বলল, ‘কে বন্দি করল আমার আদরের কন্যা কে। এই দেশে কোন মন্দ লোক নেই যে আমার কন্যা কে বন্দি করতে পারে। তুমি হয়তো লক্ষ্য করেছ আমার এই বিশাল রাজ্যে কোন ঘর বাড়ি নেই। রাজ্য আছে কিন্তু রাজ্যের কোন বাসিন্দা নেই। এখানে সবাই খোদার ভয়ে রাজ্য ছেড়ে বন বাদাড়ে যেয়ে নির্জন আবাসে এবাদতে মগ্ন থাকতেই বেশি ভালবাসে। কেননা সবাই জানে দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী, চিরকাল থাকার আবাস একমাত্র পরকাল। সেজন্য এদের কারো লোভ-লালসা নেই, জাগতিক কোন মোহ নেই। এখানে কেউ মন্দ কাজে লিপ্ত হয়না, মন্দ কথা বলে না; এমন কী ঘর বাড়িও তৈরি করে না তারা। এমন একটা দেশের রাজা আমি যে দেশের মানুষ খোদার ভয়ে এতটাই ভীত যে রাজার কোন প্রয়োজনই হয় না।’
রাজা একটু থামতেই আকমল বলল, ‘তোমার কথা সত্যি, এদেশে কোন ঘর বাড়ি নেই। আকাশ পথে ওড়ার সময় আমি সব দেখেছি, আবার কোন মানুষ জনও চোখে পড়েনি আমার। সবই সত্যি কিন্তু উঁচু উঁচু পাহাড় গুলোর ওপারে যে দুষ্ট দৈত্যরা বাস করে তার খবর রাখ তুমি?’
বিষ্মিত রাজা বলল, ‘শুনেছি, কিন্তু তারা তো ভয়ে কখনো লোকালয়ে আসে না।’
মওকা পেয়ে আকমল এবার বলল, ‘কিন্তু তারা যে কখনো লোকালয়ে আসবে না এমন কোন নিশ্চয়তা কি আছে?’
রাজা এবার দু’পাশে মাথা নেড়ে নিরুত্তাপে নিরুত্তরে স্বীকার করে নিল; না, তার কোন নিশ্চয়তা নেই তার কাছে। আকমল এবার বলল, ‘তবে?’
রাজা সত্যি এবার বোকার মতো চেয়ে রইল আকমলের দিকে। আকমল আবার বলল, ‘আমি দেখে এসেছি এক দুষ্ট দৈত্য তোমার প্রাসাদটাকে বানিয়েছে কয়েদখানা আর রাজকন্যা কে সেখাানেই বন্দি করে রেখেছে।’
মুহূর্তের মধ্যে রাজার দুই চোখে প্রতিশোধের আগুন জ্বলে উঠল। ধিক্ ধিক্ করে তা প্রজ্বলিত হতে লাগল। শেষে হুংকার ছেড়ে বলল সে, ‘খা-মোশ! আর একটা কথাও শুনতে চাই না আমি। আর এক মুহূর্তও এখানে নয় এক্ষুণি আমাকে ফিরে যেতে হবে রাজ্যে। তারপর একদিন আমার কী ঐ দুষ্ট দৈত্যের; তার প্রমাণ করেই ছাড়ব আমি।’
ভীষণ আক্রোশে রাজা তার গায়ের চাদর খুলে মাথায় বেঁধে নিল। এমন সময় জোরে বাতাস বইতে শুরু করল। রাজার পাতার ঘরের পাতা গুলো সব একে একে ঝরে পড়তে শুরু করল। চারদিকে অন্ধকার নেমে এল। পরী হিনা ফিস্ ফিস্ করে বলল, ‘আর এক মুহূর্তও এখানে নয়, এক্ষুনি পালাতে হবে আমাদের এখান থেকে; রাজা ক্ষেপেছেন, সুতরাং উলু খাগড়ার আর রক্ষা নেই। ’
যেই কথা সেই কাজ। পরী হিনা আকমলকে নিয়ে আবার আকাশে উড়ল। ততক্ষণে রাজাও রওনা হয়ে পড়েছেন রাজধানীর পথে। রাজা কে উদভ্রান্তের মতো ছুটতে দেখে তার সঙ্গী-সাথিরাও সবাই তার পিছু নিল। ধুলোর আস্তরণে ঢাকা পড়ল আজব দেশের পৃথিবীর আকাশ। পরী হিনা বুদ্ধি করে সময়মতো আকমলকে নিয়ে আকাশে না উঠলে নির্ঘাত মারা পড়ত ওরা যুদ্ধের এই ডামাডোলের মধ্যে পড়ে।
রাজা তার দলবল নিয়ে পৌঁছানোর আগেই পরী হিনা আকমলকে নিয়ে পৌঁছে গেল রাজপ্রাসাদের উপর। বেলা দ্বি-প্রহরের প্রায় কাছাকাছি কিন্তু দুষ্ট দৈত্য তখনো নাকে তেল দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে রাজপ্রসাদের আঙিনায়। সম্ভবত আকমলকে জুতোর বাক্সের মধ্যে আবিস্কার করার পর থেকে তার সন্দেহটা তীব্র হয়েছে রাজকুমারীর উপর। সেই জন্যেই সে পাহারা বসিয়ে রেখেছে নিজে নিজেই। কিন্তু কপাল মন্দ থাকলে পাহারা বসিয়েও যে কোন কাজ হয় না তা প্রমাণ হল কিছুক্ষণের মধ্যেই। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই রাজা পৌঁছে গেল সেখানটায়। এরপর আর দেরি হল না মোটেও। রাজা তার দলবল নিয়ে ঘিরে ফেলল পুরো রাজপ্রাসাদ। শুরু হল অসম যুদ্ধ। দৈত্যের হাতে রাজার কিছু লোক প্রাণ হারাল প্রথমেই। তারপর শুরু হল মরণপণ যুদ্ধ। চারদিক থেকে ধুলোর আস্তরণ এসে মেঘের উপর জমা হতে লাগল। প্রাণ রক্ষার্তে দৈত্য শেষ পর্যন্ত ছুটে পালাতে শুরু করল। বড় বড় পাহাড় গুলো পেরিয়ে সামনে পড়ল সমুদ্র। সেখানে যেয়ে লাফ দিল দৈত্যটা। কিন্তু রাজা তাকে ছাড়বার পাত্র নয়। তার সাথে লড়াই করার জন্য রাজা নিজেই সেখানে তার পিছু পিছু যেয়ে সমুদ্রের মধ্যে আঁছড়ে পড়ল। এবার শুরু হল সেয়ানে সেয়ানে যুদ্ধ। সমুদ্রের পানি উছলে পড়ল ডাঙায়। উথাল পাথাল হল হল ঢেউগুলো। বন্যা হয়ে গেল গ্রাম থেকে গ্রামে। ডুবে গেল অনেক শহর বন্দর নগর। অবশেষে যুদ্ধ থামল দুষ্ট দৈত্যের প্রাণ হারানোর মধ্যে দিয়ে।
ভয়ংকর এই যুদ্ধটি শেষ হল কিন্তু চারদিকে রেখে গেল এর ভয়াল সব চিহ্ন; যা কখনো শেষ হবার নয়। আকমল কে নিয়ে পরী হিনা তখনো আকাশে উড়ছিল। এবার বলল সে , ‘দুষ্ট লোকের পরিণতি এমনই হয়।’
আকমল এতক্ষণ চুপচাপ সব দেখলেও তার চিন্তাটা ছিল রাজকুমারী নিমু কে নিয়ে। যুদ্ধের এই ডামাডোলের মধ্যে পড়ে রাজকুমারী নিমু যদি প্রাণ হারায় তাহলে সব ভেস্তে যাবে। আর দেখা হবে না তার সাথে রাজকুমারীর। এই দেশে এসে যার সাথে তার প্রথম পরিচয় তাকে সে নিজের ভুলের কারণে হারাতে পারে না। চোখ মুছে আকমল বলল, ‘রাজকুমারী নিমু যদি মারা যায় তাহলে এর জন্যে আমিই হয়তো চিরকাল দায়ী থেকে যাব; যা আমি কখনো চাইনি। কেননা আমি চেয়েছিলাম রাজকুমারী কে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করতে। যুদ্ধ কিংবা দৈত্যের মৃত্যু হোক তা যেমন চাইনি আবার রাজকুমারী নিমু কেও হারাতে চাইনি আমি।’
পরী হিনা বলল, ‘তোমার চাওয়া টুকুর জন্যই তোমার দায়িত্ব বাকিটুকুর জন্য খোদার ইচ্ছা। আর ভাল কিছুু চাওয়ার পুরস্কার সব সময় তার জন্যেই তোলা থাকে, যে ভাল কিছু চায় খোদার কাছে। সুতরাং তুমি ভেব না, ভাবনাটা তোমারও না। খোদা চায় তো রাজকন্যা নিমুর একটা রোমকূপও কেউ স্পর্শ করতে পারবে না।’
পরী হিনা আকমলকে নিয়ে আবার নেমে এল নিচে। রাজার বিপদের কথা শুনে অনেকেই ফিরে এসেছে আবার জনপদে। যুদ্ধে অংশ নিয়েছে কেউ কেউ, কেউ কেউ খবর পেয়ে ছুটে আসছে দুর-দুরান্ত থেকে। সাধারণ মানুষজন ফিরতে লাগল আবার রাজধানীতে। মৃত জনপদ মানুষের পদচারণায় আবার মুখরিত হয়ে উঠল। অরক্ষিত রাজধানী রেখে যাওয়ার ভুল হয়তো ভেঙেছে এদের। সবাই দলে দলে রাজপ্রাসাদের দিকে ছুটে আসতে লাগল। এখন আর কেউ বলতে পারবে না মৃত রাজ্যের মৃত রাজধানী।
পরী হিনা আকমল কে নিয়ে নেমেছিল রাজপ্রাসাদের চুড়ায়। সেখান থেকে নিচে নামতেই রাজকুমারী নিমুর সাথে দেখা হয়ে গেল তাদের। দূর থেকে তাকে দেখেই আকমল পরী হিনা কে বলল, ‘যুদ্ধে অনেক ক্ষয় ক্ষতি আর অনেক কিছু হারালেও রাজকুমারী নিমু কে তো ফিরে পাওয়া গেল।’
হাসিখুশি ঝলমলে নিমু কে দেখে মনে হল সে আকমলের অপেক্ষায় বসেছিল। সে তাকে দেখেই ছুটে এল তাদের দিকে। তার মুখের মলিনতা সব মুছে গেছে। সেখানে ঝিলিক দিচ্ছে যেন আনন্দের বন্যা। দু’হাত সামনে প্রসারিত করে হাঁটু গেড়ে সে তাদের সামনে বসে পড়ে অভিবাদন জানাল। তারপর বলল সে, ‘তোমার অপেক্ষায় ছিলাম এতক্ষণ আমার প্রিয় ক্ষুদে বন্ধু। তুমি ক্ষুদে মানুষ বলে তোমাকে আমি অবহেলা করেছিলাম। আমার সেই ভুল আর অহংকারের আজ প্রায়শ্চিত্ত হল। আমার আব্বুর মুখ থেকে আমি সব শুনেছি। তুমি তাকে খবর দিয়েছিলে, আমার এই মুক্তির সব কৃতিত্বই তোমার।’
খুশির আবেগের আতিশয্যে আকমলকে সে কোলে তুলে নিল। আকমল বলল, ‘না এ তোমার ভুল রাজকন্যা নিমু...এ কাজে কোন কৃতিত্বই নেই আমার। সব খোদার ইচ্ছা, আর কৃতিত্ব যদি কিছু থেকে থাকে তা পরী হিনার।’
পরী হিনার কথা শুনে ভ্রু কুঞ্চিত করে আকমলের দিকে তাকাল রাজকন্যা নিমু। তারপর বলল, ‘পরী হিনা? সে আবার কে?’
আসলে আনন্দের আতিশয্যে এতক্ষণ পরী হিনার দিকে তাকানোর মোটেও অবসর পায়নি রাজকন্যা নিমু। আকমল চোখের ইশারা করতেই রাজকন্যা নিমু সেদিকে তাকাল। মুহূর্তে দৃশ্যপট পাল্টে গেল। রাজকন্যা নিমুর স্বপ্নালু দু’চোখের মনিতে যেন রাজ্যের বিষ্ময় ফুটে উঠল। তার পাতলা দুই গোলাপি ঠোঁট যেন তির তির করে কেঁপে কেঁপে উঠল। তার গোলাপ ফুলের পাপড়ির চেয়েও নরম আর মোলায়েম দুই আঙুলের ডগায় আলতো করে ধরে পরী হিনা কে উপরে তুলে আনল। তারপর তার বিষ্ময় ভরা দু’চোখে তাকে ভাল করে দেখল, বার বার দেখল;ভালবাসলো, পছন্দ করল; সবশেষে প্রশ্ন করল, ‘তুমিই কী পরী হিনা?’
রাজকন্যার কথা শুনে পরী হিনা হেসে ফেলল। তারপর হাসি থামিয়ে বলল, ‘তুমি যা শুনেছ, যা বিশ্বাস করেছ, তাই সত্যি; আমিই পরী হিনা।’
রাজ্যের বিষ্ময় চোখে নিয়ে রাজকন্যা তার মুক্তার মতো দাঁত দিয়ে নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে চেয়ে রইল কিছুক্ষণ ওদের দুজনার দিকে। তারপর সহসা মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল, ‘একেই বলে সোনায় সোহাগা, সাহসী ছেলের সাথে পরীর বন্ধুত্ব।’
হঠাৎ রাজকন্যার দৃষ্টি দূরে কোথায় নিবদ্ধ হল। যেন অজানা কোন আশঙ্কায় তার হৃদয় কেঁপে উঠল। চোখের মণি দু’টো বার কয়েক স্থানচ্যুত হল। একফোঁটা পানি গাল বেয়ে গড়িয়ে নামল তার। ফিরে তাকাল আবার আকমলের দিকে। তারপর কাঁপা কাঁপা গলায় বলল সে, ‘আমার খুব খারাপ লাগছে তোমার কথা ভেবে। মাত্র অল্প কিছুদিনের জন্য তোমাদের এই পৃথিবীর জীবন। এমন ভালবাসা যেন কোন নারীর জীবনে না আসে যা শুধু কষ্টই দিতে পারে। সুখ শুরু হওয়ার আগেই যে জীবনের পরিসমাপ্তি তাকে ভালবেসে আমি কী পাব? যা শুধু কান্নাই দিতে পারে ভালবাসার উপহার হিসাবে, সে ভালবাসার মূল্য কি? শুধু এক টুকরো স্মৃতি, যা সুখের কান্না হয়ে আমাকে বয়ে নিয়ে বেড়াতে হবে বাকি সারা জীবন। খোদার এ কেমন বিচার?’
আকমল রাজকুমারী নিমু কে সান্ত¦না দিয়ে বলল, ‘তুমি কেঁদনা রাজকন্যা, তাহলে আমার খুব মন খারাপ করবে। নকল জিনিস এমনই হয়, আসলের মতো দেখতে কিন্তু আসল না। দেখলে মনে হয় আসল কিন্তু আসলের স্বাদ তাতে পাওয়া যায় না। আমাদের এ জীবন নকল জীবন, এখানে বেশি দিনই কী আর কম দিনই কী ; সব দিনই সমান।’
রাজকুমারী নিমু চোখ মুছে বলল, ‘তুমি ক্ষুদে মানুষ কিন্তু তোমার কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখলাম। ছোটদের কাছ থেকে যে বড়দের অনেক কিছু শেখার আছে তুমি তার জ্বলন্ত প্রমাণ। আমার মনে যে টুকু অহংকার ছিল তা তুমি মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে গেলে। তোমার কথা আমি বাকি জীবনে আর কোনদিন ভুলব না।’
রাজকুমারীর কথা শুনে আকমল বলল, ‘আমাকে লজ্জা দিও না রাজকুমারী, এই অল্প বয়সে বিভিন্ন আজব দেশ ঘুরে সামান্য যা বুঝেছি তাই বললাম। তা ছাড়া শেখার কোন বয়স নেই। খোদা চায় তো একদিনে যে জ্ঞান অর্জন করা যায় না চাইলে হাজার কিংবা লক্ষ বছরেও তা সম্ভব না। খোদার কাছে চাইলেই সব পাওয়া যায়। যে চায় সে পায়, যে চায় না সে পায় না।’
আকমলের কথা শুনে রাজকুমারী মুচকি হেসে বলল, ‘তোমার জীবনটা যেন সমুদ্রের পানির কাছে একফোঁটা শিশির বিন্দু। যার অস্তিত্ব সকাল হওয়ার আগেই ফুরিয়ে যায়। অথচ মন চাচ্ছে না তোমাকে ছেড়ে দিই, সারাটি জীবন যদি এভাবেই তোমাকে নিজের কাছে রেখে দিতে পারতাম।’
আকমলও মৃদু হেসে বলল, ‘যদি একবার সম্ভব হতো তোমাকে আমার দেশে নিয়ে যেতাম। আর সেখানে গেলে তুমি নিশ্চয় অবাক হয়ে যেতে, তুমি দেখতে পেতে এই শিশির বিন্দুর জীবনের জন্য মানুষের মোটেও কোন আক্ষেপই নেই। বরং উঁচু উঁচু দালান তৈরি আর আরাম আয়েশের জীবন খুঁজতেই ব্যস্ত সবাই। তোমাদের মতো এমন পাগল সেখানে একজনও নেই যে ছোট জীবন হওয়ায় দালান-কোঠা তৈরি করতে কিংবা বিপুল সম্পদ পেতে চায় না। বনে গিয়ে থাকা তো অনেক দূরে-’
পরী হিনা এতক্ষণ চুপ করে শুনছিল দু’জনার কথা। হঠাৎ যেন নড়ে চড়ে বসল রাজকুমারীর হাতের উপরে। তারপর বলল, ‘কথায় কথায় কথা বাড়ে, চল এক্ষুণি আমাদের ফিরতে হবে। কেননা জীবনের সময় খুবই অল্প আর তা খুব প্রয়োজনীয়ও বটে।’
আকমলও তার কথায় সায় দিয়ে বলল, ‘হ্যাঁ, পরী হিনা তুমি ঠিকই বলেছ। এক্ষুণি আমাদের ফিরতে হবে।’
( চলবে..)
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ আপনার পরী হিনার গল্প পড়লাম । ভাল লাগল বেশ।
ভালো লাগেনি ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
অনেক ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা ও আগামী পর্বে আমন্ত্রণ রইল.....
ভালো লাগেনি ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
তানি হক প্রতিবার আকমল ও পরি হিনার প্রতি মুগ্ধ হই ..এবারের পর্ব ও ব্যতিক্রম নয় ..খুব ভালো লাগলো ভাইয়া ..বেশি ভালো লাগলো ..গল্পের মাঝের মাঝের খোদার প্রতি অফুরন্ত বিশ্বাস আর ভালবাসা ময় বাক্য গুলো ..রাজা এবং আকমলের কাব্য কথন ও খুব সুন্দর লেগেছে ..অবশেষে রাজকন্যার মুক্তি আর আত্ম উপলব্ধিও চমত্কার ..ও শিক্ষানীয় .. এক রাশ শুভকামনা ও ধন্যবাদ ..আমাদের পরি হিনার আর একটি সুন্দর পর্ব উপহার দেবার জন্য ..
ভালো লাগেনি ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
....ধন্যবাদ, শুভকামনা এবং আগামী পর্বেও আমন্ত্রণ রইল.....
ভালো লাগেনি ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
তাপসকিরণ রায় হ্যাঁ,রূপকথা পড়ে চলেছি--ভালো লাগছে বেশ।আগামীর অপেক্ষায় থাকলাম।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
আপনার জন্যও রইল অনেক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ সেই সাথে আগামী পর্বে আমন্ত্রণ......
মিলন বনিক আপনার ধারাবাহিক রুপকথার উপন্যাস যতই পড়ছি আকর্ষনযেন আরও বেড়ে যাচ্ছে...সুন্দর এবং উপভোগ্য ভাবে এগুচ্ছে....আগমীর অপেক্ষা থাকলো...অনেক শুভ কামনা....
ভালো লাগেনি ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
শুভ কামনা আপনার জন্যও রইল.....সতত ভাল থাকুন ...আর হ্যা , আগামী পর্বেও আমন্ত্রণ থাকল ......
ভালো লাগেনি ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
প্রিয়ম অনেক অনেক সুন্দর লাগলো |
ভালো লাগেনি ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
আপনাকে ধন্যবাদ, আগামী পর্বেও আমন্ত্রণ রইল ......
ভালো লাগেনি ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
আহমেদ সাবের বেশ ভালো লাগলো হোসেন মোশাররফ ভাই। আগামী মাসের অপেক্ষায় থাকলাম।
ভালো লাগেনি ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
আপনার অপেক্ষা আমার উত্সাহ আরো বাড়িয়ে দিল, ধন্যবাদ আপনাকে সাবের ভাই ......
ভালো লাগেনি ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
বশির আহমেদ বরাবরের মত বাকীটা পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম ।
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
আমন্ত্রণ থাকল পরবর্তী পর্বে ......ধন্যবাদ আপনাকে ....
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
ম তাজিমুল ইসলাম ভাল লাগলো......
ভালো লাগেনি ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
ধন্যবাদ আপনাকে , আবার আসবেন ........
ভালো লাগেনি ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
এফ, আই , জুয়েল # রুপকথার অপরুপ চুপকথা গুলোকে কাব্যিক হাতের ছোয়ায় খুব দারুন ভাবে তুলে ধরেছেন---ধারাবাহিক গতিতে ।।
ভালো লাগেনি ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
ধারাবাহিক এই রূপকথার গল্পটিতে আপনি আনন্দ খুঁজে পাচ্ছেন দেখে আমিও আনন্দিত হলাম , ধন্যবাদ আপনাকে ....
ভালো লাগেনি ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি কি সহজেইনা আপনি টেনে নিয়ে চলেছেন রুপকথার চলন্তিকাকে .... সত্যিই ভাবতে অবাক লাগে....অসাধারণ......মোশাররফ ভাই অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য.........
ভালো লাগেনি ৩১ জানুয়ারী, ২০১৩
আপনার জন্যও রইল আমার পক্ষ থেকে শুভ কামনা, ধন্যবাদ আপনাকে ....
ভালো লাগেনি ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

২৫ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪