প্রতীক্ষা

২১শে ফেব্রুয়ারী (ফেব্রুয়ারী ২০১২)

যুথিকা Barua
  • ১৮
  • 0
হঠাৎ ভয়ঙ্কর এক দুঃস্বপ্নে ঘুম ভেঙ্গে যায় মমতার। তন্দ্রা জড়ানো চোখে ধড়্ফড়্ করে ওঠে। থর্ থর্ করে কাঁপছে সারাশরীর। বুক ধুক্ ধুক্ করছে। ফোঁস ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে হাঁপাচ্ছে। মুহূর্তের জন্য ঠাহরই করতে পাচ্ছিল না, সকাল না সন্ধ্যে। চোখ মেলে দ্যাখে চারিদিকে। তখনও আবছা অন্ধকার বাইরে। দিগন্তের পূর্ব প্রান্তর জুড়ে ঊষার প্রথম সি্নগ্ধ, নির্মল ও কোমল ক্ষীণ আলোর আভায় ক্রমশ একটু একটু করে লাল হয়ে উঠছে। কি নীরব, নিঝুম, শান্ত পরিবেশ!
পিছন ফিরতেই দ্যাখে, খোকনের ঘরে আলো জ্বলছে। ওর ঘরের দরজা খোলা। পাশে বাথ্রুমে ঝর্ণার মতো ঝির ঝির করে পাইপ কলের জল পড়ছে, শোনা হচ্ছে। -'খোকা স্নান করছে বোধহয়! কিন্তু এতো ভোরে! খোকা আজ যাচ্ছে কোথায়!'

স্বগতোক্তি করতে করতে বিছানা ছেড়ে দ্রুত নেমে আসে মমতা। গিয়ে ঢোকে খোকনের ঘরে। ঢুকেই নজরে পড়ে, বিছানার পাশে টি-টেবিলে কালো রঙের একটি কাপড়ের পোটলা পড়ে আছে। মুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিল, কোনো জন্তু-জানোয়ার বুঝি জানালা দিয়ে ঢুকে টেবিল ল্যাম্পের আড়ালে ঘুপচি মেরে বসে আছে।

খানিকটা বিস্ময় নিয়ে কাছে এগিয়ে যায় মমতা। গিয়ে দ্যাখে, কোনো জীব-জন্তুও নয়, কাপড়ের পোটলাও নয়। সেটি মাঝারি আকারের একটি ল্যাদারের ব্যাগ। ব্যাগটি বাইরে থেকে ফুলে উঠেছে। মনে হচ্ছে, ব্যাগটিতে ভর্তি কোনো জিনিস আছে! কিন্তু কি হতে পারে! আশ্চর্য্য, খোকার ঘরে এতবড় ল্যাদারের ব্যাগ এলো কোত্থেকে! আগে তো কোনদিন দেখিনি! বলল মনে মনে।

স্বাভাবিক কারণেই ব্যাগটি খুলে দেখার বড্ড কৌতূহল হয় মমতার। সম্বরণ করতে পারে না। কিন্তু ব্যাগটি হাতে নিতেই চাপা আর্ত কণ্ঠে খোকন গর্জে ওঠে,-'মা, তুমি এঘরে, কি করছ? সর্বণাশ, ওটা ধোরো না, বিপদ ঘটে যেতে পারে! শিগ্গির রেখে দাও!'
বলতে বলতে বাথরুম থেকে দ্রুত এগিয়ে আসে খোকন। চোখেমুখে খানিকটা উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করে একরকম ছোঁ মেরে মায়ের হাত থেকে ব্যাগটা কেড়ে নিয়ে খুব সাবধানে টি-টেবিলে রেখে দিলো।

অপ্রস্তুত মমতা হঠাৎ থতমত খেয়ে গেল। আচমকা খোকনের এধরণের বিহেইব কল্পনাই করতে পারেনি। অত্যার্শ্চয্যজনকভাবে স্তম্ভিত হয়ে যায় বিস্ময়ে। খোকনের আপাদমস্তক লক্ষ্য করে জিজ্ঞাস্য দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে। ও'যে কিছু একটা লুকোচ্ছে, সেটা দৃঢ়ভাবে নিশ্চিত হয়। কিন্তু সহজ সরল মমতা তার পরক্ষণেই ভাবল, কি আর হবে! ওর বন্ধু-বান্ধবের কারো কোনো ব্যক্তিগত জিনিস হবে হয়তো! কিন্তু মমতা আদৌ জানেনা যে, ঐ ব্যাগটিতে কি আছে! মায়ের অজান্তে খোকন যাচ্ছে কোথায়! আর সেই সর্বণাশা জিনিসটাই বা কি!

স্বাভাবিক হয়ে খোকন বলল,-'তুমি খামাখা ঘুম থেকে উঠে এলে মা! আজ আমাদের ইউনিভার্সিটিতে খুব জরুরী একটা মিটিং আছে। খুব আর্লি-মর্নিংএ আমাদের সবাইকে এ্যাটেন্ড্ করতে হবে, তাই..! যাও যাও, গিয়ে শুয়ে পড়ো যাও! মাত্র সাড়ে পাঁচটা বাজে এখন!'

এমন স্বাভাবিক গলায় বলল, যেন কিছু হয়নি। এদিকে মনে মনে বলে, মা নিশ্চয়ই টের পেয়ে গেছে। এতক্ষণ ওয়াচ্ই করছিল বোধহয় ওকে।

নজর এড়ায় না মমতার। লক্ষ্য করলো, মুখখানা মুহূর্তে বিবর্ণ হয়ে গেল খোকনের। গভীর তন্ময় হয়ে কি যেন ও' ভাবছে, খুব চিন্তিত দেখাচ্ছে ওকে। বিরবির করে কি যেন বলছে।
এমতবস্থায় একজন গর্ভধারিনী মায়ের মন, কিছুতেই স্বস্তি পায় না। অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়ে মমতা। কারণ অনুসন্ধানে প্রচন্ড উদগ্রীব হয়ে ওঠে। উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় খোকনের মুখের দিকে পলকহীন নেত্রে চেয়ে থাকে।

চোখে চোখ পড়তেই অস্ফূট হেসে ফেলল খোকন। বলল,-'তুমি এখনো দাঁড়িয়ে আছো! যাও! খামাখা টেনশন নিচ্ছো! আমায় এক্ষুণিই রেডি হতে হবে!'

মায়ের সাথে খোকন কথা বলছে ঠিকই কিন্তু ওর নজর ঐ ব্যাগটির দিকে। কেমন অস্থির অস্থির ভাব। মনে হচ্ছে, মাকে ঘর থেকে বিদায় করতে পারলেই ও' হাঁফ ছেড়ে বাঁচে।

খটকা লাগল মমতার। কেমন সন্দেহজনক মনে হলো। অসন্তোষ গলায় বলল,-'খোকা, তুই অমন ছট্পট্ করছিস কেন? আমার মাথার দিব্যি দিয়ে বল্তো, এই সাত সকালে তুই কোন্ রাজকার্যে যাচ্ছিস শুনি? সেই তখন থেকে লক্ষ্য করছি, কেমন উদাস, অন্যমনস্কভাব। বলি কিসের এতো চিন্তা তোর? কার জন্যে? তোদের ইউনিভার্সিটিতে মিটিং আছে বলছিস, মিটিংটা কিসের?'

সামান্য বিরক্তি প্রকাশ করে খোকন বলল,-'ওঃ হো, কি মুশকিল, বলছি গিয়ে শুয়ে পড়তে! যাও তো, যাও! ওসব তুমি বুঝবে না!'

খানিকটা নরম হয়ে পড়ে মমতা। গলার আওয়াজ মোলায়েম করে খোকনের মাথায় হস্ত সঞ্চালণ করতে করতে বলল,-'মায়ের কাছে কিছু লুকোস নে বাবা! কোথায় যাচ্ছিস, কি করছিস, মাকে বলবি নে! তুই ছাড়া আমার আর কে আছে বল! হঁ্যা রে, ঐ কালো ব্যাগের মধ্যে খুব দামী জিনিস আছে বুঝি!'

খোকন নিরুত্তর। পড়ে যায় বিপাকে। মায়ের জেরায় একবার পড়ে গেলে জবাবদিহী করতে করতেই প্ল্যান-প্রোগ্রাম সব যাবে মাটি হয়ে। এইভেবে মাকে উপেক্ষা করে হঠাৎ আহাল্লাদে গদগদ হয়ে ওঠে। বাধ্যগত ছেলের মতো খুব মার্জিত হয়ে বলল,-'এতো ভাবনার কি আছে মা! তেমন মারাত্মক কিছু নয়! ওটা আমার এক বন্ধুর। ক'দিনের জন্য গচ্ছিত রেখেছিল। কিন্তু তুমি ঘুম থেকে উঠে এলে কেন! আমি কি দুধের খোকা!'
হাতের মাশেল ফুলিয়ে বলে,-'আমি এখন ইউনিভার্সিটির ছাত্র, হাট্টা গোট্টা তরুণ যুবক। সামান্য একটা তুচ্ছ বিষয়কে এতো সিরিয়াসভাবে নিচ্ছো কেন বলোতো! আমারও তো একটা প্রাইভেসি থাকতে পারে, না কি!'

ভ্রু-যুগল কুঁচকে চেয়ে থাকে মমতা। ভিতরে ভিতরে খুব চটে যায়। কিছু বলবার ব্যাকুলতায় ঠোঁটদু'টো কেঁপে উঠতেই মাকে জড়িয়ে ধরে খোকন। কনভিন্স করার চেষ্টা করে। সহাস্যে বলল,-'ওঃ হো, রিল্যাঙ্ মাদার রিল্যাঙ্,ডোন্ট ওরি! ক'মন! আচ্ছা, ঘুম থেকে উঠেই পড়েছ যখন ফটাফট্ এক কাপ গরমাগরম চা করে নিয়ে এসো দেখি! শরীরটা একটু ঝর ঝরে হয়ে যাক!'

কথা না বাড়িয়ে মমতা তক্ষুণিই চলে যায় রান্নাঘরে। ইত্যবসরে খোকন তাড়াতাড়ি জামা-প্যান্ট পড়ে নেয়। মাথা আঁচড়াতে আঁচড়াতে একবার রান্নাঘরের দিকে গলা টেনে দেখে কি যেন ভাবল। ভেবে টি-টেবিল থেকে কালো ব্যাগটি হাতে নিয়ে পা টিপে নিঃশব্দে দ্রুত বেরিয়ে গেল ঘর থেকে।

তার পরক্ষণেই প্লেটে করে চা, বিস্কুট নিয়ে আসে মমতা। ঘরে ঢুকে দ্যাখে, খোকন ঘরে নেই। বাথ্রুমে গলা টেনে দেখলো, সেখানেও নেই। মায়ের অগোচরে খোকন কখন যে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল, টের পেল না। হঠাৎ নজরে পড়ে, টেবিল ল্যাম্পের পাশে কালো ব্যাগটিও নেই।
মমতা তৎক্ষণাৎ চাপা উত্তেজনায় স্বগতোক্তি করে ওঠে,-'আশ্চর্য্য, খোকা আজ দানাপানি মুখে না দিয়ে মায়ের অলক্ষ্যে বেরিয়ে গেল ঘর থেকে! যাবার পথে মাকে একবার দর্শণ দিয়ে গেল না! কিন্তু মিটিং-এর দোহাই দিয়ে ঐ কালো ব্যাগে করে খোকা কি নিয়ে গেল? কোথায় নিয়ে গেল? কাকেই বা দিতে গেল?'

হাজার প্রশ্নের ভঁীড় জমে ওঠে মমতার। দুঃশ্চিন্তা-দুর্ভাবনায় ওকে আষ্টে-পিষ্ঠে ঘিরে ধরে। একটা মুহূর্তও আর স্বস্তি পায় না।

মমতা সহজ সরল, সেকেলে মহিলা। সংস্কারপ্রবণ মন-মানসিকতা। স্বামী বিয়োগের পর একেবারে নরম হয়ে গিয়েছে। কোনো বিষয়ে তেমন গভীরভাবে ভাবতে পারেনা। মাথাও ঘামায় না কখনো। কিন্তু আজ কান্ডজ্ঞানহীন খোকনের অশোভনীয় আচরণে ক্ষোভে দুঃখে ফেটে পড়লেও এক অভাবনীয় ভাবনার অতল সাগরে ডুবে যায়। ধাওয়া করে এক অনিশ্চিত মোহনার দিকে। কি অপরিসীম উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় অতিবাহিত হতে থাকে মমতার এক একটা মুহূর্ত। সাধারণত মায়ের মন সবর্দা কু-ই গায়। বিশেষ করে স্বামীর অকাল মৃতু্যতে হারিয়ে গেছে মনের শক্তি, সাহস, আত্মবিশ্বাস। সামান্য কারণেই ভারসাম্য হারিয়ে ফ্যালে, মন-মানসিক ওর দুর্বল হয়ে পড়ে। বাস করে নিজের জগতে। গ্রামের বাড়িতে শ্বশুড় কূলের ভিটে-বাড়ি সহ স্বল্প পরিমানে কিছু ধানি জমি ছিল, তাতেই শাক-সব্জি, আনাচপাতির চাষ করে। সমপ্রতি হাঁস-মুরগীর পল্ট্রিও খুলেছে। সেখান থেকেও কিছু আমদানী হয়। সব মিলিয়ে উপার্জন যা হয়, তা দিয়ে মায়ে-পুতে দুজনের দিব্যি স্বচ্ছলভাবে চলে যায়। টাকা পয়সা নিয়ে কখনো ভাবতে হয়না। একমাত্র সন্তান খোকনকে নিয়েই মমতার যতো চিন্তা-ভাবনা, আসা-ভরসা। অকাল বৈধব্যে একাকী নিঃসঙ্গতায় শোক-দুঃখ-বেদনা ভুলে, প্রাত্যহিক জীবনের পারিপাশ্বর্িক কোন্দল-বিবাদ-বিচ্ছেদ-বেদনার কালো ছায়া থেকে সড়ে এসে এতকাল বুকে আলগে রেখে মনের মতো করে খোকনকে মানুষ করেছিল কি এই জন্যে? এইদিন দেখার জন্যে? মায়ের মনে কষ্ট দিতে খোকার বিবেকে এতটুকু বাঁধলো না? দুঃশ্চিন্তায় মায়ের শরীরের কি হাল হবে, সেকথা ও' একবারও ভাবল না! কিন্তু খোকা আজ গেল কোথায়?




( ২ )


খোকন ছোটবেলা থেকেই বড্ড একরোখা ছেলে। অনমনীয় ওর জেদ। বিরল সেন্টিমেন্টাল। প্রতিটা বিষয়েই ওর বিরোধীতা, আপত্তি, অভিযোগ। প্রখর সংগ্রামী মনোভাব। যেদিন শহরের রাজপথে প্রথম ভাষা আন্দোলনের শুরুতে নবীন সদস্য আবদুল রশীদ বেকায়দায় পাকবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে নির্মমভাবে আত্মাহুতি দিয়েছিল, তাদেরই বন্দুকের গুলী বিদ্ধ হয়ে। আর সেই হৃদয়বিদারক ঘটনা সমগ্র জনগণের মনে বৈপ্লবিক চেতনার সাংঘাতিক বিস্ফোরণ ঘটেছিল। সেই বৈপ্লবিক চেতনার বাতাবরণে খোকন আরো গভীরভাবে স্বাধীনতা বিপ্লবের সাথে আষ্টে-পিষ্ঠে জড়িয়ে পড়ে। লোকের কানাঘুষোয় শোনা যায়,-'উজ্জ্বল চৌধুরী (ওরফে খোকন) একজন বিপ্লববাদী স্বদেশী।'

তবু কখনও মনের মধ্যে তেমনভাবে সন্দেহের দানা বাঁধেনি মমতার। বরং মনে মনে খুবই গর্ববোধ করতো। আত্মগর্ভে মায়ের বুক ভরে উঠতো। ভাবতো, স্বদেশী মানেই তো দেশকে ভালোবাসা, দেশের জনগণকে ভালোবাসা, দেশের সেবা করা, দশের সেবা করা, জনগণের সেবা করা। এটা একটা মহৎ কাজ, মহা পূণ্যের কাজ! কিন্তু আজ কোণ্ কার্যালয়ে, কিসের পূর্ণ অর্জন করতে গেছে খোকা?

বেলা ক্রমশ বয়ে যাচ্ছে। মমতা তখনও অশান্ত, উদ্বেলিত, মর্মাহত। ক্ষণে ক্ষণে গহীন বেদনানুভূতির তীব্র দংশণ আর ভোরের ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নের প্রতিঃচ্ছবি ক্রমাণ্বয়ে ওর স্নায়ূকোষে ঘুরপাক খাচ্ছে। কখনো জীবন্ত হয়ে ওর মনঃচক্ষে দেখা দিচ্ছে। তন্মধ্যে আকস্মিক খোকনের অভাবনীয় ব্যতিক্রম চাল-চলন, কথাবার্তা, বিবর্তন চেহারা প্রদর্শণে মনের মধ্যে সন্দেহের দানা চাড়া দিয়ে ওঠে। অজানা আশঙ্ক্ষায় ঘিরে ধরে। সন্দেহ ক্রমশ ঘনীভূত হতে থাকে। প্রচন্ড ভাবিয়ে তোলে। নদীর ঢেউএর মতো মস্তিস্কের কোষে কোষে বার বার একই প্রশ্ন ফিরে এসে আঘাত করতে থাকে,-মায়ের চোখে ফাঁকি দিয়ে, মাকে ভাবনার সাগরে ডুবিয়ে, সম্পূর্ণ উপবাসে খোকা আজ গেল কোথায়?

সেই সকাল থেকে চা-জল-খাবার নিয়ে বসে আছে মমতা। কিছুতেই মুখে ঢুকছে না। ক্ষিদা, তৃষ্ণাও ভুলে গেছে। কখন থেকে কলিং বেলটা একটানা বাজজিল, এতক্ষণ খেয়ালই ছিলনা। হঠাৎ জানালার ধারে বসে থাকা হুলো বিড়ালটা মিঁয়াউ করে ডাক দিতেই চমকে ওঠে। বেলের আওয়াজ শুনে ভাবল, খোকা ফিরে এলো বোধহয়।

দৌড়ে গেল মমতা। দরজা খুলে দেখল, একটি অচেনা অজানা যুবতী মেয়ে উদ্ভ্রান্ত হয়ে দরজার ওপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। কিছু বলবার ব্যাকুলতায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছে।

হঠাৎ অপরিচিত মেয়েটিকে দেখে ঘাবড়ে গেল মমতা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হাঁপাতে হাঁপাতে মেয়েটি বলল,-'মাসিমা, আমি আরতি, উজ্জ্বলের ক্লাসমেট্। কিছুক্ষণ আগে আমাদের পুকুরঘাট থেকে ওকে দেখলাম মনে হলো, গায়ে চাদর জড়ানো, পায়ে হাওয়াই চপ্পল। রেল লাইন ধরে খুব জোরে হেঁটে যাচ্ছিল। ও' কোথায় গেছে আপনি জানেন?'

ফ্যাস্ ফ্যাস শব্দে মমতা বলল,-'তা তো জানি না! বলছিল, ইউনিভার্সিটিতে যাবে! কিসের একটা জরুরী মিটিং আছে! কিন্তু যাবার সময়...!

মমতার কথা শেষ না হতেই অাঁতকে ওঠে আরতি,-'এঁ্যা, ইউনিভার্সিটিতে গেছে!' বলে ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে থাকে। কিছুক্ষণ থেমে বলল,-'সর্বণাশ, আপনি ঘর থেকে আজ ওকে বের হতে দিলেন কেন?' বলে ধপাস করে সিঁড়িতেই বসে পড়ে।

পড়ল মরার উপর খাড়া। চিন্তাধারার গতিবেগ আরো তিনগুণ বেড়ে গেল মমতার। আশঙ্ক্ষায় বুকের ভিতরটা ধুক্ ধুক্ করে কাঁপতে থাকে। ভয়-ভীতিতে বুক শুকিয়ে কাঠ। চোখেমুখে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, মনে বিভীষিকা। হঠাৎ কাঁন্নাজড়িত কণ্ঠে আর্তনাদ করে ওঠে,-'কার কি সর্বণাশ হবে মা! কোথায় হবে? কেন হবে? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি নে!'

মনে মনে বিব্রোতবোধ করে আরতি। সামান্য অসন্তোষ প্রকাশ করে বলল,-'কেন, খবরে কিছু শোনেন নি? আজ ইউনিভার্সিটির চারপাশে সরকার এক'শ চুয়ালি্লশ ধারা জারি করেছে। নোটিশ ঠুকে দিয়েছে, ইউনিভার্সিটির ত্রিসীমানায় কোনো মিটিং, মিছিল কিংবা জটলা করা চলবে না। আজ একটা গন্ডোগোল হবার খুউবই সম্ভাবনা আছে!'

শুনে আঁতকে ওঠে মমতা,-'এ্যাঁ, বলো কি! কিসের মিটিং? কাদের মিটিং? মিছিল করবে কেন ওরা? এক'শ চুয়ালি্লশ ধারা জারি করেছে, কেন? গন্ডোগোলটা হবে কিসের জন্য?'

অবাক কণ্ঠে আরতি বলল,-'সেকি মাসিমা, উজ্জ্বল কিছুই বলেনি আপনাকে? আমাদের রাষ্ট্রীয় ভাষা বাংলা করার দাবিতে ছাত্র-ছাত্রীরা সব আন্দোলন করছে, আপনি জানেন না? আজ ওরা এক'শ চুয়ালি্লশ ধারা লঙ্ঘন করে, হাতে ঝান্ডা নিয়ে শ্লোগান দিতে দিতে এসেম্বেলীর দিকে যাবে। পুলিশ নিশ্চয়ই তখন ওদের উপর হামলা করবে, লাঠিচার্জ করবে, কাঁদানি গ্যাস ছুড়বে। ব্যস, তারপর শুরু হয়ে যাবে ঘোরতরো গন্ডোগোল।'

বুকটা ধুক্ করে কেঁপে উঠল মমতার। ধপাস করে বসে পড়ল সোফায়। অসহায় চোখের চাহনি। কণ্ঠে হতাশার সুর। একটা ঢোক গিলে ফ্যাস্ ফ্যাস্ স্বরে বলল,-'হঁ্যা, শুনছি তো অনেকদিন ধরে! এখন কি হবে বলো তো!'

সান্তনা দেবার চেষ্টা করে আরতি। বলল,-'না, না, কিচ্ছু হবে না। আপনি অযথা ভেঙ্গে পড়ছেন। আমি বলছিলাম, কখন কি হয়, বিপদের কথা তো বলা যায় না! আর তাছাড়া, উজ্জ্বল বিদ্যান, বুদ্ধিমান, চালাকচতুর ছেলে। আর যাই হোক, অন্তত গায়ে একফোঁটা অাঁচ পড়তে দেবে না। ওনিয়ে আপনি কিচ্ছু ভাববেন না মাসিমা। আমি দেখছি, কাউকে পাঠিয়ে ওর খবর নেওয়া যায় কি না!'

আরতি চলে যেতেই ভারাক্রান্ত মনটা খানিকটা হাল্কা হয় মমতার। চিন্তা-ভাবনাও কিছুটা দূরীভূত হয়। শারীরিক এবং মানসিক অবসন্নতা ঝেড়ে ফেলে স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। যথারীতিই নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু তার পরেও কেমন একটা খটকা লাগছে মনে। কোথায় যেন খুব হৈ চৈ হচ্ছে, চিৎকার চেঁচামিচি হচ্ছে। শোনে কান পেতে। কিন্তু শব্দটা তক্ষুণিই কোথায় যেন মিলিয়ে গেল। ভাবল, হয়তো ওর মনের ভ্রম।

-'দূগর্া, দূর্গা! সবই ভগবানের ইচ্ছা!' আপন মনে বির বির করতে করতে ঢুকে পড়ে রান্নাঘরে।




( ৩ )


ন'টা বাজে প্রায়। খোকন দূর থেকে লক্ষ্য করল, পূর্ব পরিকল্পিত অনুযায়ী ছাত্র-ছাত্রীরা তখনও এসে পেঁৗছায় নি। ইউনিভার্সিটির চারিদিকে পুলিশ পাহাড়া দিচ্ছে। কিন্তু মাঝে মধ্যে শ্লোগান শোনা যাচ্ছে,-'রাষ্ট্রীয় ভাষা বাংলা চাই, বাংলা চাই!'

খোকন চেষ্টা করে ইউনিভার্সিটির পিছনের গেট দিয়ে ঢুকতে। কিন্তু উপায় নেই। সেখানেও ঝাঁকে ঝাঁকে পুলিশ দাঁড়িয়ে, হাতে বন্দুক নিয়ে কড়া নজরে পাহাড়া দিচ্ছে। ততক্ষণে ছাত্র-ছাত্রীরা দলবেঁধে মিছিল করতে করতে ইউনিভার্সিটির মেইন গেটের প্রাঙ্গনে চলে এসেছে। পুলিশ তক্ষুণি ওদের উপর হামলা চালায়, লাঠিচার্জ করে। কয়েকজনকে জামার কলার ধরে জবরদস্তী তুলে নেয় গাড়িতে। আর তখনই শুরু হয়ে যায় হট্টোগোল, ভাগ-দৌড়, বিরূপ বিশৃঙ্খল পরিবেশ। খোকন ছুটে এসে চাদরের ভিতর থেকে এলোপাথারী ছুঁড়তে লাগল বারুদের গোলা। ইতিপূর্বে কয়েকজন ছাত্র ক্যারোসিন ঢেলে জ্বালিয়ে দেয় কয়েকটি পুলিশ ভ্যান। অন্যদিকে উত্তেজিত জন সমুদ্রের ক্রমাগত ঢেউএ ভেসে আসছে, শ্লোগানের তীব্র হুঙ্কার। জনগণের দাবি।
ওদের অবরোধ করতে পুলিশ ছুঁড়তে লাগল কাঁদানি গ্যাস। তীরের মতো ছুটছে বন্দুকের গুলী। হচ্ছে একটার পর একটা হৃদ-কাঁপানো বোমা-বারুদের বিস্ফোরণ। মুহূর্তের মধ্যে পরিণত হয়, এক বিভীষিকাময় রক্তাক্ত রণক্ষেত্র। রক্তে ভাসছে গোটা শহর, শহরের রাজপথ। চারিদিকে শুধু ধোঁয়া আর ধোঁয়া। আকাশে বাতাসে ছেয়ে গেছে বারুদের উগ্র গন্ধ। চোখে পথ দেখা যাচ্ছে না। মাটিয়ে লুটিয়ে পড়ছে, চিরশায়িত সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার ভাইএর মতো আরো কত অগণিত বাংলা মায়ের বীর সন্তান, বীর যোদ্ধা। এমতবস্থায় ছাত্র-ছাত্রীরা দলভঙ্গ হয়ে যে যার নিজের আত্ম রক্ষার্থে দ্বিগ্বিদিক জ্ঞান শূন্য হয়ে অন্ধের মতো ছুটতে শুরু করে।

এমনিতেই মন-মেজাজ সকাল থেকে ভালো নেই মমতার। তন্মধ্যে চতুর্দিক থেকে বজ্রপাতের মতো বোমা বাজীর আওয়াজ কানে এসে লাগছে। মনে হচ্ছে, এই বুঝি গায়ের উপর এসে পড়ল। সেই সঙ্গে মরার কাঁক একটা সেই তখন থেকে জানালার ধারে বসে তীব্র স্বরে কাঁ কাঁ করে ডাকছে। যেন কিছু বলতে চাইছে, কোনো সংবাদ বয়ে নিয়ে এসেছে ও'। কিন্তু মায়ের মন, কু-ই গায়। স্বাভাবিক কারণেই মনের মধ্যে উদয় হয়, কাঁকটি সত্যিই কোনো দুঃসংবাদ বয়ে আনেনি তো!
হে ভগবান, এমন বিপর্যয়ের মুখে খোকা কোথায়, কি অবস্থায় আছে, এ চিন্তায় কিছুতেই আর স্বস্তি পায়না মমতা। সারাক্ষণ কত সব কু-চিন্তা, কু-ভাবনা মনের মধ্যে এসে ঘুরপাক খাচ্ছে। একদন্ডও সুস্থির হয়ে থাকতে পারেনা। রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে আসে বারান্দায়। খাঁচার পাখীর মতো বারান্দার এমাথা ওমাথা অনবরত পায়চারি করতে থাকে।

একসময় থেমে যায় বোমা বারুদের বিস্ফোরণ। দাঙ্গা, হাঙ্গামা। যেদিন দীর্ঘ আন্দোলনের অবসান ঘটিয়ে রাষ্ট্রীয় ভাষা বাংলা হবার স্বীকৃতি লাভের চৌকাঠে এসে পেঁৗছায়, সেই দিনটি ছিল একুশে ফেব্রুয়ারী। কিন্তু তার রেশ তখনও কাটেনি। ক্লান্তি সূর্য্য অস্তাচলে ঢলে পড়তেই যেন থমকে দাঁড়িয়ে থাকে গোটা পৃথিবীটা। গুমোট মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। রক্তে ভেসে যাচ্ছে গোটা শহর। অন্যদিকে পুত্র বিয়োগের শোকে, দুঃখে কাতর কত অভাগিনী মায়ের শূন্য বুক অশ্রুবন্যায় ভেসে যাচ্ছে।

মনের অজান্তেই বুকটা হঠাৎ কেমন ছ্যাৎ করে উঠল মমতার। হৃদস্পন্দন আরো দ্রুত গতীতে চলতে শুরু করে। সবুর সয় না। দ্রুত নেমে আসে উঠোনে। ততক্ষণে বিশাল জন-সমুদ্রের ঢেউ ওর বাড়ির সনি্নকটে এগিয়ে আসে। মমতা চোখ পাকিয়ে দ্যাখে, একদল যুবক ছেলে সাদা কাপড়ে ঢেকে কাকে যেন কাঁধে চেপে উর্দ্ধঃশ্বাসে দ্রুত এগিয়ে আসছে। ওদের পিছন পিছন উপছে পড়ছে অগণিত মানুষের ভীঁড়, ঠেলাঠেলি।

ইতিপূর্বে ছুটে আসে আরতি। ছুটে আসে পাড়া-প্রতিবেশী, বাচ্চা-বুড়ো-জোয়ান সবাই। মুহূর্তে ওদের বাড়ির চারিধারে প্রচন্ড ভঁীড় জমে ওঠে। যা ক্ষণপূর্বেও কল্পনা করতে পারেনি মমতা। কিন্তু আপনগর্ভে লালিত সন্তান আর মায়ের নারীর চিরন্তন বন্ধন, সে এক অদৃশ্য শক্তি, এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধন, নারীর টান। তাকে অবরোধ করে সাধ্য কার! স্বয়ং বিধাতারও নেই! আর সেই অদৃশ্য বন্ধন শক্তির প্রভাবেই মমতাকে বারান্দা থেকে টেনে নিয়ে আসে প্রশস্ত আঙ্গিনায়। যার কারণ ও' নিজেও জানতো না। হঠাৎ কর্ণগোচর হয়, উজ্জ্বলের নাম ধরে ছেলেরা কি যেন বলছে। নিশ্চয়ই বাড়িই খুঁজজে বোধহয় ওরা। তবে কি খোকনেরই কোনো অঘটন ঘটল?

বুঝতে কিছুই আর অবশিষ্ঠ রইল না মমতার। বিদু্যতের শখের মতো হৃদয়পটভূমিতে খুব জোরে একটা ধাক্কা লাগল। থর্ থর্ করে কেঁপে ওঠে। ভেঙ্গে পড়ে বোবা কাঁন্নায়। অনুভব করে, পায়ের তলা থেকে মাটি যেন ক্রমশ সড়ে যাচ্ছে। জমে হীম হয়ে যাচ্ছে ওর সারাশরীর। স্থীর হয়ে যায় চোখের দৃষ্টি। একসময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভাবসাম্যহীন হয়ে পড়ে। হঠাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়তেই ওকে জড়িয়ে ধরে আরতি।

ততক্ষণে সাদা চাদরে ঢাকা খোকনের রক্তাক্ত মৃতদেহটাকে শোয়ায়ে রাখা হয় বারান্দায়। যেন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আছে। জীবনের সব হিসেব নিকেষ চুকিয়ে দিয়ে এসেছে। কত নিশ্চিন্ত মনে ঘুমোচ্ছে। কোনো চাহিদাই আর নেই! কারো প্রতিই ওর আক্ষেপ নেই, অভিমান নেই, অভিযোগ নেই। কিন্তু ওর গর্ভধারিনী মা, মাকে কি জবাব দেবে খোকন? কেন মায়ের চোখে ফাঁকি দিয়ে নীরবে চলে গেল খোকন? এ কথার জবাব মমতা কি পাবে কোনদিন? কেউ কি বোঝাতে পারবে ওকে কোনদিন?

কারো মুখে কথা নেই। সবাই বাক্যাহত, বেদনাহত, মর্মাহত। বিমূঢ়-ম্লান মুখে দাঁড়িয়ে আছে সবাই। সবার চোখে জল। হঠাৎ ভঁীড়ের মধ্য থেকে একটি যুবক ছেলে এগিয়ে এসে বলল,-'কই, উজ্জ্বলের মা কোথায়? ওনাকে ডাকুন!'

কিন্তু কোথায় উজ্জ্বলের মা? তখন ও' আর ওর মধ্যে নেই। সম্পূর্ণ উদ্মাদ। সমানে আবোল-তাবোল বকছে। কখনো আপনমনে বির বির করছে। কখনো চোখমুখের বিচিত্র অবয়বে নিজের মনের সাথেই সমঝোতা করছে। বহু চেষ্টা করেও মমতাকে ঘরের ভিতরে নেওয়া গেল না। বার বার শুধু বলছে,-'আমার খোকাকে তোমরা কেউ দেখেছ? ও' কোথায় গেছে তোমরা জানো? আমার খোকা এখনো বাড়ি ফিরে আসে নি! ওর খাবারগুলি আমি ঢেকে রেখেছি। তোমরা দাঁড়িয়ে আছো কেন? যাও না, চলে যাও না তোমরা! আমি তো এখানে আছি। আমার খোকা ফিরে না আসা পর্যন্ত আমি এই সিঁড়িতেই বসে থাকবো!'

হঠাৎ মমতাকে বুকে জড়িয়ে ধরে হু হু করে কেঁদে ওঠে আরতি। কাঁন্না জড়িত কণ্ঠে বিলাপ করে বলল,-'আপনার খোকা আর ফিরে আসবে না মাসিমা! কোনদিনও আর আমাদের মাঝে ফিরে আসবে না! ভাষা আন্দোলনে ওও জীবন বলিদান করে গেছে। রাতের আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো আমাদের সবার অন্তরে উজ্জ্বল অমর হয়ে থাকবে। ওকে আমরা কেউ কোনদিনও ভুলবো না।'
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
sakil অসাধারণ লিখেছেন . বেশ ভালো লেগেছে
ভালো লাগেনি ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
আবু ওয়াফা মোঃ মুফতি বেশ ভালো লাগলো|
ভালো লাগেনি ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
মামুন ম. আজিজ ভাষা আন্দোলনের সেই সময়কার একটি শহীদের পরিবারের কাল্পরনিক চিত্র খুব সুন্তর করে ফুটিয়েছেন দিদি।
ভালো লাগেনি ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
সূর্য চমৎকার গল্প, ভালো লাগলো খুব। ['রাষ্ট্রীয় ভাষা বাংলা চাই, বাংলা চাই!' এটা বোধ হয় এমন ছিল "রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই" ২. সময়কালটা ৫২ হলে মা যদি সেকেলে ধ্যান ধারনার হয় তাহলে মায়ের সাথে এভাবে "খুব আর্লি-মর্নিংএ আমাদের সবাইকে এ্যাটেন্ড্ করতে হবে," ইংরেজী শব্দ ব্যবহারে কথা বলাটা ঠিক যায় না। ৩. তখন কী পোল্ট্রি খামার করার ধারনাটা ছিল? তাও আবার গ্রামের বাড়িতে?]
ভালো লাগেনি ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
ভাই সূর্য, আমার গল্পটি পড়বার জন্যে প্রথমেই আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ...তবে গল্পটির বিষয়বস্তু ৫২ এর হলেও সাধারনত লেখকেরা কাল্পনিক চারিত্রগুলিকে গল্পের মাধ্যমেই রূপ দিয়ে থাকেন....সেখানে যদি কোনো সেকেলে মায়ের শিক্ষিত পুত্র দু-চারটি ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করে থাকে, তাতে ঠিক বেঠিকের কিছু নেই... আর আমার মতে তখনকার দিনেও গ্রামের বাড়িতে পোল্ট্রি খামার করবার ধারনাটা অবশ্যই ছিল...তা না হলে মানুষ কি তখন মুরগির ডিম খেত না?
ভালো লাগেনি ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
সুলতানা জাফরিন পিংকি ভালো লাগলো।
ভালো লাগেনি ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ অনেক ভালো লাগলো দিদি। শুভকামনা রইলো।
ভালো লাগেনি ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
নিলাঞ্জনা নীল অনেক অনেক সুন্দর গল্প হয়েছে মাসি,,,,,,, খুব ভালো লাগলো.....
ভালো লাগেনি ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
নজরুল জাহান অনেক সুন্দর গল্প পড়ালেন আপনি । আমি বেশি বলতে পারবনা তবে আপনার গল্প লেখার হাত আছে এতটুকু বললাম ।
জলধারা মোহনা সেই ভাষা আন্দোলন, সেই মায়ের উত্‍কণ্ঠা, সেই চিরন্তন প্রতীক্ষা..বড় ভালো লাগলো পড়ে:)
ভালো লাগেনি ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
মিলন বনিক একজন মায়ের আবেগ আর দুচ্চিন্তা দুটোই গল্পটির অনেক সুন্দর রূপ দিয়েছে, লেখিকাকে অনেক ধন্যবাদ ও শুভ কামনা.........
ভালো লাগেনি ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

২৫ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪