মীম

কষ্ট (জুন ২০১১)

মোঃ ইকরামুজ্জামান (বাতেন)
  • ২৭
  • 0
এই এত টুকুন মেয়ে। বয়স মোটে দশ ছাড়িয়েছে। বাবা মা অনেক আদর করে নাম রেখেছে মীম। মীম আরবী বর্ণমালার একটা অক্ষর। কিন্তু মীমের মা-বাবা এই নামের অর্থ জানেননা। মীমের ছোট দুটো ভাই। অভাবের সংসারে এই তিন ভাইবোনের জন্য আদরের কোন কমতি নেই। কিন্ত সেই আদর সোহাগ বেশী দিন টিকল না। ভ্যান চালক বাবা একদিন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন। কাল বৈশাখীর ঝড় যেন দরিদ্র কিন্তু সুখী সংসারের সবগুলো সদস্যের স্বপ্ন লন্ড ভণ্ড করে দিল।

তিন সন্তানের আহার যোগাতে মীম এর মা "ঝি" এর কাজ করতে লাগলেন। এরপরও অনাহারে অর্ধাহারে বহু কষ্টে কাটতে লাগলো তাদের জীবন। তখন দু'মুঠো অন্নের জন্য বাধ্য হয়ে মীম এর মা মীম কে এক বাসায় রেখে আসলেন।

ফাহিমা বেগমের ছোট্ট সংসার। স্বামী এবং একমাত্র মেয়ে তানীয়াকে ঘিরেই তার জীবন। ফাহিমা বেগম মীমকে দিয়ে ঘর সংসারের যাবতীয় কাজ করাতে লাগলেন। ভোরে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেন আর গভীর রাত পর্যন্ত কাজে লাগিয়ে রাখেন। আর তিনি ব্যস্ত থাকেন মেয়ের লেখা-পড়া, খাওয়া, ঘুম এসব নিয়ে। ফাঁকে ফাঁকে মীম এর কাজের তদারকি করতে তার ভুল হয়না।

ছোট্ট মীম সারাবেলা কাজ করে। তারপরও সামান্য ভুল হলে ফাহিমা বেগম অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করেন। মীমও উদ্বিগ্ন থাকে সারাক্ষণ, না জানি কোথায় ভুল হয়ে যায়। একদিন সকাল হতেই ফাহিমা বেগম বললেন,

-এই মীম চা দিয়ে যা।
: জী খালাম্মা এহনই আনতাছি...
তড়ি ঘড়ি চা আনতে গিয়ে মীমের হাত থেকে চায়ের কাপ পড়ে গেল। আর অমনি ফাহিমা বেগম হাঁক ছাড়লেন-
-এই ফকিরনীর বাচ্চা, আমার এত দামী চায়ের কাপটা ভেঙ্গে ফেললি কেন? সাবধানে ধরা যায়না?
এই বলে মীম এর দুই গালে থাপ্পর বসিয়ে দিলেন।

চোখের পানি মুছতে মুছতে মীম আবার কাজে লেগে যায়। বেঁচে থাকার জন্য কত কষ্ট সহ্য করতে হয়। নীরবে শুধু চোখের পানি ঝরে পড়ে। একসময় তা শুকিয়েও যায়। এ ছাড়া উপায় কি?

ফাহিমা বেগমের মেয়ে তানিয়া যখন স্কুলে যায়, তা দেখে মীম এর অতীত তার সামনে এসে দাড়ায়। সেও একদিন বই খাতা নিয়ে স্কুলে যেত। অনেক ফুলের কলি যেমন ফোটার আগেই ঝরে যায়, ঠিক তেমনই ঝরে গেল মীম এর জীবনও। প্রতিনিয়ত সপ্ন ভঙ্গের বেদনায় কাতর হয় সে।

একদিন তানিয়া রং পেন্সিল নিয়ে ছবি আঁকতে বসল। তখন মীম এর বাল্য মন হারিয়ে গেল তানিয়ার রঙিন খাতায়। তা দেখে ফাহিমা বেগম ঝাঁঝালো কন্ঠে বললেন-
- এই ওখানে বসে আমার মেয়েকে ডিস্টার্ব করছিস কেন? থালা বাসন কে ধোবে শুনি? তোর মা?

মীম আবার কাজ শুরু করে। সারাদিন কাজ করতেই থাকে মীম। আবার রাতে সবাই না ঘুমানো পর্যন্ত তাকে জেগে থাকতে হয়, সবার হুকুম শোনার জন্য। ঘুমে দু\'চোখ আড়ষ্ট হয়ে আসে, তবুও নিস্তার নেই। এত কষ্ট করার পরও মীম এ বাড়ীর অন্য সবার মত ভালো খাবার পায়না।
সবার খাওয়া শেষে তলানীটা আর উচ্ছিষ্টই জোটে মীম এর ভাগ্যে।

হাড়ভাঙ্গা দিনের শেষে অঘোর ঘুমে হারিয়ে যায় মীম, বাবার হাত ধরে কোন এক স্কুলের পথে...........
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ ইকরামুজ্জামান (বাতেন) ভূইয়াঁ আপনাকে অনেক অনেক মোবারকবাদ
ভূঁইয়া জটিল লেখচেনতো হুজুর
খোরশেদুল আলম আমাদের চারপাশে ঘটছে এমনি অনেক ঘটনা আপনার গল্পপড়ে মনে কষ্ট অনুভব করলাম, ভালো, আপনার জন্য শুভ কামনা রইল।
ফাতেমা প্রমি একদিন পড়ে গিয়েছিলাম-ভোট করিনি,মনে করে আজ তাই আসলাম ভোট করতে..সুন্দর গল্প...
মোঃ ইকরামুজ্জামান (বাতেন) ভাই Md. Akhteruzzaman আপনাকে জানাই অন্তরের অন্তর স্থল থেকে আন্তরিক মোবারকবাদ।
মোঃ ইকরামুজ্জামান (বাতেন) ভাই এ কে এম মাজহারুল আবেদিন অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
মোঃ ইকরামুজ্জামান (বাতেন) Shahnaj Akter আপনাকে জানাই আন্তরিক মোবারকবাদ আমার লেখা (মীম) এর উপর কমেন্ট করার জন্য । দোয়া করি
শাহ্‌নাজ আক্তার গৃহ কর্মী দের প্রতিদিনের অনাচার আমরা সবসময় শুনতে পাই , পেপার এ পড়ে থাকি ....তা সে যত ছোট বা বড় হোক না কেন , মানুষ যখন পশু হয়ে যায়, তখনি এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকে , আমাদের বিবেক বলতে আর কিছু নেই .....ভালো লিখেছেন আপনি I
এ কে এম মাজহারুল আবেদিন সুন্দর.... বাস্তব খুব বেশি ফুটে উঠেছে....
মোঃ আক্তারুজ্জামান আমাদের চির চেনা পৃথিবীটাকে আরও ভালো করে চিনিয়ে দেয়ার সুন্দর প্রয়াস| অনেক অনেক শুভকামনা|

০৭ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪