আমার মা আমার পৃথিবী

মা (মে ২০১১)

MD. Nazmul Abedin
  • ১৩
  • 0
"শৈবাল দীঘিরে বলে উচ্চ করি শির
লিখে রেখো এক ফোটা দিলেম শিশির"।
উক্ত কবিতার মতই আমাদের জীবন। আমি আমার মা-বাবাকে কোন সময় টাকা পয়সা হাওলাত দিলে ও পরবর্তীতে কড়ায় গণ্ডায় সুদে আসলে তা আদায় করেছি। অথচ মায়ের কাছ থেকে জীবনে কতো টাকা পয়সা যে এনেছি এর কোন ইয়ত্তা নেই। সে টাকা ভুল করে ও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোন দিন চাননি।
আমার মা একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী। শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পুত্রবধূ। তিনি বিশ্বাস করতেন অধ্যয়ন কেবল অধ্যয়নই সফলতার চাবিকাঠি। সব সময় আমাদের বলতেন- "সৎ ও নীতির সাথে থেকে কঠোর পরিশ্রম করবে। উদয়াস্ত পরিশ্রম করিবে তবু কারও দ্বারস্থ হবে না। কারণ দেওয়ার হাত সব সময় উপরে থাকে, নেওয়ার হাত নিচে থাকে। মানুষের সাথে প্রতিযোগিতা দিবে ব্রেইন তথা মস্তিষ্ক দিয়ে। সমাজে যারা টাকা-পয়সার প্রতিযোগিতা করে তারা মূর্খ।"
সুখে-দুখে, অভাব-অনটনে, বিপদ-আপদে আমাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন আমার মা। দিয়েছেন মনোবল। তিনি বিশ্বাস করতেন - " চেতনা যখন জ্বলে উঠে বিজয় তখন কাছে আসে"। যখন আমাদের কোন অসুখ হত তিনি বলতেন-"ব্যাপার না, অসুখ সবারই হয়। নিয়মিত ঔষধ খেলে রোগ ভালো হয়ে যাবে। আল্লাহ পাক মানুষকে অসুখ দেন আবার তিনিই ভালো করেন"। যখন পরীক্ষার Result খারাপ হত বকাঝকার বদলে বলেছেন--Failure of the piller of success, ব্যাপার না। হারজিত থাকবেই। সামনে এগিয়ে যাও -----।
গুণগুণ করে বাংলা ছায়াছবির একটি গান করতেন-----
হারজিত চিরদিন থাকবে
তবুও এগিয়ে যেতে হবে
শত বাধা বিঘ্ন না পেড়িয়ে
বড় হয়েছে কে কবে?।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েও চাকুরী করেন নি শুধুমাত্র আমাদের জন্যই। কাজের বুয়া আমাদের লালন-পালনের কিছুটা দায়িত্ব নেক এটা তিনি চাইতেন না। আমরা ৪ ভাইয়ের মধ্যে তিন ভাই সরকারি চাকুরী করছি এর অবদান শুধুমাত্র মায়ের। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যন্ত কোন শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে হয়নি। গৃহশিক্ষকের পরিপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন আমার মা।
দেশকে প্রথম ভালবাসতে শিখেছি মায়ের কাছে। তিনি সব সময় বলতেন -----
"মানুষ বাঁচে আশায়
দেশ বাঁচে ভালবাসায়।
ব্যক্তির চেয়ে দল বড়
দলের চেয়ে দেশ বড়
সবার আগে দেশ
চল গড়ি বাংলাদেশ"।
হাটি হাটি পায়ে আজ আমি অনেক বড়। বিবাহিত। ২ সন্তানের জনক। এখনো আমার সন্তানদের দেখাশোনা করেন তিনি। আগলে রাখেন মমতার বন্ধনে। আমার অবর্তমানে সন্তানদের অভিভাবক। দুঃখ-কষ্টে, ভয়, দুর্ঘটনায় এখনো মুখ থেকে প্রথম শব্দটি বের হয় 'মা'।
বিপদে আপদে শেষ আশ্রয়স্থল -মা। যাদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা ঋণ নিয়েছি সবচেয়ে বিলম্বে ঋণ পরিশোধ করি মায়ের টাকা। এ আত্মবিশ্বাস হৃদয়ে আপনা-আপনিই গড়ে উঠে।
মা-শোধ হবে না।
তোমার এ ঋণ শোধ হবে না।
সকল ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দিও।
দোষে গুণে মানুষ। আছে তিক্ত অভিজ্ঞতা। মাঝে মাঝে অবাক হই। সত্দম্ভিত হই। যখন দেখি আমার মা মমতার মানদণ্ড সোজা রাখতে পারেন না। হয়ত তার কোন সন্তানদের লুকিয়ে কিছু দান করছেন যা অন্য সন্তানদের অগোচরে। যেমন জমি-জমা, টাকা-পয়সা কিংবা প্রতিদিনের কোন ভালো তরি-তরকারি। তখন চোখ ফেটে জল আসে। কষ্ট পাই। নীরবে কাঁদি।
মনে মনে ভাবি, আমি কি তাঁর সন্তান নই?
তিনি কী আমাকে গর্ভে ধারণ করেন নি?
তাহলে কেন এই বৈষম্য?
পারিবারিক এ সব কষ্ট কাউকে বলা যায় না। স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, বন্ধু এমনকি নিজেকেও বেশিক্ষণ ভাবতে দেই না।
আমি মুসলমান। আমার ঈমান আছে। আমি ভাগ্যে বিশ্বাস করি। মনের সুপ্ত বাসনা: মা-বাবার মানদণ্ডে হেরে গেলেও সৃষ্টিকর্তার কাছে সকলেই সমান। তিনি আমাকে না পাওয়া সব কিছু দিবেন। অনেক কিছু -----।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
বিন আরফান. গল্প নয় প্রবন্ধ আর ভালবাসার বহির্প্রকাশ ঘটেছে. তথাপিও ভালো. গল্প লিখুন. শুভ কামনা রইল.
শিশির সিক্ত পল্লব দেওয়ার হাত সব সময় উপরে থাকে, নেওয়ার হাত নিচে থাকে......সমাজে যারা টাকা-পয়সার প্রতিযোগিতা করে তারা মূর্খ......চেতনা যখন জ্বলে উঠে বিজয় তখন কাছে আসে...."মানুষ বাঁচে আশায়-দেশ বাঁচে ভালবাসায়।ব্যক্তির চেয়ে দল বড় -দলের চেয়ে দেশ বড়-সবার আগে দেশ- চল গড়ি বাংলাদেশ"....লাইন গুলো মাথায় গালাম......আরেকটা কথা..মা-বাবা অনেক সময় সবগুলো সন্তানের মধ্যে দূর্বল টাকে সাহায্য করে....এতে মন খারাপের কিছু নাই
junaidal সর্বশেষে মা সবার উপরে। ভালই লাগল।
আহমেদ সাবের আপনার মায়ের গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
হারুন ওর রশিদ ভালো লাগলো গল্পটি
শাহ্‌নাজ আক্তার মা এর কোনো বিচার নেই, কোনো অপরাধ নেই, নিজের ভুলগুলো নিয়ে একটু ভাবুন .................
এস, এম, ফজলুল হাসান ভালো লাগলো মায়ের প্রশংসা , ধন্যবাদ আপনাকে
সূর্য লেখকের মতো আমরাও চার ভাই, মা লুকিয়ে এমন আদর সন্তানদের করেন সত্যি। আমার বাকী ৩ভাই চাকুরীরত, আমি বাড়িতে থাকি, সবার বড়, মা মাঝে মাঝেই আমার প্রতি এই অতিরিক্ত আদরের প্রমাণ দেন, তার কারনটাও আমি জানি, যখন স্কুলে পড়তাম একটা খাটে সবাই থাকতাম। আমিই একমাত্র ইলেকট্রিক ফ্যানটা বাবার মাথার উপর ঝুলিয়েছিলাম, যার বাতাস আমাদের গায়ে পর্যন্ত এসে লাগতোনা। আমি মাঝখানে শুয়ে সবাইকে বাতাস করতাম হাত পাখা দিয়ে যতক্ষননা তাদের শরীর ঠান্ডা হয়। ওরা জানতোনা, কিন্তু মা জানতেন, এখনও সবারপ্রতি আমার অনুভব তেমনই আছে। আসলে মা কখনই অবিচার করেননা হয়তো কারনটা আমরা ধরতে পারিনা...
sakil মায়ের প্রসংসা বাণী শুনতে কার না ভালো লাগে . ভালো লেগেছে যদি ও পুরোপুরি গল্পের মত লাগেনি .
মামুন ম. আজিজ ঠিক গল্প নয়, মায়ের প্রশংসা বাণী লিপি। লেখনি সুন্দর হয়েছে।

২৪ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪